তরুণ গবেষক ড. অনিমেশ কুমার গাইন বন্যা ঝুঁকি ও পানি সংকট নিরসন বিষয়ে গবেষণার জন্য আউটস্ট্যান্ডিং ইয়ং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড ২০১৬ অর্জন করেছেন৷ তিনি এসেছিলেন ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগে৷ সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অমৃতা পারভেজ৷
খুলনার সিবসা নদীছবি: Imago/Bluegreen Pictures
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলে: আপনার বেড়ে ওঠা সুন্দরবনের খুব কাছে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সুন্দরবনে কী ধরনের প্রভাব ও পরিবর্তন আপনি লক্ষ্য করেছেন?
ড. অনিমেশ কুমার গাইন: আমার বাড়ি সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলায়৷ মনুষ্যসৃষ্ট এবং প্রাকৃতিক দুই ধরনের পরিবর্তন আমি লক্ষ্য করেছি৷ সম্প্রতি ঘন ঘন জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে৷ আইলা এবং সিডর তার বড় উদাহরণ৷ এর ফলে সেখানকার মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে৷ আর্থসামাজিক পরিবর্তন হয়েছে৷ মনুষ্যসৃষ্ট যে পরিবর্তনগুলো ঘটেছে, তার মধ্যে বেশি করে চিংড়ি চাষ হচ্ছে, যার ফলে পানির লবণাক্ততা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে৷
চিংড়ি চাষ বাদে আর কী কী মনুষ্য আচরণ এখানে প্রভাব ফেলেছে?
‘ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের সতর্কতা সংকেত আরও উন্নত করতে হবে’
This browser does not support the audio element.
এখানকার মানুষ জমি ব্যবহারের জন্য সুন্দরবনের অনেক গাছ কেটে ফেলেছে৷ চাষ বাসের কারণেও অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে৷ তবে বাঁধ দেয়ার ফলে জলাবদ্ধতার কারণে উল্লেখযোগ্য হারে পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে৷
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ ঝুঁকির মুখে রয়েছে, আপনার গবেষণার মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার কোনো উপায় কি বের করার চেষ্টা করছেন?
আপনি ঠিকই বলেছেন৷ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ ঝুঁকির মুখে রয়েছে৷ বাংলাদেশের মানুষ এরইমধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়েছে৷ তবে এদেশের উপকূলীয় মানুষ এ ধরনের দুর্যোগের সাথে পরিচিত হওয়ায় তারা এর সঙ্গে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে পারে৷ তবে যেটা জরুরি সেটা হলো ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের সতর্কতা সংকেত আরও উন্নত করা, যাতে আগে থেকে সেখানকার মানুষ সংকেত পায় এবং সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে৷ এর পাশাপাশি বাংলাদেশের ৫৪টি নদী, যাদের উৎস প্রতিবেশি দেশগুলোতে৷ সেজন্য ঐ দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বিত সমঝোতার মাধ্যমে পানি চুক্তি হওয়া দরকার৷ যেটা হলে পানি সংক্রান্ত সমস্যাগুলো মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে৷ বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদি নীতিমালা প্রণয়নে কাজ করছি আমি৷
কোন গবেষণার জন্য আপনি ইজিইউ পুরস্কারটি পেয়েছেন? এই পুরস্কার আপনাকে কী ধরনের অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে?
