1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিচার কত বছরে: অজয় রায়

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যার চার্জশিট তদন্তকারী সংস্থা চূড়ান্ত করেছে চার বছরে৷ তাহলে বিচার হবে কত বছরে? এই প্রশ্ন অভিজিতের পরিবারের সদস্যদের৷ এদিকে, তদন্ত নিয়েও তাঁদের প্রশ্ন রয়েছে৷

Ermordete Journalisten Avijit Roy
ছবি: Getty Images/AFP/M. U. Zaman

চার বছর আগে ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে বের হওয়ার পর ব্লগার ও বিজ্ঞান লেখক ড. অভিজৎ রায়কে হত্যা করা হয়৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের উলটো দিকে এই হামলার সময় তাঁর সঙ্গে স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও ছিলেন৷ হামলায় গুরুতর আহত হলেও বন্যা বেঁচে যান৷

অভিজিৎ হত্যা মামলার তদন্ত করছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট৷ তাঁরা চার্জশিট চূড়ান্ত করে সেটি অনুমোদনের জন্য ১৮ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে৷ এখনো অনুমোদন মেলেনি৷

প্রস্তাবিত চার্জশিটে মোট ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে৷ তাদের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে পুলিশ৷ তারা হলো: মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, মো. আবু সিদ্দিক সোহেল (৩৪) ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, মো. আরাফাত রহমান (২৪) এবং হত্যাকাণ্ডে উসকানি বা প্ররোচনাদানকারী শাফিউর রহমান ফারাবী (২৯)৷

কিন্তু হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া (চাকরিচ্যুত মেজর) এবং তার সহযোগী আকরাম হোসেন ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে হাসিবুল ওরফে আব্দুল্লাহ (৩০) এখনও পলাতক৷

হত্যাকাণ্ডে মোট ১১ জনের সংশ্লিষ্টতা পেলেও বাকি পাঁচ জনের পূর্ণাঙ্গ নাম ঠিকানা নিশ্চিত হতে না পারায় তাদের এখন চার্জশিটভুক্ত করা হচ্ছেনা৷ পরে নিশ্চিত হওয়া গেলে সম্পূরক চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করার কথা জানিয়েছেন তদন্তকারীরা৷

তদন্তকারীরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্যরা জড়িত৷ লেখালেখি ও ভিন্নমতের কারণেই হত্যা করা হয় অভিজিৎ রায়কে৷ দীর্ঘদিন ধরে টার্গেটে রেখে তাঁকে হত্যা করা হয়৷

সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছি, পেলেই আদালতে চার্জশিট দাখিল করবো: মহিবুল ইসলাম খান

This browser does not support the audio element.

তদন্তকারী সংস্থা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপ পুলিশ কমিশনার মহিবুল ইসলাম খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের মাধ্যমে সরকারের অনুমোদনের জন্য চার্জশিটটি স্বারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি৷ এই মামলার চার্জশিট আদালতের আমলে নিতে হলে সরকারের অনুমোদন লাগে৷ এখনো অনুমোদনের অপেক্ষায় আছি৷ অনুমোদন পেলেই আদালতে চার্জশিট দাখিল করবো৷''

আসামিদের পলাতক থাকা এবং পাঁচ জনের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়ায় মামলা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘মামলা চলবে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে৷ আমরা যে সাক্ষ্য প্রমাণ পেয়েছি৷ আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে৷ সব মিলিয়েই চার্জশিট দিচ্ছি৷''

অভিজিতের স্ত্রীর ক্ষোভ

চার্জশিটের খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা ১৮ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন৷ সেখানে তিনি তদন্ত নিয়ে তাঁর হতাশার কথা তুলে ধরেন৷ তদন্তের কোনো পর্যায়েই তদন্তকারীরা তাঁর সঙ্গে কথা না বলার বিষয়টি তিনি উল্লেখ করেন৷ এছাড়া মূল আসামিদের পলাতক থাকা এবং আটক আসামির ক্রসফায়ারে হত্যার ঘটনা তাঁর কাছে স্বাভাবিক মনে হয়নি৷ বন্যা মনে করছেন, এতে অনেক তথ্য আড়ালে থেকে যাবে৷ তথ্য বিভ্রাটের একটি উদাহরণও দিয়েছেন তিনি৷

অভিজিতের বাবার প্রশ্ন

 অভিজিৎ রায়ের বাবা অধ্যাপক অজয় রায় এখন অসুস্থ৷ কথা বলতেও তাঁর কষ্ট হয়৷ তারপরও তিনি মামলার তদন্ত নিয়ে ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘তদন্তকারী কর্মকর্তাদের একজন কয়েকদিন আগে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন৷ তাঁরা আমাকে জানিয়েছেন তাঁরা চার্জশিট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন৷ আমি এই তদন্ত প্রক্রিয়ায় সন্তুষ্ট নই৷ চার বছর ধরে তদন্ত চলছে, বিচার হবে কবে? তিনি আমার কাছে জানতে চেয়েছেন, আমি কী চাই৷ আমিতো বিচার চাই৷ কিন্তু সেই বিচার দেখার আগেইতো আমি মারা যাবো৷ বিচার হবে কত বছরে?'' 

বিচার দেখার আগেইতো আমি মারা যাবো, বিচার হবে কত বছরে: অজয় রায়

This browser does not support the audio element.

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘তদন্তকারীরা আমার সঙ্গে দুই-একবার কথা বলেছে৷ বন্যার সাথে কথা বলেনি৷ বন্যাতো ওর স্ত্রী৷ সেওতো মারা যেত৷ আমিই ওকে নিয়ে এসেছি৷ এরপর অ্যামেরিকায় পাঠিয়ে দিয়েছি যাতে ওর জীবনটা বাঁচে৷ এফবিআই এসেছিল৷ তারা একবার কথা বলেছিল৷ তারা বলেছে আমরা যা পেয়েছি তা বাংলাদেশের পুলিশকে জানিয়ে দিয়েছি৷''

অধ্যাপক অজয় রায় বলেন, ‘‘কতগুলো অপরাধ আছে যার বিচার দ্রুত হওয়া উচিত৷ এটা যদি সরকার মন্ত্রীরা বা প্রধানমন্ত্রী না বোঝেন তাহলে কী বলব৷''

তাঁর শেষ কথা, ‘‘আমি বিচার দেখতে চাই৷ দীর্ঘসূত্রিতা হলে বিচার না হলেই ভালো৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