জার্মানির কোলন শহরের এক বাসিন্দা তীব্র শীত থেকে গৃহহীনদের বাঁচাতে একটি উদ্যোগ নিয়েছেন৷ তাঁদের জন্য ছোট ছোট ঘর বানাচ্ছেন তিনি৷ ওদিকে কোলন শহর কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, কোলনে চলতি শীতে কাউকে রাস্তায় জমে থাকতে হবে না৷
বিজ্ঞাপন
বড়দিনের আগেই শীতটা বেশ জাঁকিয়ে বসেছে জার্মানিতে৷ তাপমাত্রা ক্রমশ পড়তির দিকে৷ এ রকম অবস্থায় জার্মানির রাস্তাঘাটে জীবন কাটানো তিনলাখের মতো গৃহহীন পড়েছেন মহা মুশকিলে৷ সারাদিন নিজদের উষ্ণ রাখা আর রাতে একটু স্বস্তিতে ঘুমানোর জায়গা পাওয়া তাঁদের জন্য এখন বেশ কঠিন হয়ে উঠেছে তীব্র শীতের কারণে৷
তবে কোলনের এক স্থানীয় আলোকচিত্রী গৃহহীনদের উষ্ণ পরিবেশ দিতে নিজেই মাঠে নেমে পড়েছেন৷ রাস্তার পাশে রাখার উপযোগী ছোট ছোট ঘর বানাচ্ছেন স্ভেন ল্যুডেকে৷ কাঠের তৈরি এ সব ঘরগুলো দাঁড়ানোর মতো উঁচু এবং সেগুলোর মধ্যে ‘ম্যাট্রেস' রাখা যায়৷ ডয়চে ভেলেকে ল্যুডেকে বলেন, ‘‘উদ্দেশ্য হচ্ছে গৃহহীনদের স্বাভাবিক জীবনের কিছুটা ছোঁয়া দেয়া এবং জানানো যে তাঁরা একা নন, আমরা তাঁদের ভুলে যাইনি৷''
গত সেপ্টেম্বরে টেলিভিশনে গৃহহীনদের নিয়ে এক রিপোর্ট দেখার পরপরই তাঁদের সহায়তা করতে মনস্থির করেন ল্যুডেকে৷ প্রতিটি ঘর তৈরিতে পরিবহণসহ খরচ পড়ে সাড়ে আটশ' ইউরোর মতো৷ শুরুতে তিনি একা থাকলেও এখন আরো কয়েকজন ল্যুডেকেকে সহায়তা করছেন৷ তাঁর বাড়ির পেছনের উঠোনে তৈরি করা হয়েছে ছোট ঘরগুলো৷
প্রসঙ্গত, তাঁর এই উদ্যোগ সাড়া জাগালেও প্রয়োজনের তুলনায় এটি বেশ কম৷ কোলনে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা পাঁচ হাজারের মতো৷ আর ল্যুডেকের উদ্যোগে এখনো দেড়শ' মানুষও বাড়ি পাননি৷ মোটের উপর, গৃহহীনদের সবাই আবার এরকম ছোট ঘর চানও না৷ কেননা, তাঁরা তাঁদের স্বাধীনতার উপরে কারো হস্তক্ষেপ চান না৷
কোলন শহর কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, সমাজসেবা তখনই সফল হবে যখন কেউ সেটা নিতে রাজি হবে৷ তবে কাউকে সেটা নিতে বাধ্য করা যাবে না৷ শীতে গৃহহীনদের রক্ষায় সরকারি উদ্যোগ রয়েছে বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷
কেট ব্রাডি/এআই
বাংলাদেশেও গরিব মানুষদের জন্য এমন বাড়ি কি বানানো যায় না? লিখুন মন্তব্যের ঘরে৷
গৃহহীন থেকে তাঁরা এখন সম্পদশালী তারকা
একসময় মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও ছিল না তাঁদের৷ অথচ এখন তাঁরা সফল তারকা এবং সেই সুবাদে অঢেল সম্পদের মালিক৷ জেনে নিন শূন্য থেকে মিলিয়নেয়ার হয়ে যাওয়া কয়েকজন সুপারস্টারের কথা৷
ছবি: AP
