বাংলাদেশে করোনার মধ্যে গৃহকর্মী নির্যাতন বেড়েছে। ধর্ষণ এবং হত্যার ঘটনাও বেড়েছে। কিন্তু এর কোনো প্রতিকার নাই। আর এই নির্যাতনের বিচার পাওয়া এখনও প্রায় অসম্ভব।
বিজ্ঞাপন
২৪ জুন সিলেট শহরের শাহজালাল উপশহরে রুনা আক্তার (১৬) নামের এক গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হন। তাকে বাসার বাথরুমে আটকে রেখে তালাবদ্ধ করে নির্যাতন করা হয়। রুনার চিৎকার ও কান্না শুনে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ওই বাসায় গিয়ে রুনা আক্তারকে উদ্ধার করে।
৯ জুন নিয়াসা আক্তার (১৮) নামে এক গৃহকর্মী ঢাকার উত্তরা এলাকার বাসায় দুপুরে ভাত রান্না করতে দেরি করায় গৃহকর্তার মেয়ে চুলায় বসানো পাতিল থেকে ভাতের গরম মাড় নিয়াসার পিঠে ঢেলে দেন। এতে নিয়াসার ঘাড় ও পিঠ ঝলসে যায়।
১৯ মে সিদ্ধেশ্বরী রোডের একটি বাসায় জামেনা বেগম (১৯) নামের এক গৃহকর্মীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।
১৮ মে গাজীপুরের টঙ্গীতে শিশু গৃহকর্মী মিমি আক্তারকে (৯) শারীরিক নির্যাতন করে বাড়ির পাশে ফেলে রাখেন গৃহকর্তা। সে তার বাবা-মার কাছে যেতে চেয়েছিল। তাকে যোগাযোগও করতে দেয়া হত না।
চাঁদপুরে এক বছর ধরে এক গৃহকর্মীকে ধর্ষণ করা হয়। এই অভিযোগে ২ মে ওই বাসার বড় ছেলে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আবুল হোসেন
চলতি বছরে করোনার মধ্যে গৃহকর্মী নির্যাতনের খণ্ডচিত্র এখানে তুলে ধরা হলো। আর এগুলো পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু অনেক নির্যাতনের ঘটনাই সংবাদমাধ্যমে আসে না। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্ট্যাডিজ (বিলস) ২৮৭ জন গৃহশ্রমিকের ওপর এক জরিপ করে ১২ সেপ্টেম্বর তার ফল প্রকাশ করে । জরিপে অংশগ্রহণকারী গৃহকর্মীদের মধ্যে ৬০ ভাগ আবাসিক এবং ৪০ ভাগ অনাবাসিক শ্রমিক। জরিপে অংশ নেয়া ৫০ ভাগ শ্রমিক জানিয়েছেন তারা শারীরিক বা মানসিক কোনো না কোনো নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন এই ছয় মাসে মোট ২২ জন গৃহকর্মীর সহিংসতার শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছে বিলস । নির্যাতনে নিহত হয়েছেন আট জন, ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন দুইজন। ১২ জন আহত হয়েছেন।
বিলস বলছে, সারাদেশে যত গৃহকর্মী আছেন তার ৯৫ ভাগেরও বেশি নারী। যারা ধর্ষণ, হত্যা এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের বয়স ১০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। তারা বলছে , এই তথ্য পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য । বাস্তব অবস্থা আরো ভয়াবহ। গৃহকর্মীদের আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় তারা মামলা করতে চান না বা মামলা করলেও তা চালাতে চান না বলে জানায় বিলস।
বাংলাদেশে গৃহকর্মীদের দুর্দশার কথা
পশ্চিমা বিশ্ব যখন ঘরের কাজে রোবট ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে, বাংলাদেশে তখনও ঘরের কাজ করছেন গৃহকর্মীরা৷ মাসে তাঁদের গড় বেতন ৫১০ টাকা, কাজ করতে হয় কমপক্ষে দশ ঘণ্টা৷ আর ঘুমাতে হয় রান্না ঘরের মেঝেতে৷ এই বিষয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: picture-alliance/Godong
মাসিক বেতন ৫১০ টাকা
পশ্চিমা বিশ্ব এখন ঘরের কাজে রোবট ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে৷ এই নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা৷ তবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভিন্ন৷ সেদেশে ঘরের কাজের জন্য অধিকাংশ বাড়িতে রয়েছেন গৃহকর্মী৷ যাঁদের মাসিক গড় বেতন ৫১০ টাকা৷ আর দিনে কাজ করতে হয় কমপক্ষে দশ ঘণ্টা৷
ছবি: imago/Michael Westermann
৮৩ শতাংশ নারী
ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন বা আইটিইউসি ২০১২ সালে বাংলাদেশের গৃহকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করেছে৷ এতে দেখা যাচ্ছে, শুধুমাত্র ঢাকা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে গৃহকর্মীর সংখ্যা বিশ লাখের মতো৷ এঁদের মধ্যে ৮৩ শতাংশ নারী, যাঁদের অনেকে বয়সে শিশু কিংবা তরুণী৷
ছবি: imago/imagebroker
মেঝেতে ঘুমানো
আইটিইউসি-র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গৃহকর্মীদের মধ্যে ৩৩ শতাংশ রাতে রান্নাঘরে ঘুমান৷ এছাড়া বসার এবং শোয়ার ঘরের মেঝেতে ঘুমান গড়ে ২০ শতাংশ করে গৃহকর্মী৷ কারো কারো আবার ঘুমাতে হয় স্টোর রুমে৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
