চার বছরেও ছেলে হত্যার বিচার পায়নি সুদীপ্তের বাবা
৬ অক্টোবর ২০২১আজ ৬ অক্টোবর সুদীপ্ত হত্যার চার বছর৷ দিনটিকে স্বরণ করে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সুদীপ্তের বাবা বলেন, ‘‘রিফাত হত্যা বা নুসরাত হত্যা মামলার বিচার শেষ হয়েছে৷ আমার ছেলের মামলাটাও আলোড়ন সৃষ্টিকারী৷ আমি কখন ছেলে হত্যার বিচার পাব?''
চট্টগ্রামের ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাসকে ২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর সকালে দক্ষিণ নালাপাড়ার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয়৷ অনেকদিন পর গত ১ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুমসহ ২৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন(পিবিআই)৷
বাবা মেঘনাথ বিশ্বাস কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘‘আমার বয়স হয়ে গেছে, বিচার দেখে যেতে পারব বলে মনে হচ্ছে না৷ করোনার মধ্যে আদালত বন্ধ ছিল ৷ এরপর যতবার ডেট পড়েছে, গেছি এখনো অভিযোগ গঠন হয়নি ৷'' মামলাটি চালিয়ে নিতে পারবেন কি না, তা নিয়েও শঙ্কিত তিনি ৷
বেশিরভাগ আসামি জামিনে আছন এবং তারা মাঝেমাঝে লোক মারফত টেলিফোনে হুমকিও দেয় বলেও সুদীপ্তের বাবা জানান ৷
তিনি আরো বলেন, ‘‘অর্থাভাবে আইনজীবী দিতে পারিনি ৷ একজন আইনজীবী সহায়তা করছেন ৷ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যদি মামলা বিচার হয়, তাহলে হয়ত বিচারটা পেতে পারি৷''
ছেলে হারিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত সুদীপ্তের মা বাবা দুজনই৷ সুদীপ্তের মা অসুস্থ৷ সুদীপ্তের বাবা কষ্টের কথা জানাতে গিয়ে বললেন "অর্থবল বা প্রভাব প্রতিপত্তি কিছুই আমার নেই ৷ টিউশনি করে ৪৫ বছর যাবত আহার যোগাড় করছি, আর পারি না৷''
আগামী ১৩ অক্টোবর সুদীপ্ত হত্যামামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য আছে জানিয়ে সুদীপ্তর বাবার আইনজীবী শাহেদুল আজম শাকিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "দু'জন আসামি কারাগারে বাকিরা জামিন নিয়েছে৷ আর দু'জন আসামি পলাতক৷তারা আত্মসমর্পণ করছে না তাই তাদের বিষয়ে আদালতের আদেশের পর পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে ৷'' মামলায় অভিযোগ গঠনে সময় লাগতে পারে বলে জানান তিনি৷
বাবা মেঘনাথ বিশ্বাস বাদী হয়ে সদরঘাট থানায় অজ্ঞাতনামা সাত-আটজনকে আসামি করে যে হত্যা মামলা করেছিলেন, ঘটনার এক বছর পর তারই আবেদনে আদালত এর তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দিয়েছিল৷পিবিআইর দেয়া অভিযোগপত্রে আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাছুমকে হামলার ‘নির্দেশদাতা' ও আইনুল কাদের নিপুকে ‘নেতৃত্বদানকারী' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ আসামিদের মধ্যে ১৮ জন গ্রেপ্তার হয়েছিল৷ তাদের মধ্যে চারজন আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার পরে তাদের মধ্যে ১৬ জন জামিন পায়৷
২০১৯ সালের ১২ জুলাই গ্রেপ্তার মিজান হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে মাসুমের নাম আসায় ওই বছরের ৪ আগস্ট ঢাকা থেকে মাসুমকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই৷
তবে একই বছর ১৫ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে মাসুম ছাড়া পেলেও পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে জামিন আদেশ বাতিল করে আদালত৷
এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)