1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গ্রিসের জন্য

২৭ মে ২০১২

ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই মুহূর্তে একজন মানুষকে নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত – তিনি গ্রিসের আলেক্সিস সিপ্রাস, উগ্র বামপন্থী দল সিরিসার প্রধান৷ ব্যয় সংকোচ নীতির চরম বিরোধিতা করছেন তিনি৷ বলছেন, গ্রিস আন্তর্জাতিক ঋণ ফেরত দেবে না৷

ছবি: dapd

সিরিসা'র দাওয়াই

আগামী মাসের ১৭ তারিখে গ্রিসে আবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সাধারণ নির্বাচন৷ সেই নির্বাচনে সবচেয়ে শক্তিশালী দল হিসেবে আলেক্সিস সিপ্রাসের দল সিরিসা'কে ধরা হচ্ছে৷ এ সপ্তাহেই বার্লিনে এসেছিলেন আলেক্সিস সিপ্রাস৷

আলেক্সিস সিপ্রাসের বয়স মাত্র ৩৭ বছর৷ প্রায় ২০ বছর আগে শিক্ষাক্ষেত্রে সংস্কারের দাবি জানিয়েছিলেন৷ সেই সময় তাঁকে অসাধারণ একজন বক্তা হিসেবে ধরা হত৷ তিনি তখন গ্রিসের কমিউনিস্ট দলের সদস্য ছিলেন৷ স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষদের তিনি জড়ো করতে সক্ষম হয়েছিলেন৷

এই প্রতিভা তিনি কাজে লাগাচ্ছেন গ্রিসের ব্যায়সংকোচ নীতির বিরুদ্ধে৷ তাঁর মতে, এই ব্যায়সংকোচ নীতি গ্রিসকে পুরোপুরি ধ্বংস করছে৷ এই বার্তা তিনি পৌঁছে দিয়েছেন সবার কাছে৷ ৬ই মে গ্রিসে অনুষ্ঠিত হয়েছিল সাধারণ নির্বাচন৷ অংশগ্রহণকারী কোন দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি৷ আলেক্সিস সিপ্রাসের সিরিসা পেয়েছে ১৭ শতাংশ ভোট৷

বার্লিনে আলেক্সিস সিপ্রাসছবি: dapd

অনেকের ধারণা, আগামী মাসের নির্বাচনে সিপ্রাসের দল আরো অনেক ভালো করবে৷ নিজেদের আত্মপ্রকাশ করবে আরো প্রকটভাবে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা গ্রিসের সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি – এই মুহূর্তে আত্মসমর্পণ না করতে৷ আমাদের জয় এখনো হয় নি৷ তবে আমরা অপেক্ষা করছি ১৭ই জুনের নির্বাচনের জন্য৷ সেই সুযোগ আমাদের গ্রহণ করতে হবে৷ আমরা জনগণের সেবা করতে চাই, এই ব্যায়সংকোচ নীতি থামাতে চাই৷ এর ফলে আমরা ফিরে পাবো আমাদের হারিয়ে যাওয়া আশা এবং স্বপ্ন৷''

প্রধান দলগুলির সংকট

এ ধরণের প্রতিশ্রুতিতে সবচেয়ে বেশি আশাহত হয়েছে মধ্য বামপন্থী রাজনৈতিক দল পাসোক৷ সিরিসা পাসোককে উদ্দেশ্য করে কটুকথা বলতে ছাড়েনি৷ পাসোকের ওপর সিরিসার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সিপ্রাস৷ কারণ পাসোক ব্যায়সংকোচ নীতিকে সমর্থন করেছে৷ এই নীতি গ্রহণের ফলে চাকরি হারিয়েছে অনেকেই, বেতন কমেছে এক তৃতীয়াংশ, সামাজিক ভাতায় বিশাল কাটছাঁট করা হয়েছে৷

