‘গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম এলাকায় আদিবাসী-বাঙালিদের ওপর হামলা পরিকল্পিত৷ জমি দখল করতেই পরিকল্পিতভাবে তাদের উপর গুলি চালানো হয়৷'' ডয়চে ভেলেকে এ কথা বলেছেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া৷
বিজ্ঞাপন
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এসে তিনি আরো বলেন, চিনিকল কর্তৃপক্ষ যেমনটি দাবি করেছে তা একেবারেই ঠিক নয়৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘বীজ আখ কাটতে গিয়ে বাধা দেওয়ার ফলে সৃষ্ট কোনো কাকতালীয় ঘটনা ওটা নয়৷''
বুধবারই ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে ঢাকায় ফিলেছেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া৷ হামলায় আহতদের প্রতি আচরণেও অমানবিকতা লক্ষ্য করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি৷ তিনি বলেন, ‘‘রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিমল কিসকু ও চরণ সরেণকে হাতকড়া পরা অবস্থায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে৷ পুলিশের উপস্থিতিতেই তাদের আবার হুমকিও দেয়া হচ্ছে৷''
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘‘উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার আইন আছে বাংলাদেশে৷ সেই আইন মেনে অভিযান পরিচালনা করা হয়নি৷ তাছাড়া অভিযানে ম্যাজিস্ট্রেটের হুকুম ছাড়া পুলিশ গুলি করতে পারে না৷''
ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন লেখক ও গবেষক ড. স্বপন আদনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা, মৌলিক অধিকার সুরা কমিটির সদস্য জাকির হোসেন, রেজাউর রহমান, আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম, লেখক ও রাজনৈতিক কর্মী ফিরোজ আহমেদ ও সংস্কৃতিকর্মী অরূপ রাহী৷
আতঙ্কে সাঁওতাল পল্লী
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ আখের খামার এলাকার সাঁওতাল পল্লী মাদারপুর ও জয়পুরপাড়া এখনো থমথমে৷ বুধবার, অর্থাৎ গতকালও পুলিশের আতঙ্কে ওই দুই গ্রামের পুরুষরা বাড়ি ফেরেনি৷ তাদের ঘরে নেই খাবার৷ সবার চোখেই এক অজানা ভয়৷ আবার কখন জানি হামলা হয়, এই ভয়ে কুঁকড়ে আছেন গ্রামের বাসিন্দারা৷
দৈনিক ইত্তেফাকের গোবিন্দগঞ্জ প্রতিনিধি গোপাল মোহন্ত ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে৷ তবে সবার মধ্যেই আতঙ্ক৷ সাঁওতালদের সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বাঙালি হিন্দু ও মুসলমানরা কোনো ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না৷ যে জমি নিয়ে বিরোধ সেখানে ১০ ভাগ জমির মালিক সাঁওতালরা আর ৯০ ভাগই হিন্দু ও মুসলমানদের৷ সাঁওতালরা কিছু ক্ষতিপূরণ পেলেও বাঙালিদের দিকে কেউ নজর দিচ্ছে না৷ তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে৷''
গোপাল মোহন্ত বলেন, ‘‘সাহেবগঞ্জ সংলগ্ন সাঁওতাল অধ্যুষিত মাদারপুর গ্রামে গিয়ে বুধবার দেখা গেছে সাঁওতাল পরিবারের নারীরা বাড়ির উঠোনে বসে আছেন৷ বহিরাগত লোক দেখলেই তারা আতঙ্কিত হচ্ছেন৷ গ্রাম ঘুরে দেখা গেল বেশিরভাগ সাঁওতাল পুরুষই পুলিশের ভয়ে বাড়িছাড়া৷ নারীরা অনাহারে আছেন৷''
সাঁওতালরা যা বলছেন
সাঁওতাল অধ্যুষিত মাদারপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত রুমিলা কিসকু বললেন, ‘‘আমরা গরিব মানুষ৷ কৃষি কাজ করে সংসার চলে৷ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিল আলম বুলবুলের কথামতো বাপ-দাদার জমি ফেরত পাবার আশায় ধার-দেনা করে চালা ঘর তোলা হয়েছিল৷ আবার তার নেতৃত্বেই চালানো হয় উচ্ছেদ, পুলিশের উপস্থিতিতে ঘরগুলো আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়৷ সেই আগুনে চাল-ডাল, লেপ-তোষক বালিশ কিছুই রক্ষা পায়নি৷ পুলিশ গুলি করে আমাদের দু'জনকে মারলো৷''
সুব্রত সরকার
