ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলাতেও জামিন পেয়েছেন৷ এখন তার মুক্তিতে আর আইনি বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী৷
বিজ্ঞাপন
ঢাকার ছয় নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান বুধবার সম্রাটের আবেদনের শুনানি করে তার জামিন মঞ্জুর করেন৷ এর আগে একই বিচারক দুই দফা এ মামলায় জামিন নাকচ করেছিলেন৷
এ মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আসামিপক্ষ সময়ের আবেদন করলে বিচারক আগামী ৯ জুন নতুন তারিখ ধার্য করেন৷
সম্রাটের বিরুদ্ধে থাকা চার মামলার মধ্যে অস্ত্র ও অর্থ পাচারের দুই মামলায় গত ১০ এপ্রিল এবং পরদিন মাদক মামলায় তাকে জামিন দেয় আদালত৷ এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেওয়া ছয় মাসের সাজাও অনেক আগেই শেষ হয়েছে৷ ফলে সম্রাটের মুক্তিতে এখন আর কোনো ‘আইনি বাধা নেই বলে তার আইনজীবী এহসানুল হক সমাজীর ভাষ্য৷
২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেন৷
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, সম্রাট বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত এই বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন৷ তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন বলেও অভিযোগ আছে৷ অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন৷
দুদকের সাফল্য-ব্যর্থতার খতিয়ান
২০০৪ সালে দুদক যাত্রা শুরু করে৷ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের ড. ইফতেখারুজ্জামানের দাবি, দুদক চুনোপুঁটিদের ধরে, রাঘব বোয়ালদের ধরে না৷ তবে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলমের দাবি, বিএনপিপন্থিরা এসব কথা বলেন৷
ছবি: bdnews24.com
দুদকের মামলায় খালেদা জিয়া কারাগারে
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টের দুই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে করা দুদকের মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার জজ আদালত৷ এরপর তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়৷ ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয়া হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A.M. Ahad
সাংসদ বদিকে কারাগারে প্রেরণ
২০০৮ ও ২০১৩ সালে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা সম্পদের বিবরণে মিথ্যা তথ্য দেয়া ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কক্সবাজারের সাংসদ আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে মামলা করে দুদক৷ এই মামলায় আত্মসমর্পণের পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল৷ তিন সপ্তাহ জেলে থাকার পর জামিন পান বদি৷ এরপর বিচার শেষে ২০১৬ সালে তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও দশ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়৷ সেবারও কদিন জেলে থেকে জামিন পান তিনি৷
ছবি: bdnews24
সচিবদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল
২০১৪ সালে দুদকের তদন্তে চার সচিব ও এক যুগ্ম-সচিবের ‘অবৈধ প্রক্রিয়ায়’ মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়৷ এরপর তাদের সনদ বাতিল করা হয়৷ তারা হলেন নিয়াজ উদ্দিন মিয়া (স্বাস্থ্য সচিব), এ কে এম আমির হোসেন (পিএসসির সচিব), মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান (বেসরকারিকরণ কমিশনের চেয়ারম্যান) এবং মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের দুই ওএসডি কর্মকর্তা মাসুদ সিদ্দিকী (সাবেক সচিব) ও আবুল কাসেম তালুকদার (সাবেক যুগ্ম সচিব)৷
ছবি: bdnews24.com
ফাঁদ মামলা
ঘুসখোর ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের হাতেনাতে ধরতে দুদক ফাঁদ পেতে থাকে৷ এভাবে ২০১৫ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ এরপর করোনার কারণে এমন অভিযান বন্ধ হয়ে যায়৷ ২০১৯ সালে নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ড. এস এম নাজমুল হককে (ছবি) ঘুস নেওয়ার সময় দুদক হাতেনাতে ধরে ফেলেছিল৷ এছাড়া সাব রেজিস্ট্রার, ভূমি কর্মকর্তা, সিটি কর্পোরেশনের উপ-কর কর্মকর্তা পর্যায়ের কর্মকর্তারাও এভাবে গ্রেপ্তার হন৷
