পানামার ম্যানগ্রোভ অরণ্যগুলোর বিপদ ঘনিয়েছে পরিবেশের দরুণ নয়৷ এখানকার মানুষজন গরু পোষেন আর গরুর চামড়া ‘ডাই' বা রং করার প্রিয় উপাদান হলো ম্যানগ্রোভ গাছের ছাল৷ তাও ধারাবদলের চেষ্টা চলেছে৷
বিজ্ঞাপন
পানামার দক্ষিণ উপকূলে চিরিকি প্রদেশ৷ সেখানকার ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বা শ্বাসমূল অরণ্য গ্রামগুলিকে সাগরের বান থেকে রক্ষা করে; ম্যানগ্রোভ শিকড়ের ফাঁকে-ফোকরে বহু প্রাণী বাস করে৷ আর তা থেকে এখানকার বাসিন্দাদেরও কিছুটা রোজগার হয়৷ যেমন রোবের্তো মারিয়ানো ও তাঁর ১২ সদস্যের পরিবারের দিন চলে এই ম্যানগ্রোভ এলাকার খালে-বিলে মাছ ধরে৷
কিন্তু পানামার ম্যানগ্রোভ অরণ্য বিগত কয়েক দশকের মধ্যে অতিরিক্ত কাঠ কাটার ফলে অর্ধেক হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ রোবের্তো বলেন, ‘‘ওরা কাছেই একটা মোটরওয়ে তৈরি করেছে৷ তার ফলে অনেক তেল নদীতে এসে পড়েছে৷ ফলে আগে এখানে যত ঝিনুক ছিল, তার অনেকটাই ধ্বংস হয়েছে৷ কাঁকড়া আর চিংড়ির মতো অন্যান্য ছোট ছোট প্রাণীও বিপন্ন৷ আমার ছেলেবেলায় এই এলাকাটা ঝিনুকে ভর্তি ছিল; এখন তার সবই উধাও হয়েছে৷''
অতীতের ভুলের পুনরাবৃত্তি করতে চান না তারা৷ ম্যানগ্রোভগুলো যেন অক্ষত থাকে, সেজন্য এখানে অনেকেই সচেষ্ট – যেমন রোবের্তো মারিয়ানোর দশ বছর বয়সের মেয়ে সিলভিয়া৷ সিলভিয়া বলল, ‘‘কাঠ কাটা ও ম্যানগ্রোভ নোংরা করা উচিত নয়৷''
বাঁচানোর চেষ্টা
পানামার জলাভূমি অঞ্চলকে বাঁচানোর একটি প্রকল্পে অংশ নিচ্ছে সিলভিয়া৷ সে আর তার স্কুলের সাথীরা মিলে ‘তরুণ ম্যানগ্রোভরক্ষী'-দের একটি দল গড়ে তুলেছে৷ দিনে দু'বার করে তারা হ্রদ থেকে জল তুলে নিয়ে যায় খাড়া ঢাল বেয়ে৷ এই জল দিয়ে স্কুলের কম্পাউন্ডে ম্যানগ্রোভের চারা বড় করছে তারা৷ এই শিশুরা তাদের অবসরসময়ে একটা নার্সারি গড়ে তুলেছে আর সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে ম্যানগ্রোভ চারাগুলোর যত্ন নিচ্ছে৷
বর্ষায় আরো সুন্দরী সুন্দরবন
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ‘ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট’ বা শ্বাসমূলীয় বন সুন্দরবন৷ এই বনের প্রধান গাছটির নাম সুন্দরী৷ আর তার থেকেই সুন্দরবনের নামকরণ৷ ঋতুতে ঋতুতে এ বনের চরিত্র বদলায়৷ তবে সুন্দরবন সবচেয়ে বেশি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে বর্ষাকালে৷
ছবি: DW/M. Mamun
‘আয় বৃষ্টি ঝেঁপে, ধান দিলাম মেপে’
বঙ্গোপসাগরের উপকূল ঘেঁষে সুন্দরবনে বর্ষা আসে মে মাসে আর সেই বর্ষাকাল চলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত৷ অবশ্য জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যভাগ পর্যন্ত এখানে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়৷ সুন্দরবন অঞ্চলে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৬৪০-২০০০ মিমি৷ তবে বনের পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে বৃষ্টিপাত তুলনামূলকভাবে বেশি৷
