করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর যারা বেঁচে ফিরেছেন, তাদের রক্ত থেকে অ্যান্টিবডি নিয়ে ওষুধ তৈরির চেষ্টা চলছে৷ এমন ওষুধ দিয়ে আক্রান্ত রোগীদের কয়েক সপ্তাহ চিকিৎসা দেয়া যেতে পারে৷
সারা বিশ্বে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮৬ হাজার করোনা-আক্রান্ত মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন৷ এদের শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে, যা পরবর্তীতে শরীরকে আবারও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করবে৷
সুস্থ হয়ে ফেরা এই ব্যক্তিদের অ্যান্টিবডি আক্রান্ত রোগীর শরীরে ঢোকালে ঐ শরীরে ‘প্যাসিভ ইমিউনিটি’ গড়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
এই আশায় চীন, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অ্যান্টিবডি দিয়ে ওষুধ তৈরির গবেষণা চলছে৷
১৮৯০ সালে জার্মান ইমুনোলজিস্ট এমিল ফন বেরিং প্রথম ‘প্যাসিভ ইমিউনাইজেশন’ বিষয়টি উদ্ভাবন করেন৷ সেই সময় ডিপথেরিয়ার কারণে হাজার হাজার শিশুর মৃত্যু হচ্ছিল৷ ফন বেরিংয়ের আবিষ্কারের কারণে ডিপথেরিয়া ও টিটেনাসে শিশুমৃত্যু অনেক কমে গিয়েছিল৷ তাই ১৯০১ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানের প্রথম নোবেলটি দেয়া হয়েছিল তাঁকে৷ এছাড়া গণমাধ্যমে ফন বেরিংকে ‘শিশুদের ত্রাণকর্তা’ হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছিল৷
শুধু তাই নয়, ফন বেরিংয়ের আবিষ্কার প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় অনেক সেনারও প্রাণ বাঁচিয়েছে৷ তাই তাঁকে ‘সৈন্যদের ত্রাণকর্তা’ও বলা হয়েছিল৷
আফ্রিকায় ইবোলা মোকাবিলায়ও ফন বেরিংয়ের কৌশল কাজে লাগানো হয়েছে৷
আলেক্সান্ডার ফ্রয়েন্ড/জেডএইচ
করোনা প্রতিরোধে কী করতে হবে তা নিয়ে একটি নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আইইডিসিআর৷ ছবিঘরে দেখুন বিস্তারিত৷
ছবি: picture-alliance/dpa/ZUMA Wire/Cdcআট মার্চ বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো করোনা ভাইরাস আক্রান্ত তিন রোগী শনাক্তের ঘোষণা দিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর৷ ইনস্টিটিউটের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানিয়েছেন, আক্রান্তদের মধ্যে দুজন সম্প্রতি ইটালি থেকে ফিরেছেন৷ পরবর্তীতে তাদের একজনের সংস্পর্শে পরিবারের আরেক সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন৷ তাদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে৷
ছবি: Privatমোট সাতটি প্রজাতির করোনা ভাইরাস মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে৷ তার একটি ২০১৯ এন করোনা ভাইরাস৷ এই ভাইরাসটি প্রথমে প্রাণী থেকে মানুষে এবং এখন তা মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হচ্ছে৷ এটি ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়৷ হাঁচি, কাশি, কফ, থুথু বা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শেও এই রোগ ছড়ায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/ZUMA Wire/Cdcশরীরে নভেল করোনা ভাইরাস প্রবেশের পর দুই থেকে ১৪ দিনের মধ্যে লক্ষণ দেখা দেয়৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রথমে জ্বর হয়৷ এছাড়াও শুকনো কাশি, গলা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া হতে পারে৷ কারো ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, কিডনি সমস্যা, ক্যান্সার থাকলে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিকল হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/XinHua/Xiong Qiপ্রতিরোধে ব্যক্তিগত সচেতনতাই একমাত্র উপায়৷ ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড সময় ধরে হাত ধুতে হবে৷ অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক, মুখ স্পর্শ করা যাবে না৷ আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে৷ হাঁচি, কাশি দেয়ার সময় বাহু, টিস্যু বা কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হবে৷ অসুস্থ পশু-পাখির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন৷ মাছ-মাংস ভালোভাবে রান্না করে খান৷
ছবি: Reuters/R. Patrassoএন করোনা ভাইরাস নতুন হওয়ায় এর কোন টিকা বা ভ্যাকসিন এখনও আবিষ্কার হয়নি৷ চিকিৎসা লক্ষণভিত্তিক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/XinHua/C. Minঅসুস্থ হলে ঘরে থাকতে পরামর্শ দিয়েছে আইইডিসিআর৷ তবে মারাত্মক অসুস্থ হলে নিকটস্থ সদর হাসপাতালে যেতে হবে৷ রোগীকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে৷
ছবি: Reuters/W. Rattayকেউ যদি চীন, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিন কোরিয়া, ইতালি, ইরান এসব দেশে ভ্রমণ করে থাকেন এবং ফিরে আসার ১৪ দিনের মধ্যে যদি জ্বর-কাশি-গলা-ব্যথা-শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়, তাহলে অতি দ্রুত আইইডিসিআর-এর হটলাইন নাম্বারে যোগাযোগ করুন এবং কুয়েত-মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারের পরামর্শ নিন৷
ছবি: A. Goniকরোনা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ- ০১৭০০৭০৫৭৩৭
হটলাইন নাম্বার- নাম্বার: ০১৪০১১৮৪৫৫১, ০১৪০১১৮৪৫৫৪, ০১৪০১১৮৪৫৫৫, ০১৪০১১৮৪৫৫৬, ০১৪০১১৮৪৫৫৯, ০১৪০১১৮৪৫৬০, ০১৪০১১৮৪৫৬৩, ০১৪০১১৮৪৫৬৮, ০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯৩৭১১০০১১৷
ছবি: Fotolia/NinaMalyna