বাংলাদেশের গুপী-বাঘা প্রোডাকশনসের 'একা' চলচ্চিত্রে প্রযোজক হিসেবে যোগ দিলেন ভারতীয় পরিচালক-প্রযোজক অনুরাগ কাশ্যপ। ফ্রান্সের কান চলচ্চিত্র উৎসব চলাকালেই কয়েক দফা বৈঠকে এই যৌথ পথচলা আনুষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ভারতীয় পরিচালক সুমন সেনের 'একা' বা 'Solo' নামের চলচ্চিত্রটি ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউটের লা ফেব্রিক-এ বিশ্বের ১০টি প্রকল্পের একটি হিসেবে কানে নির্বাচিত হয়েছে। লা ফেব্রিকে বিভিন্ন দেশের তরুণ নির্মাতাদের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র অঙ্গনে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়।
ফরাসি প্রযোজক ডমিনিক ভেলিন্সকি আগেই এই সিনেমায় প্রযোজক হিসেবে বাংলাদেশের গুপী-বাঘা প্রোডাকশনসের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। এবার অনুরাগ কাশ্যপ এই চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় সিনেমাটির কাজে আরো গতি আসবে বলে মনে করছেন গুপী-বাঘা প্রোডাকশনসের বিজন ইমতিয়াজ।
লা ফেব্রিকের নানা আয়োজনে যোগ দিতে ফ্রান্সের কানে আছেন গুপী-বাঘা প্রোডাকশনসের আরিফুর রহমান, বিজন ইমতিয়াজ এবং সুমন সেন। লা ফেব্রিকে 'একা' ছাড়াও সিনে মার্কেট মার্শে দ্যু ফিল্মে তারা উপস্থিত আছেন বাংলাদেশি নির্মাতা নুহাশ হুমায়ুনের 'মুভিং বাংলাদেশ' সিনেমার প্রকল্প নিয়ে।
কো-প্রডিউসার হিসেবে 'একা' প্রকল্পে অনুরাগের যোগ দেয়ার উচ্ছ্বাসটা টের পাওয়া যাচ্ছিলো ফোনের অপর প্রান্তে। ডয়চে ভেলেকে বিজন জানান, ‘‘সিনেমার ফান্ডিং একটা বড় বিষয়। কিন্তু তারচেয়েও বড় বিষয় স্ক্রিপ্ট এবং ডিরেকশনে অনুরাগের যে দক্ষতা, সেটি এই সিনেমাতে আমাদের সবচেয়ে বেশি কাজে লাগবে। আমরা (বিজন এবং সুমন) স্ক্রিপ্ট লিখে অনুরাগকে পাঠিয়ে দিবো, তিনি তার নোট দিবেন। এভাবেই কাজ এগোবে৷''
আরিফের জন্য অবশ্য অনুরাগের সঙ্গে কাজ করতে পারার পেছনে কেবল পেশাগত উচ্ছ্বাসই নয়, আছে ব্যক্তিগত আনন্দও। দীর্ঘদিন ধরে অনুরাগের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী আরিফ। ২০১৯ সালে আফগান নির্মাতা দিয়ানা সাকিব জামালের শর্টফিল্ম 'রোকাইয়া' নিয়ে সিনেমাটির প্রযোজক আরিফ অ্যামেরিকায় লস এঞ্জেলেসে গেলে সেখানে সিনেমাটির স্ক্রিনিং ওপেন করেন অনুরাগ। তখনই সিনেমা ও প্রযোজনার নানা বিষয়ে কথা হয়েছিল দুজনের মধ্যে।
২০২১ সালে কানে এসে 'একা' সিনেমার ফরাসি প্রযোজক ডমিনিকের সঙ্গে অনুরাগের আলোচনা চলছিল। অবশেষে বুধবার আরিফ-বিজন-সুমন এবং ডমিনিকের সঙ্গে আলোচনা শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে সিনেমাটির প্রযোজনায় নিজের প্রতিষ্ঠান গুড ব্যাড ফিল্মসকে যুক্ত করার কথা জানান অনুরাগ কাশ্যপ।
আরিফ ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমরা যারা ইনডিপেনডেন্ট ফিল্ম তৈরি করি, তারা আসলে খুব একটা সাপোর্ট পাই না। ফলে নানা ধরনের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমাদের এগোতে হয়। 'একা' সিনেমায় অনুরাগের যুক্ত হওয়ার ফলে আমরা মানসিক শক্তি পেলাম। আগামী ১-২ বছর বেশ দ্রুত গতিতেই কাজ আগাবে।''
