1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চট্টগ্রাম বন্দরের দুই টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে, চলছে বিতর্ক

১৮ নভেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রাম বন্দরের মালিকানাধীন দুটি টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব দুটি বিদেশি কোম্পানিকে দেয়া হয়েছে৷ এ লক্ষ্যে সোমবার ঢাকায় দুটি চুক্তি সই হয়েছে৷ এ নিয়ে আলোচনা ও বিতর্ক চলছে৷

Bangladesch Chittagong Port
ছবি: Md Manik/ZUMA Wire/imago images

 

ডেনমার্কের একটি কোম্পানি চট্টগ্রামের লালদিয়ার চরে একটি নতুন টার্মিনাল নির্মাণ করে সেটি পরিচালনা করবে৷ আর সুইজারল্যান্ডের একটি কোম্পানি চট্টগ্রাম বন্দরের মালিকানাধীন পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে৷ এই টার্মিনালটি ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত৷

চুক্তি অনুসারে, লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ এবং ৩০ বছরের জন্য পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে ডেনমার্কের এপি মোলার ম্যার্স্ক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এপিএম টার্মিনালস৷ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) আওতায় এ টার্মিনাল নির্মাণের জন্য কোম্পানিটি ৫৫ কোটি ডলার বা প্রায় ছয় হাজার ৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে৷ চুক্তি সইয়ের পরপরই ২৫০ কোটি টাকা ‘সাইনিং মানি’ পেয়েছে বাংলাদেশ৷

আর ২২ বছরের জন্য পানগাঁও নৌ টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে সুইজারল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান মেডলগ৷ এ টার্মিনালে মোট চার কোটি ডলার বা প্রায় ৪৯০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে মেডলগ৷ এক্ষেত্রে সাইনিং মানি হিসেবে তারা বাংলাদেশকে ১৮ কোটি টাকা দিয়েছে৷

‘সরকার এগুলো গোপনে করছে, চুক্তি নিয়ে কাউকে কিছু জানাচ্ছে না’

This browser does not support the audio element.

উদ্বেগ, আলোচনা

চুক্তি সইয়ের পর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে চট্টগ্রাম শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলাম৷

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আনু মুহাম্মদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আসলে হঠাৎ করে এইসব চুক্তি হচ্ছে না৷ এগুলো সরকার পরিকল্পনা করেই করছে৷ কিন্তু সরকার এগুলো গোপনে করছে৷ চুক্তি নিয়ে কাউকে কিছু জানাচ্ছে না৷ চুক্তির বিষয়গুলো প্রকাশ করা হচ্ছে না৷ সন্দেহ এখানে৷ অন্তর্বর্তী সরকারের তো এগুলো কাজ না৷ তার কাজ নির্বাচন করা৷ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন করা৷ সেগুলো রেখে বিদেশিদের বন্দর, টার্মিনাল দেয়ায় সরকারের উৎসাহ বেশি৷’’

চট্টগ্রাম বন্দরের আরেক টার্মিনাল নিউমুরিং নিয়ে আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ড-এর সঙ্গে চুক্তির প্রক্রিয়া নিয়ে ড. আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘‘সরকার বলছে দুর্নীতি হচ্ছে, অদক্ষতা আছে৷ কিন্তু কোথায় দুর্নীতি, কোথায় অদক্ষতা সেগুলো কি চিহ্নিত করেছে? ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই তো বিশ্বমানের লোক৷ তাহলে বাংলাদেশের মানুষ কেন বিশ্বমানের বন্দর করতে পারবে না? আপনি সারা দুনিয়ায় বলছেন, আমরা পারি, আমরা পারি৷ এখন বলছেন বাংলাদেশের মানুষ বন্দর করতে পারবে না৷ এটা কেমন কথা!’’

তিনি বলেন, ‘‘চট্টগ্রাম বন্দরের চুক্তি পুরোপুরি হওয়ার আগেই ৪০-৫০ শতাংশ মাশুল বাড়িয়ে দিলো সরকার৷ বিদেশি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করার আগেই তাদের চাহিদা মতো এটা করা হয়েছে৷ এটা তো আরেকটা দুর্নীতি৷ এই কারণে আমাদের আমদানি-রপ্তানি দুইটাই ক্ষতির মুখে পড়বে৷ সরকার বলছে উন্নয়নের জন্য মাশুল বাড়ানো দরকার৷ এটা আরেকটা মিথ্যাচার৷’’