এক সময় পার্কের বেঞ্চেও শুয়েছেন ড্যানিয়েল ক্রেইগ
জেমস বন্ড তারকা ড্যানিয়েল ক্রেইগ এখন কমপক্ষে ৬০ মিলিয়ন ডলারের মালিক৷ বাড়ি-গাড়ির অভাবের তো প্রশ্নই ওঠে না৷ অথচ একসময় তাঁকেও রাত কাটাতে হয়েছে লন্ডনের হাইড পার্কের বেঞ্চে৷ তাঁর স্মৃতিচারণাতেও নানা সময় উঠে এসেছে সে কথা৷ এখন সুসময়৷ জেমস বন্ড সিরিজের ‘স্কাইফল’-এ অভিনয় করেই ১৭ মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন ড্যানিয়েল ক্রেইগ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Gindl
গৃহহীন থেকে আজকের সুপারস্টার হেলি বেরি
২১ বছর বয়সে নিউ ইয়র্কে জীবনযুদ্ধ শুরুর সময়টায় শহরের গৃহহীনদের আশ্রয় শিবিরেই থাকতে হয়েছিল তাঁকে৷ মারিয়া হেলি বেরিও এখন হলিউড সুপারস্টার৷ ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রাসাদোপম অট্টালিকায় তাঁর বাস৷ ১৯৯১ সালে ‘স্পাইক লি’ ছবির মাধ্যমে তারকারাজ্যে প্রবেশের পর থেকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি৷ জেমস বন্ড সিরিজে অভিনয় করেছেন৷ অস্কার জিতেছেন৷ এক সময়ের গৃহহীন হেলি বেরির আয় ইতিমধ্যে ৭০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে৷
ছবি: picture alliance/kpa
এক সময় বাসের সিটে রাত কাটিয়েছেন স্ট্যালোন
সিলভেস্টার স্ট্যালোনও একসময় বাসের সিটে রাত কাটিয়েছেন৷ নিউ ইয়র্কে তখন তাঁরও থাকার জায়গা নেই৷ বাসের সিটে শুয়ে শুয়েই পত্রিকার বিজ্ঞাপন পড়লেন৷ সেই বিজ্ঞাপনে একটি পর্নো ছবিতে অভিনয়ে আগ্রহীদের যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে৷ একদিন কাজ করলে ১০০ ডলার পাওয়া যাবে৷ স্ট্যালোন পরের দিনই চলে যান অভিনয় করতে৷ বাকিটা ইতিহাস৷ ‘ব়্যাম্বো’ ছবির স্ট্যালোন এখন ৩৪০ মিলিয়ন ডলারের সমমূল্যের সম্পত্তির মালিক!
ছবি: picture-alliance/dpa
মায়ের সঙ্গে রাগ করে ঘর ছাড়া জেনিফার লোপেজ
অভিনেত্রী, গায়িকা জেনিফার লোপেজের গল্পটা একটু অন্যরকম৷ লেখাপড়া আর ভবিষ্যৎ নিয়ে মায়ের সঙ্গে তুমুল ঝগড়া হওয়ায় রেগেমেগে ঘর ছাড়েন জেনিফার৷ কিন্তু চলবেন কী করে? ড্যান্স স্টুডিয়োতে কাজ করার সুযোগ এলো৷ লুফে নিলেন সেই সুযোগ৷ হলিউডের এই সেক্সি তারকার আয় এখন ১১০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Senna
শৈশবেই সংসারের হাল ধরেছিলেন জিম ক্যারি
বাবার চাকরি যাওয়ায় জিম ক্যারিকে সংসারের হাল ধরার কথা ভাবতে হয়েছিল মাত্র ১২ বছর বয়সে৷ তাঁকেও তখন বাসের সিটে রাত কাটাতে হয়েছে৷ হলিউডের সাড়া জাগানো এই কৌতুক অভিনেতার সহায়-সম্পত্তির মোট আনুমানিক মূল্য এ মুহূর্তে ১৫০ মিলিয়ন ডলার৷
ছবি: Getty Images