এদিকে বিনোদন পত্রিকা ভ্যারাইটিকে অনুরাগ জানিয়েছেন, ‘‘একসঙ্গে করা যায় এমন কাজ খুঁজে পাওয়ার মধ্যে এক ধরনের আনন্দ রয়েছে। আইডিয়া, স্ক্রিপ্ট এবং ভারত - বাংলাদেশ - ফ্রান্সের নির্মাতাদের একযোগে কাজ করে সিনেমা বানানোর প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।''
'একা' সিনেমাটি বিপ্লব নামের এক ৫৬ বছর বয়সি বিমা কর্মকর্তাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। একঘেয়ে মধ্যবিত্ত জীবন আর তার ভালো লাগে না। প্রতিদিন ভিড়ে গাদাগাদি করে পাবলিক বাসে চেপে অফিস যাওয়ার পথে শহরের মূল চত্ত্বরে নির্মীয়মাণ এক বিশাল ভাস্কর্যের পায়ের আঙুল নজরে পড়ে তার। নির্মাণকাজ শেষ হলে দেশের প্রেসিডেন্ট এই ভাস্কর্যের উদ্বোধন করবেন।
জীবনের নানা চাপ বিপ্লবকে ধীরে ধীরে হতাশাগ্রস্ত করে তোলে। ক্ষোভ থেকে একসময় তিনিই ডাক দেন এক গণবিদ্রোহের।
কান শহরে ডয়চে ভেলের সঙ্গে এক আলোচনায় 'একা' সিনেমার প্লট সম্পর্কে নির্মাতা সুমন সেন বলছিলেন, ‘‘আমাদের আগের প্রজন্মের সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে যে অনাগ্রহ ছিল, তার কারণেই আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি। আজকে যে সমাজের ব্যর্থতা, বা আজকে যে সময়ের মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি, সেটা তো খুব একটা সুখের সময় নয়। আমরা এমন দেশ বা এমন পৃথিবী দেখতে চাইনি। সেটা কোন নির্দিষ্ট দেশ নিয়ে বলছি না, সেটা ভারত-বাংলাদেশ বা পৃথিবীর যেকোনো দেশ হতে পারে। আজকে আমরা যে সময়টাতে দাঁড়িয়ে আছি, তার অনেকটা দায় আমাদের আগের প্রজন্মের।''
এই প্লটের ওপর ভিত্তি করে সিনেমার স্ক্রিপ্ট মোটামুটি চূড়ান্ত হলেই কলাকুশলী বাছাইয়ের কাজ শুরু হবে। মূল চরিত্রে ভারতের একজন খ্যাতিমান অভিনেতাকে (যিনি সম্প্রতি বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফরমে নানা চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকনন্দিত হয়েছেন) দেখতে চায় গুপী-বাঘা। তবে এখনও এ বিষয়টি চূড়ান্ত না হওয়ায় নাম প্রকাশে রয়েছে আপত্তি।
'একা' ছাড়াও আরো বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ নিয়ে একসঙ্গে এগিয়ে চলেছে গুপী-বাঘা প্রোডাকশন্স। রাইড শেয়ারিং প্রকল্প পাঠাওয়ের ওপর ভিত্তি করে 'মুভিং বাংলাদেশ' তো এবারই কানে কো-প্রোডাকশন মার্কেটে এলো। এছাড়া ১৪ বছর বয়সি এক ইসলামিক স্কুলের ছাত্রের জীবন নিয়ে সিনেমা 'প্যারাডাইস' এর কলাকুশলী নির্বাচন শুরু হবে কিছুদিনের মধ্যেই। ২০২২ সালে এর শ্যুটিং শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে।
অদ্ভুত এক রোগে আক্রান্ত এক পরিবারে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে তৈরি 'ট্রি অব নলেজ' সিনেমাটির শ্যুটিং শেষ, রয়েছে পোস্ট প্রোডাকশনে। আগামী বছরের কোনো এক চলচ্চিত্র উৎসবেই হয়তো দেখা যাবে সিনেমাটি।
কানে বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী যারা
এক নজরে দেখে নেয়া যাক আঁ সার্তে রিগা ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশের ‘রেহানা মরিয়ম নূর’-এর প্রতিদ্বন্দ্বী কারা!
