ফল্কসভাগেন গাড়ি কোম্পানির বিটল গাড়ির উৎপাদন বন্ধ হয় ২০০৩ সালে, কিন্তু আজও দুনিয়ায় বিটল-প্রেমীর কোনো অভাব নেই৷ তাদের জন্য বার্লিনে বিটল সংক্রান্ত একটি ভার্চুয়াল মিউজিয়াম পর্যন্ত খোলা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বিজ্ঞাপন
বাড়ির ‘লোক’, কাজের ‘লোক’, সেই সঙ্গে গাড়ি: এই হল ফল্কসভাগেন বিটল বা জার্মানে ‘কেফার’ গাড়িটির চরিত্র ও প্রকৃতি৷ বহু মানুষের স্মৃতির সঙ্গে জড়িত একটি মোটরগাড়ি – সেই ধরনের স্মৃতিগুলি সংগ্রহ করে একটি বই বার করেছেন বার্লিনের আলোকচিত্রী ইয়র্গ লেমান৷ ফল্কসভাগেন কোম্পানির এই পুরনো মডেলের গাড়িটির সঙ্গে তাঁর আত্মিক সম্পর্ক৷ ইয়র্গ বলেন, ফল্কসভাগেন বিটল ‘‘অন্য সব গাড়ির চেয়ে আলাদা: বিলাসব্যসনের প্রতীক নয় – বরং সরলতার প্রতীক৷’’
সত্যিই একটা সাদামাটা মোটরগাড়ি; তৈরি হয়েছিল, যাতে যুদ্ধপরবর্তী জার্মানিতে মানুষজন যাতায়াত করতে পারেন, মুক্তির স্বাদ পান৷ ইয়র্গ লেমান তাঁর জীবনে প্রথম যে গাড়িটি চালান, সেটিও ছিল একটি বিটল৷ ইয়র্গ বললেন, ‘‘বইতে যেমন দেখেছেন, আমার ‘বিটল’ গাড়ির প্রথম স্মৃতি ছিল, মা নার্সিং হোম থেকে বেরিয়ে আমাকে কোলে নিয়ে গাড়িতে বসেছেন... আমার তখন সবে জন্ম হয়েছে৷ বাবা ছবিটা তুলেছিলেন – তাই দিয়েই আমার সংগ্রহের শুরু৷’’
জার্মানরা আজও যে সব গাড়ি নিয়ে পাগল...
এই সব মডেলের গাড়ি দেখে গাড়ি প্রেমিকদের চোখে আজও জল আসে৷ ফল্কসভাগেন থেকে বিএমডাব্লিউ, ওপেল থেকে মার্সিডিজ বেঞ্জ অবধি জার্মান গাড়ি নির্মাতারা নানা ‘কাল্ট মডেল’ তৈরি করেছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Kneffel
ফল্কসভাগেন বিটল (১৯৩৮)
এক কথায় ‘ওল্ড ফেইথফুল’৷ সর্বসাকুল্যে দু’কোটি দশ লাখের বেশি বিটল তৈরি হয়েছে৷ ফল্কসভাগেন বিটল সম্ভবত বিশ্বের প্রখ্যাততম মোটরগাড়ি৷ ১৯৩৮ থেকে ২০০৩ সাল অবধি বিটল-এর ডিজাইন বিশেষ বদলায়নি৷ ‘হার্বি’ ফিল্মটার কথা মনে করুন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ফল্কসভাগেন টি-ওয়ান (১৯৫০)
...বলতে বোঝায় ফল্কসভাগেন ক্যাম্পার ভ্যান, যা হিপি আন্দোলনের সময় খুব জনপ্রিয় হয়েছিল৷ জার্মানরা এর নাম দিয়েছিলেন ‘বুলি’৷ সে-যাবৎ এক কোটির বেশি ফল্কসভাগেন বাস বিক্রি হয়েছে, যার মধ্যে টি-ওয়ান মডেলের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৮ লাখ৷
ছবি: DW/M. Reitz
মেসারস্মিট কেবিন স্কুটার (১৯৫৩)
মেসারস্মিট যে আদতে এয়ারোপ্লেন তৈরি করত, তিন চাকার এই এয়ায়োডাইনামিক গাড়িটির চেহারা দেখলেই তা বোঝা যায়৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিমান তৈরি বন্ধ হয়ে যায়, কাজেই মেসারস্মিট কিছুদিন ইঞ্জিনিয়ার ফ্রিটৎস ফেন্ড-এর সঙ্গে ‘ফ্লিটৎসার’ গাড়ির মডেলটি নিয়ে কাজ করে৷ তবে ১৯৫৬ সালের মধ্যেই মেসারস্মিট আবার বিমান উৎপাদনে ফেরে৷
ছবি: picture alliance/dpa/H. Galuschka
মার্সিডিজ ৩০০ এসএল (১৯৫৪)
