বাংলাদেশে গুমের ঘটনা ক্রমশই বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ ওদিকে, এ সব ঘটনার তদন্তে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন দেশটির মানবাধিকার কর্মীরা৷
বিজ্ঞাপন
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, বাংলাদেশ সরকারকে অবিলম্বে গুমের মতো এমন আতঙ্কজনক ঘটনা বৃদ্ধির মোকাবেলা করতে হবে৷ বন্ধ করতে হবে নির্যাতন৷ আর তার সঙ্গে সঙ্গে মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করার ক্রমবর্ধমান তত্পরতার ইতি ঘটাতে হবে৷
বলা বাহুল্য, সম্পাদক ও সাংবাদিকদের ফোনে হুমকি দিচ্ছে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীরা৷ তাই সরকারবিরোধী সমালোচকদের গণমাধ্যমে যেন স্থান দেয়া না হয়, তার জন্যই এ চাপ৷
অ্যামনেস্টি-তে বাংলাদেশ বিষয়ক গবেষক আব্বাস ফয়েজ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘দারিদ্র্য কমিয়ে আনা ও অন্যান্য উন্নয়ন সূচকের ক্ষেত্রে উন্নতি করেছে বাংলাদেশ৷ কিন্তু যখন মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখানোর, যেমন নির্যাতন ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর থেকে বিধিনিষেধ তুলে দেয়ার মতো বিষয় আসে – তখন তার সঙ্গে ঐ উন্নয়ন খাপ খায় না৷ আমরা একটি প্রবণতা প্রমাণ্য আকারে ধরতে পেরেছি৷ তা হলো, অব্যাহত গুমের জন্য দায়ী প্রধানত নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী, যদিও তারা তা অস্বীকার করে৷ তাই সরকারের উচিত তার নিজস্ব বাহিনীর ব্যাপরে এ বিষয়ে দীর্ঘ ও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া এবং এ সব ঘটনায় জবাবদিহির যে ঘাটতি আছে, তা পূরণ করা৷''
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ২০১২ সাল থেকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে কমপক্ষে ২০টি গুমের ঘটনা অনুসন্ধান করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ তবে বাস্তবে এ সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতে পারে৷২০ জন মানুষের মধ্যে ন'জনকে পাওয়া গেছে মৃত৷ আটক রাখার দু'মাস পরে বাড়িতে ফিরতে পেরেছেন ছ'জন৷ পাঁচজনের খোঁজ মেলেনি৷ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত অপহরণের ঘটনা ঘটেছে অনেক৷ এতে ‘টার্গেট' করা হয়েছে বিরোধী দলগুলোর সদস্যদের৷ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশ বা তাদের বিশেষ বাহিনী ব়্যাবের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে অভিযোগ করেছেন৷ কিন্তু এ সব অভিযোগ নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর ভূমিকার কোনো জবাবদিহিতা নেই৷ এর মধ্যে এ বছরের এপ্রিল মাসে নারায়ণগঞ্জে সাতটি অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় ব়্যাবের কর্মকর্তাদের মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ মানুষের ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে পুলিশ সেই খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে তিন ব়্যাব কর্মকর্তাকে আটক করেছে৷ কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে এখনো অভিযোগ দাখিল করা হয়নি৷
আব্বাস ফয়েজ বলেন, নারায়ণগঞ্জের ঘটনাটি ছিল বাংলাদেশের আইনি প্রক্রিয়ার জন্য ‘লিটমাস টেস্ট'৷ যেহেতু ব়্যাবের সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাই তা ইতিবাচক৷
র্যাব – বিতর্কিত এক বিশেষ বাহিনী
শুরুটা হয়েছিল ২০০৪ সালে৷ সেসময় বাঘা বাঘা জঙ্গিদের কুপোকাত করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায় ব়্যাব৷ কিন্তু অসংখ্য ক্রসফায়ার, অপহরণ, হত্যার দায়ে এখন সমালোচিত এই ‘এলিট ফোর্স’৷ র্যাব নিয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: Getty Images/AFP
‘এলিট ফোর্স’
বাংলাদেশে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব নামক ‘এলিট ফোর্স’-এর যাত্রা শুরু হয় ২০০৪ সালে৷ এই বাহিনীর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ‘‘পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রমকে আরো গতিশীল ও কার্যকর করার লক্ষ্যে সরকার একটি এলিট ফোর্স গঠনের পরিকল্পনা করে৷’’ তবে এই বাহিনী এখন তুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন মহল৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
সমন্বিত বাহিনী
