1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গুটি গুটি পায়ে এগুচ্ছে বাংলাদেশের গেমাররা

৩০ আগস্ট ২০১০

কম্পিউটারে গেমসের কথা শুনলেই একসময় ক্ষেপে যেতেন গুরুজনরা৷ তরুণ গেমারদেরকে তাই খেলতে হতো চুপিচুপি, কাউকে না জানিয়ে৷ মোটের ওপর, পরীক্ষায় ফলাফল খারাপ হলেও দোষ পড়তো ঐ কম্পিউটার গেমের ঘাড়েই৷

বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ওয়ার্ল্ড সাইবার গেমসছবি: WCG

কম্পিউটার গেমের এই অবস্থা বোধহয় বদলাতে শুরু করেছে৷ কেননা, আজকাল বাংলাদেশেও কম্পিউটার গেম নিয়ে হয় প্রতিযোগিতা, সেখানে জিতলে আবার সুযোগ থাকে বিদেশে গিয়ে খেলার৷ হ্যাঁ, কম্পিউটার গেমের আর্ন্তজাতিক প্রতিযোগিতায় ইতিমধ্যেই অংশ নিয়েছে বাংলাদেশের তরুণরা৷ ক্রিকেটের মতো, এই খাতেও মাঝে মাঝে জুটছে সাফল্য৷

যাত্রা শুরু ২০০৫ সালে

শুরুটা ২০০৫ সালে৷ সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করা কয়েক তরুণ পরিকল্পনা করলো ওয়ার্ল্ড সাইবার গেমস বা ডব্লিউসিজিতে বাংলাদেশ থেকে দল পাঠানোর৷ এজন্য চেষ্টা, যোগাযোগ শেষে সফল সেই তরুণরা বাংলাদেশে আয়োজন করলো এই গেমের আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা৷ ব্যাস, সাড়া পড়লো দেশজুড়ে৷ প্রথম আসরেই অংশ নিলো বাংলাদেশের ৬০০ তরুণ৷ সেখান থেকে দুই চূড়ান্ত বিজয়ী সোজা দৌড়ালো সিঙ্গাপুরে, ডব্লিউসিজি ২০০৫ এর গ্রান্ড ফাইনালে৷ এই প্রসঙ্গে ডব্লিউসিজি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার মোহাম্মদ ইরফান হোসেন জানান, প্রথম আসরে আমরা ৩০টি কম্পিউটার ব্যবহার করেছিলাম৷ প্রতিযোগী ছিল ৬০০ জনের মতো৷ ফিফা এবং নিড ফর স্পিড গেম দুটি খেলে বিজয়ী দু'জন সিংগাপুরে গিয়েছিল চূড়ান্ত আসরে অংশ নিতে৷

তরুণ গেমারদেরকে তাই খেলতে হতো চুপিচুপি, কাউকে না জানিয়েছবি: dpa

এবার লস অ্যাঞ্জেলেসে

২০০৫ সালের পর ইটালি, জার্মানি, চীনসহ কয়েক দেশ ঘুরে এবছর ওয়ার্ল্ড সাইবার গেমসের চূড়ান্ত আসর বসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে৷ এই প্রতিযোগিতার দশম আসর এটি৷ বাংলাদেশ থেকে সে আসরে অংশ নেবে আফসার হোসাইন৷ এজন্য অবশ্য আফসারকে জিততে হয়েছে বাংলাদেশে সেরা গেমারের খেতাব৷

গত ছয় থেকে আট আগস্ট ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় ডব্লিউসিজি বাংলাদেশ অংশের প্রতিযোগিতা৷ অংশ নেয় ১ হাজার ২০০ গেমার৷ তাদের মধ্যে থেকে ফিফা ২০১০ বিজয়ী আফসার যাচ্ছেন লস অ্যাঞ্জেলেসে, নভেম্বরে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে৷ ইরফান হোসেন এই প্রসঙ্গে জানান, এবার আমরা খুবই আশাবাদী৷ আশা করছি আমরা এবারের চূড়ান্ত আসরে খুব ভালো করতে পারবো৷

অবস্থান ৬৮

ওয়ার্ল্ড সাইবার গেমসের মূল আসরে বাংলাদেশের অবস্থান এখনো খুব একটা আশা জাগায়নি৷ ২০০৯ সালে এই আসরে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৬৮৷ তবে, এবছর ওয়ার্ল্ড সাইবার গেমসের এশিয়া অঞ্চলের একাধিক প্রতিযোগিতায় সাফল্য দেখিয়েছে তরুণরা৷ গত জুলাইতে সিংগাপুরে অনুষ্ঠিত এশিয়া সাইবার গেমস ২০১০-এ বাংলাদেশি কিশোর আরাফাত জানি দখল করেছেন তৃতীয় স্থান, পেয়েছেন ব্রোঞ্জ মডেল৷ কম্পিউটারে ফুটবল খেলে তাঁর এই অর্জন৷ ১৫ বছর বয়সি আরাফাত ডয়চে ভেলেকে বলেন, আমার আসলে খুব ভালো লেগেছে৷ বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ৷ তারপরও সেখান থেকে খেলতে গিয়ে আমি কিছু করতে পেরেছি৷ এটাই বড় ব্যাপার৷

এবছর ওয়ার্ল্ড সাইবার গেমসের চূড়ান্ত আসর বসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসেছবি: dpa

চাই আরো চর্চা

আরাফাতের কথায়, বিদেশে গেমাররা প্রতিদিন ৪ ঘণ্টা চর্চা করতে পারে৷ কিন্তু তাঁর দেশ মানে বাংলাদেশে সপ্তাহে ৩-৪ ঘণ্টাও কম্পিউটার গেম চর্চা করার সুযোগ নেই৷ কারণ অভিভাবক বা গুরুজনরা কম্পিউটার গেম বিশেষ পছন্দ করেননা৷

গোয়ায় প্রথম স্থান

বাংলাদেশের কম্পিউটার গেমাররা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সাফল্য দেখিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার সাইবার গেমসে৷ গত মে মাসে ভারতের গোয়ায় অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতার ডোটা গেমে বাংলাদেশ দল বিজয়ী হয়৷ ফাইনালে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ভারত৷

এভাবে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশের গেমাররা৷ বয়সে কেউ কিশোর, কেউ তরুণ কেউবা যুবা৷ তবে শক্তির চেয়ে বুদ্ধিটাই বেশি প্রয়োজন এই খেলায়৷ সঙ্গে প্রয়োজন নিয়মিত চর্চা৷ তাই, গুরুজনরা কী গেমারদের প্রতি একটু নমনীয় হবেন? অন্তত দেশের স্বার্থে!

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