আরেকজন বললেন, ‘‘হামলার সময় দর্বৃত্তরা গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি লুট করে নিয়ে যায়৷ এখন সবসময় রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকি, কখন না জানি আবার হামলা হয়৷ এছাড়া পাওনাদারের চাপও আছে৷ ধার করা সেই টাকা কী করে পরিশোধ করবো৷ আমাদের অনেক লোককে পুলিশ আসামি করেছে৷ গ্রেপ্তারের ভয়ে তারা পালিয়ে আছে৷''
সেদিন যা ঘটেছিল
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের পাশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ নিয়ে প্রশাসন ও চিনিকলের লোকজন হাজির হয়৷ উচ্ছেদের চেষ্টা করলে সাঁওতাল ও বাঙালিদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে৷ এতে আট পুলিশ সদস্য আহত হন৷ আর বাঙালি ও সাঁওতালদের অন্তত ৩০ জন আহত হন৷ মারা যান দুই জন৷ গুলিবিদ্ধ হয়ে এখনো চিকিৎসাধীন আছেন কয়েকজন৷ এরপর ওই পল্লীতে আগুন দিয়ে বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়৷
ওই ঘটনার পর পুলিশের ধরপাকড় ও মামলার ভয়ে এলাকার পুরুষরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে৷ চিকিৎসাধীনরাও আতঙ্কে আছেন৷ পুড়ে যাওয়া বাড়ির সামনে (উঠানে) বসে আছেন নারীরা৷ তাদের খাওয়ার মতো কিছু নেই৷
গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) সুব্রত সরকার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এখন এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক৷ ঘরে আগুন ও লুটপাটের ঘটনায় সাঁওতালদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি৷ কারা আগুন দিয়েছে, তা আমরা জানি না৷''
ধর্মের নামে মন্দির, মসজিদ ও ঐতিহাসিক স্থাপনায় হামলা
প্রাচীন স্থাপনা ও অমুসলিমদের ধর্মীয় উপাসনালয় ধ্বংস করে চলেছে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস৷ মসজিদের ওপরও হামলা হয়েছে৷ উপমহাদেশে হিন্দু ও বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার ইতিহাসও দীর্ঘ৷ ধর্মের নামে এমন ধ্বংসের ‘খেলা’ থামবে কবে?
ছবি: Reuters
মালিতে ধ্বংসলীলা
এক সময় মালির টিমবাকটু শহরের অন্য নাম ছিল ‘মরুদ্যানের মুক্তা’৷ সেই শহরের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক ঐতিহ্যকে ধ্বংস করেই চলেছে সেখানকার ইসলামি জঙ্গি সংগঠন৷ ২০১২ সালে শহরটিতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর থেকে মুসলমানদের গড়া অনেক স্থাপত্য নিদর্শনও ধ্বংস করেছে তারা৷ সম্প্রতি শহরটিকে জঙ্গিদের কবল থেকে পুরোপুরি মুক্ত করার দাবি করেছে মালির সেনাবাহিনী৷
ছবি: Getty Images/AFP
সন্ত্রাসপ্রীতি এবং জ্ঞানভীতি
শুধু স্থাপনা বা গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক নিদর্শনই নয়, অনেক গুরুত্বপূর্ণ পাণ্ডুলিপিও ধ্বংস করেছে জঙ্গিরা৷
ছবি: DW/P. Breu
তথাকথিত আইএস-এর হামলা
সিরিয়ার পালমিরা শহরের প্রায় ২,০০০ বছরের পুরনো স্থাপনাগুলোও রেহাই পায়নি৷ সে দেশে চলছে তথাকথিত ইসলামি জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর ধ্বংসযজ্ঞ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পালমিরার মন্দির ধ্বংস
এক সময় সিরিয়ার হোমস নগরীর এই স্থাপনাটিকে নিয়ে গর্ব করত সিরিয়া৷ এটি এক সময় ছিল মন্দির৷ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রাচীন এই উপসনালয় দেখে পর্যটকরা মুগ্ধ হতেন৷ আইএস-এর হামলায় স্থাপনাটি এখন ক্ষতবিক্ষত৷
ছবি: Reuters/Stringer
ধ্বংস যখন প্রচারণার হাতিয়ার
ধর্মীয় সম্প্রীতি, সাংস্কৃতিক সহাবস্থানকে হুমকির মুখে দাঁড় করানোর চেষ্টায় আইএস অক্লান্ত৷ নৃশংসতা, বর্বরতা ক্রমেই আইএস-এর প্রচারণার হাতিয়ার হয়ে উঠছে৷ এভাবে পেট্রল ঢেলে স্থাপনা পোড়ালে সংবাদমাধ্যম লুফে নেয় খবর, খবর প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে তথাকথিত জঙ্গিরাও পেয়ে যায় তাদের কাঙ্খিত প্রচার৷
