গ্যোটে ইনস্টিটিউট’এর ৬০ বছর পূর্তি
৫ জুলাই ২০১১ফেডারেল জার্মানির আত্মপ্রকাশের পরবর্তী পর্যায়ে, ১৯৬১ সালে জার্মানির মিউনিখ শহরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল গ্যোটে ইনস্টিটিউট৷ জার্মানির হারিয়ে যাওয়া সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পুনরুদ্ধার এবং জার্মান ভাষা শিক্ষার প্রসার ছিল অন্যতম উদ্দেশ্য৷ এর ফলও হয়েছিল ইতিবাচক৷ জার্মান ভাষা বিকশিত হয় আন্তর্জাতিক সমাজে৷ যেমন ভারতে হিন্দি, ইংরেজি বা বাংলার মতো কোনো ভাষার পর, জার্মান ভাষাকে চতুর্থ বিদেশি ভাষা হিসাবে নির্বাচন করে অনেকেই৷
১৯৬৯ থেকে ৮৮ সালের মধ্যে জার্মান পররাষ্ট্র নীতিতে সাংস্কৃতিক চর্চা হয়ে ওঠে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়৷ সেই সময় কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক মানদণ্ডের পাশাপাশি সংস্কৃতি হয়ে ওঠে ‘তৃতীয় পিলার' বা পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে তৃতীয় স্তম্ভের স্বরূপ৷ এরপর দীর্ঘ ৪৫ বছরের বিভাজনের পর ১৯৯০ সালের ৩রা অক্টোবর দুই জার্মান রাষ্ট্রের পুনরেকত্রীকরণ হয়৷ ভেঙে পড়ে বার্লিন প্রাচীর৷ আর তার সঙ্গে সঙ্গে আসে নতুন চ্যালেঞ্জ - একেবারে ভিন্ন কাঠামোর দুই রাষ্ট্রের সমন্বয় করা৷ সেখানেও এগিয়ে আসে গ্যোটে ইনস্টিটিউট৷ গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় এগিয়ে আসে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত সুশীল সমাজ গঠনেও৷
যদিও কলকাতার গ্যোটে ইনস্টিটিউট বা মাক্স ম্যুলার ভবনে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত রাজু রমন বলেন,‘‘৬০'এর দশকে, ৭০'এর দশকে অথবা ৮০'র দশকে আমরা অবাক হয়ে তাকিয়েছি যে, আমরা সেখান থেকে কি পেতে পারি৷ কিন্তু আমার মনে হয় যে এখন সময় এসেছে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের ব্যাপারে আমাদের থেকে কিছু ওদেরও শেখার আছে৷ ‘ইউনিটি ইন ডাইভারসিটি'র মন্ত্রে ভারত যেভাবে নিজেকে চালাচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও সেই মন্ত্রে শিক্ষা নেওয়া উচিত৷''
এই যেমন, ২০০১ সাল থেকে বিশেষ গুরুত্ব পায় ইসলাম ধর্মের সঙ্গে সেতুবন্ধের এক নতুন প্রয়াস৷ আন্তঃসাংস্কৃতিক যোগাযোগের ওপর একটি কোর্স চালু করে গ্যোটে ইনস্টিটিউট৷ জানা যায়, অন্যের সংস্কৃতি জানাটা নিছক কোনো বিলাসিতা নয়, ব্যবসা করতে হলেও যে তার প্রয়োজন রয়েছে – সেটাই তুলে ধরা হয় এই সব কোর্সে৷
প্রতিষ্ঠার ঠিক ৬০ বছর পর, বিদেশের মাটিতে মোট ১৩৬ এবং খোদ জার্মানিতে গ্যোটে ইনস্টিটিউট'এর ১৩টি শাখা খোলা রয়েছে৷ দেশের মধ্যে প্রায় ৩২ হাজার ও বিদেশে ১৮৫ হাজার ছাত্র-ছাত্রী বিভিন্ন পাঠ্যক্রমে অংশ নিচ্ছে৷ আজ রাজধানী বার্লিনে সাড়ম্বরে উদযাপিত হচ্ছে দিনটি৷ সেখানে উপস্থিত গ্যোটে ইনস্টিটিউট'এর দক্ষিণ কোরিয়া শাখার প্রধান রাইমার ফলকার জানান,‘‘জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে আজ এখানে ভাষণ দেবেন৷ থাকবে কোরীয় সুরকার ইসাং ইয়ুন'এর সংগীত এবং ‘অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্লড উইথ গ্যোটে' নামের একটি প্রামাণ্য চিত্র৷ যাতে দেখানো হবে গত ৬০ বছরে বিশ্বব্যাপী গ্যোটে ইনস্টিটিউট'এর নানান কর্মকাণ্ড৷''
প্রতিবেদন: দেবারতি গুহ
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন