ঘরেই সূর্যের আলো
২ জুলাই ২০১৪ভল্ফগাং শ্নিক জার্মানির এক রসায়নবিদ৷ মিউনিখ শহরের লুডভিগ-মাক্সিমিলিয়ান্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক ও তাঁর সহকর্মীরা একরকম অসাধ্যই সাধন করেছেন কয়েকদিন আগে৷ এলইডি বাল্বে প্রায় সূর্যের আলোর উজ্জ্বলতা নিয়ে এসেছেন তাঁরা৷
‘লাইট এমিটিং ডায়ডস' বা এলইডি বাল্বের একটা সীমাবদ্ধতা হলো, এ ধরণের বাতি শুধু একটা রং-ই নির্গমন করে৷ ফলে আলোয় থাকে একটা লাল আভা৷ অথচ মানুষ সাধারণত যখন বই পড়ে, কাপড় পছন্দ করে, কিংবা আয়নায় নিজের চেহারা দেখে, তখন সাদা আলোতেই দেখতে ভালোবাসে৷ আর সাদা আসলে অনেক রঙের সমাহার৷ ফলে একটু লালাভ এবং সেই লাল আভার কারণে সূর্যের আলোর চেয়ে কম উজ্জ্বল আলো বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে সবার কাছে খুব একটা পছন্দের নয়৷ অথচ ২০০২ সালে ইনক্যানডেসেন্ট ল্যাম্প বা ভাস্বরদীপ নিষিদ্ধ করার পর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর বাজার এলইডি বাল্বে সয়লাব৷
এ ধরণের বাতির বড় সুবিধার দিকও আছে৷ এলইডি, এনার্জি সেভিং, অর্থাৎ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাল্বের মতো জ্বলতে সময় নেয় না৷ তার ওপর গরম হওয়ার সময় না নিয়ে, সুইচ টেপা মাত্রই এই বাল্ব জ্বলে ওঠে বলে ভোক্তাদের কাছে সমাদৃতও হয়ে আসছে এলইডি৷
ভবিষ্যতে সমাদর আরো বাড়বে বলেই আশা করছেন ভল্ফগাং শ্নিক৷ তিনি এবং লুডভিগ-মাক্সিমিলিয়ান্স বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর কয়েকজন সহকর্মী গবেষক এলইডি বাল্বের জন্য এমন এক উপাদান আবিষ্কার করেছেন, যার সহায়তায় লাল আভা বলতে গেলে আর থাকেই না৷ ফলে এলইডি বাল্বের আলোয় কাপড় তো অবশ্যই, অন্য সব কিছুই প্রকৃত রঙে দেখতে আর অসুবিধে হবে না৷
ডয়চে ভেলেকে ভল্ফগাং শ্নিক জানান, তিনি এবং তাঁর সহকর্মীরা নতুন ধরণের এক লুমিনফোর আবিষ্কার করেছেন আর সে কারণেই এলইডি-র আলো হয়ে উঠেছে অনেক বেশি উজ্জ্বল৷ শ্নিক জানান, এলইডি বাল্বে এই গুণগত পরিবর্তন আনার জন্য গত কয়েক বছর ধরেই ফিলিপস লুমিলেডস ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে আসছিলেন তাঁরা৷ সে কাজে প্রত্যাশিত সাফল্য এসেছে৷ ভল্ফগাং শ্নিক বলেন, ‘‘(উজ্জ্বলতা হিসেব করে) সূর্যের আলোকে যদি ১০০ দেয়া হয়, সেই তুলনায় এখনকার এলইডি বাল্বের উজ্জ্বলতা ৮০ ভাগ৷ আমাদের উদ্ভাবিত নতুন এই লুমিনেসেন্ট উপাদান উজ্জ্বলতা ৯০ ভাগেরও ওপরে নিয়ে গেছে৷'' ভল্ফগাং শ্নিকদের এই নতুন এলইডি বাল্ব এখন শুধু বাজারে আসার অপেক্ষায়৷