ছবি: Zbaer Ahmed/DW
কী এই আঁ সার্তে রিগা?
আঁ সার্তে রিগা এর অর্থ 'অন্য দৃষ্টি থেকে'। নামের সঙ্গে মিল রেখেই অন্যভাবে যারা সিনেমা তৈরি করে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দিতে চান, তাদের জন্যই এই ক্যাটাগরি। উৎসবের মূল পুরস্কার পাম দি'ওর এর জন্য কম্পিটিশন বিভাগে আসে বিশ্বনন্দিত পরিচালকদের ছবি। কিন্তু এর বাইরের ছবিগুলোর প্রতিযোগিতার জন্য এই ক্যাটাগরি চালু হয় ১৯৭৮ সালে। ২০টি চলচ্চিত্র স্থান পায় এখানে, পুরস্কার প্রায় ৩০ হাজার ইউরো বা প্রায় ৩০ লাখ টাকা।
ছবি: Brynn Anderson/AP/picture alliance
বাংলাদেশের 'রেহানা মরিয়ম নূর'
মেডিকেল কলেজের সহকারি অধ্যাপক রেহানা মরিয়ম নূর। কলেজের এক অধ্যাপকের কক্ষ থেকে এক ছাত্রীকে কাঁদতে কাঁদতে বের হয়ে আসতে দেখেন রেহানা। পরে তার ছয় বছরের মেয়ের অদ্ভুত আচরণ বিষয়ে স্কুল থেকেও অভিযোগ আসে। রেহানা সমাজের উন্মত্ততার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শপথ নেন। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ, প্রযোজনা করেছেন জেরেমি চুয়া। নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আজমেরি হক বাঁধন।
ছবি: Potocol and Metro Video
যুক্তরাষ্ট্রের 'আফটার ইয়েং'
ছোট্ট মেয়ের সবচেয়ে কাছের বন্ধু- অ্যান্ড্রয়েড রোবট ইয়েং একদিন যান্ত্রিক ত্রুটির শিকার হয়। বাবা জেইক তখন সেটিকে সারানোর উপায় খুঁজে বের করেন। এই প্রক্রিয়ার মধ দিয়ে যেতে গিয়ে জীবনের নতুন অর্থ খুঁজে পান তিনি। পরিচালক কোগোনাডার পরিচালনায় জেইকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কলিন ফ্যারেল।
ছবি: A24 Films
তুরস্কের 'আগলিলিক হাসান'
উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া জমিতে চাষ করে জীবন ভালোই কাটছিল হাসানের। কিন্তু একদিন তার জমির মাঝখানেই বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। হাসান এর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। পরবর্তীতে মক্কায় তীর্থযাত্রা সবকিছুকে নতুনভাবে তার সামনে উপস্থাপন করে। সেমিহ কাপলানোলুর পরিচালনায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন উমুত কারাদাগ।
ছবি: Kaplan Film & Sinehane
যুক্তরাষ্ট্রের 'ব্লু বাইউ'
প্রেমিকা ও স্ত্রী ক্যাথি এবং সৎ মেয়ে জেসিকে নিয়ে সুখেই জীবনযাপন করছিলেন কোরিয়া থেকে দত্তক সন্তান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে আসা আন্তোনিও লাব্লাংক। হঠাৎ একদিন লাব্লাংকের জীবন ওলটপালট হয়ে যায়। তিনি জানতে পারেন, তাকে যেকোনো সময় কোরিয়া ফেরত পাঠানো হতে পারে। পুরষ্কারপ্রাপ্ত লেখক-পরিচালক জাস্টিন চোন নিজেই অভিনয় করেছেন আন্তোনিও লাব্লাংক- এর ভূমিকায়।
ছবি: Entertainment One - MACRO/imago images
ফ্রান্সের 'বন মেরে' বা 'ভালো মা'
