গৃহকর্মীদের কাজ এখনো প্রাতিষ্ঠানিক বা আইনি স্বীকৃতি পায়নি বাংলাদেশে৷ তাই আজও তাঁরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, মজুরি পাচ্ছেন কম৷ এঁদের জন্য নির্দিষ্ট কোনো শ্রমঘণ্টা নেই, নেই ইচ্ছামত কোথাও যাওয়ার অধিকার৷
বিজ্ঞাপন
ধারণা করা হয়, বাংলাদেশে এখন ২৫ লাখ গৃহকর্মী বা গৃহশ্রমিক আছেন৷ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জাতীয় শিশুশ্রম জরিপ-২০১০ অনুযায়ী দেশে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে এমন শিশুর সংখ্যা ১ লাখ ২৫ হাজার, যাদের বয়স ৫-১৭ বছর৷ আর এর মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগই মেয়েশিশু৷
এর আগে ২০০৭ সালে ইউনিসেফ পরিচালিত জরিপে বলা হয়, বাংলাদেশে ৪ লাখ ২০ হাজার গৃহকর্মী রয়েছেন৷ এর মধ্যে ঢাকা শহরে বিভিন্ন বাসায় নিয়োজিত আছে ১ লাখ ৪৭ হাজার, যাঁদের সবার বয়স ৭ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে৷
এছাড়া বাংলাদেশ লেবার ফোর্স সার্ভে-২০০৬ অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৫ বছরের ওপরে বয়সের গৃহকর্মীর সংখ্যা ৩ লাখ ৩১ হাজার৷ তাদের হিসেব মতে, মোট গৃহকর্মীদের শতকরা ৬০ ভাগেরও বেশি নারী৷
কেমন আছে অন্য দেশের গৃহকর্মীরা?
বাংলাদেশে গৃহকর্মীদের অবস্থা কখনই ভালো ছিল না, এখনও নেই৷ তাঁদের রক্ষায় নেই কোনো আইন৷ কিন্তু বিশ্বের আর অন্যান্য দেশে তাঁদের কী অবস্থা? সেই তথ্যই থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/empics/L. Hurley
পাঁচ কোটি ৩০ লক্ষ
২০১৩ সালে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা, আইএলও-র এক প্রতিবেদন বলছে, সারা বিশ্বে গৃহকর্মীর সংখ্যা প্রায় ৫৩ মিলিয়ন৷ এর মধ্যে ৮৩ শতাংশই নারী৷ তবে প্রকৃত সংখ্যাটি যে আরও কয়েক মিলিয়ন বেশি হতে পারে, সে কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে৷ এদিকে ১৫ বছরের কমবয়সি শিশু গৃহকর্মীদের সংখ্যা আইএলও-র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি – ২০০৮ সালে এই সংখ্যাটি ছিল ৭৪ লক্ষ৷
ছবি: AP
আইনের বাইরে
আইএলও-র প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বের গৃহকর্মীদের প্রায় ৩০ শতাংশই শ্রম আইনের সুবিধাবঞ্চিত৷
ছবি: DW
সাপ্তাহিক ছুটি
বিশ্বের প্রায় অর্ধেক (৪৫ শতাংশ) গৃহকর্মী সাপ্তাহিক ছুটি পান না৷ তাছাড়া তাঁদের এমন কোনো বার্ষিক ছুটি নেই, যার জন্য তাঁদের অর্থ প্রাপ্য (পেইড লিভ)৷
ছবি: DW/M. Krishnan
প্রসূতি সুরক্ষা
প্রতি তিনজনের একজন গৃহকর্মী এই সুবিধা পায় না বলে জানিয়েছে আইএলও৷
ছবি: Sam Panthaky/AFP/Getty Images
বছরে ৮ বিলিয়ন ডলার!
