গুলি, গোলা, মিসাইলের মধ্যে ইউক্রেনে বাসিন্দাদের উদ্ধার
২৩ মে ২০২৪
খারকিভের উত্তরে আক্রমণ আরো তীব্র করেছে রাশিয়া, মানুষকে পালাতে সাহায্য করছে ইউক্রেনের পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
ভ্লাদিস্লাভ ইয়েফারভের গাড়িতে অসংখ্য গুলি লাগার চিহ্ন আছে। কিছুদিন আগের ঘটনা। ইয়েফারভ ও তার সহকর্মী ইয়ারেমচুকের গাড়ির উপর রাশিয়ার স্নাইপাররা গুলি চালাতে থাকে। দুজনেই ইউক্রেনের পুলিশ কর্মী। তারা ভভশাঙ্ক শহরে একজন বয়স্কা নারীকে আনতে যাচ্ছিলেন। ইয়েফারভ বলছিলেন, অ্যামেরিকায় তৈরি একটি সাঁযোয়া গাড়ি এসে তাদের বাঁচায়। তবে ওই নারীকে আর নিয়ে আসতে পারেননি তারা।
গত দুই সপ্তাহ ধরে এই দুই পুলিশ কর্মী খারকিভের উত্তরের জায়গাগুলি থেকে মানুষকে সরিয়ে আনার কাজে ব্যস্ত। গত ১০ মে থেকে রাশিয়া ইউক্রেনের সীমানায় নতুন করে আক্রমণ শুরু করেছে বলে ইউক্রেন সরকার দাবি জানিয়েছে। কয়েকটি গ্রামও তারা দখল করে নিয়েছে। তারপর থেকে দুই পুলিশ কর্মীর ব্যস্ততা অনেক বেড়েছে।
ইয়েফারভ বলছিলেন, ''এখন লড়াই চলছে বলে ওই জায়গাগুলিতে বসবাস করা বিপজ্জনক। রাশিয়া সমানে আবাসিক এলাকায় গোলা ফেলছে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলাও চলছে।ইউক্রেনে নতুন অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া।''
আমরা ইয়ারেচুকের গাড়ির পিছন পিছন যেতে শুরু করলাম। তিনি আমাদের জানিয়ে দিলেন, ''শহরে পৌঁছাবার আগে গাড়ি যতটা জোরে সম্ভব চালাতে হবে। কারণ, রাশিয়ার সেনা ওখানে গাইডেড অ্যান্টি ট্যাংক মিসাইল দিয়ে আক্রমণ করছে।''
'এক মিনিটে তৈরি হয়ে যাব'
ভালোদিমির ভভশাঙ্কের দক্ষিণ দিকে থাকেন। আমরা অলি-গলি দিয়ে তার বাড়ির দিকে যেতে শুরু করলাম। রাস্তার ধারে একাধিক বাড়ি বোমায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে আছে।
কে-পপ, অ্যানিমে ও কসপ্লে: রাশিয়ায় যুদ্ধের ‘উপহার’
এক সময় অনেকে জানতে চাইতেন, ‘‘কে-পপ কী জিনিস?’’ অ্যানিমে বা কসপ্লেও চিনতেন না অনেক তরুণ-তরুণী৷ ‘ইউক্রেন যুদ্ধ’ শুরুর পর সেই রাশিয়ায় কে-পপ, অ্যানিমে আর কসপ্লে কিভাবে রাতারাতি জনপ্রিয়তা পেলো জেনে নিন তার পেছনের গল্প...
ছবি: Maxim Shemetov/REUTERS
কারিনা মারাকশিনার বিস্ময়
এক বছর আগেও নিজের ড্যান্স স্টুডিয়োয় এসে অনেকে জানতে চাইতেন, ‘‘কে-পপ আসলে কী জিনিস?’’ মাত্র এক বছরে আমূল বদলে গেছে পরিস্থিতি৷ তার জেএসএস স্টুডিয়োর প্রচার, প্রসার তো বেড়েছেই, এমন অনেক স্টুডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে৷ কারিনা আজকাল অনেক শপিং মলে গিয়ে অবাক হয়ে যান এই ভেবে, ‘‘আরে, এখানেও কে-পপ বাজছে!’’