পানির উপর হচ্ছে সবজি চাষ
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রামের বেশিরভাগই বছরের পুরোটা সময় জলাবদ্ধ থাকে৷ এ সব গ্রামের মানুষেরা ভাসমান পদ্ধতিতে গাছের চারা এবং সবজি উৎপাদন করে কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছেন৷
ছবি: DW
কৃষকের কৌশল
বছর জুড়েই জলাবদ্ধতা, সাথে কচুরিপানার মিছিল৷ ফলে পিরোজপুরের নাজিরপুর এলাকার নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক উপায়ে কৃষিকাজ কার্যত অসম্ভব৷ তবে বৈরী এই পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করে নাজিরপুরের কৃষকরা নিজেদের কৌশলে চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষিকাজ৷
ছবি: DW
ভাসমান কৃষিক্ষেত্র
নাজিরপুরের মুগাঝোর এলাকার জলাভূমিতে ভাসমান কৃষিক্ষিত্র৷ নিজেদের উদ্ভাবিত ‘ধাপ’ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করেন এ সব এলাকার মানুষরা৷ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ‘কৃষি ঐতিহ্য অঞ্চল’ হিসেবেও স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে নাজিরপুরে উদ্ভাবিত ভাসমান পদ্ধতির এ চাষাবাদ৷
ছবি: DW
যেভাবে তৈরি হয় ধাপ
নাজিরপুরের পানিতে ডোবা নিম্নাঞ্চল কচুরিপানা, দুলালীলতা, শ্যাওলা ও বিভিন্ন জল সহিষ্ণু ঘাসসহ নানান জলজ উদ্ভিদে ভরপুর৷ এ সব জলজ উদ্ভিদকে স্তূপ করে পচিয়ে তারা তৈরি করেন ভাসমান এক ধরণের ধাপ৷ এই ভাসমান ধাপের উপরেই চাষাবাদের এক নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন তাঁরা৷
ছবি: DW
পুরনো ধারা
কৃষি জমির বিকল্প হিসেবে জলাশয়ে ভাসমান চাষাবাদ দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে এ অঞ্চলে৷ কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, এ পদ্ধতিতে কৃষির উৎপাদনশীলতা জমির চেয়ে ১০ গুণ বেশি৷
ছবি: DW
জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ
ধাপ পদ্ধতির এ চাষাবাদ হয় সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে৷ রাসায়নিক সারের ব্যবহার নেই বললেই চলে৷ ফলে উৎপাদন খরচও কম এবং স্বাস্থ্যকর৷
ছবি: DW
ভাসমান বীজতলা
জলাভূমিতে প্রথমে কচুরিপানা, শ্যাওলা ও বিভিন্ন জলজ ঘাস স্তরে স্তরে সাজিয়ে দুই ফুট পুরু ধাপ বা ভাসমান বীজতলা তৈরি করা হয়৷ এগুলো কয়েকদিন ধরে পচানো হয়৷ একেকটি ভাসমান ধাপ ৫০-৬০ মিটার লম্বা ও দেড় মিটার চওড়া হয়৷
ছবি: DW
চাষ করা যায় অনেককিছু
ভাসমান এ সব ধাপে সাধারণত লাউ, সিম, বেগুন, বরবটি, করলা, পেঁপে, টমেটো, শশা, পুঁইশাক, মিষ্টি কুমড়া, চালকুমড়া, মরিচ ইত্যাদি শাকসবজি ও মশলার চারা উৎপাদন করে থাকেন কৃষকরা৷ অনেক কৃষক আবার লাল শাক, ঢেঁড়স, হলুদ ইত্যাদিও চাষ করে থাকেন৷
ছবি: DW
নেই কোনো কৃষিঋণের ব্যবস্থা
মুগারঝোরের চাষীদের জন্য কৃষি ঋণের কোনো ব্যবস্থা নেই৷ স্থানীয় মহাজনদের কাছ থেকে চরা হারে সুদ নিয়ে গরিব এ চাষীরা তাঁদের কৃষি কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন৷ স্থানীয় কৃষক আশুতোষ জানান, সরকার সহজশর্তে ঋণ দিলে তাঁরা ভাসমান এ চাষাবাদের আরও বিস্তৃতি ঘটাতে পারবেন৷
ছবি: DW
বিক্রি হয় কচুরিপানা
নাজিরপুরের মুগারঝোরে নৌকা বোঝাই কচুরিপানা নিয়ে ক্রেতার খোঁজে এক বিক্রেতা৷ এক নৌকা কচুরিপানা সাধারণত বিক্রি হয় ২-৩ হাজার টাকায়৷ এছাড়া নাজিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় এসব কচুরিপানার হাটও বসে৷
ছবি: DW
9 ছবি1 | 9
ইউরোপিয়ান জিয়োসায়েন্সেস ইউনিয়ন ইজিইউ কর্তৃক প্রদত্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিভাগে ডিভিশন আউটস্ট্যান্ডিং ইয়ং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড ২০১৬ অর্জন করেছি৷ এই পুরস্কারটি দেয়া হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিষয়ে আমার গবেষণা কাজের অবদানের জন্য৷ আমার উদ্ভাবনী দিক হলো অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি এবং স্থানিক বিশ্লেষণ ব্যবহার করে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সমন্বিত ঝুঁকি মূল্যায়ন৷ সাধারণত গবেষণা করা হয় প্রাকৃতিক ও মনুষ্য সৃষ্ট বিষয়গুলোর যে কোনো একটি নিয়ে৷ কিন্তু আমি দু'টোর সমন্বয়ে উপাত্ত বিশ্লেষণ করেছি৷ আমার গবেষণার প্রধান বিষয় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বন্যা বিপত্তি ও পানি সংকট এবং সমাজ ও পরিবেশের ওপর তার বিরূপ প্রভাব৷
গবেষণা নিয়েভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?
