1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দেউলিয়া

৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২

আবার শিরোনামে গ্রিস৷ যাবতীয় প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আশঙ্কা করা হচ্ছে, যে সেদেশ দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে৷ গ্রিসের পরিস্থিতি এবং গ্রিসকে ঘিরে বাকিদের সমস্যা সত্যি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে৷ এই অবস্থায় জোরালো তৎপরতা শুরু হয়ে গেছে৷

ছবি: AP

গ্রিসে যখন আর্থিক সংকট শুরু হয়েছিল, তখন ইউরোপীয় নেতারা তার সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা শুরু করেছিলেন৷ তাদের উদ্যোগে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইসিবি ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ'ও সেই উদ্ধার কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে৷ বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিও গ্রিসকে কিছু ছাড় দিচ্ছে৷ তাদের সঙ্গেও আলোচনা জারি রয়েছে৷ গ্রিসে সরকার বদল হয়েছে৷ নতুন প্রধানমন্ত্রী লুকাস পাপাদেমস একজন আর্থিক বিশেষজ্ঞ৷ তিনি তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলের সমর্থন নিয়ে আন্তর্জাতিক আর্থিক সাহায্যের শর্তগুলি পূরণ করার চেষ্টা করে চলেছেন৷ কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, তাঁর যাবতীয় প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আর্থিক সাহায্যের শর্তগুলি পূরণ করা যাচ্ছে না৷ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে যে পরিমাণ ব্যয় সংকোচ করতে হবে, তার পরিণাম মারাত্মক হতে পারে৷ প্রবল চাপ আসছে ইসিবি ও আইএমএফ'এর তরফ থেকেও৷ পাপাদেমস সোমবারই প্রায় ১৫,০০০ সরকারি কর্মীকে বরখাস্ত করবেন বলে জানিয়েছেন৷ ফলে মোট প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ সরকারি কর্মীকে বেকার হয়ে পড়তে হচ্ছে৷ কিন্তু ন্যুনতম মজুরি কমানো সহ তাকে আরও অনেক অপ্রিয় সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷

অন্যদিকে গ্রিস শর্ত পূরণ না করলে আগামী কিস্তির অর্থ পাবে না৷ দেশ দেউলিয়া হয়ে পড়বে৷ সেটা হলে ইউরো এলাকা থেকেও গ্রিসকে বার করে দেওয়া হতে পারে৷ আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই তাদের এই কাজ করে দেখাতে হবে৷ এই অবস্থায় দেশের নেতারা উভয় সংকটে পড়েছেন৷ সাধারণ মানুষও প্রতিবাদ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে৷ ধর্মঘট ও হরতালের ফলে অর্থনীতি আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে৷ মঙ্গলবার সারা দেশে রেল ও ফেরি ধর্মঘট পালিত হয়েছে৷ হাসপাতালগুলিতেও কর্মীদের অনুপস্থিতি ছিল লক্ষ্য করার মতো৷ সংসদের সামনে বিক্ষোভ সামাল দিতে পুলিসকে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করতে হয়েছে৷

গ্রিসের পরিস্থিতি এবং গ্রিসকে ঘিরে বাকিদের সমস্যা এই মুহূর্তে সত্যি মারাত্মক আকার ধারণ করেছেছবি: Reuters

এই অবস্থায় ইউরোপের নেতারা, ইসিবি ও আইএমএফ দুশ্চিন্তায় পড়েছে৷ আসলে তাদের সামনেও এক উভয় সংকট৷ গ্রিস প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ব্যয় সংকোচ করতে না পারলে অংকের বিচারে তারা শর্ত লংঘন করবে৷ তখন সহায়তা বন্ধ করে দিতে হবে৷ সেক্ষেত্রে গ্রিস রাষ্ট্র হিসেবে দেউলিয়া হয়ে পড়বে৷ অভিন্ন মুদ্রা ইউরো'র শরিক হওয়ায় তার মারাত্মক প্রভাব পড়বে গোটা ইউরো মুদ্রা এলাকার উপর৷ তাই বেশ কিছুদিন ধরে কিছু বিকল্প প্রস্তাব শোনা যাচ্ছে৷ যেমন জার্মানিতে কিছু মহল গ্রিসে এমন একজন কমিশনর পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল, যিনি এথেন্সে বসে সরকারের কাজে তদারকি করবেন৷ অর্থাৎ আর্থিক ক্ষেত্রে গ্রিসের সার্বভৌমত্ব অন্তত সাময়িকভাবে বন্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তারা৷ তুমুল বিতর্কের ফলে সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়৷ এখন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজি নতুন এক প্রস্তাব দিয়েছেন৷ তারা চান, গ্রিসকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে আলাদা অ্যাকাউন্ট চালু করতে, যার উপর মূলত দাতাদের নিয়ন্ত্রণ থাকবে৷ ফলে গ্রিস ব্যয় সংকোচ করতে বাধ্য হবে৷ সোমবার ম্যার্কেল বলেছিলেন, হাতে সময় খুব কম৷ যা করার দ্রুত করতে হবে৷

২০১০ সালের মে মাস থেকেই গ্রিস বাইরে থেকে সাহায্যের উপর নির্ভর করে রয়েছে৷ ফলে বাজারে আচমকা কোনো অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে না৷ প্রশ্নটা আসলে গ্রিসের মতো ছোট দেশের ভবিষ্যতকে ঘিরে নয়, গোটা ইউরো এলাকার ভবিষ্যৎ নিয়েই বাজারে দুশ্চিন্তা রয়েছে৷ শেষ পর্যন্ত গ্রিস দেউলিয়া হয়ে পড়লে এবং সেক্ষেত্রে সেদেশকে ইউরো এলাকা থেকে বার করে দিলে কী হবে, সেটা দেখার জন্যই অপেক্ষা করে রয়েছে বাজার৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