বিশ্ব জুড়ে করোনা ছড়িয়ে পড়ার জন্য ফের চীনকেই দায়ী করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অ্যামেরিকার চাপে তাইওয়ান ঢুকলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংসদে।
বিজ্ঞাপন
মাঝে দুই দিন নীরব ছিলেন তিনি। সপ্তাহান্তে সাংবাদিক বৈঠক করে করোনা সংক্রান্ত তথ্যও দেননি। সোমবার ফের ক্যামেরার সামনে এলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে দাঁড়িয়ে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বিতর্কিত মন্তব্যের প্রথা বজায় রাখলেন। অ্যামেরিকায় করোনা ভাইরাস ছড়াতে শুরু করার পরেই চীনকে এক হাত নিয়েছিলেন তিনি। সোমবার তাঁর মন্তব্য, ''চীন চাইলে দেশের মধ্যেই সংক্রমণ আটকে রাখতে পারতো। গোটা বিশ্বে ছড়াতে দিতো না। কিন্তু চীন তা করেনি। আমরা খুব সিরিয়াস তদন্ত শুরু করেছি। চীনকে কৃতকর্মের ফল ভুগতে হবে।''
করোনায় রোজা, করণীয় কী?
মুসলিমদের সবচেয়ে পবিত্র মাস রমজান এসেছে৷ কিন্তু করোনা মহামারি এবারের রমজানকে দিয়েছে অন্য এক রূপ৷ নিজে ও প্রিয়জনকে নিরাপদে রেখে কিভাবে পালন করা যাবে এ মাস?
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
করোনাকালে রমজান, কিছু পরামর্শ
রমজান মাসকে বিশ্বজুড়ে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা দেখে থাকেন দানশীলতা, সংযম, আত্মশুদ্ধি ও প্রার্থনার মাস হিসেবে৷ একসঙ্গে নামাজ পড়া ও সারাদিনের রোজা শেষে ইফতার ভাগাভাগি করে নেয়াকেও দেয়া হয় গুরুত্ব৷ কিন্তু চলমান করোনা মহামারি এবারের রমজানকে সবার সামনে হাজির করেছে একটু অন্যভাবে৷ সব দেশের জন্যই এ বিষয়ে কিছু সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
রোজা রাখতে ঝুঁকি নেই
রোজা রাখলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে, এমন কোনো তথ্য এখনও কোনো গবেষণায় পাওয়া যায়নি৷ ফলে স্বাভাবিক সময়ের মতোই রোজা রাখতে সুস্থ মানুষের কোনো বাধা নেই৷ কিন্তু ধর্মীয় বিধি অনুযায়ীও নানা রোগের ক্ষেত্রে রোজা রাখায় ছাড় দেয়ার কথা বলা হয়েছে৷ কেউ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলে এ বিষয়টি বিবেচনায় রাখার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ সেক্ষেত্রে চিকিৎসক ও ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
পুষ্টিকর খাবার, পর্যাপ্ত পানি
কোভিড-১৯ এর কোনো ওষুধ বা প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কার হয়নি৷ ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপরই এখন পর্যন্ত ভরসা৷ তাই সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতার ও সেহরিতে নানা ধরনের সুষম খাবারের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে৷ এছাড়া গরমের ফলে পানিশূন্যতা দূর করতে ইফতার ও সেহরির মধ্যে পর্যাপ্ত পানিও পান করা খুব জরুরি৷
ছবি: Colourbox/Haivoronska_Y
শারীরিক কার্যক্রমে জোর
অন্যসময় রোজা রেখেও কাজকর্ম করার ফলে শরীরে রক্ত চলাচল ও অন্যান্য কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকতো৷ কিন্তু করোনার কারণে মানুষের চলাচল সীমিত হওয়ায় কমেছে শারীরিক কার্যক্রমও৷ এজন্য বিজ্ঞানীরা জোর দিচ্ছেন বাসার মধ্য়েই নিয়মিত হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাচলা করার জন্য৷ তা না হলে রোজায় শরীরে পড়তে পারে বিরূপ প্রভাব৷
ছবি: Colourbox
শুভেচ্ছা ও সম্ভাষণ
কারো সঙ্গে দেখা হলে হাত মেলানোর রীতি থাকলেও, এবার শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সম্ভাষণ জানানোর ওপর জোর দেয়া হচ্ছে৷ অনেক দেশে ধর্মীয় আচার ও সংস্কৃতি অনুযায়ী সালাম দেয়া, মাথা নাড়া বা বুকে হাত দিয়ে সম্ভাষণ জানানো হয়৷ এ বছর করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে এমন সম্ভাষণকেই স্বাগত জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরাও৷
ছবি: DW/A. Ansari
ঝুঁকিতে থাকাদের বিশেষ ব্যবস্থা
নভেল করোনা ভাইরাস সব বয়সের মানুষকে আক্রান্ত করলেও সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিরা৷ এছাড়া যারা ডায়বেটিস, রক্তচাপ, হৃদযন্ত্রের রোগ, শ্বাসকষ্ট ও ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য রোগে ভুগছেন, তারাও রয়েছেন কোভিড-১৯ এ সবচেয়ে ঝুঁকিতে৷ ফলে রমজানের সময়টাতে এই ব্যক্তিদের সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
