1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গ্রিসকে ঘিরে সংশয়

ব্যার্ন্ড রিগার্ট/এসবি১৬ জুলাই ২০১৫

অবশিষ্ট আস্থাটুকু গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী ধ্বংস করে দিচ্ছেন৷ দাতারাও আর্থিক সাহায্যের পথ খুঁজে পাচ্ছেন না৷ ডিডাব্লিউ-র ব্যার্ন্ড রিগার্টের মতে, শীর্ষ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত গুরুত্বহীন থেকে যাচ্ছে ও গ্রেক্সিট-এর বিপদ কাটেনি৷

Griechenland Parlament Alexis Tsipras
ছবি: Reuters/C. Hartmann

গ্রিসকে রক্ষা করতে ইউরো এলাকার শীর্ষ সম্মেলনের পর ৪৮ ঘণ্টা ধরে যে আশার আলো দেখা গিয়েছিল, তা আবার ম্লান হয়ে যাচ্ছে৷ সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, দেউলিয়া হয়ে যাওয়া এই রাষ্ট্রের জন্য আরও আর্থিক সহায়তা তখনই সম্ভব হবে, যখন সংস্কার সত্যি বাস্তবায়ন করা হবে৷ কিন্তু আলেক্সিস সিপ্রাস কী করছেন? টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে গ্রিক প্রধানমন্ত্রী আবার সহযোগীদের বিরুদ্ধে কড়া অভিযোগ তুলছেন৷ তিনি দাবি করছেন, তাঁকে নাকি জোর করে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়েছে, সংস্কার ভুল সিদ্ধান্ত, তিনি নাকি আসলে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে চেয়েছিলেন৷ তারপর নির্দ্বিধায় তিনি বলেছেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কোটি কোটি ইউরো পাবার স্বার্থে পার্লামেন্টের এই প্রস্তাব পাশ করা উচিত৷ এরপরও দাতারা কি এই মানুষটির উপর আস্থা রাখতে পারবে? মোটেই নয়৷ প্রকাশ্যে এমন বক্তব্যের পর বামপন্থি ব়্যাডিকাল জোট চুক্তি স্বাক্ষর করেও তা পালন করবে – এমনটা বিশ্বাস করার কারণ থাকতে পারে না৷ এই জনমোহিনী ‘পপুলিস্ট' অরাজকতায় ভরা গোষ্ঠীকে কি সত্যি আরও ৮,৬০০ কোটি ইউরো দেওয়া যায়?

সরল বিশ্বাস ও স্বপ্ন

তাহলে কি আন্তর্জাতিক দাতা গোষ্ঠীর কড়া নিয়ন্ত্রণ কাজ করবে? অথবা গ্রিসের রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি কি ইউরোপীয় ইউনিয়নের হাতে তুলে দেওয়া উচিত? যদি কেউ বিশ্বাস করে থাকে যে, আলেক্সিস সিপ্রাস-এর নেতৃত্বে সরকার এই সব পদক্ষেপ সত্যি বাস্তবায়ন করবে, তাকে সত্যি বড় সরল বলতে হয়৷ সেইসঙ্গে মনে রাখতে হবে যে, গ্রিক ভোটাররাও এক সপ্তাহ আগে গণভোটে সেই কর্মসূচির বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন, সিপ্রাস সোমবার যা আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছেন৷ জার্মান অর্থমন্ত্রী ভল্ফগাং শয়েবলে কোনো রাখঢাক না করে যে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন, তার পেছনে যথেষ্ট কারণ রয়েছে৷ গ্রিকরা তাঁকে বিশ্বাস করেন না৷ অথচ জার্মানির সম্মতি ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়৷ এমন প্রেক্ষাপটে ইউরো এলাকা থেকে গ্রিসের বিদায় এখনো বাস্তব সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে৷ বর্তমানে গ্রিসে যা পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে তৃতীয় দফার সাহায্য কর্মসূচির পক্ষে সওয়াল করা কঠিন৷ এ অবস্থায় জার্মান সংসদ সদস্যদের সম্মতি দেবার পরামর্শ দেওয়া যায় না৷

