মেয়েদের কাজ সংসার সামলানো; আমাদের সমাজে প্রচলিত এ ধারণা বেশ আগেই বদলে গেছে৷ এখন কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে৷ ঝুঁকিপূর্ণ অনেক পেশাতেও নারীরা এগিয়ে আসছে৷ কিন্তু ঠিক কতটা এগিয়ে যেতে পারছে?
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশে শিক্ষার মান নিম্নমুখী, শ্রমবাজারের সঙ্গে তার তেমন কোনো সম্পর্ক নেই৷ তাইতো গণিতে তুখোড় ছেলটি আজ পত্রিকার মফস্বল বিভাগের সহসম্পাদক৷ কিংবা ভূগোল থেকে স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণী পেয়ে তাক লাগিয়ে দেওয়া মেয়েটি স্বপ্নের জলাঞ্জলি দিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক৷ সংসার, সন্তান, স্বামী-শ্বশুরবাড়ির সব আবদার সামলে চাকরি করে যাচ্ছে ‘সৌভাগ্যবতী' এই মেয়েটি৷
সৌভাগ্যবতী বলছি, কারণ মেয়েটি তার কর্মজীবন টেনে নিয়ে যেতে পারছে, কজন সেটাই বা পারে৷ আজকাল সন্তানের লেখাপড়ায় ছেলে/মেয়ে ভেদাভেদ খুব একটা করা হয় না৷ সরকারের নানা উদ্যোগে বাংলাদেশে মেয়েদের লেখাপড়ার সুযোগও বেড়েছে৷ মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের ভালো ফলাফলের চিত্র এখন নিয়মিত৷ কিন্তু কর্মক্ষত্রে মেয়েদের অংশগ্রহণ সেভাবে কি বেড়েছে?
উচ্চমাধ্যমিকের পর দীর্ঘ সংগ্রাম করে একটি মেয়ে উচ্চশিক্ষিত হয়৷ পথে সামাজিক নিরাপত্তার অভাব, বাবা-মায়ের উদ্বেগ, প্রচলিত সামাজিক সংস্কারের অনেকগুলো হার্ডলে আটক কমতে থাকে সংখ্যা৷ এত কিছু পেরিয়ে যারা চাকরির বাজারে প্রবেশ করেন তাদের জন্য শুরু হয় নতুন সংগ্রাম৷ এত কষ্ট করে অর্জন করা শিক্ষা কর্মক্ষেত্রে খুব একটা সুবিধা দিতে পারে না৷ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা ব্যবস্থা থিওরি নির্ভর৷ হাতেকলমে শিক্ষার তেমন সুযোগ না থাকায় চাকরির বাজারের সঙ্গে ওই শিক্ষা তাল মেলাতে অক্ষম৷ উচ্চশিক্ষিত নারীদের বিরাট একটি অংশ এ কারণে বাজার থেকে ঝরে পড়ে৷
কর্মসংস্থানের সুযোগ ১০ খাতে
বাংলাদেশের ১০টি সম্ভাবনাময় খাতে কত কর্মীর চাহিদা রয়েছে, ভবিষ্যতে কতটা কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে, কেমন দক্ষতার কর্মী লাগবে, তা নিয়ে একটি গবেষণা চালিয়েছিল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ-বিআইডিএস৷
ছবি: DW
তৈরি পোশাক
বর্তমানে দেশের তৈরি পোশাক শিল্পে প্রায় ৪৯ লাখ শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে৷ বিআইডিএস-এর গবেষণা অনুযায়ী ২০২৫ সাল নাগাদ তা বেড়ে প্রায় ৯১ লাখে দাড়াবে৷ এর মধ্যে দক্ষ শ্রমিক প্রয়োজন হবে ৫০ লাখ ২৭ হাজার৷
ছবি: Reuters/A. Biraj
টেক্সটাইল
