ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ব্যাচেলর ডিগ্রির পর আন্দ্রেয়াস হোর্নিগ এখন স্টুটগার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছেন৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউরোপের অন্যতম বড় বিমান চলাচল এবং মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের অবস্থান৷
গবেষণাগারে ‘ফ্লাইট সিমুলেটর' ব্যবহার করে মাধ্যাকর্ষণ শূন্য পরিবেশে বস্তুর আচরণ সম্পর্কে ধারণা পান তিনি৷ আন্দ্রেয়াস হোর্নিগ বলেন, ‘‘মহাকাশ গবেষণা এখনও পর্যন্ত সীমিত পর্যায়ে হয়েছে৷ ফলে এখানে কাজের অনেক সুযোগ রয়েছে, যা আমাকে রোমাঞ্চিত করে৷ আমি সীমা পেরিয়ে যেতে চাই৷ প্রমাণ করতে চাই, এটা সম্ভব৷ তাই আমরা পরবর্তী গন্তব্য খুঁজছি, যাতে আমাদের নিজেদের সীমানা আরো বাড়িয়ে নিতে পারি৷''
চাঁদে অভিযানের স্বপ্ন দেখেন হোর্নিগ৷ চাঁদ এবং পৃথিবীর মধ্যকার একটি সুবিধাজনক স্থানে কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট স্থাপনের চেষ্টা করছেন তিনি৷ এমন একটি স্থান যেখানে যতটা সম্ভব কম জ্বালানি খরচ করে কাজ করবে স্যাটেলাইট৷
১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই টেলিভিশনের পর্দায় এ্যাপোলো ১১ এর কমান্ডার নিল আর্মস্ট্রংকে লুনার মডিউল থেকে ধীর গতিতে চন্দ্রপৃষ্ঠে হেঁটে যেতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: AP১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই চাঁদের নরম ধুসর বুকে এ্যাপোলো ১১ এর নভোচারীদের একজনের পদচিহ্ন৷ ঐ অভিযানের কমান্ডার নিল এ আর্মস্ট্রং এবং এয়ার ফোর্স কর্নেল এডউইন ই অল্ড্রিন প্রথম চাঁদের বুকে পদার্পণ করেছিলেন৷ চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে তাঁরা পরদিন ২১ জুলাই পৃথিবীতে ফিরে আসেন৷ ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই মানুষের প্রথম চাঁদে অবতরণের ৪০তম বর্ষপূর্তি উদযাপন করা হচ্ছে এই বছর৷
ছবি: AP১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই এ্যাপোলো ১১ অভিযানের সময় চাঁদের বুকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা উত্তোলনের পর পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন নভোচারী এডউইন ই অল্ড্রিন৷ ঐ অভিযানে চাঁদের বুকে প্রথম অবতরণে অল্ড্রিনের সাথি ছিলেন নিল আর্মস্ট্রং৷ কমান্ড মডিউল পরিচালনায় ছিলেন নভোচারী মাইকেল কলিন্স৷ এই অভিযানের মধ্য দিয়ে মহাকাশ অভিযানে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷
ছবি: AP১৯৬৯ সালে তোলা এ্যাপোলো ১১ অভিযানের তিন নভোচারী৷ বাম দিক থেকে নিল আর্মস্ট্রং, মাইকেল কলিন্স এবং এডউইন ই অল্ড্রিন৷
ছবি: AP১৯৬৯ সালে চাঁদে অভিযানের সফলতাকে স্বাগত জানিয়ে বিকিনি পরা জাপানি মেয়েরা রাজধানী টোকিওতে মার্কিন দূতাবাসের সামনে উল্লাস করছে৷
ছবি: AP১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই চন্দ্রপৃষ্ঠে মার্কিন পতাকা স্থাপন করছেন নিল আর্মস্ট্রং এবং এডউইন অল্ড্রিন৷ লুনার মডিউলে থাকা ১৬ এমএম মুভি ক্যামেরায় ধারণ করা হয়েছিল এই ছবি৷
ছবি: AP১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই লুনার মডিউল থেকে তোলা নভোচারী মাইকেল কলিন্সসহ এ্যাপোলো কমান্ড মডিউলের দৃশ্য৷ এর একটু আগেই নভোচারী নিল আর্মস্ট্রং এবং এডউইন অলড্রিন লুনার মডিউলে করে এ্যাপোলো ১১ থেকে আলাদা হয়ে যান৷ পেছনে চাঁদের পৃষ্ঠতল৷