‘‘এখান থেকেই নতুন যে চুক্তি করেছে তারও উদ্দেশ্য এবং পরিণতি বোঝা যায়৷ আসলে এটা তো বিদেশিদের পরামর্শে করা হচ্ছে৷ ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, আইএমএফ-এর পরামর্শে করা হচ্ছে৷ এই সরকার তো মনে হচ্ছে বিদেশিরা চালায়৷ মনে হচ্ছে বিদেশি কোম্পানির যারা লবিস্ট তারাই চলাচ্ছে এই সরকার৷’’

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘‘এইসব চুক্তি শুধু যে ক্ষতিকর তা নয়, এগুলো স্বার্বভৌমত্ববিরোধী৷’’ছবি: DW

এর আগে ফেসবুকে এক পোস্টে ড. আনু মুহাম্মদ চুক্তি সইয়ের দিনক্ষণ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘বেছে বেছে ১৭ই নভেম্বর সকাল ১০টায় ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এপিএম টার্মিনালসের সাথে চুক্তির তারিখ বেছে নেয়া হলো৷ এইদিনই সকাল ১১ টায় শেখ হাসিনার মামলার রায়৷ আবার আগেরদিনই পুলিশ দেখামাত্র ককটেল বিস্ফোরণ বা আগুন দেয়া ব্যক্তিকে গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে৷’’

রাজনৈতিক দলের প্রতিক্রিয়া

সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘‘আমরা আমাদের প্রতিবাদ জারি রেখেছি৷ কারণ এইসব চুক্তি শুধু যে ক্ষতিকর তা নয়, এগুলো স্বার্বভৌমত্ববিরোধী৷ এই চুক্তির মধ্য দিয়ে সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তিকে অবাধ বিচরণের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে৷’’

তিনি বলেন, ‘‘সর্বশেষ লালদিয়া ও পানগাঁও নিয়ে বিদেশিদের সঙ্গে চুক্তি করার মধ্য দিয়ে সরকার তার মুখোশ উন্মোচন করল৷ প্রমাণ করলো সে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির হয়ে কাজ করছে৷’’

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘‘সরকার যে চুক্তিগুলো করছে তা আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি৷ তবে এই ধরনের জনগুরুত্বসম্পন্ন এবং স্পর্শকাতর বিষয়ে চুক্তি করার আগে অবশ্যই সরকারের আগে জনগণকে জানানো উচিত৷ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা উচিত৷ কারণ এই সরকার তো নির্বাচিত সরকার না, অন্তর্বর্তী সরকার৷ আগামী কিছুদিন পর রাজনৈতিক সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে দায়িত্ব নেবে৷ তাই সরকারের উচিত রাজনৈতিক দল ও স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া৷’’

শ্রমিক নেতাদের বক্তব্য

চট্টগ্রাম জেলা ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি তপন দত্ত বলেন, ‘‘অন্তর্বর্তী সরকার আসলে বিদেশিদের স্বার্থ দেখছে৷ বাংলাদেশকে গাজা, প্যালেস্টাইন, ভেনিজুয়েলার কাতারে নিয়ে যেতে চায় তারা৷ বঙ্গোপসাগরে ঘাঁটি দেবে৷ তারপরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া এসে একটা অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি করবে৷ এটা প্রতিরোধ করা আমাদের কর্তব্য৷’’

তিনি বলেন, ‘‘নিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে দেয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যেই তারা দুইটি বন্দর নিয়ে চুক্তি করেছে৷ তারা দেশকে কখনো সিঙ্গাপুর বানায়, এখন আবার চায়না বানাবে৷ আসলে এগুলো তাদের নিজেদের স্বার্থে করছে৷ দেশের মানুষের জন্য নয়৷ আমরা চট্টগ্রাম বন্দর রক্ষায় আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি৷ ওই দুইটি বন্দর রক্ষায়ও আন্দোলন করব৷’’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘চট্টগ্রাম বন্দর একটা লাভজনক প্রতিষ্ঠান৷ এটা বিদেশিদের হাতে তুলে দিলে অনেক লোক বেকার হয়ে যাবে৷ আধুনিকায়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি আমরাই করতে পারি৷ আর মাশুল বাড়িয়ে দেশের মানুষের ক্ষতি করে তাদের সুবিধা করে দেয়া হচ্ছে৷’’