অন্যায়, নির্যাতন
অধিকাংশ গৃহকর্মী বা কাজের মেয়ে পড়ালেখার সুযোগ পান না৷ বিনোদনেরও অভাব রয়েছে৷ কমপক্ষে ৫৩ শতাংশ গৃহকর্মীর সঙ্গে বাজে ভাষায় কথা বলা হয়৷ কাজ হারানোর আতঙ্কও কাজ করে তাঁদের মধ্যে৷ যৌন নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মীর সংখ্যা ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: Fotolia/Miriam Dörr
প্রাণহানি
২০০১ থেকে ২০১০ সাল সময়কালের মধ্যে বাংলাদেশে নির্যাতনের শিকার হয়ে কমপক্ষে ৩৯৮ গৃহকর্মী প্রাণ হারিয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ লেবার স্টাডিজ বা বিলস৷ এছাড়া নির্যাতনে আহত গৃহকর্মীর সংখ্যা ২৯৯৷ আইটিইউসি-র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বাংলাদেশ বিষয়ক বিভিন্ন তথ্যের উৎস বিলস এবং ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক’৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: Fotolia/GrafiStart
জনসচেতনতা সৃষ্টি
গৃহকর্মীদের অধিকারের বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে বিভিন্ন উদ্যোগও রয়েছে বাংলাদেশে৷ ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক’ এক্ষেত্রে সক্রিয়৷ এই নেটওয়ার্ক ১৪ বছরের কম বয়সিদের গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে৷
ছবি: imago/epd
ঘরে আটকে রাখা নয়
বাংলাদেশের বিভাগীয় শহরগুলো অনেক সময় গৃহকর্মীদের ঘরের মধ্যে রেখে বাইরে থেকে বাড়িতে তালা দিয়ে রাখা হয়৷ ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক’ এই কাজের তীব্র বিরোধীতা করেছে৷ গৃহকর্মীদের সুরক্ষা নীতির আওতায় এ ধরনের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে নেটওয়ার্কটি৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: TAUSEEF MUSTAFA/AFP/Getty Images
শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি
গৃহকর্মী বা গৃহশ্রমিকদের ‘শ্রমিক হিসেবে’ স্বীকৃতি ও শ্রম আইনে তাঁদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করারও দাবি জানিয়েছে ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক’৷ ‘বাংলাদেশ লেবার অ্যাক্ট-২০০৬’-এ গৃহকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি৷
ছবি: picture-alliance/Godong
8 ছবি1 | 8
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) শুধু নারী গৃহকর্মীদের প্রতি সহিংসতার তথ্য সংরক্ষণ করে। তাতে দেখা যায় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসে ৩৮ জন নারী গৃহকর্মী সহিংসতার শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১২ জন নিহত আর তিনজন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে মাত্র ২৫টি। ২০২০ সালে সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৪৫ জন। ১৩ জন হত্যার শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন আট জন। মোট মামলা হয়েছে ৩১টি। ২০১৯ সালে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৩৪টি। মামলা হয়েছে ১৮টি। হত্যার শিকার ১০ জন, ধর্ষণের শিকার ১২ জন। এই তথ্যে দেখা যায় করোনার সময় নির্যাতন বেড়েছে। আর কমপক্ষে তিন ভাগের এক ভাগ ঘটনায় কোনো মামলাই হয় না। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা আরো কম। আসক বলছে, ২০১৯ সালে ১০টি হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে মাত্র চারটি, ২০২০ সালে ১৩টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে মাত্র পাঁচটি আর চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে ১২ টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে ছয়টি।
বাংলাদেশে কত গৃহকর্মী রয়েছে তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে ধারণা করা হয় এই সংখ্যা ২০ লাখের কম হবে না।
২০১৫ সালে গৃহশ্রমিক সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি করা হয়। কিন্তু গৃহকর্মীদের সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণ না করা , জিডিপিতে অবদানের অংশ নির্ধারণ না করা, ট্রেড ইউনিয়নের স্বীকৃতি না দেয়ার কারণে তার কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছেনা।
কেমন আছে অন্য দেশের গৃহকর্মীরা?
