1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চীনের উপহারেও দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে অনিশ্চয়তা

সমীর কুমার দে ঢাকা
১২ মে ২০২১

চীন থেকে উপহার হিসেবে পাঁচ লাখ ডোজ টিকা এসেছে৷ কিন্তু দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে মানুষের মধ্যে যে অনিশ্চয়তা, সেটা কাটছে না৷

Chinas Impfstoff Sinopharm
ছবি: OGNEN TEOFILOVSKI/REUTERS

কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ দুই কোম্পানির দুই ডোজ টিকা দেওয়ার কথা বললেও কোন গবেষণা না থাকায় সে পথে হাঁটতে রাজি নয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর৷ সরকারি নানা ধরনের উদ্যোগের পরও অক্সফোর্ডের টিকার যে ঘাটতি সেটা পূরণ করা যাচ্ছে না৷ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেও অক্সফোর্ডের টিকা দেওয়ার নিশ্চয়তা দেয়নি এখনও কেউ৷

চীনের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে দেওয়া করোনা ভাইরাসের পাঁচ লাখ ডোজ টিকা ঢাকায় পৌঁছেছে৷ বুধবার সকালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি উড়োজোহাজে টিকার ওই চালান দেশে আসে৷ পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আনুষ্ঠানিকভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের হাতে টিকা তুলে দেন ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং৷ গত ৭ মে চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের তৈরি এই করোনাভাইরাসের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডাব্লিউএইচও) এ টিকা ব্যবহারের সবুজ সংকেত দিয়েছে৷Einfügen

ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম

This browser does not support the audio element.

উপহারের জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, যে পাঁচ লাখ ডোজ টিকা চীন পাঠিয়েছে, তা দুই ডোজ করে আড়াই লাখ মানুষকে দেওয়া যাবে৷ এর বাইরে আমরা চীনের কাছ থেকে আরও টিকা চাই৷ চীনের রাষ্ট্রদূতর বলেছেন, ডিসেম্বর নয়, জুন-জুলাইয়ের দিকে তারা আমাদের আরও টিকা দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন৷ আমরা পর্যায়ক্রমে এই টিকা চাই৷ টিকার ‘যৌথ উৎপাদনের' সম্ভাবনার প্রসঙ্গ তোলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন৷ তিনি বলেন, আমাদের খুব ভালো ভালো ওষুধ কোম্পানি রয়েছে৷ কাঁচামাল এনে আমরা এখানে যৌথভাবে উৎপাদন করতে পারি, যা উভয় দেশের জন্য লাভজনক হতে পারে৷

ডা. মুশতাক হোসেন

This browser does not support the audio element.

অনুষ্ঠান শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘চীনের কাছ থেকে যে পাঁচ লাখ ডোজ টিকা পাওয়া গেছে, এর মধ্যে ৩০ হাজার ডোজ দিতে হবে বাংলাদেশে অবস্থান করা চীনা নাগরিকদের৷ ফলে যে চার লাখ ৭০ হাজার ডোজ টিকা বাকী থাকবে সেটা আমরা ভাগ করে দুই লাখ ৩৫ হাজার মানুষকে দেব৷ ঈদের পরই এই প্রক্রিয়া শুরু হবে৷ তবে এই টিকা আমরা সারাদেশে পাঠাব না৷ কারণ এই অল্প টিকা সারাদেশে পাঠিয়ে লাভ নেই৷'' সেরাম ইনস্টিটিউট কি আমাদের আরও ২০ লাখ ডোজ টিকা দিচ্ছে? জবাবে তিনি বলেন, ‘‘সেটা পেলে তো সব ঝামেলাই মিটে যেত, তবে এমন তথ্য ঠিক না৷''