ছবি: APইডাহোর পোকাটেলোতে অবস্থিত ক্রেটার্স অব দ্য মুন ন্যাশনাল মনুমেন্ট এ ১৯৯৯ সালের ২২ মে নাসার প্রাক্তন নভোচারী জো এঙ্গেল (বামে) এবং জিন কেরনান (মাঝে) ৩০ বছরের পুরনো ছবির প্রদর্শনী ঘুরে দেখছেন৷ সাথে রয়েছেন ইডাহো রাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রী পিট কেনারুসা৷ চাঁদের বুকে হাঁটার কৃতিত্বের অধিকারী সর্বশেষ নভোচারী কেরনান৷
ছবি: APআব্রাহাম লিংকনের ২০০তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ২০০৯ সালের ১৮ জুন বক্তৃতা করছেন প্রাক্তন নভোচারী নিল আর্মস্ট্রং৷ চাঁদে অবতরণকারী প্রথম মানুষ হিসেবে কৃতিত্বের অধিকারী আর্মস্ট্রং৷
ছবি: DW১৯৬৯ সালে মার্কিন নভোচারী নিল আর্মস্ট্রং৷ ১৯৬৯ সালের জুলাই মাসে এ্যাপোলো ১১ এর চন্দ্র অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি৷ চাঁদের বুকে পদার্পণকারী প্রথম নভোচারী হিসেবে বিবেচনা করা হয় নিল আর্মস্ট্রংকে৷
ছবি: APচাঁদে অভিযানের আট দিন পর ১৯৬৯ সালের ২৪ জুলাই এ্যাপোলো ১১ অভিযানের নভোচারীরা প্রশান্ত মহাসাগরে নিরাপদে অবতরণ করার পর মার্কিন নৌ বাহিনীর কর্মকর্তারা তাঁদেরকে উদ্ধার করছেন৷
ছবি: AP১৯৬৯ সালের ১৬ জুলাই ফ্লোরিডার কেপ কেনেডি থেকে চাঁদের উদ্দেশ্যে স্যাটার্ন ফাইভ রকেটে করে এ্যাপোলো ১১ এর উৎক্ষেপণ দৃশ্য৷
ছবি: AP
সুবিধাজনক এরকম স্থান খুঁজে পেতে প্রচুর গবেষণা প্রয়োজন৷ মহাকাশ বিশেষজ্ঞদের জন্যও এটা বড় চ্যালেঞ্জ৷ তবে হোর্নিগের কাছে বিষয়টি আকর্ষণীয়৷ তিনি বলেন, ‘‘এই খাতে গবেষণার প্রচুর সুযোগ রয়েছে৷ আমি ‘অর্বিটাল ম্যাকানিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স' নিয়ে কাজ করতে পারি, ‘সাব-সিস্টেম' বিন্যাস করতে পারি, যা ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত৷ তাছাড়া যেসব কাজ ভালো লাগে তাও বেছে নিতে পারি৷''
প্রসঙ্গত, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে রোবট পাঠানোর পরিকল্পনা আগেই নিয়েছিল ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইএসএ)৷ সেখানে থাকা বিভিন্ন গর্তে বরফ জমা পানি রয়েছে৷ কিন্তু চাঁদে অভিযানের এই পরিকল্পনা অপ্রত্যাশিতভাবে হঠাৎ করে স্থগিত করা হয়েছে৷ হোর্নিগ এতে কিছুটা হতাশ হয়েছেন৷ তবে এই তরুণ গবেষক সহজে আশা ছাড়তে রাজি নন৷ তাঁর কথায়, ‘‘চাঁদ খুব রোমাঞ্চকর একটা ব্যাপার৷ এটা নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রও অনেক বিস্তৃত৷ তাই আমি এদিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছি না৷ বরং আমি মনে করি, কেউই এটা করবে না৷ এক্ষেত্রে কিছু একটা ঠিকই হবে৷ তবে সেটা পাঁচ বা দশ বছর পরও হতে পারে৷ সময় কোনো ব্যাপার না৷''
বছরখানেক আগে তিনি একটি ‘কন্সটেলেশন' প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন৷ স্বেচ্ছাসেবীরা ব্যক্তিগত কম্পিউটার ব্যবহার করে এই প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে পারেন৷ তারা স্যাটেলাইটের জন্য একটি সুবিধাজনক অবস্থান খোঁজায় সহায়তা করছেন৷
ভাগ্য ভালো থাকলে, শীঘ্রই তারা স্যাটেলাইটের সন্তোষজনক কক্ষপথ খুঁজে পাবেন৷ তখন ডিজাইনও চূড়ান্ত করা যাবে৷