ছবি: bdnews24
পুলিশ ও দুদকের সাবেক কর্মকর্তার জেল
এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর নির্যাতন চালানোর অভিযোগে ২০১৯ সালে পুলিশের তৎকালীন ডিআইজি মিজানুর রহমানকে (ডানে) বরখাস্ত করা হয়৷ এর চার মাস পর তার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক৷ সেই দায়িত্ব পেয়েছিলেন দুদকের তৎকালীন পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির৷ অনুসন্ধান চলার মধ্যেই মিজান দাবি করেন, তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুস নিয়েছেন বাছির৷ বুধবার মিজানের তিন বছরের কারাদণ্ড হয়৷ আর দুটি মামলার বাছিরের আট বছরের জেল হয়৷
কারাগারে ডেসটিনির এমডি
সম্পদের হিসাব জমা না দেওয়ার অভিযোগে দুদকের করা মামলায় ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনকে ২০২০ সালে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়৷ মাল্টিলেভেল মার্কেটিংয়ের নামে ২০ লাখের বেশি মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১২ সালে মামলা করেছিল দুদক৷ পরে ওই বছরের অক্টোবরে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন রফিকুল আমীনসহ কোম্পানির অধিকাংশ শীর্ষ কর্মকর্তা৷
ছবি: bdnews24.com
বেসিক ব্যাংকের বাচ্চুর দুর্নীতি পায়নি দুদক
জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ শেখ আবদুল হাই বাচ্চু বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকার সময় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছিল৷ পরে চাপের মুখে ২০১৪ সালে তিনি পদত্যাগ করেন৷ অনুসন্ধানের পর ২০১৫ সালে ব্যাংকের ১৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক৷ কিন্তু এর মধ্যে বাচ্চুর নাম ছিল না৷ অথচ ২০১৬ সালে অর্থমন্ত্রী আব্দুল মুহিত দুটি সংস্থার প্রতিবেদনে অভিযোগের সঙ্গে বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন৷
ছবি: bdnews24.com
হলমার্ক ঋণ কেলেঙ্কারি
২০১০ থেকে ২০১২ সালের মার্চ পর্যন্ত হলমার্ক গ্রুপ সোনালী ব্যাংক থেকে প্রায় ২,৬০০ কোটি টাকা সরায় বলে অভিযোগ ওঠে৷ গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তা আমলে নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক৷ তারা ৩৮টি মামলা করে৷ বিচার প্রক্রিয়া এখনো চলছে৷ হল -মার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, এমডি তানভীর মাহমুদ এখন আটক আছেন৷ এর মধ্যে ২০১৮ সালে দুদকে সম্পদের হিসাব দাখিল না করায় জেসমিন ইসলামের তিন বছরের জেল হয়েছে৷
ছবি: DW
সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডির কারাদণ্ড
২০১১ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের হোটেল শেরাটন শাখা থেকে ডিএন স্পোর্টসের নামে ঋণ নিয়ে এক কোটি ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে৷ এই ঘটনার তদন্ত করে ২০১৪ সালে ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়৷ এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের তৎকালীন এমডি হুমায়ুন কবীরও ছিলেন৷ গত ডিসেম্বরে কবীরসহ ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়৷ হল-মার্ক কেলেঙ্কারিতে দায়ের করা দুদকের বিভিন্ন মামলাতেও আসামি হুমায়ুন কবীর৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Nabil
ব্যাংক কর্মকর্তার যাবজ্জীবন
ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের দুই কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৩ সালে মামলা করে দুদক৷ বিচার শেষে ২০১৬ সালে ব্যাংকের এক কর্মকর্তাসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন আদালত৷ শাস্তিপ্রাপ্তরা হলেন সোনালী ব্যাংকের সাবেক সহকারী ব্যবস্থাপক সাইফুল হাসান, প্যারাগন নিট কম্পোজিট লিমিটেডের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন ও পরিচালক সাইফুল ইসলাম৷ রায়ের সময় সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা পলাতক ছিলেন৷