গাড়িটার ডাকনাম হয়েছিল ‘গালউইং’ বা ‘গাঙচিলের পাখা’, কারণ দরজাগুলো ঠিক সেভাবেই ওপরের দিকে খুলত৷ ৩০০ এসএল সিলভার অ্যারো রেসিং কার-গুলো থেকেই মার্সিডিজ বেঞ্জ আবার মোটর রেসিং-এ ফেরে৷ লে মান্সের ২৪ ঘণ্টার মোটর দৌড় আর ক্যারেরা প্যানঅ্যামেরিকানা রেসিং ইভেন্টে জেতার পর ৩০০ এসএল গাড়ির একটি রাস্তায় চলা ও চালানোর মতো মডেল বার করা হয়৷
ছবি: Daimler AG
বিএমডাব্লিউ ইসেটা (১৯৫৫)
১৯৫৫ থেকে ১৯৬২ সাল অবধি ভালোই রোজগার করেছে বিএমডাব্লিউ এই ‘বাবল কার’ বা ‘বুদবুদ গাড়ি’-টি তৈরি করে৷ সস্তার কিন্তু কাজের এই মিনিগাড়িটিতে একটি মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন লাগানো ছিল৷ খুলতে হতো সামনে, ঠিক একটা ফ্রিজিডেয়ারের মতো৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Kneffel
পোর্শে নাইন-ইলেভেন (১৯৬৩)
ভাবলেই আশ্চর্য লাগে, পোর্শে ৯১১ স্পোর্টিং মডেলটি চলে আসছে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে! মোটরগাড়ির ইতিহাসে খুব কম মডেলই এতদিন ধরে চলে৷ তার উঁচু করা হেডলাইট আর পিছনদিকে নীচু বুট দেখলেই নাইন ইলেভেনকে চেনা যায়৷
ছবি: picture-alliance//HIP
মার্সিডিজ বেঞ্জ ৬০০ (১৯৬৪)
টেলিফোন, এয়ার কন্ডিশনিং আর ফ্রিজ লাগানো এই জার্মান লাক্সারি সেডানটি সত্তর আর আশির দশকে পোপ থেকে শুরু করে জন লেনন অবধি সেলিব্রিটিদের খুব প্রিয় ছিল৷ এমনকি ১৯৫৫ সালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ যখন রাষ্ট্রীয় সফরে জার্মানিতে আসেন, তখন জার্মান সরকার মাননীয় অতিথির জন্য একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ ৬০০ ভাড়া করেছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ট্রাবান্ট ৬০১ (১৯৬৪)
ফল্কসভাগেন বিটল পশ্চিম জার্মানিতে যা ছিল, পূর্ব জার্মানিতে ট্রাবান্ট ৬০১ ছিল ঠিক তাই৷ প্লাস্টিকের বডি আর টু-স্ট্রোক ইঞ্জিন সংযুক্ত এই ‘ট্রাবি’ ছিল এক হিসেবে পূর্ব জার্মানির প্রতীক৷ আজও প্রায় ৩৩,০০০ ‘ট্রাবি’ জার্মানির পথেঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছে৷
ছবি: Imago/Sven Simon
ভার্টবুর্গ ৩৫৩ (১৯৬৬)
আইসেনাখ শহরের কাছে ভার্টবুর্গ দুর্গ, তারই নামে নাম রাখা হয়েছিল পূর্ব জার্মানির এই দ্বিতীয় আইকনিক গাড়িটির৷ তৈরি হতো প্রধানত রপ্তানির জন্য, যেমন হাঙ্গেরি অথবা ব্রিটেনে৷ তবে পশ্চিম জার্মানিতে ভার্টবুর্গ গাড়ির বিশেষ চাহিদা ছিল না৷
ছবি: picture-alliance/ZB/J. Wolf
ওপেল মান্টা (১৯৭০)
সৃষ্টি হয়েছিল মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য একটি স্পোর্টস মডেল হিসেবে – পরে সেটাই জার্মানির ‘ইয়ং ম্যান’-দের কাছে অভীপ্স বস্তু হয়ে দাঁড়ায়৷ মান্টা চালকদের নিয়ে জার্মানিতে অসংখ্য রসিকতা আছে: বিশেষ করে মান্টা চালকদের বুদ্ধি – অথবা তার অভাব নিয়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ফল্কসভাগেন গল্ফ (১৯৭৪)
১৯৭৪ সালে ফল্কসভাগেন কোম্পানি তাদের প্রথম গল্ফ মডেল বার করে – সুবিখ্যাত বিটল গাড়ির উত্তরসূরি হিসেবে৷ কমপ্যাক্ট হলেও, গল্ফ ছিল বেশ ‘স্পোর্টি’ আর তেলও খেতো কম – যা সত্তরের দশকের ‘অয়েল ক্রাইসিসে’ খুবই কাজে লেগেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
11 ছবি1 | 11
