চাঁদের বুকে দ্বিতীয় বেসরকারি মহাকাশযান
২ মার্চ ২০২৫
রোববার যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় সময় রাত তিনটা বেজে ৩৪ মিনিটে ফায়ারফ্লাই এয়ারস্পেসের যানটি চাঁদে নামে৷ এই অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে ব্লু ঘোস্ট মিশন ১৷
এর আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইনটুইটিভ নামের একটি প্রতিষ্ঠান প্রথমবারের মতো বেসরকারিভাবে চাঁদে যান পাঠায়৷ তবে চাঁদে পৌঁছানোর পরপরই সেটি ভেঙে পড়ে৷
ফায়ারফ্লাই এয়ারস্পেসের প্রধান নির্বাহী জ্যাসন কিম ব্লু ঘোস্ট মিশনের সফল অবতরণের তথ্য নিশ্চিত করেছেন৷ সেই সঙ্গে মহাকাশযানটি অক্ষত ও ঠিকভাবে নামতে পেরেছে বলেও জানিয়েছেন৷ ব্লু ঘোস্টের প্রকল্প ব্যবস্থাপক রে অ্যালেন্সওর্থ জানিয়েছেন, যানটি তাদের লক্ষ্যস্থলের ১০০ মিটারের মধ্যে অবতরণ করতে সক্ষম হয়েছে৷
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা সম্প্রতি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথ প্রকল্প হাতে নিয়েছে৷ ব্লু ঘোস্ট তারই একটি৷
অ্যাপোলো-১১ এর পর চাঁদে আবারও মহাকাশচারী নিয়ে যাওয়ার অভিযান আর্টেমিস মিশনের খরচ যোগাতে এই উদ্যোগ নেয় নাসা৷ নাসার পরিচালক জ্যানেট পেট্রো বলেন, ‘‘আমরা অ্যামেরিকাকে এগিয়ে রাখছি, গর্বিত করছি, আমরা সবই করছি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্যে৷''
১৫ জানুয়ারি স্পেসএক্স-এর ফ্যালকন ৯ রকেটে করে ফ্লোরিডা থেকে চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ব্লু ঘোস্ট৷ সঙ্গে বহন করে নিয়ে যায় নাসার ১০টি গবেষণামূলক যন্ত্রপাতি৷ এরমধ্যে রয়েছে চাঁদের ধুলো সংগ্রহের জন্য একটি ভ্যাকুয়াম যন্ত্র, চন্দ্রপৃষ্ঠের ১০ ফুট নীচের তাপমাত্রা পরীক্ষার জন্য ছিদ্র করার একটি যন্ত্র৷
একটি কম্প্যাক্ট গাড়ির সমান আকারের চার পায়ের চন্দ্রযানটি ২৮ লক্ষ মাইল পাড়ি দিয়ে চাঁদের বুকে পৌঁছায়৷ যাত্রাপথে অসাধারণ কিছু ছবিও তোলে৷ সব ঠিক থাকলে ১৪ মার্চ চাঁদের বুকে পূর্ণগ্রাস গ্রহনের হাই-ডেফিনিশন চিত্র ধারণ করবে ব্লু ঘোস্ট ৷ ১৬ মার্চ ধারণ করে চাঁদের বুকে সূর্যাস্তের চিত্র, যার মাধ্যমে সৌরশক্তির প্রভাবে চন্দ্রপৃষ্ঠের ধুলো কীভাবে উড়ে সে বিষয়ে ধারণা পাওয়া চেষ্টা করবেন বিজ্ঞানীরা৷
গত বছর প্রথম বেসরকারি চন্দ্রযান ইনটুইটিভ মেশিনস এর ওডিসিউস চাঁদে নেমেছিল৷ যদিও নামার সময় সেটির একটি পা ভেঙে যায়৷ তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই তাদের আরেকটি যান চাঁদে নামার কথা রয়েছে৷ রাষ্ট্রীয়ভাবে এখন পর্যন্ত পাঁচটি দেশ চাঁদে মহাকাশযান পাঠাতে সফল হয়েছে৷ এর মধ্যে রয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও জাপান৷
এফএস/এআই (এএফপি, এপি, রয়টার্স)