ছবি: Felix Kästle/dpa/picture-alliance
বিনা দোষে জেল
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের এক মামলায় ২০১৬ সালে পাটকল শ্রমিক জাহালমকে (বামে) গ্রেপ্তার করা হয়েছিল৷ মামলায় অভিযুক্তের নামের সাথে মিল না থাকলেও তাকে সাজা দেয়া হয়েছিল৷ ঐ ঘটনা গণমাধ্যমে আসার পর তিন বছর জেল খাটার পর হাইকোর্টের নির্দেশে জাহালম মুক্তি পেয়েছিলেন৷ এছাড়া দুদকের ভুল তদন্তের কারণে ১৫ বছরের কারাদণ্ড পাওয়া নিরপরাধ মোহাম্মদ কামরুল ইসলামের সাজা গতবছর জানুয়ারিতে বাতিল করে দিয়েছিল হাইকোর্ট৷
ছবি: dnews24.com
বিসমিল্লাহ গ্রুপ
একাধিক ব্যাংক থেকে এক হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি, মুদ্রা পাচার ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৩ সালে বিসমিল্লাহ গ্রুপের চেয়ারম্যান নওরিন হাসিব, ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাজা সোলায়মান চৌধুরীসহ ৫৪ জনের বিরুদ্ধে এক ডজন মামলা করেছিল দুদক৷ এর মধ্যে এক মামলায় ২০১৮ সালে খাজা সোলেমান চৌধুরী, নওরিন হাসিবসহ নয়জনকে দশ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত৷
ছবি: YAY Images/imago images
অর্থ পাচার বিষয়ে দুদকের ভূমিকায় আদালতের অসন্তোষ
২০২০ সালে অর্থ পাচার সংক্রান্ত দুদকের এক প্রতিবেদন দেখে হাইকোর্ট অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল৷ জ্যেষ্ঠ বিচারক নজরুল ইসলাম তালুকদার সেইসময় বলেছিলেন, ‘‘বিদেশে এত লোক টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছে৷ ক্যানাডা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে কারা নিয়ে যাচ্ছে, তাদের একজনের নামও পাননি! উই ওয়ান্ট টু সি দুদক কয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে৷ আপনারা অন্ততপক্ষে এটা দেখান যে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে৷’’
ছবি: bdnews24.com
এ ব্যাপারে দুদক আইনজীবীর বক্তব্য
বাংলাদেশের কে কত টাকা পাচার করেছে- হাইকোর্ট জানতে চাওয়ার নয় মাস পর গত ডিসেম্বরে কর ফাঁকি সংক্রান্ত পানামা ও প্যারাডাইস কেলেঙ্কারিতে উঠে আসা বাংলাদেশের ৪৩ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা দিয়েছিল দুদক৷ সেই সময় দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছিলেন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংশোধন হওয়ায় কেবল ঘুস ও দুর্নীতি থেকে উদ্ভূত (সরকারি কর্মচারীসংশ্লিষ্ট) অর্থ পাচারের অভিযোগ দুদক কর্তৃক অনুসন্ধানযোগ্য৷
ছবি: DW
কোকোর টাকা ফিরিয়ে আনা?
২০১২ ও ২০১৩ সালে তিন দফায় খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর বিদেশে পাচার করা অর্থ থেকে প্রায় সাড়ে ২১ কোটি টাকা দেশে ফেরতে আনার কথা জানিয়েছিল দুদক৷ সেই সময় বিএনপির তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, কোকো ও বিএনপিকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই কথিত পাচার করা অর্থ ফেরত আনার কথা বলা হচ্ছে৷
ছবি: STRDEL/AFP/Getty Images
দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচক ২০০৪-এ বিশ্বের ১৪৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ও হাইতি যৌথভাবে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ বলে বিবেচিত হয়েছিল৷ আর ২০২২ সালের সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ আছে ১৪৭ নম্বরে৷ ২০২১ সালেও একই অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ৷
ছবি: DW
রাঘব বোয়ালদের ধরা হচ্ছে না?
সম্প্রতি রাঘব বোয়ালদের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে চাকরি হারিয়েছেন দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন (ছবি)৷ টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলছেন, ‘‘রাঘব বোয়ালদের ধরতে গেলে চাকরি হারাতে হয়, যা দুদক গঠনের উদ্দেশ্যের সম্পূর্ণ বিপরীত৷’’ তিনি বলেন, ‘‘দুদক যে উদ্দেশ্যে গঠন করা হয়েছিল তা সফল হয়নি৷’’ তবে দুদকের আইনজীবী আ্যাডভোকেট খুরশীদ আলমের দাবি, ‘‘এসব কথা বলছেন বিএনপিপন্থিরা৷’’
ছবি: Privat
সাজার হার কেমন?
দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ দাবি করেন, ‘‘আমাদের মামলায় শাস্তি পাওয়ার হার শতকরা ৬০ থেকে ৭০ ভাগ৷ ভবিষ্যতে এটা আরো বাড়বে৷ কারণ দুদকের তদন্তে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে৷ ফরেনসিক ল্যাব করা হচ্ছে৷ ফলে তদন্তে দক্ষতার যে ঘাটতি আছে, তা অনেকটা দূর হবে৷’’
ছবি: bdnews24.com
18 ছবি1 | 18
তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি ও উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন এবং বাড়ি নির্মাণ করেছেন৷ এ ছাড়া তার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য৷
মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম৷ এরপর গত ২২ মার্চ অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য মামলাটি ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে পাঠানো হয়৷
২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে আত্মগোপনে চলে যান ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট৷
এরপর ৭ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। সেদিন বিকালে সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে কাকরাইলের ভূইয়া ট্রেড সেন্টারে তার কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়৷
প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অভিযান শেষে গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল, ১১৬০টি ইয়াবা, ১৯ বোতল বিদেশি মদ, দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া এবং ‘নির্যাতন করার' বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পাওয়ার কথা জানানো হয় র্যাবের পক্ষ থেকে৷ ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ার কারণে সম্রাটকে তাৎক্ষণিকভাবে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত৷ এছাড়া ঢাকার রমনা থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা করা হয়৷
রমনা থানার অস্ত্র মামলায় ওই বছর ৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ৷ ১২ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করে দুদক৷
সম্রাটের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মামলা হয় ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর৷ গত ৯ ডিসেম্বর মাদক মামলায় সম্রাট ও সহযোগী আরমানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে র্যাব৷
এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
২০১৯ সালের ছবিঘর দেখুন...
তাদের ঘরে এত টাকা!
ঢাকার গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের দুই নেতার বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ, নগদ টাকা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেছে র্যাব৷ মধ্যমসারির নেতাদের বাড়ি থেকে এসব উদ্ধারের ঘটনা সাড়া ফেলেছে৷ পুরো অভিযান দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
বিস্ময়কর
ঢাকার গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের নেতা দুই ভাই, তাদের এক কর্মচারী ও এক বন্ধুর বাসায় অভিযান চালিয়ে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা, আট কেজি সোনা এবং ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
কড়া অভিযান
থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনু ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপন ভূঁইয়ার বাসায় মঙ্গলবার অভিযান চালায় র্যাব৷ এসময় তাদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা যায়৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
এত সোনা!
এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়ার বাসায় অভিযান চালিয়ে ৭২০ ভরি সোনার গয়না উদ্ধার করা হয়েছে৷ র্যাব বলছে, টাকা রাখার জায়গা হতো না বলে টাকার একটি অংশ সোনায় রূপান্তর করেন তারা৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
টাকা আর টাকা
আওয়ামী লীগের এই দুই নেতা, তাদের এক কর্মচারী ও এক বন্ধুর বাসায় অভিযান চালিয়ে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে র্যাব৷ এসব টাকা ক্যাসিনো থেকে আয় হতো বলে দাবি করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
আছে অস্ত্রও
এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়ার বাসা থেকে টাকা, স্বর্ণালংকারের পাশাপাশি দুটি পিস্তল, দুটি এয়ারগান এবং একটি শটগানও উদ্ধার করা হয়েছে৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
টাকা আসে ক্যাসিনো থেকে
গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনু ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপন ভূঁইয়ার বাসায় অভিযান শেষে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সফিউল্লাহ বুলবুল জানান, ক্যাসিনো থেকে আয়ের টাকা এনামুল বাসায় সিন্দুকে ভরে রাখতেন৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
টাকা রাখতে নতুন সিন্দুক
এনামুলের ভাই রুপন ইংলিশ রোড থেকে পাঁচটি সিন্দুক কিনেছেন এমন খবর পেয়ে দুই ভাইয়ের বিষয়ে খোঁজ শুরু করে র্যাব৷ তাদের বাসায় অভিযান চালিয়ে পাওয়া যায় তিনটি সিন্দুক৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
বস্তাভর্তি টাকা
গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনুর কর্মচারী আবুল কালামের নারিন্দার বাসা থেকে জব্দ করা টাকা বস্তায় ভরে নিয়ে যায় র্যাব৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
তার বাড়িতেও এত টাকা!
গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনুর কর্মচারী আবুল কালামের নারিন্দার বাসার সিন্দুকে পাওয়া যায় ২ কোটি টাকা ও একটি পিস্তল৷
ছবি: bdnews24.com/A. Al Momin
পালিয়েছেন তারা
র্যাব বলছে, এনামুল সপ্তাহ খানেক আগে থাইল্যান্ডে চলে গেছেন৷ তার ভাই রুপনেরও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি৷ পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তাদের অন্তত ১৫টি বাড়ি রয়েছে৷