1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চাঁদ ছাড়া পৃথিবী অচল

২০ সেপ্টেম্বর ২০২২

রাতের আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ আমাদের মুগ্ধ করে৷ কিন্তু পৃথিবীতে জীবজগতের অস্তিত্বের পেছনে চাঁদের অবদান সম্পর্কে আমরা কতটা সচেতন? ভারসাম্য, স্থিতিশীলতা ইত্যাদি অনেক অবস্থার জন্য চাঁদ অপরিহার্য৷

Illustration eines extrasolaren Planeten mit drei Monden und Gasnebel
ছবি: Science Photo Library/IMAGO

পূর্ণিমার রাতের আকাশে চাঁদ যেন আরো স্পষ্ট ও বড় হয়ে ওঠে৷ চাঁদের জাদুময় আলো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে৷ পৃথিবীর উপর চাঁদের প্রভাব আরও বেশি টের পাওয়া যায়৷

পূর্ণিমার চাঁদ দেখলে নেকড়ে জোরে জোরে ডাকে, পৌরাণিক কাহিনিতে এমন দাবি করা হয়৷ তবে রাতে সক্রিয় প্রাণীরা চাঁদের ভিত্তিতে সত্যি নিজস্ব ছন্দ সৃষ্টি করে৷

চাঁদ-ভিত্তিক সেই অন্তরের ঘড়ি সত্যি কতটা নিখুঁতভাবে কাজ করে, অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফে তা পর্যবেক্ষণ করা যায়৷ প্রতি বছর গ্রীষ্মের শুরুতে চাঁদ সেই প্রাচীরে প্রবালের বংশবৃদ্ধির ‘ট্রিগার' হিসেবে কাজ করে৷ পূর্ণিমার ঠিক পরে বিশেষ একটি দিনে প্রবাল একই সঙ্গে  ডিম্বকোষ ও শুক্রাণু সমুদ্রে ছেড়ে দেয়৷ ফলে সেগুলির নিষিক্তকরণ সম্ভব হয়৷

রাতে আলোর বিশাল উৎস হিসেবে চাঁদ পৃথিবীর জীবজগতকে নির্দিষ্ট ছন্দে থাকতে সাহায্য করে৷

কিন্তু মহাকাশে চাঁদের ভূমিকা কী? চাঁদ পৃথিবী প্রদক্ষিণ করা বন্ধ করে দিলে কী হবে? সেই পরিবর্তনের পরিণতি হবে মারাত্মক৷ সে ক্ষেত্রে পৃথিবীও নিজস্ব ছন্দ হারিয়ে লাট্টুর মতো বৃত্তাকার ঘূর্ণন করতে থাকবে৷ কোনো কিছুই আর আগের মতো থাকবে না৷ পৃথিবীর অক্ষ অনেকটা হেলে যাওয়ায় উত্তর মেরু তিন মাস ধরে সূর্যের আলোর মুখ দেখবে না৷ এর ঠিক ছয় মাস পর সেই অংশে দিনরাত আলো থাকবে৷

এর ফলে একবার করে তীব্র শীত ও তীব্র উত্তাপ দেখা যাবে৷ কোনো জীবের পক্ষে এমন চরম তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়৷

চাঁদ কতটা অপরিহার্য?

04:14

This browser does not support the video element.

এর পরিণতি হিসেবে বায়ুমণ্ডলে অকল্পনীয় ঝড়ঝঞ্জা দেখা যাবে৷ প্রলয়ের মতো বৃষ্টিপাতও সবকিছু তছনছ করে দেবে৷ অর্থাৎ চাঁদ না থাকলে  পৃথিবীতে জীবজগতের অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে উঠবে৷

একমাত্র চাঁদের কারণেই পৃথিবীর অক্ষ স্থিতিশীল রয়েছে৷ পারস্পরিক অভিকর্ষের কারণে স্থিতিশীল এক ছন্দ বজায় রয়েছে৷ সে কারণেই স্থিতিশীল জলবায়ু অঞ্চলের বিকাশ সম্ভব হয়েছে৷ শীতল, উষ্ণ ও নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল অনুযায়ী উদ্ভিদ ও প্রাণী নিজেদের মানিয়ে নিতে পেরেছে৷

চাঁদের শক্তিশালী অভিকর্ষের টানে সমুদ্রের পানি, এমনকি আমাদের পায়ের নীচের মাটিরও সঞ্চালন ঘটে৷ সমুদ্রের পানি ফুলে-ফেঁপে উঠলে মূল ভূখণ্ডও প্রায় আধ মিটার উঁচু হয়ে ওঠে৷ পৃথিবীর আবর্তনের সময় চাঁদ সবকিছু ধরে রাখে৷ চাঁদ না থাকলে পৃথিবী তিনগুণ দ্রুত গতিতে আবর্তন করতো৷

জোয়ারভাঁটার মাধ্যমে চাঁদের পর্যায়গুলি স্পষ্ট পর্যবেক্ষণ করা যায়৷ সেই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারলে ভালোভাবেই জীবন কাটানো যায়৷ কারণ সমুদ্রের তলদেশের তুলনায় জোয়ারভাটার ঠিক নীচের মাটিতে দশ গুণ বেশি জীব দেখা যায়৷ চাঁদ এমনকি পৃথিবীতে বন্যাকবলিত জমির আয়তনও নির্ণয় করে৷

পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব যদি আরও বিশগুণ কম হতো, তখন বড় সমুদ্রের সব উপকূল জোয়ারের সময় পানির নীচে ডুবে যেতো৷

রাতের চাঁদ যদি আকাশের সূর্যের মতো শক্তিশালী বলে মনে হয়, তখন পৃথিবীর জীবজগতের উপর সেটির গুরুত্ব আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে৷

ইয়োর্গ ভল্ফ/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