বন্দর ব্যবহারকারীদের বক্তব্য

তবে পোর্ট ইউজার্স ফোরামের আহ্বায়ক আমীর হুমায়ুন মাহমুদ বলেন, ‘‘এখানে মূল সমস্যা হচ্ছে সবাইকে না জানিয়ে এই চুক্তিগুলো করা হচ্ছে৷ দেশের ভালো তো সবাই চায়৷ ফলে রাজনৈতিক দল, স্টেকহোল্ডার সবার সঙ্গে আলোচনা করে যেটা ভালো হয় সেটা করা দরকার৷ স্বচ্ছতা থাকতে হবে৷’’

সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘‘এই ধরনের জনগুরুত্বসম্পন্ন এবং স্পর্শকাতর বিষয়ে চুক্তি করার আগে অবশ্যই সরকারের জনগণকে জানানো উচিত৷’’ছবি: DW

তিনি বলেন, ‘‘যাদের সাথে চুক্তি হবে বা হচ্ছে তারা বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান৷ তারা যদি আমাদের বন্দরে আসে আমাদের দক্ষতা বাড়বে৷ তারা আধুনিক ইকুইপমেন্ট নিয়ে আসবে৷ ফলে আমরা শিখতে পারব৷ কিন্তু সেটা কীভাবে তারা করবে৷ চুক্তি কী, তা প্রকাশ্য হওয়া উচিত৷’’ 

‘‘আর কোনো দরপত্র ছাড়াই ডিপি ওয়ার্ল্ড-এর সাথে যে চুক্তির প্রক্রিয়া চলছে তাও ঠিক হয়নি, দরপত্রের মাধ্যমে হলে ভালো হতো,’’ বলেন পোর্ট ইউজার্স ফোরামের আহ্বায়ক মাহমুদ৷

সরকার যা বলছে

লালদিয়া টার্মিনালের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘‘এই চুক্তি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতির জন্য বড় অবদান৷ যাদের মধ্যে চুক্তি নিয়ে সন্দেহ ছিল, আশা করি তা দূর হবে৷’’

চুক্তি নিয়ে আরো জানতে নৌপরিবহন উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘‘আমি এখন দেশের বাইরে আছি৷ এখন কিছু বলতে পারবো না৷’’

তবে প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ বলেন, ‘‘লালদিয়া বন্দরের চুক্তির কথা যদি বলি তাহলে এখানে ইউরোপের সর্বোচ্চ বিনিয়োগ আসছে৷ এর আগে এত বড় বিনিয়োগ কখনো আসেনি৷ আর ওই বন্দর পুরোটাই তারা তৈরি করবে৷ সেখানে এখন ধু ধু বালুচর৷ আর তাদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে যে নির্দিষ্ট মেয়াদের পরে তারা তাদের ইকুইপমেন্ট, যন্ত্রপাতি নিয়ে যাবে না, রেখে যাবে৷ আমরা কোনো অবকাঠামো তাদের তৈরি করে দিচ্ছি না৷ আসলে এতে দেশের কী লাভ হবে সেটা বিবেচনা না করেই অপপ্রচার করছে কেউ কেউ যে বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে৷’’

তিনি বলেন, ‘‘এই চুক্তিগুলো সবাইকে জানিয়ে করা হচ্ছে৷ চুক্তি হওয়ার এক সপ্তাহ আগে সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের ডজন ডজন প্রশ্নের জবাব দেয়া হয়েছে৷ আসলে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে আমাদের আধুনিক পোর্ট লাগবে৷ সরকার সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে৷ পানগাঁও, নিউমুরিং একই উদ্দেশ্যে চুক্তি করা হয়েছে বা হচ্ছে৷’’

তার কথা, ‘‘এইসব চুক্তি করার জন্য রাজনৈতিক দলসহ স্টেকহোল্ডারদের সাথে ছোট পরিসরে আলোচনা করা হয়েছে৷’’

তবে এইসব চুক্তি করার জন্য সরকারের ম্যান্ডেট আছে কী না, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এই সরকার উচ্চ আদালতের যে নির্দেশনার ভিত্তিতে, সংবিধানের যে ব্যাখ্যার আলোকে গঠিত হয়েছে তাতে বলা হয়েছে এই সরকার এক্সিকিউটিভ সব দায়িত্ব পালন করবে৷ এই সরকার সব দায়িত্ব স্বাভাবিক সরকারের মতোই পালন করবে৷ যদি শুধু নির্বাচন করা এই সরকারের কাজ হয় তাহলে নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় সেই মন্ত্রণালয়গুলো কি বন্ধ থাকবে?’’

