সোমবার ইউরোগ্রুপের এক বৈঠকে অর্থমন্ত্রীরা গ্রিসের সংস্কার বাস্তবায়ন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন৷ বেইলআউট প্যাকেজের পরবর্তী কিস্তির অর্থ পেতে গ্রিসকে আলোচনা শুরুর তাগিদ দেয়া হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
ঋণদাতা তিন সংস্থা –আইএমএফ, ইসিবি ও ইউরোপীয় কমিশন – এর কর্মকর্তারা ইউরোগ্রুপের মন্ত্রীদের জানিয়েছেন, বেইলআউটের অর্থ পেতে গ্রিসের যেসব সংস্কার বাস্তবায়ন করার কথা, সেটা ধীর হয়ে গেছে৷ এ লক্ষ্যে আলোচনাও অনেকদিন ধরে থেমে আছে৷ এই বক্তব্য শোনার পর ইউরোগ্রুপের অর্থমন্ত্রীরা গ্রিসকে ত্রয়িকার সঙ্গে তাড়াতাড়ি আলোচনা শুরুর পরামর্শ দেয়া হয়েছে৷ আগামী মে মাসে গ্রিসের ২৪০ বিলিয়ন ইউরো জরুরি ঋণ পাওয়ার কথা রয়েছে৷
কয়েক বছর আগে শুরু হওয়া আর্থিক মন্দার কবলে পড়ে গ্রিস ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেইলআউট সহায়তা নিচ্ছে৷ আর সেটা পেতে দেশটিতে ব্যাপকহারে বেতন ও পেনশন কমানো সহ কর বাড়ানোর মতো অজনপ্রিয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে৷
গ্রিসে অভিবাসীদের চরম দুর্দশা
আর্থিক মন্দার কারণে সামগ্রিকভাবে গ্রিসের অবস্থা অত্যন্ত কাহিল৷ এই কাহিল দশার ভুক্তভোগী হচ্ছেন সেদেশে অবস্থানরত বৈধ, অবৈধ অভিবাসীরা৷ অনেকে বাধ্য হয়ে বেছে নিচ্ছেন ভিক্ষাবৃত্তি, জীবন কাটাচ্ছেন রাস্তায়৷
ছবি: DW/ A. Stahl
ভয় এবং ঘৃণা
‘ভয়ের সভ্যতায় স্বাগতম’ - অভিবাসীদের জন্য গ্রিস ক্রমশ ভয়ের রাজ্যে রূপ নিচ্ছে৷ তাদের নিত্যদিনের জীবন এখন সহিংসতা, বৈষম্য আর দারিদ্র্যের বিস্বাদে ভরা৷
ছবি: DW/ A. Stahl
কিছুই বাকি নেই
কাগজপত্র ছাড়া দুই অভিবাসীকে একটু আগেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ অবৈধ অভিবাসী হিসেবে আটক এই দুই ব্যক্তি তাকিয়ে আছেন নিয়তির দিকে৷ গ্রিসে বসবাসকারী এরকম অসংখ্য অবৈধ ব্যক্তিকে প্রতিদিন গ্রেপ্তার করছে পুলিশ৷ গ্রেপ্তারের পর এদেরকে বাসে করে আটক কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়৷ প্রতিদিন অবৈধ অভিবাসী ভর্তি ১০-১৫টি বাস আটক কেন্দ্রে পৌঁছায়৷
ছবি: DW/ A. Stahl
বাক্সের মধ্যে জীবনযাপন
অর্থনৈতিক মন্দা গ্রিসের বাসিন্দাদের অত্যন্ত শক্তভাবে আঘাত করেছে৷ এর ফলে অনেকে হয়েছেন গৃহহীন, বাস করছেন রাস্তায়৷ ২০০৯ সালের তুলনায় বর্তমানে সেদেশের রাস্তায় বসবাসকারী গৃহহীনের সংখ্যা বেড়েছে ২৫ শতাংশ৷
ছবি: DW/ A. Stahl
ভয়ের মধ্যে বসবাস
আনা টাসাভি একজন সিরীয় শরণার্থী৷ কোন কাগজপত্র ছাড়া অবৈধভাবে এথেন্সে বাস করেন তিনি৷ তিনি দিনের বেশিরভাগ সময় বন্ধুর বাড়িতে তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকেন৷ তার মধ্যে সবসময় আতঙ্ক কাজ করে, এই বুঝি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হবেন কিংবা ডানপন্থী গুণ্ডাদের আক্রমণের শিকার হবেন৷ নিজের দেশে ফেরাটাও তার জন্য অনেক বিপজ্জনক৷
ছবি: DW/ A. Stahl
বহিরাগত
একজন অভিবাসী নারী এবং তার শিশু এথেন্সের আটক কেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন৷ অবৈধ হিসেবে আটক হওয়ায় কয়েকমাস কারাভোগ করতে হয়েছে তাদের৷
ছবি: DW/ A. Stahl
বৈশ্বিক অর্থনীতি
গ্রিসে আর্থিক মন্দার কারণে সেদেশের সরকার এবং বিশ্বায়নে তাদের ভূমিকার উপর গভীর অবিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে৷
ছবি: DW/ A. Stahl
ব্যাপক ভিড়
এথেন্সের পররাষ্ট্র দপ্তরের সামনে প্রতিদিন ভিড় করেন অসংখ্য অভিবাসী৷ উদ্দেশ্য গ্রিসে বসবাসের একটি বৈধ কাগজ বের করার চেষ্টা করা৷ খুব ভোর থেকে গভীর রাত অবধি অপেক্ষা করেন তারা, কিন্তু এদের মধ্য থেকে খুব কম লোকই সেদেশে ছয়মাস বৈধভাবে বসবাসের কাগজ পান৷
ছবি: DW/ A. Stahl
কোন ভবিষ্যত নেই?
