এপ্রিল মাসে ভূমিকম্প নেপালের পর্যটন শিল্পকে কিছুটা নাড়িয়ে দিয়েছে বটে, কিন্তু সে সেদেশের আকর্ষণ মোটেই কমে নি৷ যেমন চিতোয়ান ন্যাশনাল পার্কের একশৃঙ্গ গণ্ডার আর বাঘ৷ তবে চোরাশিকারীরাও আছে৷
ছবি: picture alliance/ZUMA Press
বিজ্ঞাপন
সৈন্যরা সাইকেলে চড়ে চিতোয়ান ন্যাশনাল পার্কে টহল দিচ্ছেন, সূর্য ওঠার ঠিক আগে৷ হঠাৎ দেখা গেল ডাইনোসরের মতো এক প্রাগৈতিহাসিক জীব! না, ডাইনোসর নয়, গণ্ডার: যাকে পরিভাষায় বলা হয় ভারতীয় বা এশীয় গণ্ডার, কিংবা একশৃঙ্গ গণ্ডার৷
গণ্ডার মারা নিষেধ, কিন্তু ‘পোচার' বা চোরাশিকারীরা সেটা মানে না৷ সারা বিশ্বে এই প্রজাতির গণ্ডারের সংখ্যা মাত্র আড়াই হাজার; তাদের মধ্যে প্রায় বিশ শতাংশকে পাওয়া যাবে চিতোয়ান ন্যাশনাল পার্কে: জাতীয় উদ্যানটি প্রায় এক হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে – নেপালের সংরক্ষিত এলাকাগুলির মধ্যে অন্যতম৷
ঘড়িয়াল
সৈন্যরা নদীর উপরেও নজর রাখেন৷ হঠাৎ ঘড়িয়ালের চোখ! প্রজাতি সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ দিবাকর চাপাগাইন সৈন্যদের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন৷ ঘড়িয়ালরা বিরল হয়ে আসছে, জানালেন তিনি৷ প্রায়ই ঘড়িয়ালের বাসা থেকে ডিম চুরি হয়৷ তিনি বলেন, ‘‘পার্কের একটি ব্রিডিং সেন্টার আছে৷ সেখানে কৃত্রিমভাবে ঘড়িয়াল ব্রিড করে তাদের দু'তিন বছর অবধি রাখা হয়৷ তারপর তাদের মুক্ত প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হয়৷''
হুমকির মুখে যেসব প্রাণী
হুমকির মুখে থাকা কিছু প্রজাতির প্রাণী লাল তালিকাভুক্ত করা হয়েছে৷ এদের মধ্যে আফ্রিকার ওকাপিসহ আরো ২০০ পাখি রয়েছে৷ তবে অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে৷
ছবি: Reuters
ওকাপি’র সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে
জিরাফের মতো দেখতে এই ওকাপি’র বাস কঙ্গোতে৷ আফ্রিকার ঐ অঞ্চলে কত প্রাণীর বাস তার হিসাব রাখে ওয়ার্ল্ড কনজারভেশন ইউনিয়ন (আইইউসিএন)৷ সংস্থাটি সম্প্রতি হুমকির তালিকায় থাকা প্রাণীদের নাম প্রকাশ করেছে৷ সেখানে দেখা যাচ্ছে, কঙ্গোর উত্তর-পূর্বাঞ্চলে থাকা এই ওকাপির সংখ্যা নব্বইয়ের দশকে ছিল ৪,৪০০৷ দশ বছর পর এই সংখ্যা দাঁড়ায় ২,৫০০ তে৷ কঙ্গোর সহিংসতা এবং খনি ব্যবসাকে এ জন্য দায়ী করা হচ্ছে৷
ছবি: cc-by-sa-3.0/Raul654
বিলুপ্তির পথে
আইইউসিএন জানিয়েছে, ওকাপি এখন হুমকির মুখে৷ তাদের তৈরি তালিকার একেবারে তলানিতে আছে ওকাপির নাম৷ অর্থাৎ এরাই সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে রয়েছে৷ এমন অনেক প্রাণী আছে, আজ থেকে ২০০ বছর আগেও যাদের অস্তিত্ব ছিল, কিন্তু এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে, যেমন বালি টাইগার৷ বাঘের প্রায় সব প্রজাতিই আজ হুমকির মুখে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
দুইশ প্রজাতির পাখি হুমকির মুখে
নতুন রেড লিস্টে দুইশ প্রজাতির পাখিও রয়েছে৷ এদের মধ্যে অনেক শকুন আছে, যাদের বাস ভারত ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায়৷ আইইউসিএন বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে, চীন ও মালয়েশিয়ার অনেক শকুন এরই মধ্যে বিলুপ্ত হয়েছে৷ ইথিওপিয়া, জিম্বাবুয়ে এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা অনেক শকুন এখন হুমকির মুখে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এশিয়ার হাতি দ্রুত কমছে
