গ্রিসের মধ্যভাগে এক অপূর্ব নিসর্গ স্থানীয় মানুষের কাছেও বড় আকর্ষণ৷ ছোট বয়স থেকেই মানুষ সেখানকার টিলায় চড়তে অভ্যস্ত৷ এর মাধ্যমে মানুষের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার সুন্দর সম্পর্কও তৈরি হয়৷
বিজ্ঞাপন
গ্রিসের মূল ভূখণ্ডের মাঝে মেটেওরা-র জাদুময় টিলা৷ যাঁরা পাহাড় চড়তে ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য এই এলাকা যাকে বলে স্বর্গরাজ্য৷ যেমন ভাঙ্গেলিস বাৎসিয়স৷ পাহাড়ের পাদদেশে কাসত্রাকি নামের ছোট্ট জনপদে তিনি থাকেন৷ তিনি বলেন, ‘‘পাহাড় চড়াই আমার জীবন, সবকিছু৷ ঘুম থেকে উঠে পাহা়ড় দেখেই মনে হয়, তার উপর চড়তে হবে৷ জায়গাটা খুব ভালোবাসি৷’’
প্রায় ২ কোটি বছর আগে সেখানে এক নদীর স্রোত থেকে পাথর, বালু ও কাদামাটি জমে এই টিলাগুলি সৃষ্টি হয়৷
গ্রিসের টিলাভরা নিসর্গের আকর্ষণ
02:40
আরিস্টিডিস মিত্রোনাৎসিয়স বহু বছর ধরে মেটেওরায় পর্বতারোহীদের সঙ্ঘের সভাপতি ছিলেন৷ তিনি এখনো পাহাড়ে ওঠেন৷ প্রায়ই সেখানে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে দেখা হয়৷ ভাঙ্গেলিস বাৎসিয়স ও তাঁর বন্ধু ক্রিস্টস সুরভাকাস পাহাড়ে চড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন৷ ক্রিস্টস সুরভাকাস মেটেওরা-র প্রায় ৮০০ রুটের মধ্যে অন্যতম সুন্দর পথ বেয়ে উঠছেন৷ প্রায় ২৫০ মিটার উঁচু এই টিলায় ওঠার সময় তাঁর বন্ধু নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখছিলেন৷ ক্রিস্টস বলেন, ‘‘এ এক মুক্তির স্বাদ৷ নিজেকে জানার, নিজের সীমা জানা, তা অতিক্রম করার উপায়৷ প্রথাগত চিন্তাধারা থেকে বেরিয়ে ভাবার পথ৷ অনেকটা যোগাসনের মতো৷ আসনের কসরত করতে করতে আরামের চেষ্টা করা৷ পাহাড় চড়া ছাড়া জীবনের কথা ভাবতেই পারি না৷’’
ক্রিস্টস সুরভাকাস ও ক্রিস্টস বাটালোইয়ানিস আগামী বছরগুলিতেও ঘনঘন এই চূড়ায় উঠবেন, এমনটা ধরেই নেওয়া যায়৷
আক্সেল প্রিমাভেসি/এসবি
ছুটি কাটাতে চলে যান জার্মানির পর্বতমালায়
জার্মানির একেবারে দক্ষিণে বাভারিয়ার আলপস পর্বতমালায় প্রকৃতি প্রেমীদের উপভোগ করার জন্য রয়েছে অনেক কিছু৷ তাই চলুন, যাওয়া যাক জার্মানির উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গে, হাঁটা যাক আলপস পর্তমালার এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে৷
ছবি: Alpenwelt Karwendel
দারুণ অভিজ্ঞতা
জার্মানির সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ের চূড়া বা পর্বতশৃঙ্গের নাম ‘সুগস্পিৎসে’ যার উচ্চতা ২৯৬২ মিটার৷ সেই সুউচ্চ শিখরে আরোহণের জন্য বেশ কয়েকটি রাস্তা রয়েছে৷ কোনোটা বেশ খাড়া, কোনোটা আবার ততটা দুর্গম নয়৷ যে যাঁর পছন্দমতো যে কোনো একটা পথ বেছে নিতে পারেন৷
ছবি: Bayerische Zugspitzbahn Bergbahn AG, Herbke
সহজ উপায়
তবে একেবারে সহজ উপায়ে, কোনোরকম কষ্ট না করে পর্যটকদের সুগস্পিৎসের ওপরে নিয়ে যাওয়ার জন্য গত ৮০ বছর যাবত রয়েছে দাঁত লাগানো লম্বা একটা গাড়ি বা ট্রেন৷ সেখান থেকে পাহাড়ের একেবারে চূড়ায় যেতে হলে ব্যবহার করতে হয় বৈদ্যুতিক ‘কেবেল কার’৷
ছবি: Bayerische Zugspitzbahn Bergbahn AG, Jossi
ইচ্ছামতো সাইকেল চালানো
সাইকেল চালকদের জন্যও রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা, অর্থাৎ পুরো জায়গাটাতেই সুন্দরভাবে সাইকেল চালানোর জন্য সাইনবোর্ড দেওয়া আছে৷ সেইসব মেনে যেভাবে খুশি যেতে পারেন, পারেন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে৷ এভাবে চললে হারিয়ে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই৷
ছবি: Alpenwelt Karwendel
পরিবার বান্ধব
৩০০ মিটার এলাকা জুড়ে পরিবারসহ ঘুরে বেড়ানোর জন্য খুবই সুন্দর জায়গা এটি, যেখানে মনের আনন্দে বেশ কয়েকদিন ঘুরে বেড়ানো যায় সবাইকে নিয়ে৷ ছোট-বড় সকলেরই বেশ একটা ‘অ্যাডভেঞ্চার’ হয় এখানে এলে৷
ছবি: Bayerische Zugspitzbahn Bergbahn AG
আকর্ষণীয় প্রাকৃতিক দৃশ্য
এই উপত্যকার ভেতর দিয়ে নীচের হ্রদ পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তা প্রায় ১০৬০ মিটার৷ চারিদিকের দৃশ্যও খুব মনোরম৷ এছাড়া, হ্রদের স্বচ্ছ ঠান্ডা পানি গ্রীষ্মের ঝলমলে রোদের দিনে পর্যটকদের সাঁতার কাটতে আমন্ত্রণ জানায়৷
ছবি: Alpenwelt Karwendel
পর্বত আরোহীদের গন্তব্য
যাঁরা পায়ে হেঁটে ঘুরে ঘুরে পাহাড়ে উঠতে পছন্দ করেন, তাঁদের কাছেও এই এলাকাটি খুবই প্রিয়৷ বলা বাহুল্য, যাঁদের যথেষ্ট ধৈর্য, সাহস এবং সেই সঙ্গে অভিজ্ঞতা রয়েছে শুধু তারাই এই পাহাড়ের পশ্চিম দিকে ঘোরানো চূড়ায় উঠতে পারেন৷
ছবি: Alpenwelt Karwendel, Hubert Hornsteiner
ওপর থেকে দেখা
অবশ্য আগেই যেমন বললাম, বৈদ্যুতিক ‘কেবেল কার’-এর মাধ্যমেই সবচেয়ে আরাম করে ২৩৪৫ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত পৌঁছানো যায়৷ দেখা যায় জার্মানির বাভারিয়া আর অস্ট্রিয়ার ট্রিওল-এর অপরূপ দৃশ্য৷