আমার মূল কাজ হবে পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে৷ ভবিষ্যতে ‘ওয়ার্টার এনার্জি ফুড নেক্সাস' নিয়ে কাজ করবো৷ অর্থাৎ পানি, শক্তি ও খাদ্যের সমন্বিত বিশ্লেষণ৷ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এসডিজি-তে জাতিসংঘ যে লক্ষ্যগুলো প্রণয়ন করেছে ২০১৬ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে, সেগুলো পূরণে কাজ করার পরিকল্পনা আছে৷ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ঝুঁকির পাশাপাশি বিস্তৃত পরিসরে সমন্বিত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং পানি-শক্তি-খাদ্য নিরাপত্তা নেক্সাসসহ অন্যান্য ক্রস কাটিং বিষয়ে গবেষণা করছি আমি৷
অনিমেশ কুমার গাইন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিবেশ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে পানি সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন৷ পরবর্তীতে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে যৌথভাবে ইটালির কা'ফস্কারি বিশ্ববিদ্যালয়, ভেনিস ও জার্মানির জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন৷ বর্তমানে বার্লিনের পোস্টডামে জিএফজেড-জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিয়োসায়েন্সে কর্মরত৷ একই সঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক মর্যাদাসম্পন্ন আলেকজান্ডার ফন হুমবোলট ফেলো হিসেবে গবেষণা করছেন৷
বঙ্গোপসাগরের উপকূল ঘেঁষে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বা শ্বাসমূলীয় বন সুন্দরবন৷ বাংলাদেশ ও ভারতজুড়ে বিস্তৃত এ বনের মোট আয়তন প্রায় ১০,০০০ বর্গকিলোমিটার৷
ছবি: DW/M, Mamun
বিশ্ব ঐতিহ্য
বাংলাদেশে সুন্দরবনের আয়তন প্রায় ৬০১৭ কিলোমিটার৷ আয়তনের প্রায় ৭০ ভাগ স্থল আর ৩০ ভাগ জল৷ পুরো সুন্দরবনের ভেতরে জালের মতো অসংখ্য নদী আর খাল রয়েছে৷ জীববৈচিত্রে ভরপুর সুন্দরবনকে ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷ প্রায় ৪০০ প্রজাতির পাখির বসবাস এই বনে৷
ছবি: DW/M, Mamun
বাঘের পায়ের ছাপ
সুন্দরবনের কটকা বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য৷ সেখানেই দেখা মেলে বেঙ্গল টাইগারের পায়ের ছাপ৷ এ বনের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ডোরাকাটা বাঘ৷ জলবায়ুর পরিবর্তন, খাদ্যের অভাব আর চোরা শিকারসহ নানা কারণে দিন দিন এখানে কমে আসছে বাঘের সংখ্যা৷ বন বিভাগের মতে, সুন্দরবনে বর্তমানের বাঘের আনুমানিক সংখ্যা ৫০০৷ ২০০৪ সালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বাঘশুমারি অনুযায়ী এ সংখ্যা ছিল ৪৪০৷
ছবি: DW/M, Mamun
অনিন্দ্য সুন্দর চিত্রা হরিণ
সুন্দরবনের কটকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে চিত্রা হরিণ৷ সুন্দরবনের সর্বত্রই এ প্রাণীটির দেখা মেলে৷ চিত্রা আর মায়া – এ দুই ধরণের হরিণ আছে সুন্দরবনে৷ তবে সবচেয়ে বেশি আছে চিত্রা হরিণ৷ ৩০ হাজারেরও বেশি চিত্রা হরিণের বসবাস সুন্দরবনে৷
ছবি: DW/M, Mamun
যার নামে সুন্দরবন
সুন্দরবনের অধিকাংশ গাছই চির সবুজ ম্যানগ্রোভ শ্রেণির৷ এ বনের প্রধান বৃক্ষ সুন্দরী৷ এ গাছের নামেই বনের নামকরণ৷ এছাড়া এই বনে ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদ আছেস যার মধ্যে ১৭টি ফার্ন জাতীয়, ৮৭টি একবীজপত্রী ও ২৩০ প্রজাতি দ্বিবীজপত্রী৷ সারা পৃথিবীজুড়ে যে ৫০ প্রজাতির প্রকৃত ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ আছে, তার ৩৫ প্রজাতিই পাওয়া যায় বাংলাদেশের সুন্দরবনে৷