ছবি: picture-alliance/dpa

গ্রিসের সাংবাদিক টাসোস তেলুগ্লু আলেক্সিস সিপ্রাস'এর একটি নাম দিয়েছেন৷ তা হল ‘ক্রোধ সংগ্রহকারী'৷ কারণ সিপ্রাস ক্ষুব্ধ গ্রিকদের সঙ্গে কথা বলছেন, তাদের ভেতরের সব ক্রোধ এবং আক্ষেপ প্রকাশ করতে উদ্বুদ্ধ করছেন৷ গ্রিকরা একদিন মনে মনে প্রশ্ন করেছেন – এই ব্যায়সংকোচ নীতি গ্রিসকে কোথায় নিয়ে যাবে? এখন পর্যন্ত এই ব্যায়সংকোচ নীতি কোন আশার আলো দেখাতে পারেনি বরং গ্রিকদের জীবনকে আরো কঠিন করে তুলেছে৷

আর ঠিক এই প্রশ্নগুলোই বেশ উচ্চস্বরে তুলছেন সিপ্রাস৷ সংসদে গিয়ে নেয়া ডেমোক্রাটিয়া এবং পাসোকের রাজনীতিকদের তিনি সরাসরি এই প্রশ্নগুলো করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আপনারা কি আমাদের বলতে পারবেন –২০২০ সালে গ্রিসের সামাজিক চিত্র বাস্তবে কী রকম হবে? সেই সময়ে গ্রিসের শতকরা কতজন মানুষ বেকার হবে? ঠিক কতজন মানুষ পথে বসবে? সামাজিক অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?''

আত্মসমালোচনার অভাব

তবে গ্রিসের এই অর্থনৈতিক মন্দার জন্য গ্রিস যে নিজেই দায়ী তা কিছুতেই স্বীকার করতে চাননা সিপ্রাস৷ এর জন্য তিনি আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে দায়ী করেন৷ গালিগালাজ করেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকে, তাদের ব্যায়সংকোচ নীতিকে৷ শুধু এই প্রতিষ্ঠানগুলোকেই গালিগালাজ করে ক্ষান্ত হননি তিনি৷ ম্যার্কেল এবং ক্রিস্টিন লাগার্দও রক্ষা পাননি সিপ্রাসের কবল থেকে৷ সিপ্রাস বলেন, ‘‘যারা ব্যায়সংকোচ নীতির পক্ষে – সামারাস এবং ভেনিজেলোস – তারা আমাদের সব ধরণের পরামর্শ প্রত্যাখ্যান করেছেন৷ কারণ ম্যার্কেল এবং লাগার্দের প্রতি তাদের দায়িত্ব পালনে অটল থাকতে হবে৷''

আর এর সঙ্গে একমত হয়েছে গ্রিসের সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশ৷ কারণ ৬ই মে যে সব মানুষ ভোট দিয়েছেন, তাদের বেশির ভাগই ব্যায়সংকোচ নীতির বিপক্ষে৷ সিপ্রাস বলেন, ‘‘দেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন – তারা জানিয়ে দিয়েছেন যে ব্যায়সংকোচ নীতি গ্রিসকে সাহায্য করবে না৷''

তবে সিপ্রাস যে সব প্রতিশ্রুতি সাধারণ মানুষদের দিয়েছেন, তা এক কথায় চমৎকার৷ গ্রিস ইউরোজোনেই থাকবে কিন্তু ব্যায়সংকোচ নীতি গ্রহণ করবে না৷ বেতন বাড়বে, যারা চাকরি হারিয়েছে তারা তাদের চাকরি ফিরে পাবে, অবসর ভাতা বাড়ানো হবে৷ এবং সবচেয়ে বড় কথা হল যে ঋণ গ্রিসকে দেয়া হয়েছে তার এক পয়সাও গ্রিস ফেরত দেবে না৷ তবে কি করে তা সম্ভব হবে, তা কিন্তু সিপ্রাস বলছেন না৷ তবে আর যাই হোক, সাধারণ মানুষের সঙ্গে তিনি তার চিন্তা ভাবনাকে একাত্ম করতে পেরেছেন৷ এখন শুধু ১৭ই জুনের জন্য অপেক্ষা৷

প্রতিবেদন: টোমাস বোরমান/মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