ছবি: DW/M. Mamun
দিনে দু’বার জোয়ার-ভাটা
প্রতিদিন দু’বার করে জোয়ার-ভাটা হয় সুন্দরবনে, যা কিনা বাংলাদেশ ও ভারত – প্রতিবেশী এই দুই দেশের বিশাল উপকূলীয় অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত৷ এখানে সবচেয়ে বড় জোয়ার হয় পূর্ণিমা ও অমাবস্যায়৷ তবে বর্ষাকালে জোয়ারের উচ্চতা থাকে সবচেয়ে বেশি৷ এ সময় বনের বেশিরভাগ অংশই প্লাবিত হয়, ডুবে যায় সবকিছু৷
ছবি: DW/M. Mamun
খাবারের সন্ধানে হরিণসাবক
জোয়ারের পানিতে সুন্দরবন প্লাবিত হলে হরিণসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীরা অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গাগুলোয় আশ্রয় নেয়৷ এরপর জোয়ারের পানি নেমে গেলে খাবারের সন্ধানে নেমে পড়ে তারা৷ আর ঠিক সেই মুহূর্তটার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন বহু পর্যটক – বন্যপ্রাণী দেখবেন বলে৷
ছবি: DW/M. Mamun
বর্ষার জন্য বিশেষ ‘প্যাকেজ’
বর্ষায় সুন্দরবনে পর্যটকের আনাগোনা বেশ কম৷ এ বনে পর্যটনের মৌসুম মূলত নভেম্বর থেকে মার্চ৷ তবে বর্ষার সুন্দরবনকে দেখতে কিছু কিছু ভ্রমণপিয়াসী মানুষ এখানে আসেন বটে৷ আর সেই সব পর্যটকদের চাহিদার কারণেই সম্প্রতি দু-একটি বেসরকারি ভ্রমণ সংস্থা বর্ষাকালে সুন্দরবন ভ্রমণের ব্যবস্থা করছে, দিচ্ছে বিশেষ ‘প্যাকেজ’৷
ছবি: DW/M. Mamun
তারপরেও পরিত্যক্ত বহু এলাকা
বর্ষা মৌসুমে প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা সুন্দরবনের হাড়বাড়িয়া বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের একটি পর্যটক ট্রেল৷ এ সময়ে পর্যটকের যাতায়াত না থাকায় এই হাঁটা পথের ওপরে জমা হয়েছে বিভিন্ন গাছের ফল৷ আসলে ম্যানগ্রোভ অরণ্য হলেও, বেশ কিছু ফল গাছও আছে সুন্দরবনে৷
ছবি: DW/M. Mamun
সুন্দরী বন সুন্দরবন
জোয়ারের পানিতে সুন্দরবনের এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় ভেসে আসে এ বনের প্রধান বৃক্ষ সুন্দরী গাছের ফল৷ ভেসে যায় আশেপাশের কোনো এলাকায়৷ তবে সুন্দরী গাছের বন সুন্দরবনে এমন একটা দৃশ্যের দেখা পাওয়া যায় কেবলমাত্র বর্ষাকালে৷
ছবি: DW/M. Mamun
জঙ্গলের বিস্তার, সুন্দরেরও
জোয়ারের পানিতে ভেসে আসা সুন্দরী ফলের অংশ বিশেষ ভাটার সময় জঙ্গলে থেকে যায়৷ তারপর সেখান থেকেই অঙ্কুর গজায়, গাছ হয়, ফুল ফোটে, ফল দরে৷ এভাবেই বিস্তার ঘটে সুন্দরী গাছ এবং তার সঙ্গে সঙ্গে সুন্দরবনের৷ প্রকৃতির এ নিয়মেই বেড়ে উঠেছে সুন্দরবনের বেশিরভাগ বনাঞ্চল৷
ছবি: DW/M. Mamun
সুন্দরবনের বানর
সুন্দরবনের অন্যতম বাসিন্দা বানর৷ ম্যানগ্রোভ বা শ্বাসমূলীয় এই বনে বেড়াতে গেলে তাই এদের চোখে পড়বেই৷ কখনও একা একা, আবার কখনও দঙ্গল বেধে ঘুরে বেড়ায় এরা৷ তবে বৃষ্টির সময় এদের গাছের ডালেই আশ্রয় নিতে দেখা যায়৷
ছবি: DW/M. Mamun
চলে লুকোচুরির খেলা...