ছবি: Maxim Shemetov/REUTERS
রাশিয়ায় কে-পপ, কসপ্লে ও অ্যানিমের জয়জয়কার
শুধু কে-পপ কেন, খুব অল্প সময়ে অ্যানিমে এবং কসমোপ্লে-ও লুফে নিয়েছে রাশিয়ার তরুণ প্রজন্মের উল্লেখযোগ্য একটা অংশ৷গত নভেম্বরে মস্কোয় আয়োজিত হলো কসমোপ্লে-র দুর্দান্ত এক উৎসব৷ এক হাজারেরও বেশি কসপ্লেয়ার বেগুনি পরচুলা আর ঐতিহ্যবাহী কিমোনো পরে নানা জনপ্রিয় চরিত্র হয়ে এসে মাতিয়ে রেখেছেন পুরো আসর৷
ছবি: Maxim Shemetov/REUTERS
নেপথ্যের কারণ
রাশিয়ায় কে-পপ, অ্যানিমে এবং কসপ্লে-র জোয়াড় শুরুর প্রধান কারণ ইউক্রেন যুদ্ধ৷ ইউক্রেনে হামলা করায় রাশিয়ার ওপর নেমে আসে পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞা৷বন্ধ হয়ে যায় বিদেশি পণ্য আমদানি, রুশ নাগরিগদের জন্য রুদ্ধ হয়ে যায় পশ্চিমা দেশগুলোর দরজা৷ ফলে রাশিয়ায় বিনোদনের জগতও হয়ে যায় সংকুচিত৷ পাশ্চাত্যের মুখ ফিরিয়ে নেয়ার ওই সময়েই রাশিয়ার তরুণ সমাজ ঝুঁকে পড়ে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং চীনের সাংস্কৃতিক পণ্যের দিকে৷
ছবি: Maxim Shemetov/REUTERS
এশিয়ায় মজেছে রাশিয়া
কারিনা মারাকশিনা তার জিএসএস স্টুডিয়ো প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ২০১৬ সালে৷ ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দ্রুত শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে গেছে জিএসএস৷ কারিনা মনে করেন এর প্রধান কারণ রাশিয়ার কিশোর এবং তরুণদের এশিয়ার প্রতি ঝুঁকে পড়া, ‘‘আজকাল তো আমি যেই টিনএজারের সঙ্গেই কথা বলি, দেখি সে-ই এশিয়ায় বুঁদ হয়ে আছে৷’’ তিনি জানান, কসমোপ্লে আর অ্যানিমে যথেষ্ট গ্রহণযোগ্যতা পেলেও রাশিয়ায় কে-পপের জনপ্রিয়তাই বেশি৷
ছবি: Maxim Shemetov/REUTERS
একতার অনুভূতি
জিএসএস স্টুডিয়োর কোরিওগ্রাফার পলিনা ইভানভস্কায়া৷ তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ‘‘কে-পপের কোন বিষয়টা আপনার সবচেয়ে ভালো লাগে?’’ জবাবে পলিনা বললেন, ‘‘একসঙ্গে কাজ করার অনুভূতি৷ আমরা যে সবসময় একটা গ্রুপ হিসেবে নাচি- এই বিষয়টাই সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে৷ এই নাচটা একটা গ্রুপে এক হয়ে যাওয়ার একটা অনুভূতি দেয় আমাদের৷’’
ছবি: Maxim Shemetov/REUTERS
5 ছবি1 | 5
ভালোদিমিরের বাড়িতে পৌঁছাবার পর হঠাৎ, পুলিশ আমাদের শুয়ে পড়তে বললো। কারণ, বোমা বিস্ফোরণের শব্দ এসেছে।
ভালোদিমিরের কোনো তাড়া ছিল না। তিনি শর্টস ও টি শার্ট পরে ওয়াড্রোব থেকে জামাকাপড় বার করতে থাকলেন। পুলিশ তাকে বললো, ''দ্রুত করুন।'' তিনি বললেন, ''এক মিনিটে তৈরি হয়ে আসছি।'' বাড়ির সব বন্ধ জানালা ঝনঝন করে উঠলো। কারণ, পাশের একটি বাড়িতে গোলা এসে পড়েছে।