সামাজিক দূরত্ব
বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও তারাবিসহ অন্যান্য নামাজ মসজিদের বদলে বাসায় পড়ার আহ্বান জানানো হয়েছে৷ কিন্তু তারপরও ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিনসহ যাদের মসজিদে যেতেই হবে, তাদেরও নিজেদের মধ্যে অন্তত এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে৷ এছাড়া ইফতার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনাকাটার জন্য যারা দোকানে বা বাজারে যাবেন, তাদেরও ভিড় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
প্রতিবার নামাজের আগে ওজুর ফলে এমনিতেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত হয়৷ কিন্তু এবার একটু বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের কথা বলছেন চিকিৎসকেরা৷ শুধু পানির বদলে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে সাবান ব্যবহারের৷ মসজিদেও পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতা সরঞ্জাম, টিস্যু, ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিন রাখার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে৷ পাশাপাশি প্রতিবার নামাজের আগে-পরে কার্পেটসহ মসজিদ ভবনের অন্যান্য ব্যবহার্য বস্তু পরিষ্কার করারও আহ্বান জানানো হচ্ছে৷
ছবি: Imago Images/allover-mev
যাকাত ও সদকা
রমজান মাসে মুসলিমদের দানশীলতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়৷ তবে যাকাত বা সদকা দেয়ার সময়ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে৷ যাতে একসঙ্গে বেশি মানুষ জড়ো না হন, সেজন্য এলাকার সবাই মিলে বা কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শৃঙ্খলাবদ্ধ উপায়ে পরামর্শ দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷
ছবি: DW/H.U.R. Swapan
মানসিক স্বাস্থ্য
লকডাউন, সামাজিক দূরত্ব ইত্যাদি মানতে গিয়ে মানসিক স্বাস্থ্য পড়ছে হুমকির মুখে৷ রমজানে ধর্মপ্রাণ মানুষ মসজিদে যেতে ও সামাজিক যোগাযোগ বেশি পছন্দ করেন৷ কিন্তু এ বছর তাদেরকে থাকতে হচ্ছে কড়া বিধিনিষেধের মধ্যে৷ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও যে আত্মশুদ্ধি, প্রার্থনা, দান, সেবা, সবই করা সম্ভব তা প্রচার করার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকারে পাশাপাশি ধর্মীয় নেতাদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷
ছবি: picture alliance/empics/D. Lipinski
10 ছবি1 | 10
এ কথা অবশ্য এই প্রথম বললেন না ডনাল্ড ট্রাম্প। এর আগেও একাধিকবার বলেছেন। এক সময় করোনা ভাইরাসকে 'চীনা ভাইরাস' বলে দাবি করতেন তিনি। যার জেরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জাতি সংঘ তাঁকে সতর্কও করেছিল। এর পর ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনের হয়ে কাজ করছে। যে কারণে প্রেসিডেন্টের নির্দেশে আপাতত ওই সংস্থাকে অর্থ দেওয়াও বন্ধ রেখেছে অ্যামেরিকা। সোমবার ফের সে প্রসঙ্গই তুললেন ট্রাম্প। তাঁর অভিযোগ, চীন চাইলে আরও দ্রুত করোনার প্রকোপ বন্ধ করতে পারতো। সে সুযোগ তাদের ছিল। মূল এলাকা থেকে ভাইরাস যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য আরও অনেক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। সরাসরি না বললেও ট্রাম্পের ইঙ্গিতে স্পষ্ট, করোনা ভাইরাস ছড়ানোর জন্য তিনি চীনের 'সক্রিয়' ভূমিকার দিকে আঙুল তুলছেন।
অ্যামেরিকা একা নয়, বিশ্বের বহু দেশই করোনার সংক্রমণের জন্য আকারে ইঙ্গিতে চীনকেই দায়ী করছে। তারই মধ্যে চীনের কিছু ঘটনা প্রশ্ন আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। সম্প্রতি চীনের তিন ইন্টারনেট অ্যাকটিভিস্ট বা আন্দোলনকারী নিখোঁজ হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। যাঁরা নিখোঁজ, তাঁদেরই পরিবারের এক সদস্য খবরটি প্রকাশ করেছেন। অভিযোগ, ওই তিন আন্দোলনকারী চীনে করোনা ভাইরাসের উৎস এবং সংক্রমণ নিয়ে বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করে ফেলেছিলেন। তারপরেই তাঁরা নিখোঁজ হয়ে যান। কেন তাঁরা হারিয়ে গেলেন? করোনার কী এমন তথ্য হাতে এসেছিল তাঁদের? কারা তুলে নিয়ে গেল তাঁদের? বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, চীনের প্রশাসনই এর জন্য দায়ী। গোপন তথ্য যাতে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে না যায়, সে কারণেই তাঁদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যদিও চীনের প্রশাসন বা সংবাদমাধ্যম এ বিষয়ে কিছু জানায়নি।