বর্ষাকালে সুন্দরবনে চলে রোদ আর বৃষ্টির লুকোচুরি৷ ঝকঝকে রোদের মধ্যে হঠাৎ করেই আকাশে মেঘের ঘনঘটা দেখা যায় এখানে৷ গাড় হয়ে ওঠে নদীর জল, বনের সবুজে পড়ে ছায়া৷ কখনো কখনো মেঘের ভেতর থেকেই সূর্য উঁকি মারে, অসাধারণ দৃশ্যের অবতারণা হয় বনজুড়ে৷
ছবি: DW/M. Mamun
‘লাল-নীল-সবুজের মেলা বসেছে’
কখনও আবার তুমুল বৃষ্টিপাতের মধ্যে হঠাৎ করেই ঝকঝকে নীলাকাশ দেখা যায় সুন্দরবনে৷ বৃষ্টিধৌত বনে সূর্যের আলো তখন ভিন্ন পরিবেশের সৃষ্টি করে৷ ঝলমল করে ওঠে নদী, বনের গাছ৷ বৃষ্টি একটু ধরলে আস্তে আস্তে নদীর ধারে চড়তে আসে বানর, হরিণ, এমনকি বাঘ মামাও৷
ছবি: DW/M. Mamun
বর্ষার এক ভিন্ন চিত্র
সুন্দরবনের হাড়বাড়িয়া বন্যপ্রাণী অভয়রাণ্যে বৃষ্টিস্নাত এক ‘গ্রেটার ইয়োলোনেইপ’ বা বড় হলদেসিঁথি কাঠঠোকরা৷ নানা রকম পাখির নিরাপদ আবাসস্থল এই সুন্দরবন৷ প্রায় ৪০০ প্রজাতির আবাসিক ও পরিযায়ী পাখি রয়েছে সুন্দরী গাছের এ বনে৷
ছবি: DW/M. Mamun
সুন্দরবনের সুন্দরী হাঁস
সুন্দরবনের কটকা বনাঞ্চলের বড় কটকার খালে চোখে পড়ে ‘মাস্কড ফিনফুট’ বা সুন্দরী হাঁস৷ এর আরেক নাম কালোমুখ প্যারা পাখি৷ বাংলাদেশের সুন্দরবন ও মিয়ানমারে এ হাঁসের বিচরণ সবচেয়ে বেশি৷ সারা পৃথিবীতে বর্তমানে এ পাখির সংখ্যা এক হাজারেরও কম৷ লাজুক স্বভাবের সুন্দরী হাঁসের বৃহত্তম আবাসস্থলও সুন্দরবন৷
ছবি: DW/M. Mamun
জেলেদের জীবন
সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী জয়মনি জেলে পল্লীর পাশে পশুর নদীতে চিংড়ি পোনা সংগ্রহ করছেন জেলেরা৷ সুন্দরবনের পাশে গড়ে ওঠা ভ্রাম্যমাণ এ জেলে পল্লীর জেলেরা সুন্দরবন ও তার আশেপাশে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের পর...
