শরীরবৃত্ত ও ভেষজবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার জয় করলেন জেফ্রি সি হল, মাইকেল রসব্যাশ ও মাইকেল জে ইয়ং৷ শরীরের ‘বায়োলজিক্যাল রিদম’ নির্ধারণ করে এমন একটি জিন শনাক্ত করে এ পুরস্কার পেলেন তাঁরা৷
বিজ্ঞাপন
ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের নোবেল অ্যাসেম্বলি হল, রসব্যাশ ও ইয়ং-কে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করলেন, কেননা, যে মলিকিউলার মেকানিজম শরীরের ‘বায়োলজিক্যাল ক্লক’ নিয়ন্ত্রণ করে, এই তিন গবেষক তা আবিষ্কার করেছেন৷
‘‘উদ্ভিদ, প্রাণী ও মানব শরীর কিভাবে তাদের দৈনন্দিন কর্মচক্রকে দিবারাত্রির ছন্দের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়,’’ বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার থেকে তার ব্যাখ্যা পাওয়া গেছে বলে নোবেল অ্যাসেম্বলির তরফ থেকে পুরস্কার ঘোষণার সময় বলা হয়৷
মঙ্গলবার পদার্থবিদ্যায় নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে৷ বুধবার ঘোষিত হবে রসায়নে নোবেল বিজেতার নাম৷ এছাড়া সাহিত্যে নোবেল বিজয়ীর নাম বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে৷
মাধ্যাকর্ষণ তরঙ্গের আবিষ্কার এ বছর পদার্থবিদ্যায় নোবেল জিতবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ অ্যালবার্ট আইনস্টাইন তাঁর জেনারেল থিওরি অফ রিলেটিভিটিতে মাধ্যাকর্ষণ তরঙ্গের অস্তিত্বের কথা বলেছিলেন৷ শেষমেষ ২০১৫ সালে সেই মাধ্যাকর্ষণ তরঙ্গ পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়৷
রসায়নে নোবেলের ক্ষেত্রে এবার প্রথাগত বুনিয়াদি গবেষণাকেই সেই সম্মান দেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে; বিশেষ করে সেই বিজ্ঞানীরা এবার সম্মানিত হবেন, যারা নিহোনিয়াম বা মস্কোভিয়ামের মতো পিরিওডিক টেবিলের নতুন এলিমেন্ট আবিষ্কার করেছেন, যার ফলে সপ্তম ‘পিরিওড’-টি পূর্ণ করা সম্ভব হয়েছে৷
শুক্রবার অসলো থেকে ২০১৭ সালের শান্তি নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে৷ অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষিত হবে অক্টোবরের ৯ তারিখে৷
সব বিভাগে নোবেল পুরস্কারের মূল্য ১১ লাখ ডলার বা ৯ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ ইউরো৷ পুরস্কার প্রদান করা হবে আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকী, অর্থাৎ ডিসেম্বরের ১০ তারিখে৷
এসি/এসিবি (ডিপিএ, এপি, এএফপি)
২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বরের ছবিঘরটি দেখুন...
চিকিৎসায় নোবেল: যুগান্তকারী কিছু আবিষ্কার
১৯০১ সাল থেকে চিকিৎসাবিদ্যায় নোবেল দেয়া শুরু হয়৷ ছবিঘরে থাকছে যুগান্তকারী কয়েকটি আবিষ্কারের কথা, যার কারণে গবেষকরা নোবেল পেয়েছিলেন৷
ছবি: AP
১৯০২: ম্যালেরিয়া
ভারতে জন্মগ্রহণকারী ব্রিটিশ গবেষক রোনাল্ড রস প্রথম বের করেছিলেন ম্যালেরিয়ার কারণ অ্যানোফিলিশ মশা৷ এই আবিষ্কারের কারণেই পরবর্তীতে ম্যালেরিয়ার ওষুধ বের করা সম্ভব হয়েছিল৷ তারপরও অবশ্য প্রতি বছর প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়, যার মধ্যে প্রায় তিন মিলিয়ন মারা যায়৷ ম্যালেরিয়া নিয়ে কাজের কারণে রোনাল্ড রস ১৯০২ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন৷
যক্ষা নিয়ে গবেষণা করে ১৯০৫ সালে নোবেল জেতেন জার্মান বিজ্ঞানী রবার্ট কখ৷ সংক্রামক এই রোগটি এখনো বিশ্বে ভয়ংকর রূপ নিয়ে রয়েছে৷ যদিও এখন তার টিকা পাওয়া যাচ্ছে, যেটা অবশ্য শিশুদের জন্য কার্যকরী, বড়দের নয়৷
ছবি: AP
১৯১২: অঙ্গ প্রতিস্থাপন
অর্গান ট্রান্সপ্ল্যান্ট বলুন, কিংবা ওপেন হার্ট সার্জারি – ফ্রান্সের বিজ্ঞানী অ্যালেক্সিস ক্যারেল না থাকলে সেটা কে সম্ভব করতেন কে জানে৷ শরীরের কোনো অঙ্গ শরীর থেকে বের করে বাইরে রাখার উপায় তিনিই প্রথম বের করেছিলেন৷ তাই ১৯১২ সালে তিনি যে নোবেল পাবেন তাতে আর অবাক হওয়ার কি আছে!
ছবি: picture-alliance/dpa
১৯২৪: ইসিজি
ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম বা ইসিজির সঙ্গে আজকাল সবাই পরিচিতি৷ হৃদরোগের চিকিৎসায় অপরিহার্য এই প্রযুক্তিটি হাসপাতাল পর্যায়ে নিয়ে আসার পেছনের লোকটি হলেন ১৯২৪ সালে নোবেল পাওয়া নেদারল্যান্ডসের ভিলেম আইন্টহোভেন৷
ছবি: Fotolia
১৯৩০: রক্তের গ্রুপ
রক্তের যে বিভিন্ন গ্রুপ রয়েছে সেটা প্রথম বের করেছিলেন অস্ট্রিয়ান কার্ল লান্ডস্টাইনার৷ তিনি এ, বি, সি (এখন যেটাকে আমরা বলি ও) গ্রুপের কথা জানিয়েছিলেন৷ পরবর্তীতে তাঁর সহকর্মীরা এবি গ্রুপ আবিষ্কার করেন৷ ১৯৩০ সালে নোবেল পেয়েছিলেন লান্ডস্টাইনার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
১৯৩৯, ১৯৪৫, ১৯৫২: অ্যান্টিবায়োটিক
এই তিন বছরে চিকিৎসাবিদ্যার নোবেলটি যায় অ্যান্টিবায়োটির আবিষ্কারকদের দখলে৷ এর মধ্যে ১৯৪৫ সালে পেনিসিলিনের জন্য নোবেল পান আলেকজান্ডার ফ্লেমিং৷
ছবি: Fotolia/Nenov Brothers
১৯৭৯ ও ২০০৩: সিটি স্ক্যান, এমআরআই
সিটি স্ক্যানের জন্য ১৯৭৯ সালে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী গডফ্রে হুনসফিল্ড এবং এমআরআই প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে মার্কিন দুই বিজ্ঞানী পল লটারবুর ও পিটার ম্যানসফিল্ড ২০০৩ সালে নোবেল পেয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
২০০৮: গর্ভাশয়ের ক্যানসার
জার্মান বিজ্ঞানী হারাল্ড সুয়র হাউজেন বলেছেন হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি)-এর কারণে সার্ভিক্যাল ক্যানসার হতে পারে৷ এর উপর ভিত্তি করে টিকাও আবিষ্কৃত হয়েছে৷ ২০০৮ সালে হাইজেন নোবেল পান৷