বৃহস্পতিবার খেরসন এবং ঝাপোরিজ্ঝিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে ক্রেমলিন। শুক্রবার তাদের অধিগ্রহণ করা হবে।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার ক্রেমলিনে একটি অনুষ্ঠান করে লুহানস্ক, দনেৎস্ক, খেরসন এবং ঝাপোরিজ্ঝিয়া অধিগ্রহণ করবে রাশিয়া। দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে ডাকা হয়েছে, চারটি অঞ্চলের মস্কো নির্দেশিত প্রধানদের। তাদের উপস্থিতিতে ওই চার জায়গাকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার অংশ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। স্বাভাবিকভাবেই ইউক্রেন-সহগোটা পশ্চিমা দুনিয়া এর বিরোধিতা করছে।
২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া ঠিক এভাবেই দখল করেছিল রাশিয়া। ২০২২ সালের যুদ্ধ শুরু হওয়ার অব্যবহিত আগে দনেৎস্ক এবং লুহানস্কের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল রাশিয়া। অন্য কোনো দেশ তা স্বীকার না করলেও রাশিয়া তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। দুইটি এলাকাতেই বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রতিনিধিদের সাহায্য করেছিল। এবং তার ঠিক পরেই যুগ্ধ শুরু হয়।
রাশিয়ায় স্কুলে হামলায় ১৩ জন নিহত
রাশিয়ার মস্কো থেকে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার পুবের শহর ইজেভস্কে সোমবার সকালে এক স্কুলে গুলির ঘটনায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন৷ একে ‘অমানবিক সন্ত্রাসী হামলা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন৷
ছবি: picture alliance/dpa/TASS
স্কুলে হামলা
মস্কো থেকে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার পুবের শহর ইজেভস্কে সোমবার সকালে এক স্কুলে গুলির ঘটনায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন৷ এর মধ্যে সাতজন শিশু৷ এছাড়া দুজন শিক্ষক ও দুজন নিরাপত্তা প্রহরী রয়েছেন৷ এছাড়া ২১ জন আহত হয়েছেন৷
ছবি: picture alliance/dpa/TASS
হামলাকারীর পরিচয়
তদন্তকারীরা বলছেন, হামলাকারী কালো রংয়ের পোশাক ও বালাক্লাভা পরে ছিলেন৷ তার সঙ্গে কোনো পরিচয়পত্র ছিল না৷ হামলার পর তিনি আত্মহত্যা করেন বলে তারা জানিয়েছেন৷
ছবি: Ilyas Bekmansurov/TASS/picture alliance
পুটিনের নিন্দা
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন স্কুলে গুলির ঘটনাকে ‘অমানবিক সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যায়িত করে এর নিন্দা জানিয়েছেন৷
ছবি: Sergei Bobylev/Pool Sputnik Kremlin/AP/picture alliance
বিরল ছিল, এখন নয়
২০২১ সালের আগে রাশিয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গুলির ঘটনা বিরল ছিল৷ এরপর ঐ বছর এমন দুটো হামলার ঘটনা ঘটে৷ এবার এখন পর্যন্ত দুটি হামলা হয়েছে৷
ছবি: Sergey Kuznecov/SNA/IMAGO
সবশেষ এপ্রিলে
গত এপ্রিলে সশস্ত্র এক ব্যক্তি উলিয়ানোভস্কের এক কিন্ডারগার্টেনে গুলি চালিয়ে এক শিক্ষক ও দুজন শিশুকে হত্যা করে৷ হামলাকারী ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ছিলেন বলে জানানো হয়৷ পরে তিনি নিজেকে গুলি করেছিলেন৷
ছবি: Ulnovosti.ru/TASS/IMAGO
সাবেক শিক্ষার্থীর হামলা
গতবছর মে মাসে ১৯ বছর বয়সি এক শিক্ষার্থী কাজান শহরে তার সাবেক স্কুলে গুলি চালালে নয়জন প্রাণ হারান৷ তার মস্তিষ্কে সমস্যা থাকলেও সেমি-অটোমেটিক শটগান কেনার মতো ফিট ছিলেন বলে তদন্তকারীরা সেইসময় জানিয়েছিলেন৷
ছবি: Yegor Aleyev/Tass/dpa/picture alliance
রাইফেল কেনার বয়সসীমা বৃদ্ধি
কাজানে হামলার দিন পুটিন বন্দুক কেনার আইন কঠোর করার আহ্বান জানিয়েছিলেন৷ এরপর শিকার করা যায় এমন রাইফেল কেনার বয়সসীমা ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ করা হয়৷
ছবি: Roman Kruchinin/AP/picture alliance
বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা
গতবছর সেপ্টেম্বরে এক ব্যক্তি হান্টিং রাইফেল দিয়ে প্যার্ম স্টেট ইউনিভার্সিটিতে হামলা চালিয়ে ছয়জনকে হত্যা করেন৷ এদের বেশিরভাগই নারী ছিলেন৷
ছবি: Alexey Romanov/dpa/picture alliance
যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনুপ্রেরণা?
অতীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গুলির ঘটনায় বিদেশি প্রভাব থাকার অভিযোগ এনেছিল রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ৷ অনলাইন ও টেলিভিশনে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য জায়গায় স্কুলে গুলির ঘটনা দেখে রুশ তরুণরা এসব শিখেছে বলে তারা মন্তব্য করেছিলেন৷
ছবি: picture alliance/dpa/TASS
9 ছবি1 | 9
এবার খেরসন এবং ঝাপোরিজ্ঝিয়ার সঙ্গেও ঠিক সেই একই কাজ করা হলো। বস্তুত, এর আগে চারদিন ধরে এই অঞ্চলগুলিকে গণভোট করা হয়েছে। তার প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে রাশিয়া। যদিও জাতিসংঘ, অ্যামেরিকা, ইউরোপ--কেউই ওই গণভোটকে স্বীকৃতি দেয়নি। রাশিয়ার কাজকেও তারা স্বীকৃতি দিচ্ছে না।
জরুরি বৈঠকে ইউক্রেন
শুক্রবার ক্রেমলিনে যখন অধিগ্রহণের অনুষ্ঠান হবে তখন জরুরি বৈঠকে বসছে ইউক্রেন। দেশের সেনাপ্রধান, রাজনীতিবিদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করবেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। কীভাবে ওই চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ার হাত থেকে বাঁচানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্ব নেতাদের কাছেও এবিষয়ে আবেদন জানিয়েছেন জেলেনস্কি।
বিশ্বের প্রতিক্রিয়া
মার্কিন কংগ্রেসে রাশিয়ার নতুন পদক্ষেপের নিন্দা করা হয়েছে। ঐক্যবদ্ধভাবে মার্কিন কংগ্রেস জানিয়েছে, তারা এই বিষয়টি সমর্থন করছে না। কোনোভাবেই রাশিয়া ইউক্রেনের অংশ অধিগ্রহণ করতে পারে না। ১২৪ বিলিয়ন ডলারের নতুন প্যাকেজের কথাও ঘোষণা করেছে অ্যামেরিকা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ব্যক্তিগতভাবে রাশিয়ার এই কাজের তীব্র নিন্দা করেছেন। রাশিয়া যাতে তাদের কাজ সফল না হয়, তার জন্য তিনি সার্বিকভাবে ইউক্রেনের পাশে আছেন বলে জানিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নও রাশিয়ার এই পদক্ষেপের নিন্দা করেছে।