সুন্দরবনের শেলা নদীতে চলছে তেলবাহী ট্যাংকার ও মালবাহী জাহাজ৷ গত ডিসেম্বরে প্রায় ৫৮ হাজার লিটার ফার্নেস অয়েল নিয়ে জাহাজ ডুবির পরও এ রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়নি৷ এছাড়া সাম্প্রতিক বাঘশুমারিতে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ার কারণ হিসেবেও এই নৌ-রুটটিকে দায়ী করা হচ্ছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
14 ছবি1 | 14
নীচের জলাভূমিতে পানামার পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রযুক্তিবিদরা প্রকল্পের আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ দিকের উপর নজর রাখছেন৷ জলাভূমি কতটা কার্বন ডাই-অক্সাইড শুষে নেয়, সেটা তারা মেপে দেখছেন৷ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, এ ব্যাপারে ম্যানগ্রোভ অরণ্য খুবই কার্যকরি: ম্যানগ্রোভ অরণ্য সাধারণ গাছগাছালির চেয়ে পাঁচগুণ বেশি কার্বন ডাই-অক্সাইড শুষে নিতে পারে৷
পানামার পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের রোসিলেনা লিন্দো বললেন, ‘‘আমরা জানতে চেয়েছিলাম, এখানকার ম্যানগ্রোভগুলো ঠিক কী পরিমাণ কার্বন ডাইঅক্সাইড শুষে নিতে পারে আর তা আর কত বেশি হতে পারে৷ তা থেকে আমরা জানতে পারব, জলবায়ু সুরক্ষায় পানামা কতটা অবদান রাখতে পারে৷ সেজন্যই আমরা এই কাজ করছি৷''
‘কাস্কারেরোস'
জাতিসংঘের সহযোগিতায় পানামা সরকার একটি নির্দেশাবলী সৃষ্টি করছে, যার লক্ষ্য হবে, দেশটি যাতে জলবায়ু সংরক্ষণের ক্ষেত্রে তার আন্তর্জাতিক বিধিবদ্ধতা পূরণ করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা৷ এক্ষেত্রে মূল বাধা হলো গো-পালন৷ বাসিন্দারা বন কেটে চারণভূমি সৃষ্টি করেন৷ গরুর চামড়া রং করার জন্য এই ‘কাস্কারেরোস' আবার ম্যানগ্রোভ গাছের ছাল ব্যবহার করেন৷
মহাবিপর্যয়ের মুখে সুন্দরবন
সুন্দরবনের শেলা নদী থেকে পশুর নদী পর্যন্ত তেল ছড়িয়ে পড়েছে৷ সাড়ে তিন লাখ লিটারের বেশি তেল সুন্দরবনের ৩৪ হাজার হেক্টর এলাকায় এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে৷ দেখা দিয়েছে পরিবেশ বিপর্যয়৷
ছবি: Ingrid Kvale
শেলা নদীতে ট্যাংকার দুর্ঘটনা
৯ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার ভোরের দিকে সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের কাছে শেলা নদীতে সাড়ে তিন লাখ লিটারের ফার্নেল ওয়েলবাহী ট্যাংকার ডুবির পর, ছড়িয়ে পড়েছে তেল৷ সুন্দরবনের ৩৪ হাজার হেক্টর এলাকায় এরই মধ্যে তেল ছড়িয়ে পড়েছে বলে বন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন৷
ছবি: STR/AFP/Getty Images
পরিবেশ বিপর্যয়
