1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গোপন অনলাইন জীবন ফাঁস

সিল্কে ভ্যুনশে / এআই১৫ জুলাই ২০১৩

আপনি কে এবং কাকে ই-মেল পাঠাচ্ছেন এবং কতবার সেসব ই-মেলের উত্তর আসছে? আপনি কোন সার্ভার ব্যবহার করেন? এসব প্রশ্নের উত্তর থাকে মেটাডাটার মধ্যে৷ আপনার সম্পর্কে আপনার ধারণার চেয়ে বেশি তথ্য অন্যকে জানাতে পারে এই মেটাডাটা৷

#32043014 - Tastatur und Schatten. Datendiebstahl. © Gina Sanders
ছবি: Fotolia/Gina Sanders

আপনি যখন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তখন বিভিন্ন রকম তথ্য তৈরি করেন যা সংরক্ষণ এবং বিশ্লেষণ করা সম্ভব৷ এক্ষেত্রে একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে৷ ধরুন, একদিন আপনি গুগলে সস্তা ফার্নিচার খুঁজলেন৷ এরপর দেখতে পেলেন, আপনি যে ওয়েবসাইটেই প্রবেশ করেন না কেন, সেই ওয়েবসাইটের স্বয়ংক্রিয় বিজ্ঞাপনের ঘরে প্রদর্শন হচ্ছে সস্তা ফার্নিচারের বিভিন্ন বিজ্ঞাপন৷ অর্থাৎ আপনার খোঁজের ভিত্তিতে বিজ্ঞাপনগুলো সাজিয়ে পরিবেশন করছে বিভিন্ন ওয়েবসাইট৷

বিভিন্ন ওয়েবসাইট আপনার পছন্দের বিষয়গুলি জানার জন্য ‘কুকিস' অনুসরণ করে৷ এসব কুকিস ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ওয়েব ব্রাউজারেই জমা থাকে৷ এদের কাজ হচ্ছে আপনার পছন্দের বিষয় সম্পর্কে খোঁজ রাখা এবং প্রয়োজনমত সেগুলো অন্য সেবাদাতাকে জানানো৷ আর আপনার ইন্টারনেট জীবন সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ৷ কেননা, এভাবে তারা সহজে আপনার আরো কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হয়৷

ব্যবহারকারীদের তথ্য শুধু গুগল একাই সংগ্রহ করে নাছবি: Reuters

গোয়েন্দারা কুকিসের ব্যাপারে আগ্রহী নয়

তবে গুপ্তচর বিভাগ কুকিসের ব্যাপারে আগ্রহী নয়৷ তারা অনেক বেশি আগ্রহী ‘মেটাডাটা' সম্পর্কে৷ নির্দিষ্ট কিছু ওয়েবভিত্তিক বিষয়বস্তুর সঙ্গে পাওয়া যায় মেটাডাটা বা সহজ করে বললে আপনার সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য৷ উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে ডিজিটাল ছবির কথা৷ এসব ছবির সঙ্গে মেটাডাটা হিসেবে থাকে কোন ক্যামেরায় ছবিটি তোলা, ছবির রেজ্যুলেশন এবং অ্যাপারচারসহ বিভিন্ন তথ্য৷ কিছু ক্যামেরায় তোলা ছবিতে আবার কোথায় সেটি তোলা হয়েছে সেই তথ্যও পাওয়া যায়, যদি ব্যবহারকারী ট্রাকিং ফাংশন বন্ধ করে না দেন৷

এভাবে কে কাকে ই-মেল করছে এবং কখন? সেই তথ্যও থাকে মেটাডাটায় যা গুপ্তচর বিভাগে পেতে চায়৷ একেবারে প্রেরক, ঠিকানা, তারিখ থেকে শুরু করে যে সার্ভার ব্যবহার করে ই-মেলটি করা হয়েছে, সেই তথ্যও এভাবে সংগ্রহ করা সম্ভব৷

ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি)-এর বিশেষজ্ঞরা ব্যবহারকারীকে এই বিষয়ে ধারণা দিতে একটি পাতা খুলেছে৷ ‘‘এনএসএ ইওরসেল্ফ'' শীর্ষক এই পাতায় প্রবেশ করে একজন ব্যবহারকারী জানতে পারেন, তাঁর সম্পর্কে কতটা তথ্য মেটাডাটার মাধ্যমে অন্যের পক্ষে জানা সম্ভব৷ বর্তমানে জিমেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীরা এমআইটি-র বিশেষজ্ঞদের তৈরি এই ব্যবস্থা পরীক্ষা করতে পারেন৷ এভাবে অনেক তথ্যই জানা সম্ভব৷

