1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ন্যানো গাড়ি দিয়ে চিকিৎসা!

২ আগস্ট ২০১৭

চিকিৎসাশাস্ত্রের অভাবনীয় উন্নতি কার মনে না বিস্ময় জাগায়৷ কিন্তু শরীরের মধ্যে অতি ক্ষুদ্র যন্ত্র প্রবেশ করিয়ে কোষের জটিল চিকিৎসার কথা শুনলে কল্পবিজ্ঞান কাহিনি মনে হতে পারে৷ নেদারল্যান্ডসের এক উদ্ভাবক সেই পথেই এগোচ্ছেন৷

নোবেলজয়ী রসায়নবিদ বেন ফেরিংগাছবি: picture alliance/University of Groningen/J. Van Kooten

নেদারল্যান্ডসের খ্রোনিঙেন শহর সাইকেল চালকদের স্বর্গ৷ তবে সেখানে অন্য এক যানকে বশে আনার চেষ্টা চলছে৷ এটি একটি চার চাকার যান৷ নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন৷ তবে ভাগ্যবশত এমন একজনকে পাওয়া গেল যিনি এ বিষয়ে পারদর্শী৷ বেন ফেরিংগা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিকাল ইনস্টিটিউটে কাজ করেন৷ তিনি অল-হুইল ড্রাইভ গাড়ি তৈরি করেছেন, তবে সেটি কয়েক কোটি গুণ ছোট৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা অসাধারণ৷ কিন্তু আমাদের গাড়ির এটা বড় মডেল৷ কারণ আমাদের গাড়টি এক মিটারের একশ কোটি গুণ ছোট মাপের৷ তবে এখানে চারটি চাকা দেখা যাচ্ছে, আমাদের গাড়ির ক্ষেত্রে যা পোর-হুইল ড্রাইভ৷ চারটি ইঞ্জিন একই দিকে আবর্তিত হয়৷ মোটামুটি এভাবেই গাড়িটি চলে৷ তবে পুরোপুরি সোজা রাখা বেশ কঠিন৷ বেশ বেগ পেতে হয়৷’’

শরীরের মধ্যে ন্যানো গাড়ি!

04:24

This browser does not support the video element.

বেন ফেরিংগা-র অতি ক্ষুদ্র ন্যানো গাড়ি শরীরের ধমনী বা শিরার মধ্য দিয়ে ওষুধ নিয়ে যাবে অথবা কোনো কোষের চিকিৎসা করবে৷ সে কারণেই এটি এত ক্ষুদ্র৷ এমন মাইক্রোস্কোপের মাধ্যমে তা দেখা যায়, যা পরমাণুকেও দৃশ্যমান করে তোলে৷

এই ন্যানো গাড়ি যখন প্রথমবার চালানো হলো, তখন তার প্রমাণ পাওয়া গেল৷ একটি অ্যানিমেশন দেখিয়ে দিচ্ছে, কীভাবে আলো অণুকে চালিত করে৷ কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল গাড়িটি চালানো৷ বেন ফেরিংগা বলেন, ‘‘এই গাড়ি রাস্তায় চললে চাকাগুলি একই দিকে এগিয়ে যাবে৷ তা না হলে গাড়ি এগোবেই না৷ কিন্তু চালকের আসনে বসলে একটি চাকা ঘড়ির কাঁটার দিকে, অন্যটি বিপরীতে ঘুরবে৷ তাই এমন চাকা তৈরি করতে হয়েছে, যা বিপরীত দিকে ঘুরবে৷ আণবিক উপকরণ দিয়ে আমাদের সবকিছু ডিজাইন করতে হয়েছে৷ সেই মাপেই সব জোড়া দিয়ে অণুর মাপে তৈরি করতে হয়েছে৷’’

ল্যাবে তাঁর টিম অণুগুলি জোড়া দেন৷ ১০ বছর ধরে তিলে তিলে এই গাড়ি তৈরি হয়েছে৷ কিন্তু সেই উদ্যোগ সফল হয়েছে৷ এর জন্য ২০১৬ সালে বেন ফেরিংগা নোবেল পুরস্কার পান৷

আস্ত সাবমেরিন বা মানুষকে ক্ষুদ্র রূপ দেওয়ার আইডিয়া ‘ফ্যান্টাস্টিক ভয়েজ’ ছায়াছবিতে প্রথমবার দেখা গিয়েছিল৷ ভবিষ্যতেও তা বাস্তবে পরিণত করার সম্ভাবনা নেই৷ তা সত্ত্বেও বেন ফেরিংগা নিশ্চিত, যে তাঁর ন্যানো গাড়ি রক্ত চলাচলের ধমনী বা শিরার মধ্যে চলাচল করবে৷

সার্জেন হিসেবে খো ফান ডাম এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করতে চান৷ বিশেষ করে আলো যেভাবে অণুকে উদ্দীপিত করছে, সেই বিষয়টা তাঁর মনে ধরেছে৷ ন্যানো গাড়ি কাজে লাগিয়ে তিনি টিউমার কোষে কোনো পদার্থ পৌঁছে দিতে এবং তারপর আলোর সাহায্যে তা সক্রিয় করতে চান৷ ফান ডাম বলেন, ‘‘আমাদের কাছে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করার প্রক্রিয়া রয়েছে৷ এটা ক্ষুদ্র ন্যানো গাড়ির ম্যাপ৷ সে টিউমারের কাছে যাবে৷ পৌঁছালে আমরা সেটি সক্রিয় করে দেবো, তারপর সে তার কাজ করবে৷ আমরা ইচ্ছামতো চালনা করবো৷ যেমন গাড়ি কোষের সঙ্গে যুক্ত হলে তখন তারা স্বাধীনভাবে কাজ করবে৷ হয়তো ইমিউন সিস্টেম চালু করবে৷ গাড়ি আর শুধু পরিবহণের বাহন হবে না, তার একটা বিশেষ দায়িত্ব থাকবে৷’’

দু'বছর ধরে ন্যানো গাড়ির উদ্ভাবক ও এই সার্জেন বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে এ নিয়ে কাজ করছেন৷ তাঁদের দু'জনের একই স্বপ্ন৷ ইনস্টিটিউটের সামনে ন্যানো গাড়ির বড় মডেল শোভা পাচ্ছে৷ তবে গবেষণার সময় বেন ফেরিংগা নোবেল পুরস্কার নিয়ে মাথা ঘামাননি৷

আন্দ্রেয়াস নয়হাউস/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