তেল ছড়িয়ে পড়ায় পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করে বন সংরক্ষক জানিয়েছেন, এই তেলের ক্ষতিকর প্রভাব এখনই বোঝা যাবে না৷ একটু সময় লাগবে৷ তেলের কারণে সুন্দরবনের গাছপালা আস্তে আস্তে শুকিয়ে মারা পর্যন্ত যেতে পারে৷ সুন্দরবনের নদী-খালে অন্তত ৩০০ প্রজাতির মাছের বিচরণ রয়েছে ছোট প্রজাতির কিছু মাছ এরই মধ্যে মরতে শুরু করেছে৷
ছবি: DW/M, Mamun
বিশ্ব ঐতিহ্যের জন্য বিপর্যয়
পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তেল ক্রমেই যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে এই বিশ্ব ঐতিহ্যের জন্য বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে৷
শেলা নদীর জয়মনি এলাকাটি ডলফিনদের অভয়াশ্রম৷ সেখানে একটু পর পর ডলফিন লাফিয়ে উঠত৷ স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছেন, তেল ছড়িয়ে পড়ার পর মঙ্গলবার বিকাল থেকে আর কোনো ডলফিন উঠতে দেখা যাচ্ছে না৷ তেলের কারণে তারা হয় মরে গেছে অথবা দূরে কোথাও সরে গেছে৷
ছবি: Rubaiyat Mansur
গাছে গাছে তেলের আবরণ
বন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সুন্দরবনের ওই সব এলাকায় সুন্দরী গাছ বেশি৷ শেলা নদী সংলগ্ন বনের সুন্দরী, কেওড়া, বাইনসহ গুল্ম জাতীয় গাছের পাতায় তেলের আবরণ লেগে রয়েছে৷ কোথাও কোথাও জোয়ারের পানি বনভূমিতে উঠে বনের গাছের শ্বাসমূলে লেগে আছে তেল৷
ছবি: DW/M, Mamun
ডলফিনদের রক্ষা
নদী থেকে তেল দ্রুত অপসারণ করা না গেলে বিরল প্রজাতির ডলফিনের এই অভয়াশ্রম রক্ষা করা কঠিন হবে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা৷
ছবি: Ingrid Kvale
7 ছবি1 | 7
রঞ্জনকার্য সমিতির প্রধান আরিস তেহেইরা বললেন, ‘‘হ্যাঁ, কাস্কারেরোস হিসেবে আমাদের ম্যানগ্রোভ গাছের ছালের প্রয়োজন পড়ে৷ যুগপৎ আমরা ম্যানগ্রোভ অরণ্যের পুনর্বনানীকরণে প্রতিবছর সাহায্য করছি৷ ২০১৪ সালে আমরা লাহাস হ্রদে ৩০,০০০ চারা পুঁতেছি, ২০১৫ সালে পুঁতেছি ন'হাজার চারা আর গতবছর পাঁচ হাজার৷''
কাস্কারেরোদের কয়েকজনকে মৌমাছি পুষতে শেখানো হচ্ছে৷ মধু বেচেও বাড়তি রোজগার হওয়ার আশা আছে, যদিও প্রকল্পের এই অংশ সবে শুরু হয়েছে৷ চামড়া রং করার পরিবর্তে মধু বেচে একই পরিমাণ রোজগার করার আশা কম৷ তেহেইরা বললেন, ‘‘মানুষজন চামড়ার উৎপাদন আর সেই চামড়া ছোপানোর জন্য ম্যানগ্রোভ গাছের ছালের উপর বিশেষভাবে নির্ভর করে৷ এ অঞ্চলের প্রায় ১,০০০ পরিবারের জীবিকা আসে ঐ কাজ থেকে৷ এদেশে চামড়ার চাহিদা অনেক৷''
এলাকায় চামড়ার ব্যবসা বেশ ভালো শিকড় গেড়েছে৷ ম্যানগ্রোভ গাছের ছাল দিয়ে ঐ চামড়া রং করা হয়৷ গাছের ছাল গুঁড়ো করে চৌবাচ্চার জলে মেশানো হয়, যা থেকে কাঁচা চামড়ায় লালচে রং ধরে৷ এই ছোট্ট কারখানাটি থেকে সপ্তাহে হাজার দেড়েক মার্কিন ডলার মুনাফা হয়৷