কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, অন্তত ৫০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। লিবিয়া থেকে ইটালির দিকে যাচ্ছিল নৌকাটি।
বিজ্ঞাপন
লিবিয়া থেকে সিরিয়া যাচ্ছিল নৌকাটি। মাঝে গ্রিসের সমুদ্রে নৌকাটিতে যান্ত্রিক গোলযোগ হয়। নৌকাটি ডুবে যেতে শুরু করে। বুধবার এই ঘটনা ঘটেছে। বুধবার থেকেই গ্রিসের কোস্টগার্ড সমস্তরকম যন্ত্রপাতি নিয়ে নৌকায় থাকা ব্যক্তিদের উদ্ধারকাজে নামে। কোস্টগার্ড জানিয়েছে, এখনো পর্যন্ত ১০৪ জনকে উদ্ধার করা গেছে। দেহ উদ্ধার হয়েছে ৭৯টি। কিন্তু তাদের আশঙ্কা, ওই নৌকায় প্রায় সাড়ে সাতশ যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে নারী, গর্ভবতী নারী এবং শিশুরা ছিল। তাদের কারো খোঁজ এখনো মেলেনি। অধিকাংশ যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
গ্রিসে নৌকাডুবিতে মৃতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়ানোর আশঙ্কা
বুধবারের এই ঘটনায় এখনো উদ্ধারকাজ চলছে৷ ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে শিশুসহ কয়েকশ অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে গ্রিস সরকার৷
ছবি: HELLENIC COAST GUARD/REUTERS
৭৯ মৃতদেহ উদ্ধার
বুধবার গ্রিসের সমুদ্র উপকুলে অভিবাসনপ্রত্যাশী বোঝাই নৌকাটি ডুবে যায়৷ খবর পেয়ে গ্রিসের সমুদ্ররক্ষীরা উদ্ধারকাজ শুরু করে৷ শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৭৯ মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷ তাছাড়া ১০৪জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে৷ গ্রিস সরকার আশঙ্কা করছে, নিহতের সংখ্যা পাঁচশ ছাড়িয়ে যেতে পারে৷ তবে সঠিক সংখ্যা জানা সম্ভব নয় বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ৷
ছবি: EUROKINISSI/REUTERS
অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা
নৌকাটিতে মোট কতজন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য জানা যায়নি৷ তবে বার্তা সংস্থা এএফপি গ্রিক সরকারের একজন মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে জানায়, নৌকাটিতে প্রায় ৭৫০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন৷ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বেশিরভাগ মিশর, পাকিস্তান এবং সিরিয়ার নাগরিক বলে জানা গেছে৷
ছবি: HELLENIC COAST GUARD/REUTERS
’একশ শিশু’
কয়েকশ অভিবাসনপ্রত্যাশী বোঝাই নৌকাটিতে নারী ও শিশু ছিলেন বলেও জানা গেছে৷ দুর্ঘটনায় বেঁচে ফেরা এক অভিবাসনপ্রত্যাশী বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, তিনি নৌকাটিতে একশ’র মতো শিশুকে দেখেছেন৷
ছবি: Stelios Misinas/REUTERS
যেখান থেকে যাত্রা
এএফপির খবরে বলা হয়, লিবিয়ার তবরুক বন্দরের নিকটবর্তী অঞ্চল থেকে নৌকাটির যাত্রা শুরু৷ অভিবাসনপ্রথ্যাশীদের নিয়ে নৌকাটি ইটালির উদ্দেশ্যে যাত্রা করছিল৷ পথিমধ্যে ইঞ্জিন বিকল হয়ে নৌকাটি ডুবে যায়৷
ছবি: Stelios Misinas/REUTERS
উদ্ধারকৃতদের চিকিৎসা
অভিযানে উদ্ধার হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের গ্রিসেল তালমাটার একটি আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে৷ দুর্ঘটনায় আহত বেশ কয়েকজনকে চিকিৎসা দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা৷
ছবি: Eurokinissi/REUTERS
আপাতত গ্রিসে আশ্রয়
উদ্ধার হওয়া ১০৪ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে গ্রিসের কালমাটার একটি আশ্রয়কেন্দ্রে জায়গা দেওয়া হয়েছে৷ ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা ফিরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এই অভিবাসনপ্রত্যাশীরা৷
ছবি: Eurokinissi/REUTERS
চলছে উদ্ধারকাজ
নিখোঁজদের উদ্ধারের অভিযান অব্যহত রেখেছে গ্রিসের নিরাপত্তারক্ষীরা৷ একটি হেলিকপ্টার, ছয়টি জাহাজ নিয়ে বর্তমানে সাগরে উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে গ্রিস৷
ছবি: Eurokinissi/REUTERS
ভয়াবহ দুর্ঘটনা
নৌকাডুবির এই ঘটনা গ্রিসর সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে উল্লেখ করা হয়েছে৷ মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার৷ তার আগে গ্রিসের সমুদ্র অঞ্চলে ২০১৬ সালের এক দুঘটনায় ৩২০ জন নিহত হয়েছিলেন৷
ছবি: Stelios Misinas/REUTERS
8 ছবি1 | 8
বৃহস্পতিবারও দিনভর উদ্ধারকাজ চলেছে। কিন্তু সকলকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। নৌকাটির কিছু অংশ মিলেছে গভীর সমুদ্র থেকে।
গ্রিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নৌকাটিতে মূলত সিরিয়া, মিশর এবং পাকিস্তানের শরণার্থীরা ছিলেন। যারা লিবিয়া হয়ে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। যারা উদ্ধার হয়েছেন, তাদের সকলেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা একটি জঙ্গিগোষ্ঠী তৈরি করতে যাচ্ছিলেন, এমন ইঙ্গিতও মিলেছে।
তবে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা মানসিকভাবে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তাদের প্রিয়জনেরা এখনো নিখোঁজ। অনেকেই গোটা পরিবার নিয়ে যাত্রা করছিলেন। তবে গ্রিস কর্তৃপক্ষকে তারা নিজেদের যাত্রাপথের কথা বলেছে।
গ্রিসের কোস্টগার্ডের দাবি, মঙ্গলবারই তারা ওই নৌকাটিকে দেখতে পেয়েছিল। তারা সাহায্য করতে এগিয়েও গিয়েছিল। কিন্তু নৌকাটি পালিয়ে যায়। সাহায্য নিতে অস্বীকার করে। সাহায্য নিলে আজ এই বিপর্যয় হতো না। বস্তুত, বুধবার নৌকাটি ডুবে যায়।
গ্রিসের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বামপন্থি নেতা অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি নিজে ওই শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা জানিয়েছেন, বুধবার তারা সাহায্য চেয়েছিলেন, কিন্তু ঠিক সময়ে তা পাননি। জানা গেছে, নৌকার নিচের খোলে গর্ভবতী নারী এবং শিশুরা ছিলেন। প্রাণ বাঁচানোর সামান্য সুযোগটুকুও তারা পাননি।
ঘটনার জেরে গ্রিসে একদিনের শোকদিবস ঘোষণা হয়েছে। পোপ এই ঘটনার জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করেছেন।