ছবি: picture alliance/AP Photo
আয়ের উৎস
সিরিয়া ও ইরাকের প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ শুধু ধ্বংসই করে না, অনেক সময় কদর বুঝে সেগুলো চোরাপথে চড়াদামে বিক্রিও করে আইএস৷ প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছ থেকেও অমূল্য সম্পদ কেড়ে নিয়ে বিক্রি করার অভিযোগ আছে আইএস-এর বিরুদ্ধে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/IS/Internet
আফগানিস্তানে তালেবান বর্বরতা
আফগানিস্তানের এই বৌদ্ধ মন্দিরটিকে গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের স্বীকৃতি দিয়েছিল ইউনেস্কো৷ ২০০১ সালে হামলা চালিয়ে এটি প্রায় ধ্বংস করে দেয় তালেবান৷
ছবি: picture-alliance/dpa/N. Ahmed
আফ্রিকায় হামলার শিকার মসজিদ
মসজিদও অনেকক্ষেত্রে তথাকথিত ধর্মীয় উন্মত্ততার শিকার৷ ২০১৫ সালে মুসলমানদের উপাসনালয়ের ওপর সবচেয়ে বেশি হামলার খবর আসে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকান থেকে৷ খ্রিষ্টান-মুসলিম দাঙ্গায় সেখানে অন্তত ৪১৭টি মসজিদ আংশিক অথবা পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে বলেও দাবি করা হয়৷
ছবি: ISSOUF SANOGO/AFP/Getty Images
গির্জায় হামলা
ইসলামি জঙ্গিরা আফ্রিকা অঞ্চলে গির্জাতেও প্রায়সময়ে হামলা চালায়৷ হামলায় হতাহতের ঘটনাও ঘটে৷ ওপরের ছবিটিতে কেনিয়ার এক গির্জায় হামলার পরের দৃশ্য৷
ছবি: dapd
ভারতের ইতিহাসের কালো অধ্যায়
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতের ইতিহাসের ‘কালো দিন’৷ ভারতের উত্তর প্রদেশের ফৈজাবাদ জেলার বাবরি মসজিদে সেদিনই হামলা চালিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে হিন্দু মৌলবাদীরা৷ মুঘল সম্রাট বাবরের নামে গড়া সুপ্রাচীন এই মসজিদের ওপর হামলার ঘটনা ভারতের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে৷
ছবি: AFP/Getty Images
বাংলাদেশে প্রতিবছরই মন্দিরে হামলা
বাংলাদেশের ভূখণ্ডে মূলত একাত্তরের মুক্তযুদ্ধের সময় থেকেই ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুরা হামলা, নির্যাতনের শিকার৷ তবে মন্দিরে মুর্তি ভাঙা, মন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের অসংখ্য ঘটনা ঘটে প্রতিবছর৷ বৌদ্ধ মন্দিরেও হামলা হয়৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হামলার কারণ ধর্মীয় উগ্রতা৷ সারা বিশ্বে ধর্মের নামে ধর্মীয় উপাসনালয় বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ওপর হামলা থামবে কবে?
ছবি: Reuters
11 ছবি1 | 11
যে কারণে এই হামলা
১৯৫৫ সালে চিনিকল কর্তৃপক্ষ আখ চাষের জন্য গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ওই এলাকায় ১ হাজার ৮৪০ একর জমি অধিগ্রহণ করে৷ ওইসব জমিতে উৎপাদিত আখ চিনিকলে সরবরাহ করা হচ্ছিল বলে চিনিকল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে৷ গত ১ জুলাই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাঁওতাল সম্প্রদায়ের লোকজন জমির একাংশে একচালা ঘর নির্মাণ করেন৷ ওই সময়ই তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা হয়৷
সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামার জমি উদ্ধার কমিটির সহ-সভাপতি স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘চিনিকল কর্তৃপক্ষ জমি অধিগ্রহণের সময় চুক্তিপত্রে উল্লেখ করেছিল কখনো ওই সব জমিতে আখ ছাড়া অন্য ফসলের চাষ হলে প্রকৃত মালিকদের জমি ফেরত দেওয়া হবে৷ কিন্তু কিছুদিন ধরে ওই সব জমিতে ধান ও তামাক চাষ হচ্ছে৷ অথচ জমি ফেরত দেওয়া হচ্ছে না৷ এ নিয়ে আন্দোলন করেও কাজ হয়নি৷ তাই তারা জমিতে ঘর তৈরি করেছেন৷''