বিটল গাড়ি চিরকালই তাঁর দৈনন্দিন জীবনের অংশ ছিল৷ তাঁর মা গাড়ির বিভিন্ন ট্রিপ নিয়ে খাতা রাখতেন – তা দেখলেই সেটা বোঝা যায়৷ ইয়র্গ জানালেন, ‘‘মা বাবার সঙ্গে এই গাড়িতে কোথায় কোথায় গেছেন, কী অভিজ্ঞতা হয়েছে, সব কিছু লিখে রেখেছেন৷’’
ইয়র্গ লেমান পুরনো জিনিসপত্রের বাজার ও নিলাম থেকে ফক্সভাগেন বিটল-এর দু'হাজারের বেশি ছবি সংগ্রহ করেছেন৷ তার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর ছবিগুলি একটি বইতে প্রকাশিত হয়েছে – সঙ্গের ভাষ্য ও টিকা-টিপ্পনী লিখেছেন সাংবাদিক কাটিয়া ফল্কমার৷
পরিবারের সদস্য
যেমন রোজকার জীবন, তেমনই ছুটি কাটাতে যাওয়ার ছবি – বিটল সহ৷ অনেক মানুষের কাছে বিটল গাড়ি বস্তুত পরিবারের আরেক সদস্য – তাই বিয়ে-শাদি বা জন্মদিনের ফটোতে বিটল-কে বাদ দেওয়া চলে না৷ ইয়র্গ জানালেন, ‘‘বহু মানুষ তাদের ফল্কসভাগেন বিটল গাড়ির সঙ্গে ছবি তুলেছেন – বিয়ের সময়; ছুটি কাটাতে গিয়ে৷ দেখলে বোঝা যায়, তারা তাদের গাড়িকে সত্যিই ভালোবাসতেন৷’’
ফ্যার্ডিনান্ড পর্শের প্রতি নাৎসি প্রশাসনের নির্দেশ ছিল, আপামর জনতার জন্য একটি সস্তার, নির্ভরযোগ্য গাড়ি বানানোর৷ ১৯৩৮ সালে ফল্কসভাগেন বিটল-এর প্রথম মডেলটি প্রদর্শিত হয়৷ তবে ভল্ফসবুর্গে কোম্পানির মূল কারখানায় বিটল গাড়ির সিরিজ প্রোডাকশন শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে৷ ২০০৩ সালে প্রথমে জার্মানিতে ও পরে মেক্সিকোতে বিটল গাড়ির উৎপাদন বন্ধ হওয়া পর্যন্ত মোট দু'কোটি দশ লাখ বিটল তৈরি হয়েছিল৷ এই হল বিটল গাড়ির বিশ্বজয়ের কাহিনি৷
জার্মানির ‘অটোবান’ বা মোটরওয়ের নিয়মকানুন
ফক্সভাগেন, আউডি, মার্সিডিজ, বিএমডাব্লিউ বা ওপেল গাড়ির দেশ জার্মানিতে মোটরওয়ে যে চোখ-ধাঁধানো হবে, তাতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই৷ তবে সেখানেও গাড়ি চালানোর নিয়মকানুন আছে৷
ছবি: Imago/Horst Galuschka
গতিসীমা নেই
জার্মান অটোবানে সাধারণভাবে কোনো গতিসীমা নেই৷ বলতে কি, গোটা ইউরোপের মধ্যে একমাত্র জার্মান মোটরওয়েতেই যত খুশি স্পিডে গাড়ি চালানো যায় – অবশ্য ট্র্যাফিকের আইনকানুন মেনে ও নিজের বা পরের জন্য কোনো বিপদ সৃষ্টি না করে৷ গাড়ি ও মোটরওয়ের দেশে মোটরচালকের কোনো অভাব নেই: ১৭ বছর বয়স হলেই, লাইসেন্স থাকলে কোনো প্রাপ্তবয়স্কের সঙ্গে গাড়ি চালানো যায়৷ বাধাহীন ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায় ১৮ বছর বয়স থেকে৷
ছবি: Imago/Horst Galuschka
যানজট
জার্মানির জাতীয় অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশনের নাম হলো – তার আদ্যক্ষর মিলিয়ে – এডিএসি৷ তাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৬ সালে তার আগের বছরের তুলনায় মোটরওয়েতে ১৫ শতাংশ বেশি যানজট ঘটেছে৷ প্রধানত চারটি কারণে: সাধারণভাবে গাড়ির সংখ্যা বাড়ার ফলে; একটি চ্যানেল অধিকাংশ সময় ট্রাক আর লরিতে ভর্তি থাকার কারণে; অটোবানের বিভিন্ন জায়গায় মেরামতির কাজ চলে বলে এবং চতুর্থত, কাছাকাছি কোনো বড় শহর আছে বলে৷
ছবি: Getty Images/S. Gallup
সম্মুখে ঠেলিছে মোরে...
