1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চন্দ্রে অবতরণ নিয়ে ইউরোপীয়দের নতুন স্বপ্ন

২০ জুলাই ২০০৯

মহাকাশ যাত্রায় খুব বড় সাফল্যের সম্ভাবনা দেখছে ইউরোপ৷ সোমবারই চাঁদে পা রাখার ৪০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে যুক্তরাষ্ট্র৷ আর সেই মার্কিনিদের পথ অনুসরণ করে ইউরোপও এগোচ্ছে জোর কদমে৷ সত্যিই কি তাই?

ছবি: picture-alliance/ dpa

বাজ অলড্রিনকে সঙ্গে নিয়ে নিল আর্মস্ট্রং চাঁদে গিয়েছিলেন ১৯৬৯ সালের ২০শে জুলাই৷ অর্থাৎ, আজ থেকে ৪০ বছর আগে৷ চাঁদে মানুষের এই প্রথম অবতরণের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য তো বটেই, বিশ্বের জন্যও ছিল এক অবিশ্বাস্য প্রাপ্তি৷ তাই এবার, যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি এমনই একটি প্রাপ্তির সন্ধানী ইউরোপ৷ কারণ, ইউরোপও এবার নিজস্ব ভাবে চাঁদে তাদের পা রাখতে চায়, করতে চায় ইউরোপীয় চন্দ্রাভিযান৷ আর হবে নাই বা কেন ? বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিতে যে বহুদূর এগিয়ে গেছে বিশ্ব৷ মানুষ মর্ত্য ছেড়ে পাড়ি দিচ্ছে মহাকাশে৷ এমনকি চাঁদের দেশেও বসত গড়তে চলেছে প্রস্তুতি৷ তাই ইউরোপীয়রাও যে আর পিছনে থাকতে চান না৷

অটোমেটেড ট্রান্সফার ভেইকেল বা এটিভি

ইউরোপের চাঁদে পাড়ি দেওয়ার স্বপ্নের মূল জোর তাদের তৈরি সাম্প্রতিকতম এক মহাকাশযান৷ যার নাম - অটোমেটেড ট্রান্সফার ভেইকেল বা এটিভি৷ এই যেমন জুল ভার্ন৷ যা গত বছর আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন আইএসএস থেকে আবার ফিরে আসে পৃথিবীতে৷ কিন্তু দুঃখের বিষয়, ইউরোপীয়দের তৈরী ঐ যানটি এখনও চন্দ্রাভিযানের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত নয়৷ কারণ, এ মুহূর্তে এটিভি বা মালবাহী নভোযানগুলি মহাকাশে সর্বোচ্চ ১০ টন পর্যন্ত ওজন বয়ে নিয়ে যেতে পারলেও, পৃথিবীতে ফিরে আসতে পারে না৷

১৯৬৯ সালের ২০ জুন, চাঁদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পতাকাছবি: AP

এ সমস্যা অবশ্য নতুন কিছু নয়

কিছু দিন আগে পর্যন্তও মহাকাশে মানুষ পাঠাতে হলে রাশিয়ার সোয়ুজ ও মার্কিন মহাকাশযানের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছিল সকলের৷ আর সে অবস্থা বদলাতেই আসরে নেমেছিল ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা এসা৷ তাদের লক্ষ্য ছিল ২০১৭ সাল থেকে নিজস্ব উদ্যোগে মহাকাশে মানুষ পাঠানো৷ এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে জার্মানির মহাকাশ সংস্থা ডিএলআর এবং এয়ারবাস বিমানের নির্মাতা ইএডিএস, এসার সঙ্গে একযোগে কাজ করতে শুরু করেছিল৷ অর্থাৎ, বর্তমানে মহাকাশে যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম পাঠাতে এটিভি নামের যে যান ব্যবহার করা হয়ে থাকে, সেই যানের উন্নতিসাধনে বদ্ধপরিকর ছিল তারা৷ আগে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার পর, বাতাসের সঙ্গে ঘর্ষণের ফলে যে মারাত্মক উত্তাপের সৃষ্টি হয় - তা প্রতিরোধ করার জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষ স্তরটি সাধারণ এটিভি-গুলিতে ছিল না৷ সে জন্যই তৈরি করা হয়েছিল এটিভি ইভোলিউশন৷ তারই নাম রাখা হয়েছিল জুল ভার্ন৷ কিন্তু, দেখা গেল জুল ভার্ন-ও শুধুমাত্র ১০ টন পর্যন্ত ওজন বইতে সক্ষম৷ মানুষ তো দূরের কথা !

আশাবাদী ইএডিএস-এর প্রেসিডেন্ট এভার্ট ডুডক

এয়ারবাস বিমানের নির্মাতা ইএডিএস-এর প্রেসিডেন্ট এভার্ট ডুডক অবশ্য আশাবাদী যে শীঘ্রই এ সমস্যা দূর হবে৷ তিনি জানান, নতুন প্রযুক্তির এটিভি-গুলি যাতে পৃথিবীতে নিরাপদে ফিরে আসতে পারে সে ব্যবস্থা করতে, তার আকারেও কিছুটা পরিবর্তন আনার কথা ভাবা হচ্ছে৷ সে অনুযায়ী কাজ শেষ হলে, ক্যাপসুল আকারের বর্তমান এটিভি এক সময় হয়ত হয়ে যাবে সিলিন্ডার আকৃতির৷ আর তখন এটিভির ভূ-পৃষ্ঠে ফিরে আসতে কোন অসুবিধা হবে না৷ ডুডক জানান, আরো কিছু সমস্যার কথা ভেবে এটিভি-র চারপাশে এমন একটা আবরণ তৈরি করা হবে, যা অতিরিক্ত তাপে পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও দূর করবে৷

চাঁদে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে জার্মান নভোচারীরাওছবি: NASA-JSC

এসা-র ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

শোনা যাচ্ছে, এসা তার পরবর্তী এটিভি মহাকাশে পাঠাতে চলেছে ২০১০ সালে৷ পাঠাবে পর পর চার-চারটি মালবাহী যান৷ যার জন্য খরচ হবে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ইউরো৷ দ্বিতীয় পর্যায়ে অবশ্য ইউরোপের এটিভি-কে মহাকাশচারী বহনের উপযুক্ত করে তোলা হবে৷ আর তখন এমন একটি ব্যবস্থাও চালু রাখা হবে, যাতে এটিভি-কে বহনকারী রকেট প্রয়োজনে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে৷ অর্থাৎ, কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে মহাকাশচারীদের প্রাণ বাঁচাতে এটিভি ক্যাপসুল যাতে ঠিক সময়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে৷

সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রকে অনুসরণ করে খুব শীঘ্রই যে ইউরোপীয়রা চাঁদে পা রাখতে চলেছে - সে আশা করতে আর দোষ কোথায় ?

প্রতিবেদক: দেবারতি গুহ

সম্পাদনা: আব্দুস সাত্তার

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