ভারত
২৬ ডিসেম্বর ২০১২বুধবার বেলা ১১টা নাগাদ আমেদাবাদের সর্দার প্যাটেল স্টেডিয়ামে প্রায় আড়াই লাখ সমর্থকের সামনে চতুর্থবারের মতো গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদী৷ শপথ বাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল কমলা বেনিওয়াল৷ একই সঙ্গে শপথ নেন আরও ১৬ জন মন্ত্রী৷ সাতজন ক্যাবিনেট ও নয়জন প্রতিমন্ত্রী৷ ‘ভারত মাতা কি জয়' ধ্বনিতে মুখরিত হয় স্টেডিয়াম৷
উপস্থিত ছিলেন বিজেপি'র শীর্ষ নেতৃত্ব৷ আডবানি, সুষমা স্বরাজ, রাজনাথ সিং, নিতীন গডকড়ি, ভেঙ্কাইয়া নাইডু, অরুণ জেটলি প্রমুখ৷ অ-বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যে ছিলেন, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিং বাদল, শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে, মহারাষ্ট্র নব নির্মাণ সেনা প্রধান রাজ ঠাকরে প্রমুখ৷ এছাড়া উপস্থিত ছিলেন চিত্রতারকা ও ক্রীড়া তারকারা৷
তবে উপস্থিত ছিলেন না এনডিএ শরিক বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার৷ তাঁর জায়গায় আসেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী৷ উপস্থিত ছিলেন না মোদীর মতাদর্শগত অভিভাবক হিন্দুত্ববাদী আরএসএস-এর শীর্ষ নেতৃত্বও৷ পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, মোদীর সঙ্গে আরএসএস-এর সম্পর্ক আর আগের মতো নেই৷
মোদীর সমর্থকরা মনে করেন, মোদীর বিপুল সাফল্য জাতীয় স্তরে তাঁর বৃহত্তর ভূমিকার সোপান৷ সেটা হতে পারে ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী করা৷ কিন্তু মোদীকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী করা নিয়ে দলের মধ্যেই আছে বিভাজন৷ বিভাজন শরিক দলের মধ্যেও৷ মোদীকে প্রধানমন্ত্রী করলে জেডি (ইউ) জোট ছেড়ে বেরিয়ে যাবার হুমকি দিয়েছে৷ কারণ তাদের মতে, মোদী সাম্প্রদায়িক মতাদর্শে বিশ্বাসী৷
বিপক্ষ শিবির মনে করে, সর্বভারতীয় স্তরে মোদীর মতো কড়া শৃঙ্খলাপরায়ণ দ্রুত সিদ্ধান্তগ্রহণকারী ব্যক্তির দরকার৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মোদী যদি তাঁর সাম্প্রদায়িক তকমাটা ঝেড়ে ফেলে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষতার ইমেজ তুলে ধরতে পারেন, তাহলে মোদীর প্রধানমন্ত্রী হবার বাধা অনেকটাই সহজ হতে পারে৷
ভারত এখন পুঁজিবাদী দেশ৷ প্রতিটি সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক আর প্রতিবাদের দিন আর নেই৷ দৃঢ় সিদ্ধান্ত এবং তার বাস্তবায়নই বিকাশের মূল মন্ত্র৷ মোদীর ‘ট্র্যাক রেকর্ড' কিন্তু তেমনটাই বলে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