বিশ্বে এখনও এশিয়ান এলিফেন্টের সংখ্যা ৪০ থেকে ৫০ হাজার৷ কিন্তু এরাও হুমকির মুখে রয়েছে৷ গত তিন প্রজন্ম ধরে এই প্রজাতির হাতির সংখ্যা কমছে৷ আইইউসিএন বলছে, তিন প্রজন্মে হাতির সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে৷ বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, চীন ও ইন্দোনেশিয়ায় এশিয়ান হাতি দেখতে পাওয়া যায়৷
ছবি: picture-alliance/Horst Galuschka
পাচার ও দাঁত বিক্রির কারণে বিপদ
কেবল এশিয়া নয়, আফ্রিকার হাতিরাও হুমকির মুখে৷ বন উজাড় এবং দাঁতের জন্য শিকারীদের উৎপাতও হাতিদের সংখ্যা কমানোর জন্য দায়ী৷ সেইসাথে অবৈধভাবে শিকার এবং চুরি করে পাচার করাও দিন দিন বাড়ছে৷ হাতি পাচার রোধে এ মাসের ২ থেকে ৪ ডিসেম্বর বতসোয়ানায় ‘আফ্রিকান এলিফেন্ট সম্মেলন’-এর আয়োজন করে আইইউসিএন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বিলুপ্তির পথে মাছ
ডলফিনের মত দেখতে এই পরপয়েসদের সচরাচর দেখা যায় ক্যালিফোর্নিয়ায়৷ মাছ ধরার জালে আটকে প্রায়ই মারা যায় এরা৷ কখনো কখনো জেলেরা এদের ধরে নিয়ে যায়৷ ফলে হুমকির মুখে রয়েছে এই প্রজাতিটি৷ বিশ্বে এখন মাত্র ৫০০ থেকে ৬০০ পরপয়েস রয়েছে৷
ছবি: WDC
কিছু প্রাণীর ক্ষেত্রে আশার আলো
কিছু কিছু প্রজাতির ক্ষেত্রে অবশ্য উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যেমন লেদারব্যাক কচ্ছপ৷ অথচ এক দশক আগে এই প্রজাতির কচ্ছপটি ছিল রেড লিস্টে, অর্থাৎ হুমকির মুখে৷ দুই মিটার লম্বা এবং আধা টন ওজনের এই কচ্ছপগুলো আকারে সবচেয়ে বড় হয়৷ এদের হুমকির মুখে পড়ার কারণ সাগরের দূষণ৷
ছবি: gemeinfrei
প্রাণী কল্যাণ সংস্থার অবস্থা
এছাড়া ব্ল্যাকব্রোও অ্যালবাট্রসের সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে৷ নতুন লাল তালিকায় এই প্রজাতির পাখির আশানুরূপ উন্নতি হয়েছে৷ আইইউসিএন এর পরিচালক ইয়ান স্মার্ট জানান, অনেক প্রজাতির উন্নতি হলেও এখনও ২১,০০০ প্রাণী হুমকির মুখে রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শেষবার দেখার সুযোগ: পান্ডা, গন্ডার, লিঙ্কস
হুমকির মুখে থাকা প্রাণীগুলোর মধ্যে অন্যতম জায়ান্ট পান্ডা৷ বিশ্বে এদের সংখ্যা মাত্র ১০০০ থেকে ২০০০৷ আর আছে সুমাত্রার গন্ডার, যাদের মোট সংখ্যা মাত্র ২২০৷ এছাড়া লাইবেরিয়ার লিঙ্কসও আছে এই তালিকায়৷ এদের সংখ্যা মাত্র ৮০ থেকে ১৫০টি৷ ১৯৬৩ সাল থেকে এই রেড লিস্ট প্রকাশ করে আসছে আইইউসিএন৷
ছবি: Reuters
9 ছবি1 | 9
সরকারি বিবৃতি অনুযায়ী গত বছর নেপালে কোনো বড় প্রজাতির জীবজন্তু চোরাশিকারীদের দৌরাত্ম্যে মারা পড়েনি৷ আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকে নেপালকে প্রাণীবৈচিত্র্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে আদর্শ বলে মনে করা হয়৷ এই সাফল্য এসেছে ব্যাপকভাবে সেনাবাহিনীকে কাজে নামানোর পর৷ চিতোয়ানে প্রায় দেড় হাজার সেনা প্রতিদিন সারা পার্ক জুড়ে পোচার-দের খোঁজ চালান৷
এ নতুন যুগের টহলদারিতে মোবাইলে জিপিএস দিয়ে খবর রাখা হয়, কোন কোন এলাকায় কবে কবে টহল দেওয়া হয়েছে৷ চোরাশিকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল ফোন ও ডিজিটাল ক্যামেরা৷ ডাব্লিউডাব্লিউএফ নেপাল এই সব সরঞ্জাম এবং সেই সঙ্গে প্রশিক্ষণের অর্থসংস্থান করেছে৷
বিগত কয়েক দিনে জালে খুব বেশি অপরাধী ধরা পড়েনি: কয়েকজন গ্রামবাসী কাঠ কুড়োতে গিয়ে ধরা পড়েছে৷ একেবারে ভিতরের গভীর অরণ্যের উপর নজর রাখার জন্য এবার ড্রোন ব্যবহার করার কথা ভাবা হচ্ছে৷
রয়েলবেঙ্গলটাইগার!