বাংলাদেশে গৃহকর্মীদের অবস্থা কখনই ভালো ছিল না, এখনও নেই৷ তাঁদের রক্ষায় নেই কোনো আইন৷ কিন্তু বিশ্বের আর অন্যান্য দেশে তাঁদের কী অবস্থা? সেই তথ্যই থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/empics/L. Hurley
পাঁচ কোটি ৩০ লক্ষ
২০১৩ সালে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা, আইএলও-র এক প্রতিবেদন বলছে, সারা বিশ্বে গৃহকর্মীর সংখ্যা প্রায় ৫৩ মিলিয়ন৷ এর মধ্যে ৮৩ শতাংশই নারী৷ তবে প্রকৃত সংখ্যাটি যে আরও কয়েক মিলিয়ন বেশি হতে পারে, সে কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে৷ এদিকে ১৫ বছরের কমবয়সি শিশু গৃহকর্মীদের সংখ্যা আইএলও-র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি – ২০০৮ সালে এই সংখ্যাটি ছিল ৭৪ লক্ষ৷
ছবি: AP
আইনের বাইরে
আইএলও-র প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বের গৃহকর্মীদের প্রায় ৩০ শতাংশই শ্রম আইনের সুবিধাবঞ্চিত৷
ছবি: DW
সাপ্তাহিক ছুটি
বিশ্বের প্রায় অর্ধেক (৪৫ শতাংশ) গৃহকর্মী সাপ্তাহিক ছুটি পান না৷ তাছাড়া তাঁদের এমন কোনো বার্ষিক ছুটি নেই, যার জন্য তাঁদের অর্থ প্রাপ্য (পেইড লিভ)৷
ছবি: DW/M. Krishnan
প্রসূতি সুরক্ষা
প্রতি তিনজনের একজন গৃহকর্মী এই সুবিধা পায় না বলে জানিয়েছে আইএলও৷
ছবি: Sam Panthaky/AFP/Getty Images
বছরে ৮ বিলিয়ন ডলার!
গৃহকর্মী মানেই যেন কম টাকা দিয়ে বেশি ঘণ্টা কাজ করানো৷ এভাবে গৃহকর্মীদের প্রতারিত করে তাঁদের নিয়োগদাতারা অবৈধভাবে বছরে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার আর্থিক সুবিধা পাচ্ছে বলে জানিয়েছে ‘ইন্টারন্যাশনাল ডমেস্টিক ওয়ার্কার্স ফেডারেশন’৷
ছবি: imago/imagebroker
‘কাফালা’ যেন দাসপ্রথার অন্য রূপ
গাল্ফ দেশগুলোতে এই ব্যবস্থা থাকার কারণে গরিব দেশ থেকে সেখানে যাওয়া গৃহকর্মীরা নির্যাতনের শিকার হলেও তাঁদের নিয়োগদাতাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারে না৷ কারণ কাফালা ব্যবস্থার কারণে নির্যাতিতরা চাইলেও নিয়োগদাতার ছাড়পত্র ছাড়া দেশ ত্যাগ করতে পারেন না৷ ‘ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন’ এই অবস্থাকে দাসত্বের সঙ্গে তুলনা করেছে৷ আইএলও-র হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে গৃহকর্মীর সংখ্যা প্রায় ২১ লক্ষ৷
ছবি: AP
হংকংয়ে গৃহকর্মীদের অবস্থা
তিন হাজার গৃহকর্মীর উপর চালানো এক জরিপে উত্তরদাতাদের প্রায় ৫৮ শতাংশ বলেছে, তাঁদের মৌখিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে৷ ১৮ শতাংশ তাঁদের উপর শারীরিক নির্যাতনের কথা বলেছে৷ আর যৌন হয়রানির কথা জানিয়েছে ৬ শতাংশ৷
ছবি: Miguel Candela/TRANSTERRA
বাড়ি তো নয়, যেন কারাগার!