ছবি: DW/M, Mamun
পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ
প্রতিবছর প্রচুর পর্যটক আসেন সুন্দরবন ভ্রমণে৷ ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১ লাখ ২০ হাজার ৪১৪ জন পর্যটক বেড়াতে এসেছেন এখানে, যাঁদের মধ্যে বিদেশি পর্যটক ৩ হাজার ৮৫৪ জন৷
ছবি: DW/M, Mamun
বিচিত্র সাপ
শরণখোলা রেঞ্জের একটি জঙ্গলে গ্রিন ক্যাট স্নেক বা সবুজ ফনিমনসা সাপ৷ কয়েক প্রজাতির সামুদ্রিক সাপ ছাড়াও সুন্দরবনে দেখা যায় কিং কোবরা বা রাজগোখরা, রাসেলস ভাইপার, পিট ভাইপার, পাইথন, ব্যান্ডেড ক্রেইড ইত্যাদি৷
ছবি: DW/M, Mamun
কুমির দর্শন
জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ – সুন্দরন নিয়ে এরকম প্রবাদ বহুকালের৷ সুন্দরবনের হারবাড়িয়া এলাকার একটি খালে লোনা জলের এই কুমিরটিকে দেখা গিয়েছিল৷ সুন্দরবনের মহা বিপন্ন এ প্রাণীটি আকারে সাত মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়৷ লোনা পানির কুমিরের গড় আয়ু ১০০ বছরের মতো৷
ছবি: DW/M, Mamun
হরিণের বন্ধু
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে তোলা বানরের ছবি৷ সুন্দরবনে চিত্রা হরিণের পর সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এ প্রাণীটি৷ সুন্দরবনে বানরকে হরিণের সুহৃদ বলা হয়৷ গাছের ডাল ভেঙ্গে হরিণকে পাতা খেতে বানর সহায়তা করে থাকে৷ এছাড়া বাঘের আগমনের খবরটিও সবার আগে হরিণকে দেয় বানর৷
ছবি: DW/M, Mamun
জঙ্গল উপভোগ
সুন্দরবনের কটকা অভয়ারণ্যের ছোট খালে ঘুরে জঙ্গল উপভোগ করছেন পর্যটকরা৷ সকাল এবং বিকেলে এসব খালে বেড়ানোর সময় অনেক বন্য প্রাণীর দেখা মেলে৷
ছবি: DW/M, Mamun
ভ্রমণতরী
সুন্দরবনের গহীন অরণ্যে একটি বেসরকারি সংস্থার ভ্রমণতরী৷ সুন্দরবন দেখতে আসা বিদেশি পর্যটকদের বেশির ভাগই আসেন বেসরকারি ভ্রমণ সংস্থাগুলোর সহায়তায়৷ এক্ষেত্রে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও উদ্যোগেরও অভাব অনেক৷
ছবি: DW/M, Mamun
পণ্যবাহী জাহাজের কারণে ডলফিনের মৃত্যু
সুন্দরবনের ভেতরে জঙ্গল ঘেঁষে চলাচল করছে বড় বড় পণ্যবাহী জাহাজ৷ এ সব জাহাজের উচ্চ শব্দ যেমন বন্যপ্রাণীদের বিরক্তির কারণ হয়, তেমনি এসব জাহাজের সৃষ্ট ঢেউ ভাঙন ধরায় সুন্দরবনে৷ এ সব জাহাজের প্রোপেলারের আঘাতে প্রায়ই ডলফিনেরও মৃত্যু ঘটে৷
ছবি: DW/M, Mamun
অপরূপ সূর্যাস্ত
সুন্দরবনের কটকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে সূর্যাস্তের ছবি তুলছেন এক পর্যটক৷
ছবি: DW/M, Mamun
রামপাল কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
সুন্দরবনের কোল ঘেঁষেই এগিয়ে চলছে রামপাল কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ৷ এতে মারাত্মক পরিবেশ দূষণ হয় বলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সংরক্ষিত বনভূমি ও মানব বসতির ১৫-২০ কিলোমিটারের মধ্যে এ ধরণের বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অনুমোদন দেয় না৷ অথচ এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সুন্দরবনের সংরক্ষিত ও স্পর্শকাতর স্থানের দূরত্ব মাত্র চার কিলোমিটার৷