গৃহকর্মী মানেই যেন কম টাকা দিয়ে বেশি ঘণ্টা কাজ করানো৷ এভাবে গৃহকর্মীদের প্রতারিত করে তাঁদের নিয়োগদাতারা অবৈধভাবে বছরে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার আর্থিক সুবিধা পাচ্ছে বলে জানিয়েছে ‘ইন্টারন্যাশনাল ডমেস্টিক ওয়ার্কার্স ফেডারেশন’৷
ছবি: imago/imagebroker
‘কাফালা’ যেন দাসপ্রথার অন্য রূপ
গাল্ফ দেশগুলোতে এই ব্যবস্থা থাকার কারণে গরিব দেশ থেকে সেখানে যাওয়া গৃহকর্মীরা নির্যাতনের শিকার হলেও তাঁদের নিয়োগদাতাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারে না৷ কারণ কাফালা ব্যবস্থার কারণে নির্যাতিতরা চাইলেও নিয়োগদাতার ছাড়পত্র ছাড়া দেশ ত্যাগ করতে পারেন না৷ ‘ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন’ এই অবস্থাকে দাসত্বের সঙ্গে তুলনা করেছে৷ আইএলও-র হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে গৃহকর্মীর সংখ্যা প্রায় ২১ লক্ষ৷
ছবি: AP
হংকংয়ে গৃহকর্মীদের অবস্থা
তিন হাজার গৃহকর্মীর উপর চালানো এক জরিপে উত্তরদাতাদের প্রায় ৫৮ শতাংশ বলেছে, তাঁদের মৌখিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে৷ ১৮ শতাংশ তাঁদের উপর শারীরিক নির্যাতনের কথা বলেছে৷ আর যৌন হয়রানির কথা জানিয়েছে ৬ শতাংশ৷
ছবি: Miguel Candela/TRANSTERRA
বাড়ি তো নয়, যেন কারাগার!
উন্নত দেশ অস্ট্রেলিয়াতেও ভালো নেই গৃহকর্মীরা৷ ২০১৪ সালের এক প্রতিবেদনে সেখানে গৃহকর্মীদের সর্বোচ্চ ১৬ ঘণ্টা কাজ করানো, বেতন না দেয়া ও শারীরিক নির্যাতনের কথা বলা হয়েছে৷ প্রতিবেদনে অস্ট্রেলিয়ার ব্যক্তিমালিকানাধীন বাড়িগুলোকে ‘কারাগার’-এর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে৷
ছবি: Fotolia/apops
একা বাড়ির বাইরে নয়
না, ছোট্ট শিশুদের কথা বলা হচ্ছে না৷ ইংল্যান্ডের মতো দেশে প্রায় ৬০ শতাংশ গৃহকর্মীদের একা বাড়ির বাইরে যেতে দেয়া হয় না বলে জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা ‘কালায়ন’৷
ছবি: picture-alliance/dpa/empics/L. Hurley
9 ছবি1 | 9
গৃহকর্মী নির্যাতন
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাবে, ২০১৩ সালে অন্তত ১০০ জন গৃহকর্মী বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন৷ এঁদের মধ্যে ৩৮ জন শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন, যাঁদের মধ্যে ২০ জনের বয়স ৭-১২ বছরের মধ্যে৷ জানা যায়, শারীরিক নির্যাতনের পর মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের৷ অন্যান্য নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের৷ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৩ জন আর ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৩ জনকে৷ এছাড়া আত্মহত্যা করেছেন ৮ জন এবং গর্ভপাতকালে মৃত্যু হয়েছে একজনের৷ ওদিকে পুলিশের হিসাব অনুযায়ী, গত বছরের শেষ চারমাসে ১০৭ জন গৃহকর্মী আত্মহত্যা করেছেন বাংলাদেশে৷
‘ডোমেস্টিক ওয়াকার্স রাইটস নেটওয়ার্ক'-এর হিসাব অনুযায়ী, ২০০১ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে শুধু ঢাকাতেই ৫৬৭ জন গৃহকর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে৷ সংস্থাটির মতে, বাংলাদেশে গৃহকর্মীদের মধ্যে প্রায় ৩০ ভাগের বয়স ৬ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে৷ শুধু তাই নয়, এই শিশুদের মধ্যে ১৭ ভাগই কোনো না কোনো নির্যাতনের শিকার হয়৷
সাধারণভাবে বাংলাদেশের গৃহকর্মীরা প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টা কাজ করে প্রতি মাসে গড়ে ৫১০ টাকা মজুরি পান৷ তবে শহরাঞ্চল, বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায়, গৃহকর্মীদের মাসিক মজুরি এক থেকে তিন হাজার টাকা৷
