করোনা ভাইরাস এক ধরনের ভাইরাস যার কারণে শ্বাসকষ্টসহ, ঠান্ডাজনিত নানা ধরনের শারিরীক সমস্যা দেখা দেয়৷ মিডল ইস্ট রেসপাইরেটরি সিনড্রম বা মার্স এবং সিভিয়ার একুউট রেসপাইরেটরি সিন্ড্রম বা সার্সও করোনা ভাইরাস গোত্রের অন্তর্ভুক্ত৷

প্রথমে চীনে ২০০২ সালে বিড়াল থেকে মানবশরীরে এ ভাইরাস (সার্স) সংক্রমণের কথা জানা যায়৷ পরে ২০১২ সালে মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবের উটের শরীর থেকে মানবদেহে এ ধরনের ভাইরাসের (মার্স) সংক্রমণের বিষয়টিও ধরা পড়ে৷ বর্তমানে চীনে এটি নতুন রূপে দেখা দিয়েছে৷

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে সাধারণত যে লক্ষণগুলো ধরা পড়ে তা হলো শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও সর্দিকাশি৷ পাশাপাশি নিউমোনিয়া, কিডনিতে সমস্যাসহ নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হয়৷

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এ ভাইরাসের সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে৷

রোগটি একেবারেই নতুন হওয়ায় এখনও এর ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি৷ তবে এ ভাইরাস সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট শারীরিক সমস্যায় সাধারণ চিকিৎসাই প্রদান করা হয়ে থাকে৷ সবচেয়ে জরুরি হলো রোগীর জন্য নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখা৷

এই ভাইরাস থেকে দূরে থাকতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে কম আসা, হাত পরিস্কার রাখা, পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা ও নিরাপদ খাবারের উপর জোর দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷

রোগীর সেবায় নিয়োজিত থাকা স্বাস্থ্যকর্মীরা একটু বেশি ঝুঁকিতে থাকেন৷ আর তাই তাদেরকে যথাযথভাবে সংক্রমণনিরোধী বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে৷

এ রোগের বিস্তার ঠেকাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিভিন্ন দেশের সরকারকে নজরদারি বাড়ানোর কথা বলছে৷ এ ধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগীর সন্ধান পাওয়া মাত্র তাদেরকে জানাতে বলা হয়েছে৷ পাশাপাশি জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য প্রস্তুত থাকতে পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি৷

ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচতে এমন মাস্ক কার্যকর বলে প্রমাণিত না হলেও এগুলো অন্তত কিছু জীবাণু মুখ কিংবা নাকে যাওয়া ঠেকাতে পারে৷ এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, মাস্ক পরা থাকলে মানুষের হাত যখন-তখন মুখ বা নাকে যায় না৷ আপনি যদি অসুস্থ হয়ে থাকেন তাহলে এমন মাস্ক অন্যদের আক্রমণ থেকে বাঁচাবে৷

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শে কিন্তু মাস্ক পরার কথা নেই৷ তাদের এক নম্বর পরামর্শটি হচ্ছে নিয়মিত ভালোভাবে হাত ধোয়া৷ সবচেয়ে ভালো হয় অ্যালকোহলসমৃদ্ধ তরল ব্যবহার করা, যেমনটা ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন৷

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, পানি ও সাবান দিয়ে হাত ধুলেও চলবে৷ তবে নিশ্চিত করতে হবে যেন পুরো হাত ভালোভাবে ধোয়া হয়৷

ছবিটি ভালোভাবে খেয়াল করুন৷ হাঁচি-কাশি দেয়ার সময় ঠিক এভাবে মুখ আর নাক ঢাকতে হবে৷ তবে টিস্যুও ব্যবহার করতে পারেন৷ সেক্ষেত্রে ব্যবহারের পর টিস্যুটি দূরে ফেলে দিয়ে হাত ভালোভাবে ধুতে হবে৷ তেমনিভাবে শার্ট আর সোয়েটারটিও ধুয়ে ফেলতে হবে৷

এই পরামর্শটি সবার জন্য কার্যকর নাও হতে পারে৷ সেটি হচ্ছে, যার জ্বর ও কাশি আছে তার কাছ থেকে দূরে থাকুন৷ আপনার যদি অসুস্থ মানুষের সেবা করতে হয় তাহলে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিন৷

জ্বর, কাশি কিংবা শ্বাসকষ্ট হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের কাছে যেতে হবে৷ যেখানে জনসমাগম বেশি সেসব জায়গায় যাওয়া থেকে বিরত থাকুন৷

মাংস খুব ভালোভাবে রান্না করতে হবে৷ অর্ধসিদ্ধ হলে চলবে না৷ কাচা মাংস, দুধ কিংবা প্রাণীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এমনভাবে নড়াচড়া করতে হবে যেন সেগুলো রান্না হয়নি এমন খাবারের সংস্পর্শে আসতে না পারে৷