এ দিকে এরই মধ্যে চীনকে উপেক্ষা করে বিশ্ব স্বাস্থ্যের সংসদে নিজেদের জায়গা পাকা করে নিয়েছে তাইওয়ান। বিশ্ব স্বাস্থ্যের সংসদ হলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতি নির্ধারক মঞ্চ। সেখানে তাইওয়ানের অংশগ্রহণে প্রবল আপত্তি ছিল চীনের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও তাইওয়ানকে জায়গা দিতে চায়নি। কিন্তু অ্যামেরিকার সমর্থনে তাইওয়ান নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে। এ বিষয়ে সোমবার মার্কিন স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনাও হয়েছে তাইওয়ানের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর। করোনা নিয়ে চীন এবং অ্যামেরিকার যে শব্দযুদ্ধ শুরু হয়েছে, তাতে এ ঘটনা নতুন মাত্রা দেবে বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
২০২০ সালের জুলাই মাসে জাপানে শুরু হওয়ার কথা ছিল অলিম্পিক। গ্রিস থেকে সেখানে অলিম্পিকের মশালও পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে শেষ মুহূর্তে তা এক বছর পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জাপান। কিন্তু সোমবার জাপানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ঠিক ঠাক ভ্যাক্সিন আবিষ্কার না হলে এবং তার প্রয়োগ শুরু না হলে ২০২১ সালেও জাপানের অলিম্পিক আয়োজন করা উচিত হবে না। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বললেও এ বিষয়ে জাপানের অলিম্পিক সংক্রান্ত কমিটি কোনও মন্তব্য করেনি। জাপান প্রশাসনও তাদের প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলাতে কোন দেশ কী করছে
করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে৷ প্রতিষ্ঠানগুলো দেউলিয়া হওয়াসহ আছে সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান হারানোর শঙ্কা৷ তবে উন্নত দেশগুলো এই পরিস্থিতি সামলাতে বিভিন্ন আর্থিক ব্যবস্থাও নিচ্ছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Jordan
জার্মানি
সব ধরনের কোম্পানি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ১১০ কোটি ডলারের ঋণ দিচ্ছে জার্মান সরকার৷ দুর্যোগকালীন এই পরিস্থিতি সামাল দিতে মোট ৮০ হাজার কোটি ডলারের তহবিল রয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক৷ কোম্পানিগুলোর আর্থিক স্বচ্ছলতা বজায় রাখতে দেয়া হচ্ছে কর-ছাড়৷ দেরিতে ঋণ পরিশোধে গুণতে হবে না জরিমানা৷ প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটকে দেয়া হবে সাড়ে ১৪ কোটি ইউরো৷
অর্থনৈতিক ধাক্কা সামাল দিতে ২১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের তহবিল ঘোষণা করেছে স্পেন৷ ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানি, কর্মী আর আর্থিক অস্বচ্ছলদের সুরক্ষায় এই অর্থ ব্যয় করা হবে৷ এর মধ্যে শুধু সামাজিক নিরাপত্তায় খরচ করা হবে প্রায় ৬৪ কোটি ডলার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/AAB. Akbulut
পর্তুগাল
১৮ মার্চ থেকে ১৫ দিনের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে পর্তুগাল৷ এখন পর্যন্ত এক হাজার কোটি ডলারের প্রণোদনা ‘প্যাকেজ’ ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার৷ এরমধ্যে ৩২২ কোটি ডলার পর্যটন, বস্ত্র, কাঠসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ঋণ সহায়তা হিসেবে দেয়া হবে৷ ৫৩৬ কোটি ডলার আর্থিক প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে কর সুবিধা ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে৷
ছবি: Reuters/M. F. Lopes
ফ্রান্স
প্রায় পাঁচ হাজার কোটি ডলার সহায়তা তহবিলের প্রকল্প হাতে নিয়েছে ফ্রান্স সরকার৷ এর বড় একটি অংশ দেয়া হবে ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে৷ রেস্টুরেন্ট, দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং কোয়ারান্টিনের কারণে যেসব কর্মী কাজে যোগ দিতে পারছেন না, তাদের জন্য কয়কশ’ কোটি ডলার ব্যয়ের ঘোষণা দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে৷