অটোবানের ‘ভিতরদিকের’, অর্থাৎ বাঁদিকের চ্যানেলগুলো হল দ্রুতগামী চ্যানেল; ওভারটেক করতে না হলে, ও ধরনের চ্যানেল আটকে গাড়ি না চালানোই ভালো – নয়ত দেখবেন, কোনো ব্যস্তবাগীশ হয়ত পেছন থেকে আপনার ঘাড়ে এসে পড়ে, হর্ন না বাজালেও, বাতি জ্বালিয়ে-নিভিয়ে তার ব্যস্ততা আর বিরক্তি প্রকাশ করছে৷ মনে রাখবেন, শশব্যস্ত হয়ে তাকে রাস্তা ছেড়ে দেবার কোনো তাড়া নেই: কেননা সে যা করছে, সেটাও রীতি ও নীতিবিরুদ্ধ!
ছবি: imago/Jochen Tack
ছবি তোলানোর দাম অনেক হতে পারে
স্পিড ক্যামেরা! জার্মানিতে মোটরওয়ের ধারে-ধোরে এ ধরনের বসানো বা মোবাইল স্পিড ক্যামেরা থাকাটা আজকাল প্রায় স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ পরে ডাকপিয়নের হাতে করে আসবে – ছবি সুদ্ধু – স্পিড লিমিট ছাড়ানোর সাক্ষ্যপ্রমাণ ও শেষমেষ জরিমানার তলব৷ ছবিতে গাড়ির নাম্বারপ্লেটের সঙ্গে নিজের শ্রীমুখও স্পষ্ট দেখতে পাবেন, কাজেই পার পাবার কোনো উপায় নেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/H. Galuschka
গাড়িতে হাতে মুঠোফোন নিয়ে কথা বলা চলবে না
বিশেষ করে অটোবানে চলন্ত অবস্থায়৷ ধরা পড়লে ১০০ ইউরো জরিমানা আর সেই সঙ্গে ফ্লেন্সবুর্গে ‘গাড়ি পুলিশের’ কালো খাতায় একটি ঢেঁড়া বা পয়েন্ট৷ আর যদি কানে মোবাইল ফোন ধরে গাড়ি চালানোর সময় কোনো অ্যাক্সিডেন্ট ঘটে, তবে তো রক্ষা নেই: জরিমানা তো বাড়বেই, সেই সঙ্গে ড্রাইভিং লাইসেন্সও কিছুদিনের জন্য বাজেয়াপ্ত হতে পারে৷ এর চাইতে স্টিয়ারিং থেকে হাত না উঠিয়ে ফোন করার ব্যবস্থা রাখাই ভালো৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Klose
যানজট হলে অ্যাম্বুলেন্স আর পুলিশের জন্য রাস্তা রাখবেন
অর্থাৎ পাশাপাশি দু’টি চ্যানেলের গাড়িকে ডানদিকে ও বাঁদিকে সরে গিয়ে সেই দু’সারি গাড়ির মাঝখানে অ্যাম্বুলেন্স বা পুলিশের গাড়ি যাবার জন্য জায়গা রাখতে হবে৷ কারণ? মোটরওয়েতে যানজট হবার একটা বড় কারণ হলো অ্যাক্সিডেন্ট৷ সেক্ষেত্রে আহতদের দেখাশোনা ও দুর্ঘটনার খুঁটিনাটি নথিবদ্ধ করার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশের অকুস্থল অবধি পৌঁছাতে পারা চাই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Stratenschulte
আর যদি নিজের গাড়ির কিছু হয়?
