প্রাকৃতিক এয়ারকন্ডিশনিং
৩ মে ২০১৩নতুন দিশায় পদক্ষেপ
পাঁচ বছর ধরে বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা চালিয়েছেন৷ তাঁদের লক্ষ্য ছিলো এমন সামুদ্রিক অ্যালজির চাষ করা, যা দিয়ে ঘরবাড়ি গরম রাখা যায়৷ স্ট্র্যাটিজিক সাইন্স কনসাল্ট কোম্পানির মার্টিন ক্যার্নার ও স্টেফান হিন্ডারসিন এই উদ্যোগ শুরু করেছিলেন৷ এবার পরীক্ষার পালা৷ হিন্ডারসিন এ প্রসঙ্গে বললেন, ‘‘এখনো আমাদের কোনো অভিজ্ঞতা নেই৷ গোটা বিশ্বে এমন চাষ না হওয়ায় কোনো নির্দেশিকাও নেই৷ এটা আমাদেরই লিখতে হবে৷''
সামুদ্রিক অ্যালজি ভরা এক পরীক্ষামূলক বাড়ি সত্যি বিশ্বের প্রথম এমন উদ্যোগ৷ কাচের দেওয়ালে অ্যালজির চাষ কিন্তু ছড়িয়ে পড়তে পারে৷ কারণ অ্যালজির চাহিদা খুবই কম৷ উত্তাপ ও উন্নত মানের বায়ো-মাস তৈরি করতে চাই শুধু কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও সূর্যের আলো৷ এর ফল কিন্তু বেশ কাজে লাগে৷
সৌর বিদ্যুতের তুলনায় বেশি কার্যকর
স্ট্র্যাটিজিক সাইন্স কনসাল্ট কোম্পানির আরেক কর্মকর্তা মার্টিন ক্যার্নার বললেন, ‘‘এর কার্যকারিতা সত্যি দেখার মতো৷ আলোর ১০ শতাংশ আমরা বায়ো-মাসের মধ্যে আবার জ্বালানি হিসেবে পাই৷ প্রায় ৩৮ শতাংশ আলো উত্তাপ হিসেবে পাওয়া যায়৷ অর্থাৎ ৪৮ শতাংশ আলোই সংরক্ষণ করা যায়৷ ফোটো-ভল্টেয়িক সেলের ক্ষেত্রে মাত্র ১২ থেকে ১৫ শতাংশ আলো আবার কাজে লাগানো যায়৷''
হামবুর্গ শহরে নির্মাণ সংক্রান্ত প্রদর্শনীতে দুটি বিষয় বেশ গুরুত্ব পায় – নির্মাণের উপকরণ ও জ্বালানি ব্যবস্থার ক্ষেত্রে উদ্ভাবন৷ যে সব স্থপতি ও প্রোমোটার বাড়িতে জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে নতুন আইডিয়ার খোঁজ করছেন, তাঁদের কাছে এই প্রদর্শনী যেন সোনার খনির মতো৷ তবে শুধু পরীক্ষামূলক প্রকল্প নয়, চাই এমন সমাধানসূত্র যা সব জায়গায় কাজে লাগানো যায়৷
বাস্তবায়নের সম্ভাবনা উজ্জ্বল
প্রদর্শনীর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উলি হেলভেগ বললেন, ‘‘জ্বালানি ব্যবহারের মাপকাঠিতে এই সব বাড়ি অত্যন্ত উন্নত৷ অর্থাৎ তাদের জ্বালানির চাহিদা কম৷ একই সঙ্গে সেখানে অত্যন্ত দক্ষভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন করা হচ্ছে৷ তার পরিমাণও এতটা, যে শুধু নিজের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি অতিরিক্ত শক্তি একটি নেটওয়ার্কেও সরবরাহ করা যাবে৷ যেমন স্থানীয় সুইমিং পুল গরম রাখতে তা কাজে লাগানো যাবে৷ ফলে গোটা এলাকার উপকার হবে৷''
অ্যালজি-বাড়ির মতো প্রকল্প সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহও বাড়ছে৷ কারণ এভাবে গুদাম বা বড় দোকানের বিশাল দেওয়াল কাজে লাগিয়ে বাড়তি আয় করা যায়৷
মার্টিন ক্যার্নার জানালেন, ‘‘আমরা বেশ অগ্রসর হয়েছি৷ এটা একটা পরীক্ষামূলক প্রকল্প বটে, কিন্তু আসলে কাজ কিন্তু প্রায় শেষ৷ এবার উৎপাদন প্রক্রিয়ায় শুধু খুঁটিনাটি কিছু পরিবর্তন করতে হবে৷ কিন্তু এখানে যে দেওয়াল দেখছেন, তা এখনই বড় আকারে কাজে লাগানো যায়৷''
প্রথমে পানির প্রবাহের জটিল ব্যবস্থার প্রতিটি পর্যায় পরীক্ষা করা হয়৷ এরপর অ্যালজি বসানো হয়৷ তারপর জীবন্ত এই দেওয়ালের অন্যদিকে মানুষ বসবাস করতে পারেন৷
এসবি/ডিজি