উন্নত দেশ অস্ট্রেলিয়াতেও ভালো নেই গৃহকর্মীরা৷ ২০১৪ সালের এক প্রতিবেদনে সেখানে গৃহকর্মীদের সর্বোচ্চ ১৬ ঘণ্টা কাজ করানো, বেতন না দেয়া ও শারীরিক নির্যাতনের কথা বলা হয়েছে৷ প্রতিবেদনে অস্ট্রেলিয়ার ব্যক্তিমালিকানাধীন বাড়িগুলোকে ‘কারাগার’-এর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে৷
ছবি: Fotolia/apops
একা বাড়ির বাইরে নয়
না, ছোট্ট শিশুদের কথা বলা হচ্ছে না৷ ইংল্যান্ডের মতো দেশে প্রায় ৬০ শতাংশ গৃহকর্মীদের একা বাড়ির বাইরে যেতে দেয়া হয় না বলে জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা ‘কালায়ন’৷
ছবি: picture-alliance/dpa/empics/L. Hurley
9 ছবি1 | 9
ডমেস্টিক ওয়ার্কার্স রাইট নেটওয়ার্কের কনভেনর আবুল হোসেন বলেন, গৃহশ্রমিকেরা আর্থিক ও সামাজিকভাবে দুর্বল হওয়ায় অনেক ঘটনায় মামলাই হয় না। আর মামলা হলেও শেষ পর্যন্ত বিচার পাওয়া যায় না। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন,"প্রথমত, মামলার বাদী অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হয় পুলিশ। এজাহার থাকে দুর্বল, চার্জশিটও হয় দুর্বল। আর এরমধ্যে আসামিরা অর্থ ও প্রভাব খাটিয়ে আদালতের বাইরে মামলা মিটিয়ে ফেলেন।”
তার কথা,"গৃহশ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার না দিলে এর সমাধান হবে না। একই সঙ্গে সংগঠনকে মামলার বাদী হতে আইন করতে হবে।”
আসক-এর পর্যবেক্ষণ বলছে, গৃহকর্মী নির্যাতনের মামলায় শেষ পর্যন্ত বিচার পাওয়ার নজির নেই বললেই চলে। আসকের উপ-পরিচালক নীনা গোস্বামি বলেন,"আমরা চেষ্টা করেও বিচারে ফল আনতে পারি না। অনেক সময় আদালতে গিয়ে ভিকটিম ঘটনার বর্ননা পাল্টে ফেলে।”
তার মতে,"অপ্রাপ্তবয়ষ্কদের তাদের মামলার বাদী হন তাদের অভিভাবক। ফলে এক পর্যায়ে গিয়ে তারা অর্থ বা যে কোনো চাপের মুখে আপস করে ফেলেন। আর প্রাপ্তবয়স্ক হলেও বছরের পর বছর মামলা চালানোর পরিবর্তে তারা অর্থের বিনিময়ে মিটিয়ে ফেলেন।”
গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনা সাধারণত ঘরের মধ্যে হয়। তাই যারা নির্যাতনের শিকার হন তাদের পক্ষে তেমন কোনো সাক্ষী থাকে না। ফলে মামলাটি দুর্বল হয়ে যায়। নীনা গোস্বামি বলেন,"আগের চেয়ে মামলার হার বেড়েছে। কিন্তু বিচার আগের মতই শূণ্যের ঘরে আছে।”