‘বাংলাদেশ ডোমেস্টিক ওয়ার্কার্স রাইট নেটওয়ার্ক'-এর প্রধান সিদ্দিকুর রহমান ডয়চে ভেলে জানান, ‘‘বাস্তব পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ৷ কারণ এ সব জরিপের তথ্য প্রধানত সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে নেয়া৷ আদতে কিন্তু অনেক ঘটনাই সংবাদমাধ্যমে আসে না৷''
তিনি জানান, ‘‘গৃহকমীরা নির্যাতনে নিহত হওয়া ছাড়াও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন৷ তাছাড়া যাঁরা আত্মহত্যা করছেন, তাঁরা মূলত যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েই আত্মহত্যা করছেন৷ অথচ অধিকাংশ নির্যাতন এবং হত্যার ঘটনা টাকা দিয়ে মিটিয়ে ফেলা হচ্ছে৷ আর গৃহকর্তা বাড়ির বাইরে গেলে, অনেকেই গৃহকর্মীদের বাসায় তালাবদ্ধ করে রেখে যান৷ এটাকে আধুনিক দাসপ্রথা ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না৷''
বাংলাদেশে গৃহকর্মীদের দুর্দশার কথা
পশ্চিমা বিশ্ব যখন ঘরের কাজে রোবট ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে, বাংলাদেশে তখনও ঘরের কাজ করছেন গৃহকর্মীরা৷ মাসে তাঁদের গড় বেতন ৫১০ টাকা, কাজ করতে হয় কমপক্ষে দশ ঘণ্টা৷ আর ঘুমাতে হয় রান্না ঘরের মেঝেতে৷ এই বিষয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: picture-alliance/Godong
মাসিক বেতন ৫১০ টাকা
পশ্চিমা বিশ্ব এখন ঘরের কাজে রোবট ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে৷ এই নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা৷ তবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভিন্ন৷ সেদেশে ঘরের কাজের জন্য অধিকাংশ বাড়িতে রয়েছেন গৃহকর্মী৷ যাঁদের মাসিক গড় বেতন ৫১০ টাকা৷ আর দিনে কাজ করতে হয় কমপক্ষে দশ ঘণ্টা৷
ছবি: imago/Michael Westermann
৮৩ শতাংশ নারী
ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন বা আইটিইউসি ২০১২ সালে বাংলাদেশের গৃহকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করেছে৷ এতে দেখা যাচ্ছে, শুধুমাত্র ঢাকা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে গৃহকর্মীর সংখ্যা বিশ লাখের মতো৷ এঁদের মধ্যে ৮৩ শতাংশ নারী, যাঁদের অনেকে বয়সে শিশু কিংবা তরুণী৷
ছবি: imago/imagebroker
মেঝেতে ঘুমানো
আইটিইউসি-র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গৃহকর্মীদের মধ্যে ৩৩ শতাংশ রাতে রান্নাঘরে ঘুমান৷ এছাড়া বসার এবং শোয়ার ঘরের মেঝেতে ঘুমান গড়ে ২০ শতাংশ করে গৃহকর্মী৷ কারো কারো আবার ঘুমাতে হয় স্টোর রুমে৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
অন্যায়, নির্যাতন
অধিকাংশ গৃহকর্মী বা কাজের মেয়ে পড়ালেখার সুযোগ পান না৷ বিনোদনেরও অভাব রয়েছে৷ কমপক্ষে ৫৩ শতাংশ গৃহকর্মীর সঙ্গে বাজে ভাষায় কথা বলা হয়৷ কাজ হারানোর আতঙ্কও কাজ করে তাঁদের মধ্যে৷ যৌন নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মীর সংখ্যা ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: Fotolia/Miriam Dörr
প্রাণহানি
২০০১ থেকে ২০১০ সাল সময়কালের মধ্যে বাংলাদেশে নির্যাতনের শিকার হয়ে কমপক্ষে ৩৯৮ গৃহকর্মী প্রাণ হারিয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ লেবার স্টাডিজ বা বিলস৷ এছাড়া নির্যাতনে আহত গৃহকর্মীর সংখ্যা ২৯৯৷ আইটিইউসি-র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বাংলাদেশ বিষয়ক বিভিন্ন তথ্যের উৎস বিলস এবং ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক’৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: Fotolia/GrafiStart
জনসচেতনতা সৃষ্টি