পঞ্চাশোর্ধ্ব পরিষ্কারকর্মী নোরা ছেলে এলিসকে নিয়ে বেশ চিন্তায় আছেন। এলিস ডাকাতির দায়ে কয়েক মাস ধরে কারাগারে। এই অপেক্ষার সময়টা যতটা সম্ভব নিজের কষ্ট কমানোর চেষ্টা করেন নোরা। হাফসিয়া হেরজির পরিচালনায় নোরার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন হালিমা বেনহামেদ।
ছবি: Guy Ferrandis/SBS Productions/Design: Benjamin Seznec TROIKA
রাশিয়ার 'ডেলো' বা 'গৃহবন্দী'
বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ডেভিড সোশাল মিডিয়ায় শহর কর্তৃপক্ষের সমালোচনা শুরু করেন। কিন্তু মেয়রের বিরুদ্ধের তদন্তের বদলে ডেভিডের বিরুদ্ধেই অর্থ কারচুপির অভিযোগ এনে তাকে গৃহবন্দী করা হয়। সব চাপ সত্ত্বেও ডেভিড তার বক্তব্যে অনড় থাকেন। আদালতের বিচারের তারিখ যত এগিয়ে আসতে থাকে, এই লড়াইয়ে কার জয় হবে, এ নিয়ে চিন্তাও বাড়তে থাকে। আলেকসেই জের্মান জুনিয়রের পরিচালনায় ডেভিডের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মেরাব নিনিদজে।
ছবি: Daria Shumakova
অস্ট্রিয়া-জার্মানির 'ডি গ্রোসে ফ্রাইহাইট'
সিনেমাটির নামের অর্থ 'মহান স্বাধীনতা'। যুদ্ধপরবর্তী জার্মানিতে সমকামী হওয়ার কারণে হান্সকে বারবার গ্রেপ্তার করা হয়। ১৭৫ অনুচ্ছেদের কারণে তার স্বাধীনতা একেবারেই ক্ষুণ্ণ। তার জীবনে একমাত্র দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক হয় কারাগারে তার কক্ষে থাকা খুনি ভিক্টরের সঙ্গে। সেবাস্টিয়ান মাইজের পরিচালনায় হান্সের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ফ্রানৎস রোগোভস্কি।
ছবি: reibeuterfilm_Rohfilm
হাইতি, ফ্রান্স, বেনিনের 'ফ্রেদা'
পোর্ত-অউ-প্রিন্সের দরিদ্র এলাকায় ফ্রেদার পরিবারের বাস। রাস্তার পাশের ছোট দোকান তাদের খাওয়াপড়ার জোগান দিলেও হাইতির চলমান সহিংসতা তাদের ধীরে ধীরে শঙ্কিত করে তুলছে। তবে ফ্রেদা তার দেশের ভবিষ্যতের ওপর ভরসা করতে চান। জেসিকা জেনেউস এর পরিচালনায় নেয়েমিয়া বাস্টিয়েন অভিনয় করেছেন ফ্রেদা চরিত্রে।
ছবি: SaNoSi Productions
চীনের 'গায়ে ওয়া'র'
এই শব্দের অর্থ 'রাস্তার জ্ঞানী'। ডংজি তার বাবার চিকিৎসার জন্য অন্যদের দেয়া ধারের টাকা ফেরত নেয়ার ওপর নির্ভর করে। অস্থির মানসিক অবস্থাতেও জিউওর নামের এক মেয়ে তার মনে স্বস্তি এনে দিতে পারে। কিন্তু ঘটনাক্রমে একইদিনে ডংজি তার বাবা এবং জিউওরকে হারায়। জিয়াঝৌ না এর পরিচালনায় মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন জিউচিয়াও লি।
ছবি: The Seventh Art Pictures
বেলজিয়াম, রোমানিয়া, মেক্সিকোর 'লা সিভিল'
সিয়েলোর মেয়েকে মাদকচক্রের লোকজন অপহরণ করেছে। কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হওয়ার পর সিয়েলো নিজের কাঁধেই মেয়ে খুঁজে বের করার দায়িত্ব নেন। তদন্তে নেমে ভিন্ন ধারায় কাজ করা এক আর্মি মেজরের সঙ্গে পরিচয় হয় সিয়েলোর। এরপর এগিয়ে চলে ঘটনা। একের পর এক সহিংস ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন সিয়েলো। সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন তিওডোরা আনা মিহাই। সিয়েলোর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আর্সেলিয়া রামিরেজ।
