চাপের মুখে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের গ্রহণ ইন্দোনেশিয়ার
৩০ ডিসেম্বর ২০২১
২৮ দিন ধরে ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্রে ছিলেন ওই শরণার্থীরা। বহু শিশু ও নারী আছেন সেখানে।
বিজ্ঞাপন
বুধবার জাকার্তা জানিয়েছে, সমুদ্রে আটকে থাকা ১২০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে গ্রহণ করবে ইন্দোনেশিয়া। তাদের মূল ভূখণ্ডে থাকতে দেওয়া হবে। এর আগে তাদের নিতে চায়নি ইন্দোনেশিয়ার সরকার। সমুদ্রেই তাদের খাবার, পোশাক এবং জল দিয়ে দায় এড়াতে চাইছিল তারা। কিন্তু আন্তর্জাতিক এবং দেশের ভিতরে একাধিক এনজিও চাপ সৃষ্টি করার পর শরণার্থীদের গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছে সরকার।
দেশে ফিরতে চান না ভারতের রোহিঙ্গা শরণার্থীরা
দিল্লির অদূরে হরিয়ানায় দেশের সবচেয়ে বড় রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ডয়চে ভেলের ক্যামেরায় তাদের জীবনযাপন।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
পাশাপাশি পাঁচটি ক্যাম্প
দশ কিলোমিটারের মধ্যে পাঁচটি রোহিঙ্গা ক্যাম্প তৈরি হয়েছে। একেকটি ক্যাম্পে একশ থেকে দেড়শ পরিবার থাকে। সব মিলিয়ে হাজার পাঁচেক রোহিঙ্গা শরণার্থী থাকেন এই ক্যাম্পগুলিতে।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
জম্মু-দিল্লি-পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে
জম্মু, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লির ক্যাম্প ছেড়ে বহু রোহিঙ্গা হরিয়ানার ক্যাম্পে চলে এসেছেন। আরাবল্লি পর্বতের গায়ে মেওয়াতের নুহ অঞ্চলে এই ক্যাম্প।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
নির্যাতন, ভয়
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অভিযোগ, জম্মুতে বহু শরণার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের উপর মানসিক অত্যাচারও হয়েছে। সে কারণেই ওই ক্যাম্প ছেড়ে তারা হরিয়ানায় চলে এসেছেন। এখানেও তাদের ক্যাম্পের বাইরে যেতে দেওয়া হয় না। ক্যাম্পে কেউ গেলে, এমনকী, সাংবাদিক গেলেও পুলিশকে জানাতে হয়।
মিয়ানমারের প্রতি মুহূর্তের খবর রাখেন শরণার্থীরা। সেনা সরকার তৈরির পর তারা আরো ভয়ে। শরমার্থীদের বক্তব্য, না খেতে পেয়ে বিদেশে মরতে রাজি তারা। কিন্তু মিয়ানমারে গিয়ে আর আক্রমণের শিকার হতে চান না।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
একটাই টয়লেট
গোটা শিবিরের জন্য মাত্র একটি টয়লেট। পাশের জঙ্গলে যেতে হয় নারী-পুরুষ সকলকেই।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
মেয়েদের নানা রোগ
মাসিকের সময়েও মেয়েদের জঙ্গলে যেতে হয়। নানারকম রোগ ধরা পড়ছে তাদের। জাতিপুঞ্জের শরণার্থী সংক্রান্ত সংস্থা ইউএনএইচসিআর তাদের সাহায্য করতে চায় না বলে অভিযোগ।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
সাহায্য করে না প্রশাসন
প্রশাসন শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখে না বলে অভিযোগ। সরকারি হাসপাতালেও অর্থের বিনিময়ে চিকিৎসা করাতে হয়।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এই বৃদ্ধা মৃত্যুর দিন গুনছেন। আর বাঁচতে চান না তিনি।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
14 ছবি1 | 14
দিনকয়েক আগে মাছ ধরতে গিয়ে সমুদ্রে একটি নৌকা দেখতে পান ইন্দোনেশিয়ার জেলেরা। নৌকাটির কাছে গিয়ে তারা দেখেন, তার মধ্যে বহু মানুষ বসে আছেন। যার অধিকাংশই নারী এবং শিশু। জেলেদেরা জানান, নৌকার ব্যক্তিদের শারীরিকভাবে দুর্বল বলে মনে হচ্ছিল। তারা ওই জেলেদের জানান, মিয়ানমার থেকে ২৮ দিন আগে তারা নৌকা নিয়ে পালিয়েছেন। জেলেরা ওই শরণার্থীদের ভিডিয়ো তোলেন। পরে যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।
ওই ভিডিও দেখে একদিকে সরকার এবং অন্যদিকে মানবাধিকার সংগঠনগুলি নড়েচড়ে বসে। সরকার জানিয়ে দেয়, ওই শরণার্থীদের খাবার, পোশাক এবং জল দিয়ে সাহায্য করা হবে। তাদের আন্তর্জাতিক সীমান্তও দেখিয়ে দেওয়া হবে। ইন্দোনেশিয়ায় তাদের জায়গা দেওয়া হবে না। কিন্তু অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সহ দেশ এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের একাধিক এনজিও এর বিরোধিতা করে। অবলিম্বে ওই শরণার্থাীদের দেশে জায়গা জায়গা করে দেওয়ার কথা বলা হয়। চাপের মুখে শেষপর্যন্ত জাকার্তা তা মেনে নেয়।
বৃহস্পতিবারই ওই শরণার্থীদের মূল ভূখণ্ডে নিয়ে আসা হয়েছে। রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, নৌকাতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।