বাংলাদেশ পুলিশ, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে র্যাব গঠন করা হয়৷ এই বাহিনীর উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে সন্ত্রাস প্রতিরোধ, মাদক চোরাচালান রোধ, দ্রুত অভিযান পরিচালনা এবং জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন কার্যক্রমে নিরাপত্তা প্রদান৷
ছবি: Getty Images/AFP
জঙ্গি তৎপরতা দমন
শুরুর দিকের ব়্যাবের কার্যক্রম অবশ্য বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিল৷ বিশেষ করে ২০০৫ এবং ২০০৬ সালে বাংলাদেশে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা উগ্র ইসলামি জঙ্গি তৎপরতা দমনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে র্যাব৷
ছবি: AP
জেএমবির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার
বাংলাদেশের ৬৩ জেলায় ২০০৫ সালে একসঙ্গে বোমা ফাটিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করা জেএমবির শীর্ষ নেতাদের আটক ব়্যাবের উল্লেখযোগ্য সাফল্য৷ ২০০৬ সালের ২ মার্চ শায়খ আব্দুর রহমান (ছবিতে) এবং ৬ মার্চ সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাইকে গ্রেপ্তারে সক্ষম হয় ব়্যাব৷ একাজে অবশ্য পুলিশ বাহিনীও তাদের সহায়তা করেছে৷
ছবি: DW
ভুক্তভোগী লিমন
২০১১ সালে লিমন হোসেন নামক এক ১৬ বছর বয়সি কিশোরের পায়ে গুলি করে এক ব়্যাব সদস্য৷ গুলিতে গুরুতর আহত লিমনের বাম পা উরুর নীচ থেকে কেটে ফেলতে হয়৷ এই ঘটনায় ব়্যাবের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদের ঝড় ওঠে৷ তবে এখনো সুবিচার পায়নি লিমন৷ উল্টো বেশ কিছুদিন কারাভোগ করেছেন তিনি৷
ছবি: DW
‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’
জঙ্গিবাদ দমনে সাফল্য দেখালেও ক্রসফায়ারের নামে অসংখ্য ‘বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের’ কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব়্যাবের বিরুদ্ধে সমালোচনা ক্রমশ বাড়তে থাকে৷ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ব়্যাবের বিলুপ্তি দাবি করে জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই বাহিনী ‘সিসটেমেটিক’ উপায়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে৷
ছবি: DW
‘ক্রসফায়ার’
বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পর্যালোচনা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালে ব়্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন ২৪ জন৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দাবি অনুযায়ী, ২০০৪ থেকে ২০১১ সালের আগস্ট পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে কমপক্ষে সাতশো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ব়্যাব জড়িত ছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আলোচিত সাত খুন
২০১৪ সালের মে মাসে ব়্যাবের বিরুদ্ধে ৬ কোটি টাকা ঘুসের বিনিময়ে সাত ব্যক্তিকে অপহরণ এবং খুনের অভিযোগ ওঠে৷ নারায়ণগঞ্জে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিন ব়্যাব কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ৷ এই ঘটনার পর ব়্যাবের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আবারো বিতর্ক শুরু হয়েছে৷
ছবি: DW
প্রতিষ্ঠাতাই করছেন বিলুপ্তির দাবি
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, ব়্যাবের বিলুপ্তি দাবি করেছেন৷ অথচ তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই ‘এলিট ফোর্স’৷
ছবি: DW/M. Mamun
বিলুপ্তির দাবি নাকচ
বাংলাদেশে এবং আন্তর্জাতিক স্তর থেকে ব়্যাবকে বিলুপ্তির দাবি উঠলেও বর্তমান সরকার সেধরনের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না৷ বরং তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ব়্যাব বিলুপ্তির দাবি নাকচ করে দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘র্যাবের কোনো সদস্য আইন ভঙ্গ করলে তাদের চিহ্নিত করে বিচারিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়৷’’
ছবি: Getty Images/AFP
10 ছবি1 | 10
প্রতিহিংসা আর ধ্বংসের নির্মম রাজনীতি আর কতকাল
বাংলাদেশে হরতাল, অবরোধ নতুন কিছু নয়৷ বড় দুটো দলতো বটেই, অনেক ছোট দলও অতীতে এমন কর্মসূচি দিয়েছে৷ জনদুর্ভোগ বেড়েছে, সম্পদ বিনষ্ট এবং প্রাণহানিও হয়েছে৷ তবে সাম্প্রতিক হরতাল, অবরোধগুলো দুঃস্বপ্নকেও হার মানিয়েছে৷
ছবি: JEWEL SAMAD/AFP/Getty Images
হামলার শিকার সাংবাদিক