ছবি: Menuetto - Agustin Paredes
আইসল্যান্ডের 'ল্যাম্ব'
আইসল্যান্ডের এক প্রেমিক জুটি মারিয়া এবং ইংভার এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভেড়ার খামারে থাকেন। একদিন খামারে এক নবজাতককে কুড়িয়ে পান তারা। নিজেদের সন্তানের মতো লালন পালন করে শুরুতে অসীম আনন্দ পেলেও পরবর্তীতে তা হয়ে দাঁড়ায় তাদের ধ্বংসের কারণ। ভালদিমির জোহানসনের পরিচালনায় মারিয়া চরিত্রে নুমি রাপাসে এবং ইংভার চরিত্রে হিলমির স্নায়ের গুডনাসন অভিনয় করেছেন।
ছবি: Go to Sheep, Black Spark Film & TV, Madants, Film i Vast, Chimney, Rabbit Hole, Helgi Jóhannsson
ফ্রান্সের 'মঁ ফ্রেঁ এ মোয়াঁ'
সিনেমার নামের অর্থ- আমার ভাই এবং আমি। চার ভাইয়ের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ১৪ বছরের নোয়া। তাদের মা দীর্ঘদিন ধরে কোমায় আছেন। ভাইদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে মায়ের যত্ন নেয় নোয়া। মায়ের পছন্দের অপেরা শোনাতে গিয়ে নোয়া নিজেই পড়ে যায় অপেরার প্রেমে। একসময় তার সামনেও সুযোগ আসে খোলস ভেঙে বের হয়ে আসার। ইয়োহান মাংকার পরিচালনায় নোয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন মায়েঁল রোয়িঁ-বেরান্দোঁ।
ছবি: David Koskas - Single Man Productions
তাইওয়ানের 'মানিবয়েজ'
তাইওয়ানের পাশাপাশি সিনেমাটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছেন অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স, বেলজিয়ামের প্রযোজকেরা। ফেই নামের এক সমকামী ছোটখাট অবৈধ কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু যখন তিনি বুঝতে পারেন যে তার পরিবার তার উপার্জনের টাকা নিলেও তার সমকামী হওয়াটাকে মেনে নিতে রাজি না, তখন তার সব স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হয়ে যায়। সি. বি. ইয়ি এর পরিচালনায় ফেই এর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কাই কো।
ছবি: MONEYBOYS
মেক্সিকোর 'নচে দে ফুয়েগো'
সিনেমার নামের অর্থ- চুরি যাওয়াদের জন্য প্রার্থনা। সিনেমটিতে তুলে ধরা হয়েছে মেক্সিকোর পাহাড়ি শহরের তিন শিশুর কথা। পরিত্যক্ত বিভিন্ন বাড়িতে নিজেদের পালিয়ে থাকার জায়গা গড়ে তোলে তারা। কিন্তু একসময় তাদেরও শিকার হতে হয় নানা সহিংসতার। মেক্সিকোর পাশাপাশি জার্মানি, ব্রাজিল ও কাতারের সহপ্রযোজনায় সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন তাতিয়ানা হুয়েৎসো।
ছবি: NOCHE DE FUEGO
জাপানের 'অনোডা'