তবে চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল আউয়াল বলেন, ‘‘অভিযোগটি ভিত্তিহীন৷ অধিগ্রহণের সময় চুক্তিনামায় বলা হয়, কখনো চিনিকল বা খামার বন্ধ হলে সে ক্ষেত্রে ওই সব জমি সরকারের কাছে চলে যাবে৷ ফেরত দেয়ার কথা বলা হয়নি৷''
বিষয়টি নিয়ে আপনার কিছু বলার আছে? জানান নীচের ঘরে৷
যে দেশগুলোতে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ‘মাইনোরিটি রাইটস গ্রুপ ইন্টারন্যাশনাল’ প্রতিবছর যেসব দেশে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে আছে তার তালিকা প্রকাশ করে৷ ছবিঘরে ২০১৫ সালের জুলাইতে প্রকাশিত সবশেষ প্রতিবেদনের তথ্য থাকছে৷
ছবি: DW
প্রথম: সিরিয়া
সুন্নিপ্রধান দেশ সিরিয়ায় শিয়া, বিশেষ করে আলাউইট সম্প্রদায়ের লোকজন সহ খ্রিষ্টান, কুর্দ, ফিলিস্তিনি ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা হুমকির মুখে রয়েছে৷ আইএস, হিজবুল্লাহ ছাড়াও সিরিয়ার শাসকপন্থি গ্রুপ সাবিহা এ সব হুমকির অন্যতম কারণ৷ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ‘মাইনোরিটি রাইটস গ্রুপ ইন্টারন্যাশনাল’ হুমকি বলতে গণহত্যা, রাজনৈতিক হত্যা ও সহিংস দমননীতি বুঝিয়েছে৷
ছবি: Reuters/SANA
দ্বিতীয়: সোমালিয়া
সরকারের সঙ্গে আল-শাবাব জঙ্গি গোষ্ঠীর সংঘাত এখনও চলছে৷ আর এর শিকার হচ্ছে বান্টু (বেশিরভাগ খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী) ও বেনাদিরি (বেশিরভাগ ইসলাম ধর্মাবলম্বী) গোষ্ঠীর মানুষজন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Y. Warsame
তৃতীয়: সুদান
দেশটির দারফুর অঞ্চলে বসবাসকারী নন-আরব মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর খার্তুম সরকারের নিপীড়নের অভিযোগে দু’টি বিদ্রোহী গোষ্ঠী ২০০৩ সালে সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে৷ সেটি এখনও চলছে৷ ফলে দারফুরে বসবাসকারী ফুর, জাঘাওয়া, মাসালিট সহ অন্যান্য গোষ্ঠীর মানুষদের জীবন সংকটে রয়েছে৷
ছবি: GetttyImages/AFP/C. Lomodon
চতুর্থ: আফগানিস্তান
বিদেশি সৈন্য চলে যাবার পর সেখানে আবারও তালেবানের শক্তি বেড়েছে৷ ফলে হাজারা, পশতুন, তাজিক, উজবেক, তুর্কমেন, বেলুচি সহ অন্যান্য গোষ্ঠীর মানুষের উপর নির্যাতনের আশঙ্কা বাড়ছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/Aref Karimi
পঞ্চম: ইরাক
দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ শতাংশ শিয়া সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত৷ তারপরও সেখানে শিয়া গোষ্ঠীর লোকজনের জীবন বিপদমুক্ত নয়৷ সংকটে রয়েছে সুন্নি, কুর্দ, তুর্কমেন, খ্রিষ্টান, ইয়াজিদি, শাবাক, বাহাই, ফিলিস্তনি সহ অন্যান্যদের জীবনও৷
ছবি: Reuters/T. Al-Sudani
ষষ্ঠ: ডিআর কঙ্গো
স্থানীয় মায়ি-মায়ি মিলিশিয়া, উগান্ডা ও রুয়ান্ডার বিদ্রোহী এবং কাতাঙ্গান বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কারণে মানুষের প্রাণ যাওয়া অব্যাহত আছে৷ ফলে সংকটে আছে হেমা, লেন্ডু, হুতু, লুবা, লুন্ডা, টুটসি, বাটওয়া সহ আরও কয়েকটি গোষ্ঠীর জনগণ৷
বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীদের হামলায় সংকটে রয়েছে ইসলাম ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের লোকজন৷ এছাড়া কচিন, কারেনি, কারেন, মন, রাখাইন, শান, চিন এবং ওয়া জাতির জনগণও ভালো নেই সেখানে৷
ছবি: Reuters
বাংলাদেশ, ভারতের অবস্থান
‘মাইনোরিটি রাইটস গ্রুপ ইন্টারন্যাশনাল’-এর তালিকায় বাংলাদেশ ৪১তম আর ভারত ৫৪তম অবস্থানে আছে৷ বাংলাদেশে আহমদিয়া, হিন্দু সহ অন্য ধর্মাবলম্বীরা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী উপজাতির লোকেদের জীবন হুমকির মুখে রয়েছে বলে জানানো হয়েছে৷ আর ভারতে আসামিজ, বোড়ো, নাগা, ত্রিপুরা সহ অন্যান্য উপজাতি এবং কাশ্মিরী, শিখ, মুসলিম ও দলিতরা হুমকির মুখে আছে৷ প্রতিবেদনটি পড়তে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