সোমবার চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, লালদিয়া টার্মিনালে বছরে আট থেকে দশ লাখ একক কনটেইনার ওঠানো-নামানোর সক্ষমতা থাকবে৷ এর মধ্যে আট লাখ পর্যন্ত প্রতি একক কনটেইনারে ২১ ডলার (প্রায় দুই হাজার ৫০০ টাকা) করে পাবে সরকার৷ আর আট লাখের বেশি কনটেইনার ওঠানো-নামানো হলে প্রতি একক কনটেইনারের জন্য পাবে ২৩ ডলার করে৷

অন্যদিকে পানগাঁও নৌ টার্মিনালে বছরে এক লাখ ৬০ হাজার একক কনটেইনার হ্যান্ডলিং হবে বলে জানিয়েছে মেডলগ৷ প্রতি একক কনটেইনার থেকে ২৫০ টাকা করে পাবে সরকার৷


নিউমুরিং টার্মিনাল নিয়ে শুনানি বুধবার

নিউমুরিং টার্মিনাল যেন বিদেশিদের হাতে না দেয়া হয় সেজন্য হাইকোর্টে এরইমধ্যে একটি রিট আবেদন করা হয়েছে৷ বুধবার আদালতে এই রিটের ওপর শুনানি হবে৷ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষ থেকে করা ওই রিটের প্রেক্ষিতে আদালত গত ৩০ জুন রুল জারি করে৷ রুলে দেশি অপারেটরদের (প্রতিষ্ঠান) অনুমতি না দিয়ে পিপিপি আইন ও নীতি লঙ্ঘন করে এনসিটি (নিউমুরিং টার্মিনাল) পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে৷ 

‘দেশের কী লাভ হবে বিবেচনা না করেই অপপ্রচার করছে কেউ কেউ’

This browser does not support the audio element.

একই সঙ্গে যে-কোনো অপারেটরকে এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব দেয়ার আগে সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি অনুসারে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয় রুলে৷

রিটকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম বলেন, ‘‘এই ধরনের চুক্তি করার জন্য নিয়মিত সরকার দরকার৷ সংসদ নেই৷ আর মন্ত্রিসভা এই চুক্তি অনুমোদন করে৷ আইনে উপদেষ্টা পরিষদ মন্ত্রিসভার সমতুল্য নয়৷ প্রধান উপদেষ্টাও প্রধানমন্ত্রীর সমতুল্য নন৷ যতক্ষণ পর্যন্ত একটি সংসদ এবং রেগুলার গভর্নমেন্ট না আসবে তার আগে এই ধরনের চুক্তি করা যাবে না৷’’

‘‘আর বলা হচ্ছে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ৷ সেটা নতুন প্রকল্পের ক্ষেত্রে৷ নিউমুরিং নতুন কোনো প্রকল্প না৷ নতুন হলেও এক হাজার ২০০ কোটি টাকা কমপক্ষে বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানকে বিনিয়োগ করতে হবে৷ ডিপি ওয়ার্ল্ড মাত্র ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে,’’ বলেন তিনি৷

অ্যাডভোকেট করিম বলেন, ‘‘অপারেশন ও মেইনটেন্স-এর দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে তাদের৷ পিপিপি-এর অধীনে এটা করা যায় না৷’’

চট্টগ্রাম বন্দরের বৃহৎ এই টার্মিনাল নির্মাণ হয় ২০০৭ সালে৷ টার্মিনালটি নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংযোজনে বন্দর কর্তৃপক্ষ ধাপে ধাপে মোট দুই হাজার ৭১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে৷ বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কনটেইনারের সিংহভাগ এই টার্মিনাল দিয়ে হয়৷ টার্মিনাল পরিচালনার নতুন দায়িত্ব নিয়েছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড৷

অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দরে অতিরিক্ত মাশুল আদায়ের সিদ্ধান্ত গত ৯ নভেম্বর এক মাসের জন্য স্থগিত করেছে হাইকোর্ট৷ সরকার আগের তুলনায় গড়ে ৪১ শতাংশ মাশুল বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জানি করেছিলো৷ ১৫ অক্টোবর থেকে সেই মাশুল কার্যকর হওয়ার কথা ছিলো৷ ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও আপত্তির মুখে ১৪ অক্টোকর দিবাগত রাত ১২ টার পর থেকে ওই মাশুল কর্যকর হয়েছিল৷

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘‘বিদেশিদের সুবিধা করে দিতে চুক্তির আগেই ওই মাশুল কার্যকর করা হয়েছিল৷ নতুন দুইটি বন্দরেও একই ঘটনা ঘটবে৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