টেক্সটাইল বা বস্ত্র খাতে ৩০ লাখ শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে বর্তমানে৷ আগামী পাঁচ বছরে যা ৫৭ লাখে ঠেকবে৷ প্রায় দেড় কোটি শ্রমিক লাগবে ২০৫০ সালে৷
ছবি: picture alliance/Zumapress
কৃষি-খাদ্য
বাংলাদেশের কৃষি-খাদ্য খাতে এখন প্রায় ২৪ লাখ শ্রমিকের চাহিদা৷ ২০২৫ সালে যা বেড়ে ৪৪ লাখে পৌছাবে৷ ২০৫০ সাল নাগাদ এই খাতে এক কোটি ১৬ লাখ কর্মী লাগবে৷
ছবি: DW/M. Mamun
নির্মাণ
নির্মাণ খাতে ২০১৮ সালে প্রায় ৩৭ লাখ শ্রমিকের চাহিদা ছিল৷ যা ক্রমশ বেড়ে ৬৭ লাখে পৌছাবে ২০২৫ সাল নাগাদ৷ সেখানে দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হবে ১৫ লাখ ৪০ হাজার৷ আগামী ৩০ বছরের মধ্যে অদক্ষ, দক্ষ, আধাদক্ষ মিলিয়ে এই খাতে মোট এক কোটি ৭৬ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে৷
ছবি: bdnews24.com
হালকা প্রকৌশল
২০২০ সালের জন্য হালকা প্রকৌশল পণ্যকে ‘বর্ষপণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার৷ বর্তমানে এই খাতে প্রায় ছয় লাখ শ্রমিক রয়েছে৷ ২০২৫ সাল নাগাদ সেখানে শ্রমিকের চাহিদা আরো চার লাখ বাড়বে৷ যার মধ্যে ৮০ ভাগই দক্ষ হতে হবে৷ সব মিলিয়ে ২০৫০ সালে হালকা প্রকৌশলে দুই কোটি ৬৯ লাখ কর্মী প্রয়োজন হবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
স্বাস্থ্য
২০১৮ সালে স্বাস্থ্য বা চিকিৎসা সেবায় কর্মীর চাহিদা ছিল ১০ লাখ৷ যা ১৯ লাখে পৌছাবে ২০২৫ সালে৷ ২০৫০ সাল নাগাদ স্বাস্থ্যসেবা অর্ধকোটির বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের যোগান দিতে পারে৷
ছবি: AP
তথ্য-প্রযুক্তি
তথ্য প্রযুক্তিখাতে বর্তমানে কর্মীর চাহিদা প্রায় দুই লাখ৷ ২০২৫ সালে নাগাদ যা বেড়ে প্রায় চার লাখ হবে৷ ২০৫০ সালে আট লাখ কর্মীর কর্মসংস্থান হবে এই খাতে৷
ছবি: Privat
জাহাজ নির্মাণ
বর্তমানে দেশে জাহাজ নির্মান শিল্পে শ্রমিকের চাহিদা প্রায় ষাট হাজার৷ ২০২৫ সাল নাগাদ তা দুই লাখ ছাড়িয়ে যাবে৷ এর মধ্যে সাড়ে ২১ হাজার দক্ষ, সাড়ে ৯৭ হাজার আধাদক্ষ আর এক লাখ ১৭ হাজার অদক্ষ কর্মী লাগবে৷
ছবি: Roberto Schmidt/AFP/GettyImages
চামড়া শিল্প
এই শিল্পে এখন প্রায় এক লাখ আঠারো হাজার কর্মীর চাহিদা রয়েছে৷ ২০২৫ সালে তা বেড়ে দুই লাখ আট হাজার হবে৷ প্রয়োজন হবে ১৭ হাজার দক্ষ, ১৬ হাজার নয়শো আধাদক্ষ আর এক লাখ ৭৩ হাজার দক্ষ শ্রমিক৷
ছবি: DW
পর্যটন
বর্তমানে হসপিটালিটি ও ট্যুরিজম খাতে ৪০ হাজার কর্মসংস্থানের চাহিদা রয়েছে৷ এটি বেড়ে সত্তর হাজার হবে ২০২৫ এ৷ ২০৫০ সাল নাগাদ এক কোটি ৮০ হাজার মানুষের কাজের যোগান দিতে পারবে পর্যটন শিল্প৷
ছবি: DW/M. Mamun
10 ছবি1 | 10