১৯৪৪ সাল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান হারার পথে। রহস্যে ঘেরা মেজর তানিগুচির আদেশে তরুণ হিরু অনোডা অ্যামেরিকান সৈন্যদের আসার ঠিক আগে আগে ফিলিপিন্সের একটি দ্বীপে যান। সেখানে তারা জঙ্গলে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। জাপানের জন্য যুদ্ধ শেষের দিকে হলেও অনোডার যুদ্ধ শেষ হয় ১০ হাজার রাত পর। আর্থার হারারির পরিচালনায় তরুণ আনোডার চরিত্রে ইউইয়া এন্দো এবং বৃদ্ধ আনোডার চরিত্রে অভিনয় করেছেন কাঞ্জি ৎসুদা।
ছবি: athysphere
রাশিয়ার 'রাজহিমায়া কুলাকি'
এই সিনেমার নামের অর্থ- মুঠি শিথিল করা। উত্তর ওসেটিয়ার খনিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এক গ্রামে আদা নামে এক তরুণী বাস করেন। পরিবারকে ভালোবাসলেও তাকে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকেই পালাতে হবে শিগগির। এ নিয়েই সিনেমার গল্প। কিরা কোভালেংকোর পরিচালনায় আদার ভূমিকায় করেছেন মিলানা আগুজারোভা।
ছবি: RAZZHIMAYA KULAKI
নরওয়ের 'দ্য ইনোসেন্টস'
নরওয়ের পাশাপাশি সুইডেন, ডেনমার্ক এবং যুক্তরাজ্যের প্রযোজকেরাও এই সিনেমার সহপ্রযোজনায় অংশ নিয়েছেন। নর্ডিক এলাকায় এক গ্রীষ্মকালে হঠাৎই এক দল শিশু বুঝতে পারে যে তাদের কিছু রহস্যময় ক্ষমতা রয়েছে। শুরুতে মজার খেলা হলেও একসময় অদ্ভুত সব কাণ্ড ঘটতে থাকে। সিনেমটাই পরিচালনা করেছেন এসকিল ফোগট।
ছবি: Mer Films
বেলজিয়ামের 'উন মন্দে'
সিনেমার নামের অর্থ- খেলার মাঠ। স্কুলে প্রায়ই আবেলকে অন্যান্য বাচ্চারা হেনস্তা করে। আবেলের সাত বছর বয়সি ছোট বোন নোরা তা সহ্য করতে না পেরে বাবকে জানাতে যায়। কিন্তু আবেল তাতে বাধা দেয়। নোরা শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের জীবনকে বোঝার ফারাক নিয়ে বেশ জটিলতায় পড়ে। লরা ওয়ানডেলের পরিচালনায় নোরার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মায়া ভানডেরবেকুয়ে।
ছবি: Dragons Films
ইসরায়েলের 'ভায়েহি বোকার'
ফ্রান্সের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে নির্মিত সিনেমাটির নামের অর্থ- সকাল হতে দাও। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে জেরুসালেমে বাস করেন সামি। ভাইয়ের বিয়েতে যোগ দিতে তিনি তার আরব অধ্যুষিত গ্রামে যেতে বাধ্য হন। বিয়ের পর কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই ইসরায়েলি বাহিনি সে গ্রাম অবরুদ্ধ করে। সামির জীবন পালতে যেতে শুরু করে। এরান কলিরিনের পরিচালনায় সামির ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আলেক্স বাকরি।
ছবি: DORI MEDIA/LES FILMS DU POISSON
বুলগেরিয়ার 'উইমেন ডু ক্রাই'
ফ্রান্সের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে নির্মিত সিনেমাটি সত্য ঘটোনা অবলম্বনে নির্মিত। সিনেমাটিতে একটি বুলগেরিয়ান পরিবারের নারীদের মুখোমুখি হওয়া নানা সংকটের কথা তুলে ধরা হয়েছে। নারীর সমতার বিরোধীদের সহিংসতার চিত্রও দেখানো হয়েছে পরিচালক মিনা মিলেভা নির্মিত সিনেমাটিতে।