1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‌ঘুরে দাঁড়াবেন মমতা?‌

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২২ জুলাই ২০১৯

২১ জুলাইয়ের শহীদ দিবসের সমাবেশের মঞ্চ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে ঘুরে দাঁড়ানোর ডাক দিলেন মমতা ব্যানার্জি৷ কিন্তু এবারের সভা কি লোক টানতে ব্যর্থ হল?

Mamata Banerjee
ছবি: DW/S. Bandopadhyay

আগের বছরের ২১ জুলাইয়ের সভামঞ্চ থেকে মমতা ব্যানার্জি পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি লোকসভা আসনের ৪২টিতেই তৃণমূল কংগ্রেসকে জেতানোর ডাক দিয়েছিলেন৷ ঘোষণা করেছিলেন, সারা দেশেই বিজেপি হারবে, তবে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ‘‌গোল্লা'‌পাবে৷ কার্যত ফল হয়েছে উল্টো৷ একটি–দুটি নয়, এ রাজ্যের ১৮টি লোকসভা আসনে ‌জিতেছে বিজেপি৷ তার মধ্যে পড়ছে ১২০টি বিধানসভা নির্বাচনী এলাকা, যেখানে বিজেপি প্রার্থীরা এগিয়ে ছিলেন তৃণমূল প্রতিপক্ষের থেকে৷ ২৯৪ আসনের রাজ্য বিধানসভায় ১২০ আসনে বিজেপির এগিয়ে থাকা ২০২১ বিধানসভা ভোটে অবধারিত তৃণমূলের দুশ্চিন্তার কারণ হবে৷ ফলে এবারের সমাবেশ থেকে দলকে ঘুরে দাঁড়ানোর ডাক দিলেন নেত্রী৷ ফের বিজেপির বিরুদ্ধে লোকসভা ভোটে কারচুপির অভিযোগ এনে পুরনো ব্যালট প্রথা ফেরানোর দাবি তুললেন৷ এবং তিনি দলীয় নেতাদের কাটমানি ফেরত দেওয়ার কথা বলায় বিজেপি যে বিষয়টি রাজনৈতিক প্রচারের হাতিয়ার করেছে, তার পাল্টা মমতা কটাক্ষ করলেন, ২০১৪ সালে ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে৷ যে৷ বিদেশে গচ্ছিত কালো টাকা বিজেপি ফেরত আনবে এবং প্রতি নাগরিকের ব্যাঙ্কে ১৫ লাখ টাকা জমা পড়বে৷
কিন্তু এবার কোথাও যেন মমতার বক্তব্যের সেই জোর, সেই ঝাঁঝ ছিল না, যা প্রতিবার থাকে৷ নেত্রী এবং তাঁর দল যেন কিছুটা ব্যাকফুটে, রক্ষণাত্মক৷ ঠিক যেমন এবারের ২১ জুলাইয়ের সভা যথেষ্ট লোক টানতে পারেনি বলে শোনা যাচ্ছে৷ ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের বিরাট ময়দানের জায়গায় ধর্মতলার রাস্তার মোড়ে সভা করলে এমনিতেই লোক ঠাসাঠাসি মনে হয়৷ এবার সেই জমজমাট ভাবটাও উধাও৷ এক নেত্রীকে মাইকে এমনও ঘোষণা করতে শোনা গেছে, ‘‘‌চিড়িয়াখানা দুপুর আড়াইটের পর খুলবে৷ আগে সবাই সভায় যান!‌'‌'সেই শুনে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করেছেন, ‘‘‌উনি আমাদের অনুরোধ করতে পারতেন৷ আমরা কিছু লোক পাঠিয়ে দিতাম৷'‌' 

কোন সভায় হাজির থেকেছি, কী সুবিধা পেয়েছি উনি কী করে জানলেন:কাঞ্চনা মৈত্র

This browser does not support the audio element.

এবার নেত্রীর সাধের ‘‌টলিউড'‌, অর্থাৎ কলকাতার টলিগঞ্জের স্টুডিওপাড়ার শিল্পীরা কতজন মঞ্চে থাকেন, সেদিকেও নজর ছিল সবার৷ বিশেষ করে যেখানে সদ্য বাংলা টেলিভিশন–সিনেমার একঝাঁক অভিনেতা অভিনেত্রী বিজেপিতে গিয়ে যোগ দিয়েছেন৷ মমতার দলের তিন অভিনেতা–সাংসদ দেব, মিমি এবং নুসরৎ এবার সভায় থাকলেও বাকি উপস্থিতি বেশ নিষ্প্রভ৷ আগে যাঁদের দেখা যেত, এবার যাঁরা বিজেপিতে, তাঁদের একজন অভিনেত্রী কাঞ্চনা মৈত্র৷ তিনি ডয়চে ভেলে–কে সরাসরিই বললেন, ‘‘‌আমি কোন সভায় হাজির থেকেছি আমি জানি না, আমি কী সুবিধা পেয়েছি আমি জানি না৷ যদি আমি সুবিধা পেয়ে থাকি, উনি (‌যাঁরা বলছেন)‌কী করে জানলেন?‌ তা হলে আমি যখন সুবিধা পেয়েছি, তখন উনিও কি ওই সময় সুবিধা নিতে হাজির ছিলেন?‌'‌' কাঞ্চনা বলছেন, এই কথাগুলো হচ্ছে, কিন্তু এগুলোকে অগ্রাহ্য করাই ভাল৷ মানুষ আসলে বিশ্বাস হারিয়েছে৷ ‌আগে যে মানুষেরা রাজনীতিতে এসেছে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকে, তার খামখেয়ালি সিদ্ধান্তের বশবর্তী হয়ে এসেছে৷ নিজেদের না, অন্যপক্ষের খামখেয়ালিপনায়৷

যে কলাকুশলীদের পারিশ্রমিক দিতে পারছে না, সে কেন একটার পর একটা কাজ পাবে: মৌমিতা

This browser does not support the audio element.

এই একই কথা কিন্তু বললেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী মৌমিতা গুপ্ত৷ এবং এই খামখেয়ালি রাজনীতির কুফল হিসেবে তিনি নাম না করেও ইঙ্গিত করলেন এক টিভি–চলচ্চিত্র প্রযোজকের দিকে, যিনি মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত এবং চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির তদন্তে গ্রেপ্তারও হয়েছেন৷ ফিল্ম–টিভি ইন্ডাস্ট্রিতে রাজনীতির অবাঞ্ছিত, অপ্রীতিকর অনুপ্রবেশের প্রসঙ্গ তুলে মৌমিতার প্রশ্ন, যে প্রযোজক একটা ধারাবাহিকের শিল্পী, কলাকুশলীদের ঠিক সময়ে পারিশ্রমিক দিতে পারছে না, তাঁকেই কেন একটার পর একটা কাজ করতে দেওয়া হবে?‌ ‘‘‌রাজনীতি যেন এর সঙ্গে না থাকে৷'' সাফ কথা মৌমিতার৷
দুই অভিনেত্রীই জানিয়েছেন, তাঁরা মানুষের জন্যে কিছু করার কথা ভাবছেন৷ এবং সেক্ষেত্রে বিজেপির মতো একটা বড়, সর্বভারতীয় এবং শৃঙ্খলাবদ্ধ দলে যোগ দেওয়াই তাঁদের ঠিক মনে হয়েছে৷ তৃণমূল কংগ্রেস যেখানে শিল্পীদের প্রত্যাশা পূরণে অসফল হয়েছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