ইয়েফারভ ব্যাগ নিয়ে গাড়িতে রাখলেন। বাড়ির চত্বরে একটা কুকুর ছিল। ইয়েফারভ চেইন জোগাড় করে কুকুরের গলায় লাগিয়ে বললেন, ''তুমিও আমাদের সঙ্গে চলো।'' ভালোদিমির চারপাশটা দেখে নিচ্ছিলেন। দ্রুত আমরা খারকিভ শহরের দিকে যেতে শুরু করলাম।
আমরা যখন অর্ধেক রাস্তায় পৌঁছেছি, তখন ভালোদিমিরের মেয়ে মারিয়ানার সঙ্গে দেখা হলো। সে নিজেও পুলিশকর্মী। বাবাকে আলিঙ্গন করে বললেন, ''এত দেরি করলে কেন?'' একগাদা ব্যাগ দেখে মাথা নাড়তে লাগলেন।
ভালোদিমির বলছিলেন, ''আমার খুব খারাপ লাগছে। আমার ৬৬ বছর বয়স। আমি আর কোনোদিন আমার জায়গায় ফিরতে পারব না।''
মেয়ে বললেন, ''বাড়ি ছেড়ে যাওয়া খুবই কষ্টের।''
রাশিয়ার অধিকারে ছিল
এই শহর রাশিয়ার সীমান্ত থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে। ২০২২ সালের ২৪ মে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর প্রথম দিনেই এই শহর দখল করে নেয়।
ইয়েফারভ জানালেন, তখন মানুষদের বের করে আনা অসম্ভব ছিল। তিনি ও তার কিছু সহকর্মী অল্প কিছু অস্ত্র ও কাগজপত্র নিয়ে পালাতে পেরেছিলেন। তাদের কিছু সহকর্মী রাশিয়ার সেনার সঙ্গে সহয়োগিতা করতে রাজি হয়ে যান।
ইউক্রেনের পঙ্গু সৈনিকদের নতুন জীবন
রাশিয়ার সঙ্গে সম্মুখসমরে অঙ্গ হারিয়েছেন অনেক ইউক্রেনীয় সেনা৷ কেমন করে তারা খাপ খাইয়ে নিচ্ছেন এই নতুন জীবনে?
ছবি: Thomas Peter/REUTERS
নতুন করে শেখা
ওলেকজান্দর রেভতিউখ (মাঝে) কোচের বক্সিং মিটে সজোরে আঘাত করছেন৷ ৩৩ বছর বয়সি এই ইউক্রেনীয় রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে তার বাঁ হাত ও বাঁ পা হারিয়েছেন৷ দেশটির দক্ষিণাংশে জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলে মাটিতে পুঁতে রাখা মাইনে তার অঙ্গহানি হয়৷ তিনি বলেন, ‘‘অবস্থা অনেকটা নবজাতকের মতো৷ সবকিছু শুরু থেকে শিখতে হচ্ছে৷’’
ছবি: Thomas Peter/REUTERS
অসংখ্য যোদ্ধার পঙ্গুত্ব বরণ
যুদ্ধে এখন পর্যন্ত কতজন পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন তার আনুষ্ঠানিক কোনো ড্যাটা নেই৷ তবে সংখ্যাটি ২০ থেকে ৫০ হাজার হবে বলে ধারণা মানবাধিকার সংগঠন প্রিন্সিপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মাসি নায়েম৷ যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তারা একাকীত্বে ভোগেন এবং সামাজিক বৈষম্যের শিকার হন বলে জানান তিনি৷
ছবি: Thomas Peter/REUTERS
পরিবর্তন ও অন্তর্ভুক্তি
মাইন বিস্ফোরণে দুই পা হারানো আন্দ্রিই পিলিপচুকের বয়স ২৮ বছর৷ তিনি বলেন, ‘‘তারা যখন আমার ডান পা কেটে নিলেন, আমি মন খারাপ করিনি৷ কারণ এটি এতটাই থেঁতলে গিয়েছিল, যে একে বাঁচানো সম্ভব ছিল না৷ কিন্তু তারা যখন আমার বাঁ পাটিও কেটে নিলেন তখন আমি খুব কষ্ট পেয়েছি৷’’
ছবি: Thomas Peter/REUTERS
কোন পথে ভবিষ্যৎ?