বাংলাদেশে সাংবাদিক নির্যাতন এবং হত্যার ঘটনা আগেও ঘটেছে৷ এখনো সাগর-রুনি হত্যার বিচার হয়নি৷ তবে বিরোধী দলের কর্মসূচিতে সাংবাদিকের আহত হওয়ার ঘটনা চলমান আন্দোলনেই প্রথম ঘটছে৷ এ বছর হেফাজত-এ-ইসলামের সমাবেশে প্রহৃত হন সাংবাদিক নাদিয়া শারমিন৷ গত দুই সপ্তাহে হরতাল এবং অবরোধের সময় ককটেল হামলায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক৷ ছবিতে নাদিয়া শারমিনের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানাতেচ্ছেন নারী সংগঠন কর্মীরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
যানবাহনে আগুন, রেললাইন উপড়ানো
হরতাল-অবরোধ মানেই রাস্তায় যানচলাচল বন্ধ৷ কর্মসূচির এ লক্ষ্য পূরণের পথে বাধা হলে গাড়ি ভাঙচুর এবং আগুন লাগানো বাংলাদেশে অনেক দিন ধরেই স্বাভাবিক ঘটনা৷ তবে গত এক বছরে জ্বালাও-পোড়াওয়ের এই ধ্বংসলীলা অন্য মাত্রা পেয়েছে৷ হরতালের আগের রাতেই শুরু হয়ে যায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ৷ তাই বিরোধী দল ঘোষণা অনুযায়ী কর্মসূচি পালন শুরুর আগেই জনমনে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক৷ ছবিতে মোটর সাইকেলে পেট্রোল ঢালছেন জামায়াত কর্মীরা৷
ছবি: Reuters/Andrew Biraj
শিশুরাও অসহায়, নিরাপত্তাহীন
যানবাহনে ঘুমন্ত চালক, হেল্পার বা চালকের সন্তানের আগুনে ঝলসে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে৷ ঢাকা শহর দেখতে এসে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছে কাভার্ডভ্যান চালকের সন্তান মুনির৷ এমন হতভাগ্যদের তালিকায় আরো নাম যোগ হয়েছে৷ স্কুলে, রাস্তায়, এমনকি বাড়িতেও শিশুদের জীবন সংকটাপন্ন দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউনিসেফ৷ছবিতে সর্বশেষ অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে স্লোগানরত জামায়াত কর্মীরা৷
ছবি: Reuters/Andrew Biraj
নিরাপত্তা কর্মীদেরও নিরাপত্তার অভাব
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের কারণে রায় ঘোষণার পর নেতাদের শাস্তির আদেশ প্রত্যাহার এবং মুক্তির দাবিতে জামায়াত-ই-ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবির পুলিশের ওপর ব্যাপক হামলা চালিয়েছে৷ হামলায় নিহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী৷ রাজশাহীতে দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশ সদস্যের মাথা ইটের আঘাতে থেতলে দেয়া হয়৷ বিরোধী দলের সর্বশেষ অবরোধ কর্মসূচিতেও কর্মরত পুলিশ ও বিজিবি সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন দায়িত্বরত অবস্থায়৷
ছবি: Getty Images/Afp/Munir uz ZAMAN
সংখ্যালঘুদের বাড়ি-মন্দিরে আগুন
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদেরও জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে অনেক সময়৷ তবে শীর্ষ নেতাদের শাস্তি ঘোষণার পর জামায়াত ও শিবিরের কর্মীরা সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘর-মন্দির-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক হামলা চালায়৷ ছবিতে নিজের শিশুসন্তান কোলে সাতক্ষিরার অমিয় দাশ৷ ঘরবাড়িতে লুটপাট, অগ্নিসংযোগের সময় শিশুটিকে আগুনে ছুড়ে মারতে চেয়েছিল শিবির কর্মীরা৷
ছবি: Shayantani Twisha
কবে হবে অবসান!
প্রধান বিরোধীদল বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিকে অগ্রাহ্য করে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টি ও মহাজোটের শরিক কয়েকটি দল নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করেছে৷ ফলে রাজনীতির মাঠে উত্তেজনা বেড়েছে৷ ৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নিয়ে তফশিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন৷ তারপর থেকে বিরোধী দলের হরতাল, অবরোধ চলছে প্রায় বিরামহীনভাবে৷
ছবি: JEWEL SAMAD/AFP/Getty Images
6 ছবি1 | 6
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে গুমের ঘটনা বেড়ে গেছে৷ ঐ ব্যক্তিদের তাঁদের পরিবারের কাছে ফিরয়ে দেয়া এবং তাঁদের বর্তমান অবস্থান জানানো সরকারের দায়িত্ব৷ কারণ এই সব ঘটনার সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে৷''
তিনি বলেন, ‘‘গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা ঢাকায় গত সপ্তাহে তাঁদের পরিবারের করুন কাহিনি তুলে ধরেছেন৷ এক ব্যক্তি গুম হলে শুধু তিনিই গুম হন না, একটি পরিবারেও বিপর্যয় নেমে আসে৷''
নূর খান বলেন, ‘‘সরকারের উচিত হবে এই সব গুমের ব্যাপরে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা৷ তাছাড়া সেই তদন্ত কমিশনের প্রাপ্ত ফলাফলকে আমলে নিয়ে গুমের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া৷ একই সঙ্গে তাদের সুপারিশও বাস্তবায়ন করা৷''