1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মধ্যপ্রাচ্যে চরমপন্থিদের সুদিন

জামশিদ ফারুগি/এসবি৫ জানুয়ারি ২০১৬

মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সংঘাত এক নতুন মাত্রা পেয়েছে৷ এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক সমাজের হস্তক্ষেপ করা উচিত বলে মনে করেন ডয়চে ভেলের জামশিদ ফারুগি৷

ছবি: Mehr

সৌদি আরব ও ইরান – দুই দেশেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা দৈনন্দিন ঘটনার মধ্যে পড়ে৷ এক্ষেত্রে চীনের পরেই ইরানের স্থান৷ তৃতীয় স্থানে সৌদি আরব৷ শেষোক্ত দুই দেশেই ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন এবং মাঝে মধ্যে তাদের মৃত্যুদণ্ডের ঘটনা মোটেই গোপন বিষয় নয়৷

কিন্তু নিমর আল-নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘটনা এক রক্তাক্ত ও পরিকল্পিত প্ররোচণার অঙ্গ ছিল৷ মধ্যপ্রাচ্যের বারুদের স্তূপে এ যেন এক স্ফুলিঙ্গ৷ রিয়াধ ঠিক যেমনটা প্রত্যাশা করেছিল, এই প্ররোচনা ঠিক সেই কাজই করেছে৷ তেহরানে সৌদি দূতাবাস ও মাশহাদ শহরের কনসুলেটে হামলা চালিয়ে ইরান অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করে শুধু মাথা গরম করে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে৷ সেই অর্থে আল নিমর-এর ঘটনাকে ফাঁদ হিসেবেও দেখা চলে৷

তার ঠিক পরেই ইরান, ইরাক, সিরিয়া, লেবানন ও ইয়েমেনে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে৷ গোটা মধ্যপ্রাচ্য এক কূটনৈতিক সংকটে ডুবে যায়৷

এই প্রেক্ষাপটে বলা যেতে পারে, যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার একটি ঘটনার চরম পরিণাম দেখা যাচ্ছে৷ তার ব্যাপ্তি শুধু সৌদি রাজপরিবার ও ইরানের আয়াতোল্লাহদের শাসনব্যবস্থার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই৷

জামশিদ ফারুগি, ডয়চে ভেলের ফার্সি বিভাগের প্রধানছবি: DW/P. Henriksen

কূটনৈতিক সংকটের চেয়ে অনেক বড় বিষয়

সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে সব রকম সম্পর্ক ছিন্ন করেছে৷ তারপর বাহরাইন, সুদান ও জিবুতি-ও ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আপাতত ছিন্ন করছে৷ সংযুক্ত আরব আমিরাত তাদের রাষ্ট্রদূতকে তেহরান থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে৷ এই কূটনৈতিক সংকট আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না৷

কিন্তু প্রশ্ন হলো, ইরান বার বার কেন এমন ভুল করছে? অতীতে অন্য দেশের দূতাবাসের উপর হামলার পরিণাম থেকে কি তারা কোনো শিক্ষা গ্রহণ করেনি? পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে একঘরে হয়ে থাকার ফলে ইরানের যে ক্ষতি হয়েছে, তা কি যথেষ্ট নয়?

এই প্রশ্নও যেমন সহজ নয়, তার উত্তরও তেমনই জটিল৷

বিষয়টি শুধু এক শিয়া ধর্মীয় নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়৷ শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে সংঘাতও এ ক্ষেত্রে মুখ্য বিষয় নয়৷ আসল বিষয় হলো, মধ্যপ্রাচ্যে কার প্রভাব-প্রতিপত্তি থাকবে? দুই আঞ্চলিক পরাশক্তির মধ্যে পরোক্ষভাবে যুদ্ধ চলছে৷ কিন্তু এই সংকট গোটা মধ্যপ্রাচ্যে আগুন ছড়িয়ে দেবার ক্ষমতা রাখে৷

শুধু সৌদি রাজপরিবার, ইসরায়েল ও পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলি ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির শত্রু নয়৷ ইরানের মধ্যেও কিছু শক্তি রয়েছে, যাদের অস্তিত্ব গোটা অঞ্চলে উত্তেজনার উপর নির্ভর করে৷ ইরানের চরম রক্ষণশীল শক্তি শুরু থেকেই পরমাণু চুক্তি মেনে নিতে পারেনি৷ তারা আন্তর্জাতিক সমাজের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিরোধী৷ দেশের প্রধান শত্রু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো রকম ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তাদের একেবারেই পছন্দ নয়৷

সৌদি আরবে যে শক্তি প্ররোচনার পথে এগোচ্ছে, ইরানের এই শিবিরের সঙ্গে তাদের মিল চোখে পড়ার মতো৷ সৌদি রাজপরিবার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে যে রক্তাক্ত প্ররোচনা সৃষ্টি করেছিল, তেহরানে সৌদি দূতাবাসের উপর হামলা তার প্রতিক্রিয়া৷ দুই পক্ষই কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার উদ্যোগ থেকে ফায়দা তুলছে৷

বর্তমান কূটনৈতিক সংকট এই সব শক্তিকে লাগামছাড়া আচরণের পথ প্রশস্ত করে দিচ্ছে৷ ফলে তারা এবার কোনো সংকোচ ছাড়াই আরও সরাসরি ও বড় আকারে সংঘাতে নামতে পারবে৷

বর্তমান সংকটের আরও অবনতির ফলে অনেকেরই ক্ষতি হবে৷ সিরিয়া সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের সম্ভাবনা আরও দূরে সরে যাচ্ছে৷ ইয়েমেন ও ইরাকে শান্তির আশা ক্ষীণ হয়ে উঠেছে৷ এমন নাজুক এক অঞ্চলে ধর্মীয়-সাম্প্রদায়িক শক্তির মধ্যে সংঘাত স্থিতিশীলতা আরও বিপন্ন করে তুলবে৷ এমন সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি থেকে শুধুমাত্র আইএস-এর মতো সন্ত্রাসবাদী ব়্যাডিকাল শক্তি ফায়দা তুলতে পারবে৷

এমন বিপদ থেকে চোখ সরিয়ে ফেলে নীরব হয়ে থাকলে চলবে না৷ আন্তর্জাতিক সমাজকে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করতে হবে৷ তা না হলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