সন্তান ঘরে ফেরার পর তাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন ওলেকজান্দর রেভিতুখের মা৷ রেভিতুখ আগে হাঙ্গেরিতে ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করতেন৷ যুদ্ধ শুরুর দুই মাসের মাথায় তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন৷ এখন তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে প্রবীণ যোদ্ধাদের নানা বিষয়ে পরামর্শ দেন৷ তার ভাবাদর্শ হলো, পথ কোথাও না কোথাও খোলা আছে৷
ছবি: Thomas Peter/REUTERS
যুদ্ধক্ষেত্রে ফেরত
অঙ্গ হারিয়েও কেউ কেউ যুদ্ধে ফেরত গেছেন৷ ২৮ বছর বয়সি ম্যাঙ্গো মৌরিপোলে একটি হাত হারান৷ এমনকি রাশিয়ানরা বন্দিও করেছিল তাকে৷ ফেরত এসে তিনি তার কমান্ডার ও কর্তৃপক্ষকে বোঝাতে সমর্থ হন যে, তিনি ডিউটিতে ফিরতে পারবেন৷ যদিও তিনি আর ট্যাঙ্ক চালাতে পারবেন না, একটি বায়োনিক হাত পাবার আশা তার৷
ছবি: Thomas Peter/REUTERS
রোবোড্যাড
রাশিয়ানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে চারটি হাত-পা-ই হারান ৪০ বছর বয়সি আন্তন ইভান্তসিভ৷ ‘‘যখন আমি বুঝতে পারলাম আমি আর কখনো পুরোপুরি আমার সন্তান ও স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরতে পারব না, এটা মেনে নেয়া কঠিন ছিল,’’ বলেন তিনি৷ তার বায়োনিক হাত পা আছে, যা দিয়ে তিনি দৈনন্দিন জীবনে ফিরে আসতে পেরেছেন৷ তবে তখন থেকে তার সন্তানেরা তাকে ‘রোবোড্যাড’ বলে ডাকে৷
ছবি: Thomas Peter/REUTERS
অল্প অল্প করে ফেরা
আহত হবার পর নৌসেনা রোস্তিস্লাভ প্রিস্তুপা আংশিকভাবে প্যারালাইজড হয়ে গিয়েছিলেন৷ বন্ধুরা তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সহায়তা করছেন৷ তিনিও মনে করেন, বাঁচতে হলে ফিরতে হবে৷ প্রতি বছর যুদ্ধের কারণে প্রতিবন্ধী যুদ্ধফেরত ইউক্রেনীয়দের সংখ্যা বাড়ছে৷
ছবি: Thomas Peter/REUTERS
নেটওয়ার্ক: বন্ধু ও পরিবার
নিঝিনে ওলেকজান্দর রেভিতুখ তার দাদীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন৷ তার পরিবার তাকে সহায়তা করছে৷ তিনিও মনে করেন, ফিরতে পারবেন স্বাভাবিক জীবনে৷ তিনি এখন মোটিভেশনাল কোচ হিসেবে কাজ করার চেষ্টা করছেন৷ ভবিষ্যতে শিক্ষক হতে চান৷
ছবি: Thomas Peter/REUTERS
8 ছবি1 | 8
দুই মাস পর রাশিয়া শহরের মানুষদের ইউক্রেনে ফেরার অনুমতি দেয়। ভলোদিমির ও মারিয়ানা থেকে গিয়েছিলেন। রাশিয়ার সেনা মারিয়ানাকে চাকরি দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তিনি করেননি।
