1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গৃহকর্মীদের সুরক্ষার জন্য আইন

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১০ নভেম্বর ২০১৩

বাড়ির মালিক বা নিয়োগকর্তাদের হাতে গৃহকর্মী, বিশেষ করে মেয়েদের নিগৃহীত ও লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা যেভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে তাঁদের মৌলিক মানবাধিকার সুনিশ্চিত করতে আইন প্রণয়ন প্রয়োজন৷ দাবি ভারতের সুশীল সমাজের৷

2-V40-L3-1999-9 Ladakh, Leh, Maedchen beim Waschen Voelkerkunde / Ladakh (Himalaya). - In der Hauptstadt Leh: Maedchen beim Waschen am Bach. -
ছবি: picture-alliance / akg

সম্প্রতি দিল্লি এবং ভারতের অন্যান্য বড় বড় শহরে গৃহকর্মী, বিশেষ করে মেয়েদের বাড়ির মালিক বা নিয়োগকর্তাদের হাতে লাঞ্ছিত ও নিগৃহীত হবার ঘটনা ক্রমশই বাড়ছে৷ এর জন্য এই অনিয়ন্ত্রিত কর্মক্ষেত্রে তাঁদের মৌলিক মানবাধিকার সুনিশ্চিত করার দাবিতে এবার সোচ্চার হয়েছে সুশীল সমাজ এবং নারীবাদী সংগঠনগুলি৷তিন বছর আগে জাতীয় মহিলা কমিশন ‘‘গৃহকর্মী কল্যাণ এবং সামাজিক নিরাপত্তা বিল ২০১০'' সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়া রচনা করেছিল৷ খসড়ার প্রধান বিষয় ছিল, গৃহকর্মীদের কীভাবে সামাজিক শোষণের শিকার হতে হয় এবং তার প্রতিবিধানে কী করণীয়৷

খসড়া বিলের অন্যান্য সংস্থানগুলির মধ্যে আছে, দৈনিক ৯ ঘণ্টা এবং সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টার বেশি কাজ নয়৷ এবং তার সঙ্গে সপ্তাহে একদিনের ছুটি বাধ্যতামূলক৷ অবশ্য কাজের প্রকৃতি হিসেবে কাজের সময়সীমার তারতম্য হতে পারে৷ ২৪ ঘণ্টার গৃহকর্মীদের জন্য কাজের সময়সীমা ১২ ঘণ্টার বেশি হবে না৷ ফুলটাইমের কাজে কর্মীদের খেতে এবং বিশ্রাম দিতে হবে৷ ওভারটাইম করানো হলে সেই কাজের মজুরি সাধারণ মজুরির দ্বিগুণ দিতে হবে৷ পাঁচ ঘণ্টা কাজের পর দিতে হবে আধ ঘণ্টা বিশ্রাম৷ মজুরির হার বেঁধে দেবে সরকার৷ মজুরির মধ্যে গৃহকর্তার দেয়া বাসস্থান, বিদ্যুৎ, নিজেদের বাড়িতে যাতায়াতের খরচ ধরা হবে না৷ এছাড়া, আইন লঙ্ঘনের জন্য গৃহকর্তাকে দিতে হবে দু'হাজার টাকা জরিমানা৷ আর যে এজেন্সি তাঁদের পাঠিয়েছে, তাদের শাস্তি তিন মাস পর্যন্ত জেল কিংবা দু'হাজার টাকা জরিমানা অথবা দুটোই৷

সম্প্রতি দিল্লি এবং ভারতের অন্যান্য বড় বড় শহরে গৃহকর্মী, বিশেষ করে মেয়েদের বাড়ির মালিক বা নিয়োগকর্তাদের হাতে লাঞ্ছিত ও নিগৃহীত হবার ঘটনা ক্রমশই বাড়ছে (ফাইল ফটো)ছবি: TAUSEEF MUSTAFA/AFP/Getty Images

দুঃখের বিষয়, এই আইন এখনো পাশ হয়নি৷ তাই আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উপযুক্ত আইন প্রণয়ন না হলে গৃহকর্মীদের কাজের পরিবেশের উন্নতি হবে না এবং তাঁদের ওপর নির্যাতন বন্ধ হবে না, চলতেই থাকবে৷ গৃহকর্মীদের কাজের ক্ষেত্র অনিয়ন্ত্রিত থাকায় গৃহকর্তা এবং যারা এঁদের পাঠায় সেই এজেন্টরা তার সুযোগ নেয়৷ সরকার যদি তাঁদের ন্যূনতম মজুরি এবং কাজের সময়সীমা বেঁধে না দেয়, তাহলে এটা চলতেই থাকবে, বলেন নারী অধিকারকর্মী মীনাক্ষী লেখি৷ গৃহকর্মীদের সুরক্ষার লড়াইয়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মানুষ পাচার প্রতিরোধের লড়াই৷ যেহেতু এটা অনিয়ন্ত্রিত কর্মক্ষেত্র, তাই হাজার হাজার কিশোর-কিশোরী ও তরুণী পাচার হচ্ছে শহরে গৃহকর্মী হিসেবে, বলেন নারীবাদী কর্মী লেখি৷

সম্প্রতি ফৌজদারি আইন সংশোধনী ২০১৩-তে মানুষ পাচারকে ভারতীয় ‘পেনাল কোড'-এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে৷ বলা হয়েছে, কাউকে নিয়োগ করে যদি অন্যত্র পাঠানো হয় এবং সেখানে তিনি যদি শোষিত হন, তাহলে নিয়োগকারী মানব পাচার আইনে অভিযুক্ত হবে৷ এখানে গৃহকর্মীর সম্মতি গ্রাহ্য হবে না৷ তবে সব থেকে জরুরি হলো, গৃহকর্মীদের তাঁদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলা৷ তা না হলে শুধুমাত্র আইন করে এই ধরণের শোষণ বন্ধ করা যাবে না, বলেন লেখি৷

গৃহকর্মীদের ওপর এহেন নির্যাতন যে শুধু ভারতে হয়, তা নয়৷ বিশ্বের অনেক দেশেই প্রতিনিয়ত ঘটছে এই রকম শোষণ৷ সব দেশ চেষ্টা করছে গৃহকর্মীদের শ্রমিক আইনের আওতায় আনার৷ আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন, জাতিসংঘের বিশেষ এজেন্সি বিশ্বের মোট গৃহকর্মীদের সংখ্যা ধরেছে ৫ কোটি ৩০ লাখ৷ কিন্তু শিশু শ্রমিকদের এর মধ্যে ধরা হয়নি৷ তবে এ বছর আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার বৈঠকে গৃহকর্মীদের মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত চুক্তি অনুমোদন করা হয়৷

দিল্লি মহানগরীতে গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও মর্যাদা দিতে সামাজিক মূল্যবোধ জাগানোর এক আন্দোলনের হাওয়া বইছে৷ স্কুলগুলিতে মূল্যবোধ-ভিত্তিক শিক্ষার অঙ্গ হিসেবে বাচ্চাদের শেখানো হচ্ছে গৃহকর্মীদের কীভাবে সম্মান দিতে হয়, কেন দিতে হয় – সে সম্পর্কে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