গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ রক্ষার চেষ্টা
২৩ আগস্ট ২০২৩বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই কোরাল রিফের আকার প্রায় সাড়ে তিন লাখ বর্গকিলোমিটার- প্রায় জার্মানির সমান৷
রিফ পুরোপুরি নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষায় কাজ করছে অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট ফর মেরিন সায়েন্স, এআইএমএস৷
মেরিন বায়োলজিস্ট আনিকা ল্যাম্ব তার কাজের ব্যাপারে খুব আগ্রহী৷ তিনি বলছেন, ‘‘রিফ যে হুমকির মুখে আছে সেটা আমি প্রতিদিন দেখতে পাই৷ তবে আমি মনে করি না যে, এটা আশা হারানোর কোনো কারণ৷ আমি এখনও গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ দেখতে পারি৷ এখনও অনেক এলাকা অক্ষত আছে, সুন্দর আছে৷ এখনও এত বৈচিত্র্য আছে, যেগুলো রক্ষা করা উচিত৷''
গবেষণাগারে ট্যাঙ্কে রিফের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে৷ কোরালেরা সংবেদনশীল৷ পানির গুণাগুণ, আলো, তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে তারা বেঁচে থাকে৷ আনিকা ল্যাম্ব বলেন, ‘‘জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে লড়তে পারে এমন কোরাল তৈরি করতে কী করা যায়, তা আমরা দেখছি৷ এমন কোরাল তৈরি করে সেগুলো রিফে ছাড়ার পরিকল্পনা আমাদের৷ এভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে ইকোসিস্টেম রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে৷''
তাদের সবচেয়ে বড় আশঙ্কা, কোরাল অ্যালজি হারিয়ে সাদা হয়ে যেতে পারে- যাকে ব্লিচিং বলে৷ গত কয়েক বছরে এমনটা হয়েছে৷ পানির তাপমাত্রা অনেক বেড়ে গেলে কোবাল অ্যালজিদের ছেড়ে দেয়৷ এই অ্যালজি শুধু কোরালকে সুন্দর রং-ই দেয় না, কোরালের পুষ্টিরও ব্যবস্থা করে৷ অ্যালজি হারিয়ে গেলে কোরাল মরে যায়৷
অস্ট্রেলিয়ার ভূমি ও সাগরে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দেখা যাচ্ছে৷ অত্যধিক গরম, খরা, শুষ্কতা, ফলন কম হওয়া ইত্যাদি৷
পরিবেশকর্মী ক্রিস্টাল ফাল্কনাউ মনে করছেন, শঙ্কিত হওয়ার কারণ আছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, সময় যত যাচ্ছে বার্তাটা স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হচ্ছে৷ এবং এটা খুব দুঃখজনক যে, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে কয়েকজন অস্ট্রেলিয়ানের চোখ খুলে দিতে এই পর্যায় পর্যন্ত আসতে হয়েছে৷''
গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের চেয়ে আর কোথাও জলবায়ু পরিবর্তনের এত বেশি প্রভাব দেখা যায় না৷ সাত বছরের মধ্যে চারবার কোরাল ব্লিচিং রিফের এত ক্ষতি করেছে যে, ইউনেস্কো এর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্ট্যাটাস বাতিলের হুমকি দিয়েছে৷
অস্ট্রেলিয়ার সুনাম আর অনেক অর্থ এখন ঝুঁকির মুখে৷ কারণ রিফ আর্থিকভাবে মূল্যবান একটি সম্পদও বটে৷ সেখানে পর্যটনখাতে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ কাজ করেন৷
ডাইভিং ইনস্ট্রাক্টর নাডিন হুট নয় বছর আগে জার্মানি থেকে সেখানে যান৷ গবেষণার কাজেও যুক্ত আছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি বিভিন্ন গভীরতায় স্নরকেলিং করি৷ কোরালেরা কেমন আছে সেটা পর্যবেক্ষণ করি৷ কত ধরনের কোরাল আছে? কতগুলো মারা গেছে? কত অ্যালজি আছে? কোরাল ব্লিচিং আছে কিনা?''
এসব তথ্য তারা এআইএমএস ইনস্টিটিউটকে দিয়ে থাকেন৷ এর মাধ্যমে তারা অনন্য এই ইকোসিস্টেম রক্ষায় ভূমিকা রাখছেন৷
নরমেন ওডেনথাল/জেডএইচ