ধরুন মোটরওয়েতে গাড়ি খারাপ হলে, মূল চ্যানেলগুলোর পাশে ‘অবস্থানের ’ চ্যানেলটিতে গাড়ি পার্ক করে, সেখান থেকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে ‘সতর্কতা ত্রিভুজ’ বসাতে হবে; নিজে গাড়ি থেকে নামলে ফ্লুওরেসেন্ট স্ট্রাইপ দেওয়া জ্যাকেট পরে নামতে হবে৷ অটোবানে গাড়ি চালাতে হলে এ সব সাজসরঞ্জাম ছাড়া গাড়িতে একটি ‘ফার্স্ট এইড কিট’ রাখাটা বাধ্যতামূলক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Gentsch
মদ খেয়ে গাড়ি চালানোর অনেক বিপদ
এক্ষেত্রে জার্মানি হলো ‘জিরো টলারেন্স’ বা কোনো-মাপ-নেই-এর দেশ৷ মদ্যপান করে গাড়ি চালানোর সীমা হলো ০ দশমিক ৫ শতাংশ বিএসি বা রক্তে অ্যালকহলের পরিমাণ৷ মদ খেয়ে গাড়ি চালানোর জরিমানাই শুরু হয় ৫০০ ইউরো দিয়ে; এছাড়া গাড়ি পুলিশের খাতায় ঢেঁড়া, এমনকি একমাসের জন্য লাইসেন্স বাতিল, এ সব তো আছেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শীতে ‘স্নো টায়ার’
জার্মানিতে শীতকাল মানে পথেঘাটে বরফ পড়ে থাকতে পারে, বৃষ্টির পানি চরম শীতে জমাট বেঁধে ‘কালো বরফ’ তৈরি হয়ে থাকতে পারে – যা খালি চোখে হঠাৎ খেয়াল করা যায় না, বিশেষ করে রাতের আঁধারে৷ কাজেই জার্মানিতে শীত এলে গাড়িতে শীতের টায়ারে লাগানো হলো কর্তব্য – নয়ত বীমা কোম্পানিরা গোঁসা করবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Kästle
9 ছবি1 | 9
ইয়র্গের ভাষায়: ‘‘যুদ্ধে সব কিছু ধ্বংস হবার পর এ ধরনের একটি গাড়ি বাজারে আনতে পারা, একটি জার্মান পণ্যের এরকম সাফল্য পাওয়া ছিল গর্বের কথা৷ যে দেশ কয়েক বছর আগে পর্যন্ত অন্যান্য দেশে ধ্বংস ডেকে এনেছে, সেই দেশ থেকে হঠাৎ এমন একটা জিনিস বাজারে এলো যে, সারা দুনিয়া মুগ্ধ৷’’
ভার্চুয়াল বিটল মিউজিয়াম
সারা দুনিয়ার বিটল-প্রেমীদের নেটওয়ার্ক হিসেবে ইয়র্গ লেমান বার্লিনে একটি ভার্চুয়াল বিটল মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠা করেছেন৷ এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিটল-প্রেমীরা তাদের বিটল সংক্রান্ত স্মৃতি ও অভিজ্ঞতা আদানপ্রদান করতে পারবেন৷
৮০ বছরের সুদীর্ঘ ইতিহাস সত্ত্বেও আজও কিছু ফল্কসভাগেন বিটলকে রাস্তায় চলতে দেখা যায়৷ ইয়র্গ লেমান আগামীতে তাঁর বিটলকে বাহন করে নিউজিল্যান্ড পর্যন্ত ঘুরে আসার পরিকল্পনা করছেন৷ ইয়র্গ বললেন, ‘‘এরকম একটা গাড়িতে একা লাগে না৷ এরকম একটা গাড়ি নিয়ে নিউজিল্যান্ড যাবার পথে আমি রোজ কারো না কারো বাড়িতে রাত কাটানোর নিমন্ত্রণ পাবো বলে আমি ধরে নিতে পারি৷... এ ধরনের একটি গাড়িকে যোগাযোগের শ্রেষ্ঠ উপায় বলা যেতে পারে৷’’
মানুষজন যে তাদের বিটল গাড়িকে আদর করে ‘খোকা পর্শে’ বলে ডাকত, তার পিছনে অনেক ‘অযান্ত্রিক’ ভালোবাসা লুকিয়ে ছিল৷