1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গ্রিসে গণভোটের কোনো প্রয়োজন নেই

ব্যার্ন্ট রিগার্ট/এসবি২৯ জুন ২০১৫

এক গণভোটের মাধ্যমে গ্রিসের ব্যর্থ সরকার সম্ভাব্য আসন্ন অরাজকতার দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে চায়৷ ডয়চে ভেলের ব্যার্ন্ট রিগার্ট মনে করেন, এই পরিকল্পনার পেছনে তাদের মতলব যথেষ্ট স্পষ্ট৷

Griechenland Athen Parlament Debatte Referendum Tsipras
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis

আগামী রবিবার গ্রিসের মানুষ এক গণভোটে অংশ নেবার সুযোগ পাচ্ছেন৷ কিন্তু কোন বিষয়ে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন? আন্তর্জাতিক অর্থদাতারা ব্যয় সংকোচ ও সংস্কারের শর্তে যে আর্থিক প্যাকেজ দিতে চাইছে, তার পক্ষে বা বিপক্ষে? এমন এক প্রশ্নই উদ্ভট ও হাস্যকর৷ কারণ যার অস্তিত্বই নেই, তা নিয়ে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়? গ্রিস আলোচনা বানচাল করে দেবার পর ইউরো এলাকার অর্থমন্ত্রীরা এই প্রস্তাব কার্যত প্রত্যাহার করে নিয়েছেন৷ এই মুহূর্তে গ্রিস সম্পূর্ণ একা হয়ে পড়েছে এবং দ্রুত রাষ্ট্র হিসেবে দেউলিয়া হবার পথে এগিয়ে চলেছে৷

গ্রিকরা যদি গণভোটে আর্থিক প্যাকেজের পক্ষে রায় দেন, তার ফলে সরাসরি কিছুই ঘটবে না৷ তখন আবার নতুন করে দরকষাকষি করে এক সহায়তা কর্মসূচি স্থির করতে হবে৷ কিন্তু কার সঙ্গে সেটা করা হবে? প্রধানমন্ত্রী আলেক্সিস সিপ্রাস-এর নেতৃত্বে চরম বাম ও দক্ষিণপন্থি সরকারের সঙ্গে সে পথে এগোনো সম্ভব নয় কারণ তিনি গণভোটে জনগণকে নেতিবাচক ভোট দেবার আহ্বান জানাচ্ছেন৷ যে সরকার সংস্কারের বিপক্ষে, তার পক্ষে সেই সংস্কার বাস্তবায়ন করা কখনোই সম্ভব হবে না৷

এথেন্সে বন্ধ হয়ে যাওয়া ব্যাংকের এক কর্মকর্তার সঙ্গে তর্ক করছেন পেনশনপ্রাপ্ত কর্মীরাছবি: Reuters/M. Djurica

ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার চেষ্টা

অর্থাৎ গণভোটে ইতিবাচক রায় এলে সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে এবং দ্রুত নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে৷ কিন্তু আশঙ্কা হলো, মৌলিক কমিউনিস্ট ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ এই সরকার ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখবে৷ গত কয়েক সপ্তাহের ট্র্যাজিক ভুলগুলির পর স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তারা যে জনগণের কল্যাণের পরোয়া করে না৷ ছলনা করে তারা আলোচনা ভণ্ডুল করে দিয়েছে এবং এখন গণভোটের আড়ালে আশ্রয় নিচ্ছে৷ কয়েক সপ্তাহ আগেই তারা জনগণের রায় নিতে পারতো – দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কার জন্য অপেক্ষা করার কোনো প্রয়োজনই ছিল না৷

ভোটাররা যদি নেতিবাচক রায় দেন, তখন আর ফেরার কোনো পথ খোলা থাকবে না৷ আন্তর্জাতিক দাতা ও ইউরো গ্রুপের সঙ্গে সম্পর্ক স্থায়ীভাবে ছিন্ন হয়ে যাবে৷ প্রধানমন্ত্রী সেটাই চান৷ এর ফলে কার যে লাভ হবে, সেটা একমাত্র তিনিই জানেন৷ কিন্তু এটা একেবারে স্পষ্ট হয়ে গেছে, যে বাইরে থেকে সাহায্য ছাড়া গ্রিস ব্যর্থ রাষ্ট্র হয়ে পড়তে বাধ্য৷

