1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আমিরাতকে উদ্যোগ নিতে হবে

গ্রেহেম লুকাস/জেডএইচ২৭ অক্টোবর ২০১৪

এইচআরডাব্লিউ এক প্রতিবেদনে আরব আমিরাতে অভিবাসী শ্রমিকদের কাজের পরিবেশের সমালোচনা করেছে৷ সংস্থাটি জানায়, এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে যাওয়া গৃহকর্মীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন৷ এ প্রসঙ্গে গ্রেহেম লুকাসের সংবাদভাষ্য৷

Saudi-Arabien Sri Lanka Menschenrechte Dienstmädchen geköpft Zeitung
প্রতীকী ছবিছবি: Ishara S.KODIKARA/AFP/Getty Images

বিশ্বের দশটি ধনী দেশের একটি আরব আমিরাত৷ সে দেশে গৃহকর্মীর সংখ্যা প্রায় দেড় লক্ষ৷ তাদের বেশিরভাগই গেছে ফিলিপাইনস, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও ইথিওপিয়া থেকে৷ এই নারীদের ক্ষেত্রে আরব আমিরাতে কাজ করার মানে হচ্ছে তাদের নিজেদের দেশের চরম বেকারত্ব সমস্যা থেকে মুক্তির একটা উপায়৷ চাকরি ও নিয়মিত বেতনের লোভ দেখিয়েই এই নারীদের আমিরাতের প্রতি আগ্রহী করে তোলেন নিয়োগদাতারা৷ অনেক বছর ধরেই গৃহকর্মীদের উপর নির্যাতন, এমনকি যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে৷ তালিকাটা অনেক বড়৷ আমিরাত এক্ষেত্রে খুব বেশি কিছু করেনি৷

দেশটির শ্রম নিরাপত্তা আইন এই সমস্যার মূলে রয়েছে৷ অভিবাসী শ্রমিকরা ‘স্পন্সরশিপ' ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল এবং এর মাধ্যমেই তারা প্রথমবারের মতো আমিরাতে ঢোকার সুযোগ পান৷ এই ব্যবস্থাটাই হয়রানির সুযোগ করে দেয়, কেননা এর ফলে শ্রমিকরা চাকরি পরিবর্তন করতে পারেন না৷ আবার চাকরিদাতার কোপানল থেকে বাঁচতে কেউ যদি পেশা পরিবর্তন করতে চান সেটাও সম্ভব হয়না৷ ফলে তারা নিয়োগদাতাদের ‘দাস'এ পরিণত হন৷ সাম্প্রতিক সময়ে নিয়োগদাতাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ শোনা গেছে৷ শ্রমিকরা যারা পালিয়ে বেঁচেছেন তাঁরা তাঁদের দুর্দশার কথা জানিয়েছেন কীভাবে তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেয়া হতো, কীভাবে সারাদিন-রাত কাজ করতে হতো, এবং কীভাবে তাঁরা মনস্তাত্ত্বিক, শারীরিক ও যৌন হয়রানির শিকার হতেন৷ গৃহকর্মীরা হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে বলেছেন, আরও বেশি করতে নিয়োগদাতারা প্রায়ই তাদের চড়-থাপ্পড় মারতেন৷ অন্যদের অভিযোগ করলে দেশ ছাড়তে বাধ্য করার হুমকি দেয়া হতো৷ নিয়োগদাতারা তাদের এ ধরনের কাজের যৌক্তিকতা হিসেবে শ্রমিকদের ‘কিনতে অনেক মূল্য' দেয়ার কথা উল্লেখ করেন, যেটা একেবারেই ক্ষমার অযোগ্য৷

প্রতিবেদন তৈরিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ অল্প কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলায় একে মূল পরিস্থিতির প্রতিনিধিত্বকারী বলা না গেলেও এতে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা আগের প্রতিবেদনগুলোর মতোই৷ ফলে আরব আমিরাতে যে এমন চরম অবস্থা বিরাজ করছে সেটা আবারও প্রমাণিত হলো৷ তবে পরিস্থিতি উন্নয়নে সাম্প্রতিক সময়ে আরব আমিরাত কয়েকটি পদক্ষেপ নিলেও সেটা পর্যাপ্ত নয়৷ সপ্তাহে ছয়দিন কাজ আর দিনে সর্বোচ্চ ১৬ ঘণ্টা কাজের বিধান রেখে দেশটি গত জুনে যে আইন সংশোধন করেছে সেটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অকার্যকর, কারণ এটা আদালতে প্রমাণ করা যাচ্ছে না৷

গ্রেহেম লুকাস, ডিডাব্লিউ-র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিভাগের প্রধানছবি: DW/P. Henriksen

তবে একদিকে যেমন আরব আমিরাতকে পদক্ষেপ নিতে হবে, অন্যদিকে শ্রমিকরা যে দেশ থেকে যাচ্ছে সে দেশের নিয়োগদাতাদেরও দায় নিতে হবে৷ সেবা দেয়ার বিনিময়ে তারা শ্রমিকদের কাছ থেকে অনেক অর্থ নিয়ে থাকে, অথচ শ্রমিকদের সম্ভাব্য কাজের পরিবেশ সম্পর্কে ভূল ধারণা দিয়ে থাকে৷ ইন্দোনেশিয়া, ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ইথিওপিয়ার মতো দেশগুলোর জন্য গৃহকর্মী পাঠানোর ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করার এখনই সময়৷ ফিলিপাইনস ইতিমধ্যে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা শুরু করেছে৷ গৃহকর্মীদের আরব আমিরাতে পাঠানোর আগে ফিলিপাইনস-এর সরকারি কর্মকর্তারা চুক্তির বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছেন৷ এটা একটা ভালো উদ্যোগ৷ অন্য দেশগুলোকেও সেটা শুরু করতে হবে৷ একমাত্র এভাবেই আরব আমিরাতে এ ধরনের পরিস্থিতি বন্ধ করা যেতে পারে৷ তবে শুধু আরব আমিরাতেই নয়, মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোতেও এ বার্তা পাঠাতে হবে৷ কারণ ঐ দেশগুলোতে আরব আমিরাতের চেয়েও বেশি শ্রমিক নির্যাতনের অভিযোগ শোনা যায়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