1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গ্রিনল্যান্ডের ওঝা

ইয়র্গ সাইবল্ট/এসি১ মার্চ ২০১৬

গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলছে, মধ্যরাত্রির সূর্যের আলোকে৷ আর এক বৃদ্ধ ওঝা দূরদেশ থেকে আগত অতিথিদের বোঝাচ্ছেন, আগামীতে কী বিপর্যয় আসতে পারে৷ এটা ব্যবসা না আন্তরিক আবেগ, সেটা কে বলবে?

Bildergalerie Inuits Fischfang Einfuhrverbot Robbenprodukte EU
ছবি: picture-alliance/dpa

গলছে বরফ, আসছে বিপর্যয়

04:22

This browser does not support the video element.

সামনে হিমশীতল তুষারের প্রান্তর, যার নাম হিমবাহ, যা দেখতে কয়েক ঘণ্টা ব্যাপি এই পদযাত্রা৷ যাত্রীরা সবাই নিশ্চুপ৷ এমনকি খাওয়াদাওয়াও বন্ধ৷ লক্ষ্য একটাই: মস্তিষ্কের মধ্যে যে চিন্তার চক্রটা অনবরত ঘুরে চলে, সেটিকে থামানো, অন্তত তার গতিবেগ কমানো৷ গ্রিনল্যান্ডের ওঝা আঙ্গানগাক আঙ্গাককোরসুয়াক-এর মতে, ‘‘অধিকাংশ মানুষের প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্ক ঘুচে গেছে৷ একদিন আমাদের সবাইকে শিখতে হবে, কী করে শুধু আমরা যা ভাবছি আর আমরা যা বোধ করছি, তাই নিয়ে আমরা একা থাকতে পারি৷ কিন্তু যেহেতু আমরা মানুষ, সেহেতু আমাদের চিন্তাভাবনাগুলোও খুব শক্তিশালী৷''

টুরের আরেকটা হাইপয়েন্ট হলো গ্রিনল্যান্ডের মানুষরা যাকে বলেন ‘বিগ আইস' – বিরাট বরফ৷ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গ্রিনল্যান্ডের বরফের ঢাকা এমনভাবে কমে এসেছে, যা সত্যিই নাটকীয়৷ আঙ্গানগাক যা নিয়ে বিশেষভাবে চিন্তিত৷ তাঁর জাতির মানুষদের হয়ে তিনি দশকের পর দশক জাতিসংঘে কথা বলেছেন – তবে লাভ কিছুই হয়নি৷ আঙ্গানগাক আঙ্গাককোরসুয়াক বলেন, ‘‘মানবজাতি হল এক কমবয়সি ছেলের মতো৷ কাল কী হবে, তা নিয়ে ভাবে না৷ আজ কী আছে, শুধু তাই নিয়েই ব্যস্ত৷ যখন দেখি মানুষজন মনোযোগ দিতে ভুলে গেছে, তখন দুঃখ লাগে৷ ওরা আর শুনতে জানে না৷ কিন্তু এখানে ওরা শোনে; আর শুনতে শুরু করলে, ওরা বদলায়ও বটে৷ কিন্তু এখন বড্ড দেরি হয়ে গেছে৷ বিগ আইস গলে যাবে, তোমার জীবদ্দশাতেই৷ বড় দেরি হয়ে গেছে৷ বিপর্যয় আসছে, এমন বিপর্যয়, যা তুমি-আমি কল্পনাও করতে পারব না৷''

অশনি সংকেত

বরফ কীভাবে গলছে, সেটা স্বচক্ষে দেখা এই টুরের বহু অংশগ্রহণকারীর পক্ষে সবচেয়ে আবেগপূর্ণ মুহূর্ত – যা তাদের ভাবিয়েও তুলেছে৷ মার্কিন থেরাপিস্ট শ্যানিন ডক্রে জানালেন, ‘‘আমি প্রায় কেঁদে ফেলেছিলাম৷ এই ভেঙে পড়ার শব্দ, বরফের পাহাড় যখন ভেঙে পড়ে আর তার আওয়াজটা শুনতে পাওয়া যায়... যেন যুদ্ধ চলেছে, যেন বাজ পড়ছে, কিন্তু আরো গভীর, শক্তিশালী, মায়াবি... আমি অনুভব করতে পেরেছি৷'' ডাচ থেরাপিস্ট মিরান্ডা স্টকমানস বলেন, ‘‘আমরা পৃথিবীটাকে নিয়ে কী করছি, সে বিষয়ে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত, বলে আমি মনে করি৷ আমরা কী নিচ্ছি, আমরা যে বড় বেশি নিচ্ছি, আমাদের যা প্রয়োজন, তার চেয়ে বেশিই নিচ্ছি, এই সব৷ আমরা যত সচেতন হব, ততই আমরা আরো বেশি যত্ন ও শ্রদ্ধা নিয়ে এই সম্পদ ভোগ করতে পারব৷'' জার্মানি থেকে এসেছেন মাটিয়াস প্ল্যোনৎস্কে, তিনি বলেন, ‘‘দেখে ভয় লাগে আর নিজেকে দায়ী বলে মনে হয়৷''

এই ধরনের টুরের সমালোচকরা বলেন, এ এক ধরনের ব্যবসা; একটু অন্য ধরনের অ্যাডভেঞ্চার ট্রিপ ছাড়া আর কিছু নয়৷ তার সঙ্গে কিছু উদ্ভুটে বিশ্বদর্শন মেশানো আছে৷ আঙ্গানগাক ও তাঁর টুরের অংশগ্রহণকারীরা অবশ্য সেটা মানেন না৷ আঙ্গানগাক আঙ্গাককোরসুয়াক বলেন, ‘‘আমি লোকের পকেট থেকে টাকা বার করার জন্য এখানে আসিনি৷ আমি এখানে এসেছি তাদের কিছু দেবার জন্য৷

আসতে অবশ্যই টাকা লাগে৷ এই ক্যাম্প বানাতে টাকা লাগে৷ তার জন্য টাকা দিতে হয়েছে৷'' মার্কিন থেরাপিস্ট শ্যানিন ডক্রে-ও বলেন, ‘‘এটা কি আধ্যাত্মিক ব্যাপারস্যাপার দেখিয়ে পয়সা করার একটা পন্থা? আমি আমার মনকে ভালোভাবে চিনি আর তফাৎটাও জানি৷''

মধ্যরাত্রির সূর্যের আলোকে বেশ কয়েক ঘণ্টা হেঁটে পাহাড়ে উঠতে হয় – এই পাহাড়ে ওঠাটাই সবচেয়ে কষ্টকর৷ তবুও কেউ হাল ছাড়েন না, পিছিয়ে থাকেন না৷ এইজন্যেই তো এরা এখানে এসেছেন৷ কারণ আজ রাতে প্রকৃতির এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখতে পাওয়া যাবে৷ আঙ্গানগাক আঙ্গাককোরসুয়াক বললেন, ‘‘আপনারা এনার্জিটা অনুভব করতে পারছেন কিনা জানিনা৷ এদিকে মাঝরাতের সূর্য – ওদিকে পূর্ণিমার চাঁদ৷ একে অপরের সম্পূর্ণ বিপরীত৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