মায়ের একট টেলিফোন এবং হিলারি সোয়াঙ্ক
অভিনেত্রী হিলারি সোয়াঙ্ক লস এঞ্জেলেসে চলে যান ১৫ বছর বয়সে৷ অবশ্য সঙ্গে মা ছিলেন৷ মা-মেয়ের কাছে ছিল মাত্র ৭৫ ডলার৷ বাস নয়, থাকার জায়গা ছিল না বলে তখন নিজেদের গাড়িতেই রাত কাটিয়েছেন হিলারি সোয়াঙ্ক আর তাঁর মা৷ রাস্তার পাশের এক টেলিফোন বুথ থেকেই মা একদিন এক পরিচালককে ফোন করে মেয়েকে একটা সুযোগ দেয়ার অনুরোধ করলেন৷ তাঁর সেই মেয়ে এখন অস্কারজয়ী অভিনেত্রী এবং কমপক্ষে ৪০ মিলিয়ন ডলারের সম্পদের মালিক৷
ছবি: picture-alliance/dpa
উইলিয়াম শ্যাটনারের তখন দুঃসময়
‘স্টারট্রেক’ ছবিতে ক্যাপ্টেন কার্ক চরিত্রে অভিনয় করে প্রায় অমরত্ব পেয়ে যাওয়া উইলিয়াম শ্যাটনারকেও একটা সময় পিকআপ ভ্যানে রাত কাটাতে হয়েছে৷ ১৯৬৯ সালে স্টারট্রেকের শুটিং বন্ধ করা হয়৷ স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়িও হয় তখন৷ দুঃসময় বেশি দিন থাকেনি৷ কারণ কিছুদিন পর আবারো স্টারট্রেকের শুটিং শুরু হয়৷ শুটিং শেষে প্রচার শুরুর পরই রাতারাতি তারকা হয়ে যান শ্যাটনার৷ এখন তাঁর মোট আয়ের পরিমাণ ১০০ মিলিয়ন ডলারের মতো৷
ছবি: Paramount
শানিয়া টোয়াইনকেও আশ্রয় শিবিরে থাকতে হয়েছে
সংগীত শিল্পী শানিয়া টোয়াইনও জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা শুরুর সময় কিছু দিন গৃহহীনদের আশ্রয় শিবিরে থেকেছেন, কখনো আবার বাসের সিটে শুয়েও তাঁকে কাটাতে হয়েছে রাত৷ ক্যারিয়ারে তাঁর মোট আয় এখন ২৪৫ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি৷
ছবি: Getty Images/E. Miller
তখন জঁ ক্লদ ভ্যান ডামও গৃহহীন
‘ব্লাডস্পোর্ট’, ‘ইউনিভারসাল সোলজার’ এবং ‘সাডেন ডেথ’-এর মতো অ্যাকশন ছবির জনপ্রিয় নায়ক ভ্যান ডামও জীবিকার সন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেস শহরে গিয়ে প্রথমদিকে রাস্তায় ঘুমাতে বাধ্য হয়েছেন৷ সে সময় খাবারও জুটত না তাঁর প্রতিদিন৷ ‘মি. বেলজিয়াম’ খেতাব জেতা সাবেক এই বডি বিল্ডার এখন ৩০ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের সম্পদের মালিক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/KPA
গৃহহীন মেয়েটিকে ধর্ষণের শিকারও হতে হয়
যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ওপ্রা উইনফ্রের শৈশবের প্রায় পুরোটা সময়ই কেটেছে অর্ধাহারে-অনাহারে৷ পরিত্যক্ত শিশুদের আশ্রয় শিবিরে থেকেছেন কিছুদিন৷ তখন ধর্ষিতাও হয়েছেন ‘ওপ্রা উইনফ্রে শো’ উপস্থাপনার কারণে সারা বিশ্বে পরিচিতি পাওয়া এই কৃষ্ণকলি৷ সেই অপরাহ উইনফ্রে এখন ৩ বিলিয়ন ডলারের সমমূল্যের সম্পদের মালিক৷