যারা অক্সফোর্ডের টিকা প্রথম ডোজ নিয়েছে, তাদের দ্বিতীয় ডোজ এই টিকা দিয়ে দেওয়ার কোন পরিকল্পনা আছে কি-না? জানতে চাইলে অধ্যাপক আলম বলেন, ‘‘এমন কোন গবেষণা আমরা এখনো পাইনি যে, এক কোম্পানির এক ডোজ দিয়ে, আরেক কোম্পানির আরেক ডোজ দেওয়া যাবে? ফলে এই টিকা এখন নতুন মানুষকেই দেব৷'' অক্সফোর্ডের টিকার জন্য আপনারা যে চেষ্টা করছিলেন, সেটার কোন ইতিবাচক খবর আছে? জবাবে তিনি বলেন, ‘‘দুই দিন আগেও আমরা যুক্তরাজ্যের একটা কোম্পানির সঙ্গে বৈঠক করেছি৷ যাদের হাতে এই টিকা আছে৷ সেখানে থার্ড পার্টিও ছিল৷ তারা আমাদের টিকা দিতে চেয়েছে৷  আমরা তাদের কাছে কিছু কাগজপত্র চেয়েছি, এখনও তারা সেটা পাঠায়নি৷ এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছেন৷ আমরা আশা করছি সংগ্রহ করা যাবে৷''

ডা. নজরুল ইসলাম

This browser does not support the audio element.

এক কোম্পানির করোনার টিকা এক ডোজ নিয়ে অন্য কোম্পানির টিকা কি দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে নেওয়া যায়? এমন কী কোন গবেষণা বের হয়েছে? জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বর্তমান উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত এমন কোন গবেষণা বের হয়নি৷ ফলে প্রথম ডোজ যে কোম্পানির টিকা নেওয়া হবে, দ্বিতীয় ডোজও সেই কোম্পানির টিকা নেওয়াই ভালো৷ যারা বলছেন, দুই কোম্পানির টিকা নেওয়া যায়, তারা কি কোন গবেষণা করেছেন? গবেষণা করলে তারা এ কথা বলতে পারতেন৷ আমি মনে করি, যে ২০ লাখ ডোজের মতো ঘাটতি আছে, সেটা পূরণ হয়ে যাবে৷ নানা জায়গায় সরকার চেষ্টা করছে, এটা পাওয়া এমন কোন কঠিন কাজ হবে বলে আমার মনে হয় না৷''

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এক কোম্পানির এক ডোজ টিকা নিলে অন্য কোম্পানির আরেক ডোজ টিকা নেওয়া যাবে না, এটা কিন্তু ঠিক না৷ প্রত্যেকটা ভ্যাকসিনের আল্টিমেট প্রোডাক্ট হল স্পাইক প্রোটিন৷ মানে হল, করোনা ভাইরাসের স্পাইকে যে প্রোটিনটা আছে সেটাকে এন্টিজেন হিসেবে ব্যবহার করা৷ অ্যাস্ট্রাজেনেকা সেই কাজটা শিমপাঞ্জির এডোমা ভাইরাসের ডিএনএ দিয়ে করেছে৷ আর সিনোফার্মা হলো গোটা ভাইরাসটাকে ইনএক্টিভেট করেছে৷ আমাদের মেইন উদ্দেশ্য হল স্পাইক প্রোটিনের বিপরীতে এন্টিবডি তৈরি করা৷ যেটা অ্যাস্ট্রাজেনেকাও করছে, ফাইজারও করছে, মডর্নাও করছে আবার সিনোফার্মাও করছে৷ সবাই একই কাজ করছে, বিভিন্ন মেথডে৷ একটা দিলে আরেকটা দেওয়া যাবে না, কিছু কিছু লোক এটা বলছে, সেটা ঠিক না৷ যারা প্রথম ডোজ অক্সফোর্ডের টিকা দিয়েছে তারা দ্বিতীয় ডোজ এই সিনোফার্মের টিকা দিতে পারবে৷ এতে কাজ হবে৷'' এ নিয়ে কোন গবেষণা আছে? জবাবে অধ্যাপক ইসলাম বলেন, ‘‘না, এখনো কোন গবেষণা হয়নি৷ আমরা চাচ্ছি, স্পাইক প্রোটিনের বিপরীতে এন্টিবডি৷ সেটা দুই কোম্পানির দুই ডোজ নিলেও বুস্টিং হবে৷''

সমীর কুমার দে (ঢাকা)

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