‘এমনিতেই এথেন্সে বসবাস অত্যন্ত কঠিন, আর একজন অভিবাসী হিসেবে অসম্ভব৷ আমি এখানে এসেছিলাম একটু ভালো ভবিষ্যতের আশায়, কিন্তু এখানে কোন ভবিষ্যতই নেই’, ডয়চে ভেলেকে বলছিলেন এক অভিবাসী৷ নিজের নাম প্রকাশে আগ্রহী নন তিনি৷
ছবি: DW/ A. Stahl
কঠিন বাস্তবতা
ইউরোপে আগমনের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে গ্রিসে আসেন আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের মানুষ৷ কিন্তু এরপর তারা এক জটিলতা থেকে অন্য জটিলতার মুখোমুখি হন৷ গ্রিসের বাস্তবতা এখন বড় কঠিন৷
ছবি: DW/ A. Stahl
গ্রিক ট্রাজেডি
এথেন্সের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে এরকম গ্রাফিটির সংখ্যা অনেক৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব গ্রাফিটি গ্রিসের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে স্থানীয়দের মনোভাব ফুটিয়ে তোলে৷
ছবি: DW/ A. Stahl
যাওয়ার কোন জায়গা নেই
গ্রিসে বসবাসরত অভিবাসীরা ক্রমশ কঠিন থেকে কঠিনতর বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছেন৷ তাদের জন্য কোন চাকুরি নেই, ভবিষ্যত অন্ধকার৷ অনেক অভিবাসী শেষমেষ বেছে নেন ভিক্ষাবৃত্তি আর জীবন কাটান রাস্তায়৷
ছবি: DW/ A. Stahl
11 ছবি1 | 11
পুঁজিবাজারের হালচাল
সপ্তাহের শুরুতে দুটো কারণে ইউরোপের পুঁজিবাজারের অবস্থা কিছুটা খারাপ ছিল৷ এর মধ্যে একটা কারণ হলো, মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ স্টিমুলাস প্যাকেজের অর্থ আরও কমিয়ে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ মার্কিন অর্থনীতির অবস্থা ভালো হতে থাকায় গত মাসেও কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ফেড৷ এছাড়া আর্জেন্টিনা, তুরস্ক ও রাশিয়ার মতো দেশগুলোর মুদ্রার অবনমনও, ইউরোপের পুঁজিবাজারের খারাপ অবস্থার একটা কারণ ছিল৷ ‘ইজি মানি পলিসি'-তে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসার কারণে বিনিয়োগকারীরা উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলো থেকে অর্থ উঠিয়ে নিচ্ছেন৷ ফলে সেসব দেশের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে৷
ইউরোগ্রুপের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে৷ বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর আর্থিক দুরবস্থা ইউরোজোনের ওপর কোনো প্রভাব ফেলতে পারে কিনা, সে ব্যাপারে আলোচনা করেছেন অর্থমন্ত্রীরা৷ তাঁরা মূলত গত সপ্তাহে আর্জেন্টিনার মুদ্রা পেসো-র ব্যাপক অবনমন নিয়ে কথাবার্তা বলেন৷ মন্ত্রীরা উন্নয়নশীল অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে চিন্তিত হলেও, সেটা ইউরোজোনকে আক্রান্ত করতে পারবে না, বলেই মনে করছেন৷