গৃহকর্মীদের অধিকারের বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে বিভিন্ন উদ্যোগও রয়েছে বাংলাদেশে৷ ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক’ এক্ষেত্রে সক্রিয়৷ এই নেটওয়ার্ক ১৪ বছরের কম বয়সিদের গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে৷
ছবি: imago/epd
ঘরে আটকে রাখা নয়
বাংলাদেশের বিভাগীয় শহরগুলো অনেক সময় গৃহকর্মীদের ঘরের মধ্যে রেখে বাইরে থেকে বাড়িতে তালা দিয়ে রাখা হয়৷ ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক’ এই কাজের তীব্র বিরোধীতা করেছে৷ গৃহকর্মীদের সুরক্ষা নীতির আওতায় এ ধরনের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে নেটওয়ার্কটি৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: TAUSEEF MUSTAFA/AFP/Getty Images
শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি
গৃহকর্মী বা গৃহশ্রমিকদের ‘শ্রমিক হিসেবে’ স্বীকৃতি ও শ্রম আইনে তাঁদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করারও দাবি জানিয়েছে ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক’৷ ‘বাংলাদেশ লেবার অ্যাক্ট-২০০৬’-এ গৃহকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি৷
ছবি: picture-alliance/Godong
8 ছবি1 | 8
নেই সুরক্ষা আইন
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) ২০১২ সালে সরকারের কাছে গৃহকর্মীদের জন্য ‘ডোমেস্টিক ওয়ার্কার রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড প্রটেকশন অ্যাক্ট' নামে একটি আইনের খসড়া প্রস্তাব করে৷ এরপর দেশের সর্বোচ্চ আদালত একটি সুরক্ষা আইন করারও নির্দেশ দেয়৷ কিন্তু এখনো পর্যন্ত সরকার সেই আইন করেনি৷ প্রস্তাবিত আইনে অবশ্য গৃহশ্রমিকদের কর্মঘণ্টা, বেতন কাঠামো, সুরক্ষা সব কিছুর কথাই বলা আছে৷
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ লেবার স্ট্যাডিজও (বিলস) কাজ করছে৷ তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, গৃহকর্মীদের শ্রম আইনের অধীনে নিয়ে আসা৷ সেটা সম্ভব হলে, তাঁদের জন্য সুরক্ষা আইন নিয়েও এগোনো যাবে৷ সিদ্দিকুর রহমান জানান, ‘‘বাংলাদেশ ডোমেস্টিক ওয়ার্কার্স রাইট নেটওয়ার্ক বিলস-এরই একটি নেটওয়ার্ক৷ আমরা চেষ্টা করছি গৃহশ্রমিকদের সবাইকে এই নেটওয়ার্কের আওতায় এনে সংগঠিত করতে৷''
এদিকে সরকার ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা ২০১০' নামে একটি নীতিমালার খসড়া নিয়ে কাজ করছে৷ শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপার গত মাসে সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘‘চলতি বছরেই এই নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে৷ ফলে গৃহকর্মীদের জন্য আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী শোভন কাজ, নিরাপত্তা, নিয়োগপত্র প্রদান, ন্যূনতম বয়স, মজুরি নির্ধারণ, ছুটি ও মাতৃত্বকালীন ছুটির অধিকার প্রদানের মতো বিষয়গুলোর সুরাহা হবে৷''
পেশার আইনি স্বীকৃতি
এদিকে মজুরি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক বিচারক ইখতেদার আহেমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘গৃহকর্মীদের সুরক্ষা দিতে হলে সবার আগে তাঁদের কাজকে আইনি স্বীকৃতি দিতে হবে৷ আইন করে এটাকে একটি পেশা হিসেবে ঘোষণা করতে হবে৷ আর সেই আইন যদি হয়, তাহলে প্রচলিত আইনেই তাঁরা ন্যূনতম মজুরি, ক্ষতিপূরণ, আইনি সহায়তাসহ অন্যান্য সুবিধা পাবেন৷ এমনকি তাঁরা তখন ট্রেড ইউনিয়নও করতে পারবেন৷''
তাঁর কথায়, ‘‘শুধু নীতিমালা কোনো আইন নয়৷ নীতিমালা শুধু ‘গাইড লাইন' হিসেবে কাজ করে৷ একমাত্র আইন হলে সেই আইনের আলোকে নীতিমালা কার্যকর করা যায়৷''