হাতেগোনা যে কয়েকজন নারী কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করেন তাদের উপরও কিন্তু চাপের অভাব নেই৷ প্রথমেই তাকে মূল্যায়ন করা হয় বাহ্যিক সৌন্দর্য দিয়ে৷ সমাজের তৈরি করা মাপকাঠির নিচে হলে কটাক্ষ আর পেরিয়ে গেলে লোলুপ দৃষ্টি৷ আজ আর সে প্রসঙ্গে না যাই৷
বরং নিজের একটি অভিজ্ঞতার কথা বলি৷ সালটা ২০১২, তখন আমি স্পোর্টস রিপোর্টার৷ নতুন একটি টেলিভিশন চ্যানেলে চাকরির পরীক্ষা দিয়ে টিকে গেলাম৷ কিন্তু জয়েন করার ঠিক দুই/তিন দিন আগে বাসায় পরীক্ষা করে জানতে পারলাম আমি অন্তঃসত্ত্বা৷ প্রথমবার মা হবার আনন্দ থেকে উদ্বেগ হলো বেশি৷ নতুন কর্মক্ষেত্রে বিষয়টা কিভাবে নেবে৷ বলবো নাকি বলবো না করতে করতে শেষে তাদের মানবসম্পদ বিভাগে ফোন দিলাম৷ তারা সরাসরি আমাকে বলে দিল আপনি জয়েন করেন না! মাতৃত্বকালীন ছুটি পাওয়া নিয়ে ঝামেলা হবে৷ আমি জানি, এ অভিজ্ঞতা আমার একার নয়৷ কর্মজীবী নারীদের কমবেশি সবাইকেই এ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে৷
সন্তান জন্মের পর নারী যখন আবার কাজে ফেরেন তখন শুরু হয় নতুন বিড়ম্বনা৷ ছয় মাসের ছোট্ট শিশুটিকে বাড়িতে রেখে কাজ করার কত যে যাতনা তা একজন মা কেবল বলতে পারবেন৷ এই মানসিক-শারীরিক যাতনার সঙ্গে যোগ হয় সহকর্মীদের টিপ্পনি৷ ‘কী মন এত উড়ু উড়ু কেন' ‘বাসার চিন্তা বাদ দিয়ে কাজে মন দেন' ‘এত ছুটি না নিয়ে চাকরি ছাড়েন, বাচ্চাকে সময় দেন'৷ আমার চেনা জানা অনেক নারী শুধু সহকর্মীদের অসহযোগিতার কারণে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, কেউ কেউ তো রীতিমত বিষন্নতায় ভুগছেন৷
আমাদের অফিসগুলোতে বড় বড় একাধিক কনফারেন্স রুম থাকে৷ দারুণ সব আসবাব দিয়ে সাজানো রুমগুলো মাসে কতদিন কাজে লাগে তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে৷ কিন্তু সামান্য খেলনা দিয়ে সাজানো ছোট্ট একটি কক্ষের জায়গা হয় না৷ চা-বিস্কুট আর সিগারেট এনে দিতে ১৫/২০ জন অফিস সহকারী থাকলেও ডে-কেয়ারে শিশুদের দেখার দুজন লোক রাখার টাকার যোগাড় হয় না৷
অসহযোগিতা থাকে পরিবারেও৷ সংসার-সন্তান যেন নারীর একার দায়িত্ব৷ ‘সংসার-সন্তান সামলে যদি চাকরি করতে পারো তবে করো' প্রায় শতভাগ কর্মজীবী নারীকে প্রতিনিয়ত এ কথা শুনতে হয়৷ একসঙ্গে অফিস থেকে ফেরা স্বামীটি হাতমুখ ধুয়ে হাল্কা নাস্তার অপেক্ষায় রিমোট হাতে টেলিভিশনের সামনে বসে পড়েন৷ আর স্ত্রীকে হয়তো পোশাক পাল্টানোর আগেই ঢুকতে হয় রান্নাঘরে হাল্কা নাস্তা তৈরি করতে৷ এভাবে সংসার-চাকরি ভারসাম্য রাখতে গিয়ে হিমশিম খেতে থাকা নারী এক সময় যেকোনো একটিকে বেছে নিতে বাধ্য হন৷ এ অবস্থার কবে পাল্টাবে?