চতুর্দিকে ছবি সহ নোটিস ঝুলছে৷ নয়তো বাস্তবে তার হদিশ পাওয়া মুশকিল৷ হয়তো শিকার দেখে বোঝা যায়, এখানে বাঘ আছে, যদিও পাড়ের উঁচু ঘাসের মধ্যে তাকে দেখা সম্ভব নয়৷ ক্যামেরার ফাঁদ থেকে তার অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়৷ সারা বিশ্বে আজ মাত্র তিন হাজার বাঘ মুক্ত প্রকৃতিতে বাস করছে – তাদের মধ্যে ১২০টি বাঘ বাস করে এই চিতোয়ানে৷ তাদেরও সংখ্যা বাড়ছে৷ চিতোয়ান ন্যাশনাল পার্কের জীববিজ্ঞানী আশীষ অধিকারী বলেন, ‘‘এই ছবিগুলো যখন দেখি, তখন এতো অবাক লাগে! কী রাজকীয় একটি জীব! সদ্য একটা বুনো শুয়োর ধরেছে, চিতোয়ান ন্যাশনাল পার্কে যা কিনা বাঘেদের অন্যতম শিকার৷ এখনও এখানে যে হ্যাবিটাট আছে, তা বাঘেদের সংখ্যা দ্বিগুণ করার পক্ষে যথেষ্ট৷ যার অর্থ, নেপাল বাঘের সংখ্যা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করতে পারে৷''
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত নেপালের বিশ্ব ঐতিহ্য
২৫ এপ্রিল, ২০১৫ শনিবার নেপালে ৭.৯ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে৷ এতে অনেক মানুষ প্রাণ হারায়৷ আর ক্ষতিগ্রস্ত হয় নেপালে থাকা ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পাওয়া সাতটি নিদর্শন৷
ছবি: P. Mathema/AFP/Getty Images
কাঠমান্ডু ভ্যালি
প্রায় ২২০ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই ভ্যালিতে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় থাকা সাতটি নিদর্শন রয়েছে৷ ভূমিকম্পে সবগুলোই কমবেশি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে৷
ছবি: Imago
শম্ভুনাথ মন্দির কমপ্লেক্স
বৌদ্ধ অনুসারীদের কাছে এই মন্দির সম্ভবত সবচেয়ে বেশি পবিত্র স্থান৷ সেখানে আছে একটি স্তূপ, কয়েকটি মন্দির ও আশ্রম৷ সেই স্তূপে গৌতম বুদ্ধের চোখ ও ভ্রু আঁকা রয়েছে, ছবিতে যেমনটা দেখা যাচ্ছে৷ ভূমিকম্পে এই মন্দির কমপ্লেক্সটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
আঠার শতকের মাঝামাঝি সময়ে নেপাল একীভূত হওয়ার আগে সেখানে অনেকগুলো রাজ্য ছিল৷ এ সব রাজ্যের রাজবাড়ির আশেপাশের স্থানগুলো দরবার চত্বর নামে পরিচিত৷ এর মধ্যে কাঠমান্ডু ভ্যালিতে অবস্থিত তিনটি দরবার চত্বর ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে৷ কাঠমান্ডু দরবার চত্বর এর একটি (বর্তমান ছবি)৷ পরের ছবিতে ভূমিকম্পের পরবর্তী অবস্থা দেখতে পাবেন৷
ছবি: P. Mathema/AFP/Getty Images
ভূমিকম্পের পর...
ভূমিকম্পে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কাঠমান্ডু দরবার চত্বরের মন্দির আর প্যাগোডাগুলো আর কখনও পুরোপুরি ঠিক করা যাবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভারতের মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ ড. পিডি বালাজি৷
ছবি: P. Mathema/AFP/Getty Images
ভক্তপুর দরবার চত্বর
রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ১৩ কিলোমিটার পূবে অবস্থিত ভক্তপুর দরবার চত্বরের আগের ছবি এটি৷ ভূমিকম্প পরবর্তী অবস্থা দেখা যাবে পরের ছবিতে৷
ছবি: picture alliance / ZUMAPRESS/P. Gordon
ভূমিকম্পের পর...