ডিডাব্লিউ-র ব্যার্ন্ড রিগার্ট

ইইউ কমিশন প্রায় উদভ্রান্ত

একদিকে সম্মতি দিয়েও গ্রিকরা তার বাস্তবায়নে কোনো পদক্ষেপ নিতে নারাজ৷ অন্যদিকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও ঐকমত্য দেখা যাচ্ছে না৷ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ গ্রিস সংক্রান্ত শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পর মনে করছে, তৃতীয় দফার সাহায্য পেলে গ্রিস তার ঋণভার সামলাতে পারবে না৷ ইউরোপ যে ঋণ দিয়েছে, হয় তা মকুব করতে হবে বা ঋণ শোধের মেয়াদ বাড়াতে হবে – এমন সমাধানসূত্রের প্রস্তাব দিয়েছে আইএমএফ৷ তারা নিজেরা যে ঋণ দিয়েছে, তার শর্তে অবশ্য নড়চড় করতে রাজি নয় আইএমএফ৷ ইইউ কমিশন গ্রিসের ক্ষমতার আরও সঠিক মূল্যায়ন করেছে৷ তা না করে তাদের উপায়ও নেই৷ কারণ চুক্তি অনুযায়ী ইউরোপীয় স্থিতিশীলতা তহবিল – ইএসএম থেকে গ্রিসকে কোনো অর্থ দেওয়া চলে না৷

ইইউ কমিশন যেভাবে সম্ভব গ্রিসকে ইউরো এলাকায় ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে ইউরো এলাকার নিয়মকানুন শিথিল করার প্রস্তাব দিচ্ছে৷ চূড়ান্ত বোঝাপড়া হওয়া পর্যন্ত গ্রিসের জন্য আপদকালীন অর্থ সাহায্যের ব্যবস্থা করার প্রচেষ্টার মধ্যে এই মনোভাবের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে৷ আগামী সপ্তাহে এই জরুরি সাহায্যের আওতায় ৭০০ কোটি ইউরো গ্রিসের হাতে তুলে দেওয়ার কথা৷ এমন একটি তহবিল থেকে সেই অর্থ জোগাড় করার চেষ্টা চলছে, কার্যত যার কোনো অস্তিত্বই নেই৷ ২৮টি ইইউ সদস্য দেশের চাঁদা থেকে তা সৃষ্টি হতে পারে৷ কয়েকটি দেশ সঙ্গত কারণেই গ্রিসের প্রতি এমন সহায়তার হাত বাড়াতে নারাজ৷ জার্মান অর্থমন্ত্রী এই প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন৷ এখন তাহলে কী হবে?

কাগজে-কলমে ইইউ সদস্য দেশগুলি দ্বিপাক্ষিক স্তরে গ্রিসকে ঋণ দিতে পারে৷ কিন্তু অপাত্রে দান করতে এখনো স্বেচ্ছায় কেউ এগিয়ে আসেনি৷

ইউরো এলাকা থেকে বিদায় একমাত্র অকৃত্রিম পথ

না, গ্রিসে বিপর্যয় এড়াতে শীর্ষ সম্মেলনের কয়েক দিন পরেও কোনো হিসেবই যেন মিলছে না৷ এথেন্সের সরকারের উপর আস্থা রাখা যাচ্ছে না৷ তৃতীয় সাহায্য কর্মসূচির পূর্বশর্ত পূরণ করা হয়নি৷ চূড়ান্ত বোঝাপড়ার আগে প্রয়োজনীয় জরুরি আর্থিক সাহায্য এখনো নিশ্চিত নয়৷ ইউরো এলাকার সংসদগুলিতে এত সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা সম্ভব হবে – এমন আশা করা সত্যি কঠিন৷

অর্থাৎ এভাবে আর চলতে পারে না৷ তার থেকে ইউরো এলাকার উচিত, সুপরিকল্পিতভাবে গ্রিসের বিদায়ের তোড়জোড় করা৷ গ্রিস এবং ইউরোপের ভোটারদের জন্য সেটাই হবে সৎ আচরণ৷ শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আশার আলো ফুটে থাকে বটে, কিন্তু কোনো না কোনো সময়ে তা শেষ হয়৷ দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই সময় এবার এসে গেছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