ছবি: Getty Images/AFP/L. Marin
যুক্তরাজ্য
করোনা ভাইরাসের কারণে ১৪৫০ কোটি ডলারের জরুরি আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য৷ জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা এবং সমস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লোকসান মেটাতে এই টাকা দেয়া হবে৷ পাশাপাশি খুচরা ব্যবসা এবং পর্যটন শিল্পের জন্য ৪০ হাজার কোটি ডলারের ঋণ তহবিলও রাখা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/empics/PA Video
যুক্তরাষ্ট্র
সম্প্রতি ১০ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের একটি সহায়তা প্যাকেজের অনুমোদন দিয়েছে সেনেট৷ স্বাস্থ্য বিমা ছাড়াই করোনার পরীক্ষা করানো, স্কুলগামী শিশুদের জন্য খাবার সরবরাহ, কর্মীদের ১০ দিনের অসুস্থতাজনিত এবং কিছু ক্ষেত্রে ১২ সপ্তাহের বেতনসহ ছুটির পেছনে এই টাকা ব্যয় হবে৷ পাশাপাশি এক ট্রিলিয়ন ডলারের আরেকটি প্রণোদনা প্যকেজের জন্য আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যাচ্ছে ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন৷
ছবি: Reuters/L. Millis
ক্যানাডা
ক্যানাডার জন্য পাঁচ হাজার ৬৪০ কোটি ডলারের সহায়তা দেয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো৷ এই অর্থ দেশটির জিডিপির তিন শতাংশ ৷ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর-ছাড়, কর্মীদের বেতন, সমাজে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ব্যয় হবে এই অর্থ৷
ছবি: picture-alliance/empics/M. Sudoma
অস্ট্রেলিয়া
১১০০ কোটি ডলারের আর্থিক প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার৷ ৬৫ লাখ নিম্ন আয়ের মানুষকে এককালীন ৪৫১ ডলার করে দেয়া হবে এই তহবিল থেকে৷ পাশাপাশি এক লাখ ২০ হাজার শিক্ষানবিশ চাকুরিজীবী এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখতেও খরচ করা হবে এখান থেকে৷ অন্যদিকে অর্থনীতিকে সচল রাখতে ঋণের সুদহার কমিয়ে দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Carrett
তুরস্ক
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় ১৫৪০ কোটি ডলারের ব্যয় পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে তুরস্ক৷ ‘অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা’ শিরোনামের এই প্যাকেজটির আওতায় মোট ২১ টি খাতে খরচ করা হবে৷ এর মধ্যে অবসরকালীন ভাতা বৃদ্ধি, ব্যবসা সহযোগিতা, মূল্য সংযোজন কর হ্রাসসহ খুচরা, ইস্পাত, গাড়ি ও পর্যটন শিল্পে আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/B. Ozbilici
9 ছবি1 | 9
যত দিন যাচ্ছে, বিশ্ব অর্থনীতির পরিস্থিতিও তত খারাপ হচ্ছে। সে দিকে তাকিয়ে ধীরে ধীরে লকডাউন তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ। নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া আগেই কাজ শুরু করেছিল। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশেও সে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ব্রাজিল জানিয়েছে, লকডাউন তুলে জনজীবন স্বাভাবিক ছন্দে ফেরানোর চেষ্টা করছে তারা। কিছু দিনের মধ্যে ফুটবলও চালু করে দেওয়ার কথা ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে। তারই মধ্যে ইটালি, যুক্তরাজ্য, স্পেনে আক্রান্তের সংখ্যা গত এক মাসের মধ্যে সব চেয়ে কমেছে। তবে ফ্রান্সে মোট মৃতের সংখ্যা ২৩ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। যদিও ফ্রান্সের প্রশাসন জানিয়েছে, দেশের পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেকটাই ভালো। অ্যামেরিকার অবস্থা অবশ্য একইরকম। ২৩ মে নিউ ইয়র্কে প্রাইমারি নির্বাচনের কথা ছিল। আপাতত তা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসেব বলছে, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ ৬৫ হাজার। মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ১১ হাজার ৫৯৭ জনের। সুস্থ হয়েছেন নয় লাখ ২২ হাজার জন। এর মধ্যে শুধুমাত্র অ্যামেরিকাতেই আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ১০ হাজার। মৃত প্রায় ৫৭ হাজার।