এই হলো ভক্তপুর দরবার চত্বরের বর্তমান অবস্থা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/N. Shrestha
পাটান দরবার চত্বর
ললিতপুর জেলার এই দরবার চত্বরের মেঝে লাল ইট দিয়ে গড়া৷ কাঠমান্ডু ভ্যালির আদিবাসী ‘নেওয়ার’দের ‘নেওয়া’ স্থাপত্যের অনেক নিদর্শন রয়েছে সেখানে৷ ভূমিকম্পের হাত থেকে রক্ষা পায়নি এই চত্বরটিও৷ দেখুন পরের ছবিতে৷
কাঠমান্ডুতে যাওয়া পর্যটকদের কাছে ৬২টি মিটার উঁচু এই টাওয়ারটি বেশ আকর্ষণীয় ছিল৷ আঁকাবাঁকা সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে পুরো কাঠমান্ডুর মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যেত৷ কিন্তু ভূমিকম্পে টাওয়ারটি ধসে পড়েছে৷ সেই দৃশ্য দেখা যাবে পরের ছবিতে৷
ছবি: imago
ভূমিকম্পের পর...
কে বলবে এটি একটি টাওয়ার ছিল!
ছবি: P. Mathema/AFP/Getty Images
চ্যাঙ্গু নারায়ণ মন্দির
এই হিন্দু মন্দিরটি নেপালের সবচেয়ে পুরনো মন্দির বলে পরিচিত৷ রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ৮ কিলোমিটার পূবে অবস্থিত একটি পাহাড়ের চূড়ায় এই মন্দিরটির অবস্থান৷ পঞ্চম ও দ্বাদশ শতাব্দীর নেপালি শিল্পকলার বেশ কিছু নিদর্শন রয়েছে এই মন্দিরে, ভূমিকম্পে যেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
ছবি: imago
পশুপতিনাথ মন্দির
নেপালে হিন্দুদের অন্যতম পবিত্র স্থান বলে ধরা হয় এই মন্দিরকে৷ ভূমিকম্পে এটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
ছবি: picture alliance/ANN/The Star
12 ছবি1 | 12
গ্রামবাসীরা
ন্যাশনাল পার্কে জীবজন্তু সংরক্ষণ একমাত্র সম্ভব হয়েছে আশপাশের গ্রামগুলির মানুষজন বন্যপ্রাণীদের বেঁচে থাকার অধিকারটুকু মেনে চলেন বলে; অপরদিকে পার্কের সাফল্য তাদেরও অনেক সুবিধা এনে দিয়েছে৷ তারা চুলার কাঠ সংগ্রহ করতে পারেন, কিন্তু সেটা ন্যাশনাল পার্কের বাইরে সৃষ্ট একটি বিশেষ বনভূমিতে৷ ন্যাশনাল পার্কে বছরে যে লাখ খানেক পর্যটক আসেন, এমনকি কপালে থাকলে একশৃঙ্গ গণ্ডারের ছবিও তুলে নিয়ে যেতে পারেন, তাদের পার্কে ঢুকতে যে টিকিট কাটতে হয়, সেই টিকিটের টাকার অর্ধেক ব্যয় করা হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের কল্যাণে – সে বিষয়েও তারা খুশি৷ এবং তাতে কাজ হয় বৈকি৷ গ্রামবাসীরা মাঝেমধ্যে পোচার-দের খোঁজ দেন: এই কৃষিকর্মীরা যেমন কিছু বেআইনি মৎস্যশিকারী আবিষ্কার করেছেন৷
বনরক্ষীদের হেডকোয়ার্টার্সে আরেক চমক! যে মানুষটিকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তিনি নেপালের কুখ্যাততম গণ্ডার শিকারী বলে পরিচিত৷ তাঁকে মালয়েশিয়ায় ধরে, পরে চিতোয়ানে পাঠানো হয়েছে৷ ত্রিশ-বছর-বয়সি এই চোরাশিকারী নাকি ২২টি গণ্ডার বধ করেছেন৷ চীনে গণ্ডারের নাকের খড়্গটির দাম কিলো প্রতি প্রায় পাঁচ হাজার ইউরো, কেননা পদার্থটি নাকি পুরুষের যৌনক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্যানসার সারাতে পারে৷
চোরাশিকারীর এবার ১৫ বছরের কারাদণ্ড হওয়ার সম্ভাবনা – যা কিনা পার্কের জীবজন্তু এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে খুবই ভালো খবর৷