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা এজেন্সির সাবেক কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেন ইতোমধ্যে গোটা বিশ্বে সাড়া জাগিয়েছেন৷ তিনি ইন্টারনেটে সাধারণ মানুষের উপর মার্কিন গোয়েন্দাদের মাত্রাতিরিক্ত নজরদারি সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করেছেন৷ এমনকি যাঁরা মনে করেন ইন্টারনেটে তাঁদের লুকানোর কিছু নেই, তাঁরাও এখন বিশ্বাস করছেন যে গোয়েন্দাদের কর্মকাণ্ড সম্ভবত শুধুমাত্র সন্দেহভাজনের ই-মেল পড়া বা ফোনে আড়িপাতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই৷

মেটাডাটা থেকে তথ্য সংগ্রহ সম্পর্কে তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ইয়র্গ ব্রুন্সমান বলেন, ‘‘প্রথমে শুধু তথ্য সংগ্রহ করা হয়৷ এরপর একটি প্রোগ্রামের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু দিক নির্ধারণ করে সেসব তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়৷ সবকিছুই করা হয় মেশিনের মাধ্যমে৷''

উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে ওসামা বিন লাদেনের কথা৷ দেখা গেল মেশিন বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে আবিষ্কার করেছে, জন স্মিথ নামক কাউকে ৩০ বার ই-মেল করেছে ওসামা বিন লাদেন৷ বিন লাদেন এখন মৃত, কিন্তু জন স্মিথ জীবিত৷ ফলে বিষয়টি কৌতূহলোদ্দীপক৷ কিন্তু পরে যদি ই-মেলের বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তারা পোষা বিড়াল নিয়ে আলাপ করেছেন, তাহলে সেটা কোনো কাজের নয়৷

সামাজিক যোগাযোগ সাইটও নিরাপদ নয়ছবি: imago/Schöning

এনক্রিপশন কি সমাধান?

বর্তমানে খুব কম ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ই-মেল এনক্রিপ্ট করছে৷ তবে যেকেউ চাইলে এটা করতে পারে৷ কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ এবং সাংবাদিক বুর্কহার্ড স্র্যোডার এই বিষয়ে বলেন, ‘‘ইন্টারনেটে সহজেই ট্রুক্রিপ্ট বা জেনুপ্রাইভেসিগার্ড-এর মতো প্রোগ্রাম পাওয়া যায়৷'' তবে সমস্যা হচ্ছে এনক্রিপ্ট তখনই কাজ করবে যখন, প্রেরক এবং প্রাপক উভয়ই একই প্রোগ্রাম ব্যবহার করবে৷ আর মেটাডাটা এনক্রিপ্ট হয় না৷

ফলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য সম্ভাব্য সমাধান হচ্ছে ডার্কনেট ব্যবহার করা যেখানে টিওআর-এর মতো নেটওয়ার্কগুলো অনেক সার্ভারের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করে এবং এসব নেটওয়ার্ক ক্রমাগত ব্যবহারকারীর ইন্টারনেট ঠিকানা বদলাতে থাকে৷ সেক্ষেত্রে ব্যবহারকারীকে শনাক্ত করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে৷

ইন্টারনেটে পদাঙ্ক রেখে যাওয়া

ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা প্রতিদিনই বিভিন্ন ওয়েবসাইটে কিছু না কিছু তথ্য যোগ করেন৷ বিশেষ করে ফেসবুক এবং টুইটারে একজন ব্যবহারকারী শুধু নিজের সম্পর্কে সাধারণ তথ্যই জানাচ্ছেন না, তাঁরা তাঁদের পছন্দ, অপছন্দ এমনকি বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কেও বিভিন্নভাবে জানাচ্ছেন৷ আর এসব নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন তথ্য তৃতীয় সেবাদাতাদের ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে৷ একইভাবে বিভিন্ন স্মার্টফোন অ্যাপসও ব্যবহারকারীদের ধারণার চেয়ে বেশি তথ্য তাঁদের কাছ থেকে নিয়ে যাচ্ছে৷

ফলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে, ইন্টারনেটে কোনো কিছু শেয়ার করার আগে বেশি করা ভাবা উচিত৷ অপ্রয়োজনে কোনো তথ্য শেয়ার না করাই ভালো৷ তবে বর্তমানে তথ্য শেয়ারের চেয়েও বেশি উদ্বেগ সৃষ্টি করছে মেটাডাটা৷ কেননা, বাস্তবতা হচ্ছে এসব গোপন ডাটাও ঘাটাঘাটি সম্ভব৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