বাংলাদেশে নারী-পুরুষের অনুপাত ১০০:১০৬৷ কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ না বাড়লে কিভাবে দেশ এগিয়ে যাবে৷ এমন নয় যে যারা গৃহিনী তারা কাজ করেন না৷ তাদের হাজারটা কাজ করতে হয়৷ আজকাল অনেক পুরুষকে তো আদিখ্যেতা করে বলতে শোনা যায়, আমার বউ সংসারে যে পরিশ্রম করে সেটার দাম দিতে গেলে বেতন পুরোটা দিয়ে দিতে হত৷ জ্বি জনাব, কথাটা ঠিক বলেছেন৷ কিন্তু শুধু মুখে বললেই কি হবে, নাকি টাকাটাও দিতে হবে৷ কজন সেটা দেন? বরং স্ত্রীকে একান্ত প্রয়োজনের টাকাটাও হাত পেতে চেয়ে নিতে হয়৷ কাউকে কাউকে শুনতে হয় এত টাকা কি করো!!!!!!
এ অবস্থার পরিবর্তন হোক৷ সাবলম্বী হয়ে উঠুক দেশের প্রতিটি নারী৷
কর্মক্ষেত্রে নারীদের যত চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বেড়ে চলেছে দিন দিন৷ তার পরেও কর্মক্ষেত্রে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন নারীরা৷ ডয়েচে ভেলের পক্ষ থেকে কথা বলা হয়েছিল বিভিন্ন পেশায় যুক্ত কয়েকজন নারীর সঙ্গে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
মাকসুদা আক্তার, ব্যাংকার
ব্যক্তিগতভাবে আমার দীর্ঘ ১৫ বছরের কর্মক্ষেত্রে মেয়েদের যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে দেখেছি তা হলো, একজন পুরুষ সহকর্মীকে বাসায় পৌঁছে তাদের গৃহস্থালির কাজকর্ম বা সন্তানদের সামলানোর বিষয়ে মনোযোগ দিতে হয়না৷ কিন্তু কর্মক্ষেত্রে একজন পুরুষ সহকর্মীর মতো একজন নারী কর্মীকেও সমান সময় অতিবাহিত করতে হয়৷ নারীকর্মীদের কর্মক্ষেত্রে সহনশীল মাত্রার কর্ম ঘণ্টা নির্ধারণ ও তার বাস্তব রূপ দেয়া আমার দাবি৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
ডা. তানজিয়া তামান্না, চিকিৎসক
শিক্ষানবিশ চিকিৎসক হিসেবে একটি সরকারি হাসপাতালে যখন কাজ করেছি তখন নানারকম সমস্যা মোকাবিলা করেছি৷ রোগীর সাথে আসা লোকজন প্রায়শই অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্য ছুড়ে দিত৷ রাতে ডিউটি থাকলে হোস্টেল থেকে হাসপাতাল যেতে এবং ফিরে আসতে সবসময়ই একটা অজানা ভয় কাজ করতো৷ বর্তমানে বাচ্চা নিয়ে অফিস চালাতে গিয়ে প্রতি মুহূর্তে কর্মক্ষেত্রে একটি চিল্ড্রেন্স সেন্টারের প্রয়োজন বোধ করি৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
আফসানা সিয়াম, শিক্ষক
রাস্তায় চলতে ইভটিজিং-এর শিকার হই, অনেকসময় ক্লাসেই কিছু ছাত্রও এ কাজটি করে৷ ম্যাসেঞ্জারে অনেক আজে বাজে টেক্সট পাই৷ আমার মতে, মাতৃত্বকালীন ছুটিটা পর্যাপ্ত দেয়া প্রয়োজন৷ বেশিরভাগ বেসরকারি স্কুলে মাতৃত্বকালীন ছুটি সাধারণত ২ মাস দেয়া হয়৷ এটা বাড়ানো উচিত৷ এছাড়া পরিবার সামলাতে হয়, যেমন ছেলে মেয়ে অসুস্থ হলে ছোট-খাট ছুটি প্রয়োজন হয়৷ কর্মজবীবী নারীদের প্রতি প্রতিষ্ঠানের সহমর্মিতা দেখানো উচিত৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
জয়ীতা রায়, আলোকচিত্র সাংবাদিক
