চলে গেলেন বিখ্যাত ফুটবল কোচ ভের্নার লরান্ত
২১ এপ্রিল ২০২৫
তার সময়কালে তিনি 'দ্য লায়ন' বা ১৮৬০ মিউনিখকে তৃতীয় ডিভিশান থেকে সোজা বুন্ডেসলিগা পর্যন্ত টেনে তোলেন।
রোববার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন এই প্রখ্যাত জার্মান ফুটবল কোচ। তার বয়স হয়েছিল ৭৬। এদিন তার পরিবার এবং সাবেক ক্লাব টিভিএস ১৮৬০ মিউনিখ এই খবর জানিয়েছে।
৭০ থেকে ৮০-র দশকে ফুটবলার হিসেবে মাঠ মাতিয়েছিলেন তিনি। জার্মানির অনেকগুলি ক্লাবে খেলেছেন। আইনট্রাখট ফ্র্যাঙ্কফুর্টের হয়ে জার্মান কাপ এবং ইউইএফএ কাপও জেতেন তিনি।
তবে ১৯৯২ থেকে ২০০১ সময়কালে ১৮৬০ মিউনিখের কোচ থাকাকালীন তিনি জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছান।
বায়ার্ন মিউনিখের প্রতিদ্বন্দী তার দল সাফল্যের শিখরে পৌঁছয় ২০০০-এ যখন তারা বুন্ডেসলিগায় চতুর্থ স্থান দখল করে। এর ফলে প্রথমবার ১৮৬০ মিউনিখ চ্যাম্পিয়নস লিগের বাছাই পর্বে খেলার সুযোগ পায়। সেখানে অবশ্য ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ থেকে উঠে আসা লিডস ইউনাইটেডের কাছে পরাজিত হয় তারা।
রোববার তার ক্লাব জানায়, দীর্ঘ রোগ ভোগের পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, ক্লাবের ১২৫ বছরের ইতিহাসে তিনি সফলতম কোচেদের একজন ছিলেন।
তার বোন একটি ওয়েবসাইটকে জানান, "তার কাছে ফুটবলই পৃথিবী ছিল। যবে থেকে তিনি ফুটবল থেকে দূরে সরে যান, তখন থেকে তিনি আর ভালো থাকেননি। তিনি ক্লাবকে ভালোবাসতেন।"
'মতামত সবার থাকতে পারে। তবে কেবলমাত্র আমার মতামতই গুরুত্বপূর্ণ'
১৮৬০ মিউনিখের কোচও থাকাকালীন তিনি কড়া হাতে তার দল পরিচালনা করেছিলেন। নুরেমবার্গের সঙ্গে এক খেলায় ৫-১-এ এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও চোট পাওয়া ফুটবলারকে তিনি তুলে নেননি। এই নিয়ে এক সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করায় তিনি বলেছিলেন, "খেলোয়াড়দের কেবলমাত্র তখনই বদল করা যায় যখন তাদের পা খুলে পড়ে যায়।"
নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল না তার। তার দলের খেলোয়াড়দের মোবাইল ফোন ব্যবহার পছন্দ করতেন না তিনি। একবার বলেছিলেন, "টিম বাসে যদি কোনো খেলোয়াড়ের ফোন বাজে তাহলে তিনি বাস থেকে নেমে ট্যাক্সি ধরে গন্তব্যে পৌঁছবেন।"
কোচও হিসেবে তিনি বলতেন, "মতামত সবার থাকতে পারে। তবে কেবলমাত্র আমার মতামতই গুরুত্বপূর্ণ।"
বিক্রি হচ্ছে ১৮৬০ মিউনিখ?
এক সময়ে বুন্দেলসলিগার উপরের দিকে থাকা ১৮৬০ মিউনিখ আবার থার্ড ডিভিশানে নেমে এসেছে। ২০১৭-তে ক্লাবের এক বিনিয়োগকারীর সঙ্গে জটিল সম্পর্কের কারণে আরো করুণ অবস্থা হয় দলের। জর্ডানের বিত্তশালী বিনিয়োগকারী হাসান ইসমায়েক ২০১১-তে ক্লাবের দুঃসময়ে ৬০ শতাংশ শেয়ার কিনে নেন। জার্মান ফুটবলের নিয়ম না জানার কারণে তিনি সার্বিক ভাবে দলের ক্ষমতা করায়ত্ত করতে পারেননি।
২০১৭-এ থার্ড ডিভিশানে নেমে যাওয়ার পর ক্লাবের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পেতে ইসমায়েক ক্লাবের বাকি টাকা আটকে দেন এবং ব্ল্যাকমেল শুরু করেন। ক্লাব কর্তৃপক্ষ রাজি হয়নি এবং তার ফলে চতুর্থ ডিভিশানে নেমে যায় তারা। পরে আবার থার্ড ডিভিশানে তাদের স্থান ফিরে পায়।
ইসমায়েকের সঙ্গে ক্লাবের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকে। গত রোববার তিনি ঘোষণা করেন ক্লাবে তার অংশীদারি তিনি বিক্রি করতে ইচ্ছুক।
এসসি/জিএইচ(এপি, এএফপি, রয়টার্য়)