২০২২-এর শেষের দিকে ইউক্রেনের বাহিনী এই শহরকে মুক্ত করে। তারপর থেকে রাশিয়ার সেনা শহরের উপরে গোলা ফেলে যাচ্ছে। মারিয়ানা খারকিভে চলে যান। তিনি আবার পুলিশে চাকরি পান। আর তার বাবা ওই গোলাগুলির মধ্যেই শহরে থেকে যান।
মাত্র দুইশ জন আছেন
একসময় এই শহরে ১৭ হাজার মানুষ থাকতেন। যুদ্ধ শুরুর পর অনেকে চলে যান, মাত্র সাড়ে তিন হাজার মানুষ থেকে যান। এখন সেখানে বাস করছেন মাত্র দুইশ জন।
বেশ কিছু মানুষ অভিযোগ করেছেন, সম্প্রতি তারা শহরের উত্তর দিকে গেছিলেন, তখন রাশিয়ার সেনা তাদের ধরে একটা সেলারে রাখে। পরে রাশিয়ার সেনা যখন অন্য একটা রাস্তায় চলে যায়, তখন তারাও পালান।
অল্প সময়ের মধ্যে রাশিয়ার সেনা তাদের উপর কী ধরনের অত্যাচার করেছে, সেই সব কাহিনি তারা শোনাতে থাকলেন। দারিয়া জানালেন, তাদের একটি গ্রামে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তারা ছয়দিন ছিলেন। সেখানে কোনো বাড়ি অক্ষত ছিল না। গোলার আঘাতে সব ভেঙে গেছে। তারা যেখানে ছিলেন, সেই বাড়ির সামনের বাগানে একটি না ফাটা বোমা পড়ে ছিল।
পুলিশ তাদের রাস্তায় আসতে পারছিল না। তাই তাদের নিজেরাই চেষ্টা করে শহরের বাইরে পৌঁছান। ড্রোন দিয়ে আক্রমণ চলছে, গোলা এসে পড়ছে। তার মধ্যে তারা পালাতে থাকেন। তিনি তার কুকুরকে নিয়ে আসতে পারেননি বলে এখনো কষ্ট পান।
'মানুষ মরিয়া হয়ে গেছে'
ইয়েফারভ বলছিলেন, ''প্রথমে মানুষ পালাতে চাইছিলেন না। কিন্তু তারপর তারা আমাদের ডাকতে থাকেন, বলতে থাকেন, তাদের নিয়ে যেতে। কিন্তু ক্রমশ শহরে ঢোকা পুলিশের পক্ষেও বিপজ্জনক হয়ে যায়। এখন মানুষকে বলা হয়, তাদের একটা জায়গায় আসতে হবে। তারপর সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করা হবে। কখনো সেটা কয়েক কিলোমিটার দূরেও হয়। মানুষ মরিয়া হয়ে গেছেন। তারা সেখানেই আসছেন।''
ইয়েফারভ জানালেন, ''একবার ফোন বাজলো। দুই নারী একটা গ্রামে অপেক্ষা করছেন। তাদের বাড়িতে ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়েছে। আমরা তড়িঘড়ি করে গেলাম। কিন্তু দুই নারীর দেখা পেলাম না। রাস্তায় ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়েছিল। আমরা মিসাইলের অংশগুলি গাড়ির মাথায় চাপিয়ে নিলাম। প্রতিটি গোলা, ক্ষেপণাস্ত্র তো প্রমাণ করে, কীভাবে আক্রমণ করা হয়েছে।''