আমার কাজের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সবসময়ই আমাকে ছেলেদের সঙ্গে কাজ করতে হয়৷ তাই সবসময় আমাকে প্রমাণ করতে হয় আমি তাদের সমানই কাজ করতে পারি৷ এছাড়া দূরে কোথাও বড় কোনো ঘটনা ঘটলে জায়গাটিতে পৌঁছুতে, যেমন কীভাবে যাব কিংবা কার সঙ্গে যাব এরকম অনেক অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয় আমাকে৷ আমি চাই, সব জায়গায় সবসময় মেয়েরা যেন স্বাধীনভাবে সম্মানের সঙ্গে চলার পরিবেশ পায়৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
সানজিদা আফরিন, উন্নয়নকর্মী
কাজের জায়গায় না হলেও দেখা যায় স্টেকহোল্ডারদের সাথে আমরা বিভিন্ন বৈষম্যমূলক আচরণ পাই৷ মেয়েদের কাজের জন্য ওয়ার্ক ফ্রম হোম, চাইল্ড ফ্রেন্ডলি স্পেস রাখা অথবা ফ্লেক্সিবল ওয়ার্কিং রোস্টার, এ ধরনের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে ভালো হয়৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
সাজু বেগম, পোশাক শ্রমিক
তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, যা বেতন পান তা দিয়ে মাসের দিনগুলো পার করা৷ এছাড়া পোশাক শ্রমিক বলে অনেকেই ছোট করে দেখে, যা তাঁকে সবসময়ই কষ্ট দেয়৷ সাজু বেগমের চাওয়া, পোশাক শ্রমিকদের থাকার জন্য কোনো জায়গার ব্যবস্থা করা৷ তাহলেই কেবল স্বল্প বেতনে ভালোভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
শেফালি আক্তার, সরকারি চাকুরে
কর্মজীবী হিসেবে শেফালি আক্তারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ অফিস এবং বাড়ি দুটিই সমানভাবে সামলানো৷ এছাড়া কর্মক্ষেত্রে অনেক সময় পুরুষ সহকর্মীরাও তাদের অনেক কাজ চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন৷ তাঁর মতে, প্রতিটি সরকারি অফিসে ডে কেয়ার সেন্টার থাকা উচিত৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
আলেয়া বেগম, গৃহকর্মী
গৃহকর্মী হিসেবে আলেয়া বেগম যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন তা হলো নিত্য বকাঝকা ও দুর্ব্যবহার৷ অনেক সময় খুব ছোট ছোট ব্যপারেও গৃহকর্ত্রীরা খুবই দুর্ব্যবহার করেন৷ কোনো ছুটির দিন না থাকাটাও তাঁর কাছে অনেক চ্যালেঞ্জের৷ তাঁর মতে, প্রত্যেক গৃহকর্মীর জন্যই সপ্তাহে অন্তত একটি দিন ছুটি দেয়া উচিত৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
মুক্তা বেগম, দিন মজুর
ইটের ভাটায় দিনমজুরের কাজ করেন মুক্তা বেগম৷ কর্মক্ষেত্রে তাঁর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো পুরুষদের সমান কাজ করলেও তাঁকে মজুরি দেয়া হয় একজন পুরুষের অর্ধেকের একটু বেশি৷ সকল ক্ষেত্রে মজুরি বৈষম্য দূর করাই তাঁর দাবি৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
কুলসুম আক্তার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী
ব্যবসায় যেহেতু তাঁকে একটু বেশি সময় দিতে হয় তাই তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো পরিবার সামলানো৷ তাঁর মতে, শিশুদের স্কুলগুলোর সময়সূচি এমন হওয়া উচিত যাতে দিনের বড় একটা সময় সন্তানদের স্কুলে রাখতে পারেন৷ এছাড়া প্রতিটি এলাকায় শিশুদের দেখভালের জন্য পর্যাপ্ত ডে কেয়ার সেন্টার গড়ে তোলা উচিত সরকারি উদ্যোগেই৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
10 ছবি1 | 10
প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