চিলির আটকেপড়া খনি শ্রমিকদের উদ্ধার সম্পন্ন
১৪ অক্টোবর ২০১০শেষ হলো উদ্ধার কাজ
৩৩ খনি শ্রমিক ফিরে এসেছেন চেনা পরিবেশে, ওপরের পৃথিবীতে৷ জার্মান সময় বুধবার সকাল পাঁচটা দশ মিনিটে খনিগর্ভ থেকে ভূপৃষ্ঠে উঠে আসেন ফ্লোরেন্সিও আবালোস৷ তারপর একে একে উঠে আসেন আটকেপড়া সব খনি শ্রমিক৷ সবার শেষে ফিনিক্সে চড়েন লুইস উরুজুয়া৷ ৬২৫ মিটার নিচে আটকে থাকা দিনগুলোতে সহকর্মীদের দেখভাল করেছেন উরুজুয়া৷ তাই, সবাইকে ফিনিক্সে চড়িয়ে সবার শেষে ওপরে ওঠেন ৫৪ বছর বয়সি এই শ্রমিক প্রধান৷ জার্মান সময় বৃহস্পতিবার ভোর ২টা পঞ্চান্ন মিনিটে উঠে আসেন তিনি৷ এভাবেই শেষ হয় ২২ ঘন্টা চল্লিশ মিনিটের চূড়ান্ত উদ্ধার অভিযান৷
অলৌকিক ঘটনা
সব খনি শ্রমিকই ওপরে উঠে জড়িয়ে ধরেছেন প্রিয়জনকে৷ আনন্দাশ্রু বইতে দেখা গেছে অনেকের চোখে৷ ছিল দীর্ঘ চুম্বনের নিবিড় আলিঙ্গন৷ কেউ কেউ ওপরে উঠে উড়িয়েছেন চিলির পতাকা৷ কাউকে দেখা গেছে প্রার্থনায় বসতে৷ চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্টিয়ান পিনেরা উদ্ধার অভিযানের প্রায় পুরোটা সময় দাঁড়িয়ে ছিলেন সুরঙ্গের কাছে৷ প্রথম মুক্তি পাওয়া খনি শ্রমিকের চাচা আলবার্টো এই ফিরে আসাকে ব্যাখ্যা দিয়েছেন ‘ঈশ্বরের অলৌকিক ঘটনা' হিসেবে৷
শ্রমিকদের শারীরিক অবস্থা
৬৯ দিন খনিগর্ভে আটকে থাকার পর স্বভাবতই শারীরিক এবং মানসিকভাবে শ্রমিকদের ভেঙ্গে পড়ার কথা৷ কিন্তু চিলির আটকেপড়া খনি শ্রমিকদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে৷ সামগ্রিকভাবে তাদের শারীরিক অবস্থা প্রত্যাশার চেয়ে ভালো৷ সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন চিলির স্বাস্থ্য মন্ত্রী খায়েম মানালিস৷ তবে উদ্ধারকৃত শ্রমিকদের মধ্যে একজনের নিউমোনিয়া হয়েছে৷ তাকে এন্টিবায়োটিক দেয়া হয়েছে৷ আরো দুই শ্রমিকের দাঁতে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিয়েছে৷ ফলে বৃহস্পতিবার তাদের অপারেশন করা হতে পারে৷ অন্যান্য কয়েক শ্রমিকের দাঁতেও সমস্যা দেখা দিয়েছে৷
তবে কপিয়াপোর হাসপাতালের ডাক্তারদের দাবি, খনি শ্রমিক মারিও সাপুলভেডা এবং মারিও গোমেজ সিলিকোসিস রোগে আক্রান্ত হয়েছেন৷ চিলি সরকারের তরফ থেকে অবশ্য এই বিষয়ে কিছু বলা হয়নি৷
গ্রন্থনা: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: সাগর সরওয়ার