অস্ট্রিয়ার অর্থমন্ত্রী হান্স ইয়র্গ শেলিং প্রথম রাজনীতিক হিসেবে স্পষ্ট ভাষায় এ কথা বলেছেন৷ ইউরো এলাকা থেকে বিদায় অবশ্যম্ভাবী৷ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্দ হাল ছেড়ে দিয়েছেন৷ আইএমএফ আর এভাবে গ্রিসকে সাহায্য করতে পারবে না৷ ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনো গ্রিসকে সচল রাখতে সাহায্য করছে৷ আর কতকাল সেটা চলবে, তা সম্ভবত আগামী রবিবারই স্পষ্ট হয়ে যাবে৷

গ্রিসই শুধু গণতন্ত্র নয়

গ্রিক প্রধানমন্ত্রী সিপ্রাস জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল-কে এক টেলিফোন সংলাপে বলেছেন, বেঁচে থাকার জন্য গ্রিসের যথেষ্ট ‘অক্সিজেন' রয়েছে৷ গ্রিস হয়ত আরও একবার কোনোরকমে টাকা-পয়সা জোগাড় করে ৩০শে জুনের মেয়াদ অতিক্রম করে আইএমএফ-কে তার প্রাপ্য অর্থ দিতে পারবে৷ তবে তাতে গ্রিসের দৈন্যদশার কোনো পরিবর্তন হবে না৷ কর বাবদ আয় কমে চলেছে, অর্থনীতি সংকুচিত হচ্ছে৷ ঢাকঢোল পিটিয়ে গণভোট করিয়ে অবস্থার কোনো পরিবর্তন ঘটবে না৷ আন্তর্জাতিক সহায়তার কাঠামোর মধ্যে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে আর্থিক নীতি প্রণয়ন করলে তবেই ফল পাওয়া যাবে৷

ব্যার্ন্ট রিগার্ট, ডয়চে ভেলে

গ্রিক সংসদে গণভোট সংক্রান্ত বিতর্কের সময় দাতা ও সামগ্রিকভাবে ইউরোপের বিরুদ্ধে বিষোদগার ও অপমানজনক মন্তব্য শোনা গেছে৷ সবচেয়ে বেদনাদায়ক ও উদ্ভট অভিযোগ ছিল, একমাত্র গ্রিসেই নাকি প্রকৃত গণতন্ত্র রয়েছে৷ বাকি সবাই মিলে অগণতান্ত্রিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে৷ অথচ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৮টি সদস্য দেশেই গণতন্ত্র চালু আছে৷ এবং তারা শুধু গত পাঁচ বছরেই সংহতি দেখায়নি৷ মনে রাখতে হবে, বহু দশক ধরে গ্রিস ইইউ-র মধ্যে তার অবদানের তুলনায় সবচেয়ে বেশি সাহায্য পেয়ে এসেছে৷

ইউরোপের সঙ্গে, নাকি ইউরোপকে ছাড়া

সিরিসা ও দক্ষিণপন্থি আনেল দল গণতন্ত্র আবিষ্কারও করেনি, গণতন্ত্রের ইজারা নিয়েও তারা বসে নেই৷ ঋণ ও আর্থিক দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলা যায় না৷ অর্থাৎ গ্রিকদের বুঝতে হবে, তাঁরা গণভোটে শুধু সাহায্য কর্মসূচির পক্ষে বা বিপক্ষে রায় দিচ্ছেন না৷ তাঁরা তাঁদের রাজনৈতিক দিকনির্দেশও করতে চলেছেন – হয় ইউরোপের সঙ্গে, কিংবা ইউরোপকে ছাড়াই৷ তাঁরা যদি বামপন্থি ব়্যাডিকাল শক্তি ও তাঁদের বিফল পরীক্ষার পথ বেছে নেন, তখন তাঁদের সেই সিদ্ধান্তের পরিণতি সম্পর্কেও সচেতন থাকতে হবে৷ ইউরোপে কেউ গ্রিকদের পদানত করতে চায় না – যদিও অনেক মহলেই এমন অভিযোগ শোনা যায়৷ তবে মনে রাখতে হবে, শেষ পর্যন্ত তাকেই সাহায্য করা যায় যে সাহায্য নিতে প্রস্তুত৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