চরবৃত্তির দায়ে ভারতীয় দম্পতিকে শাস্তি দিল জার্মানির আদালত। জার্মানিতে বসবাসকারী কাশ্মীরি ও শিখদের সম্পর্কে খবরাখবর ভারতীয় গোয়ন্দা সংস্থাকে সরবরাহ করতেন তাঁরা।
বিজ্ঞাপন
জার্মানিতে বসে তাঁরা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং বা র-কে খবরাখবর সরবরাহ করতেন। প্রধাণত, কাশ্মীরি ও শিখদের গিতিবিধি ও কার্যকলাপের খবর দিতেন ওই দম্পতি{ ফ্রাঙ্কফুর্টের আদালত পঞ্চাশ বছর বয়সী এস মনমোহন ও তাঁর স্ত্রী একান্ন বছরের কানওয়ালজিতকে সাজা দিয়েছে। মনমোহনকে বেআইনি চরবৃত্তির অপরাধে দেড় বছর জেল-এ থাকতে হবে। কানওয়ালজিতের অর্থদণ্ড হয়েছে। তাঁকে একশ আশি দিনের আয় জরিমানা হিসাবে দিতে হবে। সেই অর্থ যাবে এই ধরনের কাজ বন্ধ করার অভিযানে।
মনমোহনের চরবৃত্তি শুরু হয়েছিল ২০১৫ থেকে। কানওয়ালজিত তার দুবছর পর থেকে এই কাজ শুরু করেন। এই দম্পতি র-এর কাছ থেকে ৭ হাজার ইউরো পেয়েছে। মামলার শুনানির সময়ই দম্পতি স্বীকার করে নেয়, তারা নিয়মিত র-কে তথ্য দিত।
অতীতে ভারত একাধিকবার শিখদের ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। শিখরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে গোলমাল করতে পারে বলেও তাদের সন্দেহ ছিল। ভারতের আশঙ্কা, কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা মদত পাচ্ছে বিদেশ থেকে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইউরোপের দেশগুলির মধ্যে ব্রিটেন ও ইটালির পরেই শিখদের সংখ্যা সব থেকে বেশি জার্মানিতে।
এক নজরে বিশ্বের তুখোড় সব গুপ্তচর সংস্থা
ফরেন পলিসি পত্রিকা বিশ্বের সবচেয়ে তুখোড় গুপ্তচর সংস্থাগুলির একটি তালিকা প্রকাশ করেছে৷ এই সংস্থাগুলিকে চিনুন ছবিঘরে...
ছবি: McPHOTO/blickwinkel/picture alliance
সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (সিআইএ), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
১৯৪৭ সালে সিআইএ-র জন্ম৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে নজরদারি চালাতেই মূলত এই সংস্থার জন্ম৷ বর্তমানে, অ্যামেরিকার হ্যালিফ্যাক্স শহরে কেন্দ্রীয় দপ্তর রয়েছে সিআইএ-র৷ খবর চালাচালি ছাড়াও একাধিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছে এই সংস্থার নাম৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Harnik
ফরেন ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস (এসভিআর), রাশিয়া
সোভিয়েট ইউনিয়নের পতনের পর সাবেক রুশ গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবি ভেঙে বেশ কয়েকটি ছোট সংগঠন তৈরি করা হয়৷ এসভিআরের জন্ম ১৯৯১ সালের সেই সময়েই৷ মার্কিন সূত্রের মতামত, সাবেক কেজিবি-কর্মকর্তা ভ্লাদিমির পুটিন ক্ষমতায় আসার পর থেকে এসভিআরের কর্মক্ষমতা আরো বেড়েছে৷
ছবি: AP
এমআই৬, যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসেরই জনপ্রিয় নাম ‘এমআই৬’-এর জন্ম ১৯০৯ সালে৷ বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন গোয়েন্দা সংস্থা এটি৷ লন্ডনের এসআইএস বিল্ডিঙে অবস্থিত এমআই৬ এককালে পরিচিত ছিল অক্সফোর্ড বা কেমব্রিজের মতো প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কর্মী নিয়োগ করার জন্য৷ পাশাপাশি জেমস বন্ড ছবির সিরিজেও ছিল এমআই৬-এর অনেক প্রভাব৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Arrizabalaga
মিনিস্ট্রি অফ স্টেট সিকিউরিটি, চীন
চীনের গুপ্তচরবৃত্তির ধরন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা অন্যান্য পশ্চিমা দেশের সংস্থার থেকে ভিন্ন বলে মনে করছে ফরেন পলিসি৷ চীনা পদ্ধতি এতটাই ভিন্ন যে, একটি নির্দিষ্ট সংস্থার বদলে চীনা গুপ্তচররা সাধারণ ছাত্র, কূটনীতিক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে মিশে থাকে৷ ফলে, তাদের খুঁজে বের করাও হয়ে পড়ে কঠিন৷
ছবি: Wikipedia/Shizhao
রিসার্চ অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স উইং (র), ভারত
১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থার মূল বৈশিষ্ট্য ছিল পাকিস্তান বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ করা৷ কিন্তু বর্তমানে এই সংস্থার সাথে জড়িয়েছে বহু বিদেশি অপারেশনের কাহিনী৷ দক্ষিণ এশিয়ায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সংগঠন ‘র’৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Qureshi
ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই), পাকিস্তান
ফরেন পলিসি জানাচ্ছে, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের তথ্য সংগ্রহ ছাড়াও ভারতের বিষওয়ে এই সংস্থা বিশেষভাবে সক্রিয়৷ শুধু তাই নয়, ২০০৬ সালে মুম্বাইতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার সাথেও জড়িয়েছে আইএসআই-এর নাম৷ অন্যদিকে, সিআইএ-র সাথে মিলে জঙ্গি দমনেও আইএসআই-এর সক্রিয়তার কথা উঠে এসেছে৷
ছবি: picture alliance/dpa
মোসাদ, ইসরায়েল
১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থার সাথে জড়িত রয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তদন্তের গল্প৷ ১৯৬০ সালে যুদ্ধাপারাধী আইচমানের গ্রেপ্তারি থেকে ১৯৭২ সালে মিউনিখ অলিম্পিকে হামলার তদন্ত, মোসাদের সাফল্যের রয়েছে অনেক উদাহরণ৷ ইহুদিদের ইসরায়েলে প্রত্যাবর্তন প্রসঙ্গে বিরাট অবদান রেখে আসছে মোসাদ, জানাচ্ছে ফরেন পলিসি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বুন্ডেসনাখরিশটেনডিন্সট (বিএনডি), জার্মানি
জার্মান গোয়েন্দা সংস্থার জন্ম ১৯৫৬ সালে, অর্থাৎ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে৷ তার আগে, জার্মানির ‘গেলেন অর্গানাইজেশন’ মূলত গোপন তথ্য সরবরাহের কাজ করতো৷ সিআইএ, এসভিআর, এমআই৬, মিনিস্ট্রি অফ স্টেট সিকিউরিটি, র, আইএসআই, মোসাদ আর বিএনডি ছাড়াও ফ্রান্সের ডিজিএসই, অস্ট্রেলিয়ার এসআইএস ও ক্যানাডার সিএসআইএস-ও বিশ্বের তুখোড় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য৷